রাজনীতি
১৫ আগস্ট নিয়ে যে বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা

যথাযথ মর্যাদায় দেশবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৫০ মিনিটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাতে এক ফেসবুক পোস্টে এসব কথা জানান তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।
পাঠকদের জন্য জয়ের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
প্রিয় দেশবাসী
আসসালামুয়ালাইকুম
ভাই ও বোনেরা, ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। একই সাথে আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা, আমার তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেনেন্ট শেখ জামাল, কামাল ও জামালের নবপরিণীতা বধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, আমার ছোট ভাই যার বয়স মাত্র ১০ বছর ছিল শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার একমাত্র চাচা মুক্তিযোদ্ধা পঙ্গু শেখ নাসের, রাষ্ট্রপতির মিলিটারি সেক্রেটারি ব্রিগেডিয়ার জামিল উদ্দিন, পুলিশ অফিসার সিদ্দিকুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শ্রদ্ধা জানাই মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, কৃষি মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সারনিয়াবাদ, তাঁর ১০ বছরের ছেলে আরিফ ১৩ বছরের মেয়ে বেবি, ৪ বছরের নাতি সুকান্ত, ভাইয়ের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শহীদ সারনিয়াবাদ, ভাগনে রেন্টুসহ অন্যান্য অনেককে নির্মমভাবে ভাবে হত্যা করে। ১৫ই আগস্ট যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাঁদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শহীদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলনের নামে যে নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস ও সহিংসতার কারণে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ এমন কি অন্তঃসত্ত্বা নারী পুলিশ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, কর্মজীবী মানুষ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, পথচারী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যারা সন্ত্রাসী আগ্রাসনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের প্রতি শোক জ্ঞাপন করছি এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
স্বজনহারা বেদনা নিয়ে আমার মতো যারা বেচে আছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই। আমি এই হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার সাথে জড়িতদের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
প্রিয় দেশবাসী,
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে যে নারকীয় হত্যার ঘটনা ঘটেছিল সেই স্মৃতি বহনকারী বাড়িটি আমরা দুই বোন বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেছিলাম। গড়ে তোলা হয়েছিলো স্মৃতি জাদুঘর। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বাড়িতে এসেছেন। স্বাধীনতার স্মৃতিবহনকারী এই জাদুঘরটি।
অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে স্মৃতিটুকু বুকে ধারণ করে আপনজন হারাবার সকল ব্যথা বেদনা বুকে চেপে রেখে বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়ে প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। তার শুভ ফল ও আপনারা পেতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। আজ তা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। আর যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল তা পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে। চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি আত্মপরিচয় পেয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে। আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই।
প্রিয় দেশবাসী,
আপনাদের কাছে আবেদন জানাই যথাযথ মর্যাদার সাথে ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে জাতীয় শোক দিবস ১৫ই আগস্ট পালন করুন। বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্প মাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করে সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল করুন। খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
শেখ হাসিনা।

রাজনীতি
আ. লীগ বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না: সালাহউদ্দিন

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। তারা কোনোদিন বাংলাদেশিদের জন্য রাজনীতি করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী প্রসঙ্গ ও জাতীয় নিরাপত্তা ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা করে সিএইচটিআরএফ।
তিনি বলেন, তাদের (ফ্যাসিস্ট শক্তি) গোড়া আরেক জায়গায়। তারা মরিয়া প্রমাণ করিলো তাদের গোড়া কোন জায়গায়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের সবার পরিচয় হবে আমরা বাংলাদেশি। আমাদের জাতীয়তা বাংলাদেশি, আমরা বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে সবাইকে যেন পরিচয় দেই এবং এটিকে যেন আমরা ধারণ করতে পারি। সেটাই হবে আমাদের মূল ভিত্তি, জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মূল শক্তি।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কথাগুলো আমরা বার বার বলি, বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তি করে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএইচটিআরএফ চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান পলাশ। তিনি তার বক্তব্যে ‘আদিবাসী’, ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু রুইথি কারবারী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারেক ফজল, লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
রাজনীতি
নিরপেক্ষ মানুষও বিএনপির কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রতিটি নাগরিক বাংলাদেশের ভালো পরিবর্তন প্রত্যাশা করে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের মানুষ বুক ভরে শ্বাস নিতে পেরেছে। মানুষ চায় সামনের দিনগুলো যেন ভালো হয়। ৫ আগস্টের পর নিরপেক্ষ মানুষও বিএনপির কাছে ভালো কিছুর পরিবর্তন প্রত্যাশা করে সবচেয়ে বেশি। তাই দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়াতে হবে।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের ভীতকে ধীরে ধীরে শক্তিশালী করতে হবে। সঠিক ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে জবাবদিহিতা ও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করা সম্ভব।
রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ৩১ দফা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, যত সংস্কার নিয়ে কথা হচ্ছে, আড়াই বছর আগে সমমনা দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিই সেসব জাতির কাছে উপস্থাপন করেছিল।
বিএনপির এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে পারলে সবাইকে সঙ্গে নিয়েই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা হবে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিশ্চিত করায় তার সন্তান হিসেবে দেশের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান তারেক রহমান।
রাজনীতি
তারেক রহমানই দেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী: মির্জা ফখরুল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই দেশের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে শুধু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা নয়, ভোটের অধিকার নয়, স্বাস্থ্য আর ভাতসহ সব অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের চিকিৎসকরা উপমহাদেশে সেরা, সমস্যা সিস্টেমে। পারস্পরিক হিসেবের যে সংস্কৃতি, তা আমাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান যে ৩১ দফা প্রস্তাব করেছেন তা দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজনীতি
জুলাই ঘোষণাপত্রে ইসলামপন্থিদের অবদান মূল্যায়িত হয়নি: গোলাম পরওয়ার

জুলাই ঘোষণাপত্রে একটি নির্দিষ্ট দলের চিন্তা-চেতনা প্রকাশ পেয়েছে বলে রাজনীতিতে গুঞ্জন উঠেছে- এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে ইসলামপন্থিদের অবদান মূল্যায়িত হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার তৈরি ঘোষণাপত্রটি অসম্পূর্ণ। বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে। নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ইতিবাচক বলা হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন আয়োজিত ২০০৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ছাত্র-শিক্ষক-জনতার অবদান ও করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতি জুলাই বিপ্লবের অপেক্ষায় ছিল। দেশের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। তবে শত শত মানুষের রক্ত ও জীবন যদি ব্যর্থ হয়ে যায়, তাহলে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিচারক হত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং শিক্ষকদের অবদান—এসব কিছুই জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়নি। এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ঘোষণাপত্রটি সংশোধন করতে হবে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনেই ‘জুলাই সনদের’ আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে সেই আলোকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফ্যাসিবাদ লুকিয়ে আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রত্যেক বিভাগে শিক্ষার মান নিশ্চিত করা সময়ের অনিবার্য দাবি। যাদের কারণে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সূচনা হয়েছিল—সেই শ্রমিক, মজুর ও শিক্ষকরা—জুলাই ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে অন্তঃসারশূন্য এ ঘোষণাপত্র সংশোধন করতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। আলোচনার সারাংশ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি ড. এম কোরবান আলী।
রাজনীতি
অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে তত্ত্বাবধায়ক গঠনের আহ্বান ইনকিলাব মঞ্চের

অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে অতিদ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ইন্টেরিম ভেঙে দেন এবং আপনি প্রধান হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা করেন।’
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘নির্বাচন হবে, কিন্তু রোডম্যাপ কোথায়? আপনি কিছু বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে প্রথমে ’৭২-এর সংবিধান আগে বাতিল করে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের আলোকে সংবিধান করতে হবে, পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে, জুডিশিয়ারি (বিচারব্যবস্থা) সংস্কার করতে হবে এবং জনপ্রশাসন সংস্কার করতে হবে।’
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্য সময় ড. ইউনূস কথায় স্বাভাবিকভাব থাকলেও জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করার সময় তার মধ্যে আর্টিফিসিয়াল ভাব চলে এসেছে। জুলাই ঘোষণাপত্রে আমরা আমাদের ড. ইউনূসকে পাই নাই। মনে হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো সবাই মিলে আপনাকে দিয়ে পড়িয়ে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের উপদেষ্টারা আগে বলেছেন জুলাই ঘোষণাপত্রে গত ২০০ বছরের বাঙালির সব সংগ্রামের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘোষণাপত্রে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রামের দিনগুলোর স্বীকৃতি দেখতে পাইনি। শাহবাগে মব করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সেই ঘটনাগুলোর কোনো প্রতিধ্বনি আমরা দেখতে পাইনি।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান বিন হাদী বলেন, ’৪৭-এর ধারাবাহিকতায় ৭১ এসেছে। এরপর চূড়ান্ত ধারাবাহিকতায় ২৪ এসেছে। কিন্তু প্রতিটা সময় একটার বিপরীতে আরেকটাকে দাঁড় করানো হচ্ছে। যেই ঐতিহাসিক কর্মগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর সংশ্লিষ্টতা নেই, যেখানে অরাজনৈতিক মানুষরা সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কাজ করেছে। তার একটাকেও এখানে অ্যাড্রেস (উল্লেখ) করা হয়নি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও ২০১৩ সালের শাপলা গণহত্যা তারই উদাহরণ, যেগুলোর কোনো স্বীকৃতি নাই।’
প্রধান উপদেষ্টার দিকে প্রশ্ন তুলে ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘পিলখানার কথা বললে আর্মি ক্ষেপে যাবে, এ কারণে কি আপনি (অন্তর্বর্তী সরকার) পিলখানার কথা বললেন না? শাপলা গণহত্যাকে অনেকে এখনো রাজনৈতিক অভ্যুত্থান বলে। শাপলাকে বাদ দিয়ে আপনি কোনো ফ্যাসিবাদ আবার আনতে চান? নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে আমাদের বাচ্চারা রক্তাক্ত হয়েছে, কিন্তু তারও স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে নেই। ঘোষণাপত্রে ’৪৭-এর স্বীকৃতি, ’৭৫-এর স্বাধীনতার পর ১৯৯০-এর অভ্যুত্থানের সঙ্গে পিলখানা, শাপলা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে আপনাকে একনোলেজ (স্বীকৃতি) করতেই হবে।’
শরিফ ওসমান হাদি ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে বলেন, ‘হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু বলতে হবে, হাসিনার পতন ঘটিয়েছে এবং সে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এখানে অনেক গুম ও খুনের কথা আছে। কিন্তু বিচারিক হত্যাকাণ্ডের কথা নাই। জামায়াতের যেই নেতাদের ফাঁসি হয়েছে, তারা অ্যাডভান্টেজ পাবে। এই ভয়ে কি আপনারা সে কথাও বলেন নাই? এ ছাড়া জুলাই সনদে ১৯টি সংস্কারের কথা বলা হলেও ১০টি সংস্কারে বিএনপি ১০টি সংস্কারে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ হিসেবে নিয়েছে। অর্থাৎ আপাত দৃষ্টিতে আমি এটা মেনে নিয়েছি, কিন্তু আমি একমত না।’