ব্যাংক
ব্যাংক লেনদেনের নতুন সময়সূচি
আগামীকাল রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। লেনদেনের পরে অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা চলবে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।
শনিবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার পর কার্ফু মধ্যে বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে ব্যাংকের লেনদেনসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস চালু হয়। এর আগে গত সপ্তাহে তিনদিন (রবি, সোম ও মঙ্গলবার) সাধারণ ছুটি থাকে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর দেশ জুড়ে উত্তপ্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়। মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। এখনো কারফিউ বলবত আছে।
এদিকে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সব সরকারি-বেসরকারি অফিস চলবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
উচ্চ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এ কথা বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
‘পর্যালোচনার পর মুদ্রানীতি কমিটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত বর্তমান কঠোর মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখতে হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমলেও তা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ ব্যাংক এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি চালু রেখেছে। যেখানে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে এবং সরকারি ব্যয়ের জন্য নতুন অর্থ ছাপানো বাদ রাখা হয়েছে।
এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
প্রাইম ব্যাংক ও আইএফসির মধ্যে ৯০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি
বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি নির্ভর মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (এমএসএমই) সহায়তায় বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সদস্য ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সঙ্গে ৯০ মিলিয়ন ডলারের টার্ম লোন চুক্তি করেছে বেসরকারি প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। এই বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশের এমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সুবিধা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো, যার মাধ্যমে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং স্থিতিশীলতা বাড়বে।
বাংলাদেশের এসএমই খাতে প্রায় ১ কোটি উদ্যোক্তা রয়েছেন, যেখানে প্রায় ২৪ মিলিয়ন মানুষ নিয়োজিত রয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এখাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দেশের জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫ শতাংশ, ২০৩০ সালে এ অবদান বেড়ে দাঁড়াবে ৩৫ শতাংশে। যদিও এ খাতের উদ্যোক্তারা মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক সীমাবদ্ধতাসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে এখাতের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে অনেক সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে এ খাতের ৩৯ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন ঘাটতি কমাতে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রাহণ করা হয়েছে।
আইএফসির এই বিনিয়োগের প্রধান লক্ষ্য প্রাইম ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়িয়ে এমএসএমই খাতে অর্থায়ন বাড়ানো এবং এ খাতের অর্থায়ন ঘাটতি কমাতে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করা। এই উদ্যোগ এখাতে শুধু তাৎক্ষণিক তারল্য চাহিদাই পূরণ করবে না বরং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর জন্য অত্যাবশ্যকীয় খাতগুলোকেও সহায়তা করবে, বিশেষ করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ফলে যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সম্প্রতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রাইম ব্যাংক পিএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ এবং আইএফসির এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের রিজিওনাল ইন্ডাস্ট্রি ডিরেক্টর অ্যালেন ফরলেমু নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রাইম ব্যাংক পিএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশীদ বলেন, এই সহযোগীতা প্রাইম ব্যাংকের প্রতি আইএফসির আস্থা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিফলন। আমাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণে আইএফসির সাথে দশকব্যাপী দীর্ঘ অংশীদারিত্ব সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের প্রতি ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য আমরা আইএফসির প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের এমএসএমই ক্লায়েন্টদের সহায়তার জন্য ৯০ মিলিয়ন ডলারের নতুন এই অর্থায়ন নিঃসেন্দেহে আমাদের এমএসএমই পোর্টফোলিও বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আইএফসির এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের রিজিওনাল ইন্ডাস্ট্রি ডিরেক্টর অ্যালেন ফরলেমু বলেন, প্রাইম ব্যাংকে আমাদের বিনিয়োগ বাংলাদেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে নারী নেতৃত্বে পরিচালিত এমএসএমই খাতকে ক্ষমতায়ন করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এমএসএমই খাতে আর্থিক সুবিধা বাড়ানো এবং আর্থিক ইকোসিস্টেম শক্তিশালী করার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের সমন্বিত প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করতে চাই। আমরা আশা করি যে, আমাদের সমর্থন এমএসএমই খাতে শুধু আর্থিক সুবিধাই বাড়াবে না বরং বৃহত্তর বাজারের স্থিতিশীলতা বাড়াবে, যা বাংলাদেশের এমএসএমই খাতে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।
প্রাইম ব্যাংক পিএলসি, বাংলাদেশের একটি নেতৃস্থানীয় বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক। ২০২৩ সালে ব্যাংকের গ্লোবাল ট্রেড ফাইন্যান্স প্রোগ্রাম (জিটিএফপি)-এর অধীনে আইএফসি কর্তৃক ব্যাংকটি স্বীকৃত এবং পুরস্কৃত হয়েছিল। এই সুবিধাটি আইএফসি থেকে প্রাইম ব্যাংকের বিদ্যমান আর্থিক সহায়তা পেতে সহায়তা করে। আইএফসি থেকে পাওয়া সহায়তাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৫০ মিলিয়ন ডলারের ক্যাপিটাল লোন সুবিধা এবং গ্লোবাল ট্রেড ফাইন্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় ৮০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
জাকিয়া রউফ ব্যাংক এশিয়ার ভাইস চেয়ারম্যান পুনর্নির্বাচিত
ব্যাংক এশিয়ার ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন জাকিয়া রউফ চৌধুরী। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিনি পুনর্নির্বাচিত হন।
দেশের বেসরকারি ব্যবসায়িক খাতে জাকিয়া রউফের রয়েছে দীর্ঘ ৩৫ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা। শুরু থেকেই তিনি দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী র্যাংগস গ্রুপের একাধিক সহযোগী প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত।
বর্তমানে তিনি সি রিসোর্সেস গ্রুপ, র্যাংগস ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, র্যাংকস কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, র্যাংকস এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং জেন ন্যাচারাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান, একই সঙ্গে তিনি র্যাংকস্ রিয়েল এস্টেট লিমিটেড এবং র্যাংকস্ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জাকিয়া রউফ র্যাংগস লিমিটেড, র্যাংগস মোটরস লিমিটেড, র্যাংগস প্রপার্টিজ লিমিটেড, র্যানকন অটোস লিমিটেড, র্যাংকস ইন্টেরিয়র লিমিটেড, র্যাংকস অ্যাপ্লায়েন্স লিমিটেডসহ র্যাংগস গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ কমাতে ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক্সিটের সুবিধা
ব্যাংক খাতের প্রধান ক্ষত খেলাপি ঋণ। নানা পদক্ষেপ নিয়েও এ ক্ষত নিরাময় করতে পারছে না নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। উল্টো দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার ঋণ খেলাপিদের ‘এক্সিট সুবিধা’ দিতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন থেকে মাত্র ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে বিশেষ সুবিধা পাবে খেলাপিরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সুবিধা দিয়ে একটি নীতিমালা জারি করেছে।
নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণগ্রহীতার ব্যবসা, শিল্প বা প্রকল্প কখনো কখনো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে বন্ধ হয়ে যায় অথবা লোকসানে পরিচালিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে, ঋণ খেলাপি বা বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত হয়ে যায়, যা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির পর্যায়ে পড়ে না। গ্রাহকের এমন আর্থিক অবস্থার কারণে ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা না থাকা এমন ঋণ এক্সিটের আওতায় আদায় বা সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এক্সিটের আওতায় ঋণ আদায় বা সমন্বয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যাংকগুলো এক্সিটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি বা মানদণ্ড অনুসরণ করছে। তাই এসব সুবিধা দিতে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রয়োজন। এ অবস্থা বিবেচনায় ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখতে এবং ব্যাংকিং খাতে শ্রেণিকৃত ঋণ কমাতে একটি নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নীতিমালায় বলা হয়, এক্সিট প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকসমূহ এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদিত হবে। তবে, ব্যাংক তাদের নীতিমালায় নমনীয় কোনো শর্ত যুক্ত করতে পারবে না।
ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা কম এমন খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা প্রদান করা যাবে।
ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধপূর্বক এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক তা নিষ্পত্তির করবে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এক্সিট সুবিধা অনুমোদিত হতে হবে। তবে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের এক্সিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পাবে।
এ সুবিধার আওতায় মওকুফ যোগ্য সুদ পৃথক ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে এবং সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পর ব্লকড হিসাবে রক্ষিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে গণ্য হবে।
এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধ সূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের অধিক হবে না। তবে, পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসংগত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করতে পারবে।
বিশেষ নির্দেশনা
>> এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণের দায় সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এক্সিটের আগের ঋণের শ্রেণিমান বহাল থাকবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতা যথানিয়মে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। নিয়মিত সিআইবিতে রিপোর্ট করতে হবে।
>> এ সুবিধা আওতায় পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন হিসেবে গণ্য হবে না।
>> এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পূর্ব পর্যন্ত কোনো ধরনের নতুন ঋণ সুবিধা পাবে না।
>> এক্সিট সুবিধার আওতায় অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।
>> ঋণের বিপরীতে যথানিয়মে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে এবং ঋণ সমন্বয়ের পূর্বে ঋণের বিপরীতে গৃহীত জামানত অবমুক্ত করা যাবে না। তবে, ব্যাংক, গ্রাহক ও ক্রেতা আগ্রহী হলে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে আলোচ্য ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে ঋণ সমন্বয় করা যাবে।
>> এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির পর গ্রাহক পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ আদায়ে ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক এ নীতিমালা অনুসরণ করে খেলাপিদের সুবিধা দিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০২৪ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১.১১ শতাংশ। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা এবং তিন মাসে বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে ছিল এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা এবং গত ডিসেম্বরে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিল সরকার
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কম দেখা গেলেও শেষ সময়ে দ্রুত বেড়েছে। গত ২৭ জুন পর্যন্ত সরকার দেশের বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৮৪ হাজার ৮২ কোটি টাকা। যেখানে গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস অর্থাৎ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র ২৭ দিনে ব্যাংকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ২২ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। আবার রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রির কারণে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। ফলে বেশির ভাগ ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে রয়েছে। তবে ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির কারণে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেওয়া বন্ধ রেখেছে সরকার।
তবে গত অর্থবছরের হিসাব চূড়ান্ত হলে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়া, কাঙ্ক্ষিত বিদেশি ঋণ পাওয়া এবং সঞ্চয়পত্রে ঋণ না বেড়ে উল্টো কমে যাওয়ায় সরকারের ঘাটতি সংস্থানে ব্যাংকেই নজর দিচ্ছে সরকার। সাধারণভাবে সরকার ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাতের সুদহার বেড়ে ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হন। গত মে পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ জুন পর্যন্ত বাণিজ্যক ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের দায় শোধ হয়েছে ৫৩২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৩ লাখ ২০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে এবার ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত অর্থবছর ১৮ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। যদিও জুলাই-মে সময়ে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ উল্টো কমেছে ১৭ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।
এমআই