জাতীয়
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে হবে ১৭ জনের সরকার

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য সংখ্যা হবে ১৭ জন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের আনতে সচিবালয় থেকে তাদের বাড়িতে গাড়ি পাঠানো শুরু হয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা গাড়ির সঙ্গে যাচ্ছেন। গাড়িতে থাকা অবস্থায় তাদের নাম জানানো হবে। ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এ উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হচ্ছে।
এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, হাসান আরিফ ও তৌহিদ হোসেনের নাম জানা গেছে।
এর আগে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ইউনূসকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরের এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশ একটা বড় পরিবার। এই পরিবারে আমরা একসঙ্গে চলতে চাই। আমাদের সঙ্গে দ্বিধাদ্বন্দ্ব যা আছে সরিয়ে ফেলতে চাই। যারা বিপথে গেছে তাদের পথে আনতে চাই। যাতে করে একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় থাকবেন। তার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা। ভেতরে আসবাবপত্র নতুনভাবে বসানো হচ্ছে। এই কাজগুলো করছে গণপূর্ত অধিদফতর (পিডব্লিউডি)।
তবে যমুনা ভবনের সামনে এখনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বসানো হয়নি। সেনাবাহিনী, আনসারসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদ যমুনায় ছিলেন।
এর আগে, ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান তাদের দায়িত্বের দিনগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যুমনাতেই ছিলেন।

জাতীয়
দুর্গাপূজা নিরাপদে উদযাপিত হবে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, আসন্ন দুর্গাপূজা নিরাপদে সুন্দরভাবে উদযাপিত হবে। পুলিশ পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সভায় আইজিপি এ কথা বলেন।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশ প্রাক পূজা, পূজা চলাকালীন এবং প্রতিমা বিসর্জন ও পূজা পরবর্তী তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে পূজাকেন্দ্রিক পুলিশের নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে নিরাপদে নির্বিঘ্নে উদযাপিত হবে। তিনি এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, এসবি প্রধান মো. গোলাম রসুল, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা, অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, এটিইউ’র অতিরিক্ত আইজি মো. রেজাউল করিম, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কুসুম দেওয়ান, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. মাইনুল হাসান, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও ও সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে, শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রমের আহ্বায়ক তপন কুমার বসু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মৃণাল কান্তি বৈষ্ণব ও যুগ্ম আহ্বায়ক অলোক বসু, রমনা কালী মন্দিরের সদস্য সচিব মিনি কুমার দাস অদিত, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার ও নৌ পুলিশের পুলিশ সুপাররা ভার্চ্যুয়ালি সভায় যুক্ত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করার জন্য পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
পূজা চলাকালে সিসিটিভি সক্রিয় রাখা, প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য পূজা উদযাপন পরিষদ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
দুর্গাপূজা চলাকালে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট, ক্রাইম রেসপন্স টিম (সিআরটি) ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং অন্যান্য পুলিশ ইউনিটে মনিটরিং সেল চালু থাকবে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ৩১ হাজার ৫৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে।
কাফি
জাতীয়
কমিশন এক মাস সময় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নয়: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়েছে। কমিশন কোনো অবস্থাতেই এক মাস সময় নিয়ে এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নয়। আমরা মনে করি না যে আগামী এক মাস ধরে এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আমরা খুব দ্রুত একটা ঐকমত্যের জায়গায় উপনীত হতে পারবো।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নতুন করে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর আরেকটি কারণ হচ্ছে যে, যেকোনো কার্যালয় যদি প্রায় এক বছর ধরে অব্যাহত থাকে, সেটা গুটিয়ে তুলতেও খানিকটা সময় লাগে। আমরা যেন মেয়াদের মধ্যেই সেটি গুটিয়ে তুলতে পারি, সেটাও সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই আমরা এখানে আজকে উপস্থিত হয়েছি।
আলী রীয়াজ বলেন, ১১ সেপ্টেম্বরের পরে আপনাদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছিল, আপনারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে আরো সুনির্দিষ্ট করে কিছু প্রস্তাব দিতে পারেন কি না। যেগুলো আরো বিকল্পগুলোকে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় এবং সম্ভব হলে একমত জায়গায় যেন আমরা আসতে পারি। আপনাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বশেষ যখন মিলিত হয়েছিলাম তখন আপনারা আপনাদের দলীয় অবস্থান এবং দলীয় অবস্থানের বাইরেও আপনাদের অবস্থানগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। বিস্তারিতভাবে তার আগে আপনারা লিখিতভাবে দিয়েছেন। তার সারাংশ আমরা উপস্থাপন করেছি। তার পাশাপাশি আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি এমনকি যেদিন সর্বশেষ আমরা এখানে সবাই মিলিত হই এবং প্রধান উপদেষ্টা এখানে উপস্থিত ছিলেন।
‘আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট মতামত সুপারিশ হিসেবে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য ছিল সেগুলোকে আমরা ছয় ভাগে ভাগ করেছিলাম। আপনারা বলেছিলেন বেশ কিছু বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়।’
তিনি বলেন, আমরাও কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করেছি, অত্যন্ত দ্রুততার সম্ভব সঙ্গে বাস্তবায়িত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যেসব বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশে করা যায় সেগুলো যেন তারা দ্রুত করেন।
তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আমাদের যেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল আছে তারা দুটো কথা বলেছিলেন, একটি হচ্ছে গণভোট, আরেকটি বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের কথা। সব কিছু বিবেচনা করে প্যানেলের পক্ষ থেকে আমাদেরকে একটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেটি আপনাদের সামনে আমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা সরকারকে একাধিক পরামর্শ দিতে পারি বাস্তবায়নের, যেটা তুলনামূলকভাবে সরকারের জন্য সহজতর হবে, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনীয় আইনি সাংবিধানিক বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে তারা পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণের জন্য ২১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বাইরে থাকবেন, নিউইয়র্কে থাকবেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখার জন্য। তিনি ২ অক্টোবর ফিরবেন। আমরা এই প্রক্রিয়াটির পরিণতির জায়গা অর্থাৎ আমাদের দিক থেকে যে সুপারিশ সেটা আসলে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে তার সঙ্গে আলোচনা করে দিতে চাই। ২১ তারিখের আগে যদি আমরা একমত হতে পারি বা বিকল্পগুলো নিশ্চিত হতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সেটা তাকে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। অন্যথায় আমাদেরকে কিছুটা সময় নিতে হবে।
আলী রীয়াজ বলেন, এরইমধ্যে আপনাদের কাছে সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি যদি তথ্যগত ত্রুটি থাকে তাহলে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করুন। কারণ তথ্যগত ত্রুটি থাকতেই পারে দু-একটা ক্ষেত্রে এবং আমরা সেগুলো অবশ্যই সংশোধন করব।
জাতীয়
কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা সাংবাদিকদের অধিকার নয়, দায়িত্ব: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অর্থনীতি ও ব্যবসা সংক্রান্ত খবর কভার করা সাংবাদিকদের জন্য কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা শুধু অধিকার নয়, দায়িত্বও। নামি পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া অর্থনীতিবিদদের আভায় সাংবাদিকদের ভীত না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে প্রেস সচিব এসব কথা বলেন।
পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, কিছু পরিসংখ্যান বেছে নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্তে পৌঁছানো খুবই সহজ। আমাদের অনেক অর্থনীতিবিদ এই কৌশলে দক্ষ বা সিদ্ধহস্ত। তারা প্রায়ই অর্থনীতি, কর্মসংস্থান বা দারিদ্র্য পরিস্থিতি নিয়ে নাটকীয় সব দাবি তোলেন—শুধুমাত্র বাছাই করা কিছু সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। আর খুব কম সময়ই কেউ তাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাদের ডিগ্রি, আত্মবিশ্বাস আর চমকপ্রদ ভাষা আপনাকে ভীত করে তোলে। তাদের সামনে আপনি নিজেকে ছোট মনে করেন—হয়তো “বোকা” মনে হতে পারে ভেবে হাত তুলতেও সংকোচ বোধ করেন।
ফেসবুকে প্রেস সচিব শফিকুল আরও বলেন, কিন্তু অর্থনীতি ও ব্যবসা কভার করা সাংবাদিকদের জন্য, কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা শুধু অধিকার নয়—এটি দায়িত্বও। নামি পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া অর্থনীতিবিদদের আভায় ভীত হয়ে যাবেন না। যখন কেউ বেছে নেওয়া সামান্য তথ্য দিয়ে বড় দাবি করেন—এটাই আপনার সুযোগ। তখনই মুখোশ খুলে যায়। আর তা কার্যকরভাবে করতে হলে সব ধরনের পরিসংখ্যান জানা প্রয়োজন। আপনার কি অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তৈরি করার মতো একটি স্প্রেডশিট আছে যেখানে ডজনখানেক সূচক রয়েছে? শুধু রপ্তানি, আমদানি, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা চলতি হিসাব ঘাটতিতেই থেমে থাকবেন না। অপরাধের পরিসংখ্যান? সাম্প্রতিক শ্রম অস্থিরতা? আন্তঃখাত প্রভাব? অর্থনীতির বিভিন্ন খাত কেমনভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত—এসবও দেখুন।
প্রেস সচিব বলেন, শুধু যখন আপনার হাতের কাছে এই সামগ্রিক চিত্র থাকবে তখনই আপনি বুঝতে পারবেন অনেক বড়সড় দাবির ভেতর কতটা ফাঁপা। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—তখনই আপনি নিজের রিপোর্টের দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখবেন না যে, অজান্তেই আপনিও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সাহায্য করেছেন।
জাতীয়
ছয় দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সাতরাস্তা অবরোধ

কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার অভিযোগ তুলে ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন। অবরোধের ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একযোগে ‘বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করা হবে।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কারিগরি শিক্ষাকে অবহেলা করা হচ্ছে ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই তারা রাস্তায় নেমেছেন।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল হওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি ও নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করা; ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে বয়সসীমাহীন ভর্তির সুযোগ বন্ধ করে উন্নতমানের চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু করা এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া।
এ ছাড়া ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগ বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ করা এবং শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি তুলেছেন- স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন প্রকৌশল কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস চালুর মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সাতরাস্তা মোড় ও আশপাশে যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে অনেক যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
জাতীয়
১৭ বিয়ে করা সেই বন কর্মকর্তা বরখাস্ত

নানা প্রলোভনে ১৭টি বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসা বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কবির হোসেন পাটোয়ারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে তার ১৭ বিয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজেই গণমাধ্যমকে বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন কবির হোসেন। তবে কবে বরখাস্তের চিঠি পেয়েছেন সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।
এর আগে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল খুলনার সোনাডাঙা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বিয়ের নামে প্রতারণা, যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। এর আগেও ২০১৯ সালে বাগেরহাটের মোংলার নাসরিন আক্তার দোলন একই অভিযোগে আদালতে মামলা করেছিলেন, যা এখনো বিচারাধীন।
সবশেষ গত ৯ এপ্রিল নতুন অভিযোগের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১১ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমান বরিশালে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগকারীদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। ওইদিন কাশিপুরে বন বিভাগের কোস্টাল সার্কেল অফিসে বসে দুই স্ত্রীসহ স্বজনদের লিখিত জবানবন্দি নেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কবির হোসেনকে বিভাগীয় শাস্তির অংশ হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের তুষপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারীর ছেলে কবির হোসেন এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। বন বিভাগের পদ ব্যবহার করে নারীদের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে তিনি এর আগেও দুবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। তবে সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির সুপারিশে তিনি চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
এ দিকে বরখাস্ত হওয়ার পাশাপাশি মঙ্গলবার বরিশাল মহানগর আদালতে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বাবলু। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।