জাতীয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ শিক্ষামন্ত্রী!

কোটা আন্দোলন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনে বৈঠক করছেন। বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে হঠাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী রাত ৮টার দিকে ঢাবি ক্যাম্পাসে যান। বর্তমানে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশ করেছেন। সেখানে তিনি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলছেন।
এর আগে, দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ দিকে সন্ধ্যার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। বৃহস্পতিবার তারা সারাদেশে এ কর্মসূচি পালন করবেন।
এমআই

জাতীয়
ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় মানবসম্পদের ক্ষতি ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকার বেশি

ঈদুল আজহার ১২ দিনে (৩ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত) দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ২১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৬ হাজার টাকার মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
বুধবার (১৮ জুন) ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে রোড সেফটি।
ঈদযাত্রার ১২ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মানবসম্পদের ক্ষতির আর্থিক মূল্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক মূল্য এক হাজার ২১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৬ হাজার টাকার মতো। যেহেতু সড়ক দুর্ঘটনার অনেক তথ্য অপ্রকাশিত থাকে, সেজন্য এই হিসাবের সঙ্গে আরও ৩০ শতাংশ যোগ করতে হবে।
দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ যানবাহন বা সম্পদের ক্ষতি হয়েছে সেই তথ্য না পাওয়ায় সম্পদের ক্ষতির আর্থিক পরিমাপ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
রোড সেফটি বলছে, ঈদ উদযাপনকালে মাত্র ৪/৫ দিনে বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিবহন করার মতো মানসম্পন্ন নিরাপদ গণপরিবহন বাংলাদেশে নেই। ফলে মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে গন্তব্যে যাত্রা করেন এবং দুর্ঘটনার শিকার হন। দায়িত্বহীনতা ও অসচেতনতার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে।
সুস্থ, স্বাভাবিক ও নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে কমপক্ষে তিন বছরের একটি মধ্যমেয়াদি টেকসই সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ পরিকল্পনার অধীনে রেললাইন সংস্কার এবং সম্প্রসারণ করে ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে সড়কপথের মানুষকে ট্রেনমুখী করতে হবে। নদীপথ সংস্কার ও জনবান্ধব করতে হবে। সড়কে বিআরটিসির রুট বিস্তৃত করে বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সড়কের সব মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন বন্ধ করতে হবে। ঈদযাত্রায় পোশাক শ্রমিকরা যেন পর্যায়ক্রমে ছুটি উপভোগ করতে পারেন সেজন্য পরিকল্পনা সাজাতে হবে। পোশাক শ্রমিকদের জন্য অঞ্চলভিত্তিক যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব উদ্যোগ ঠিকমতো বাস্তবায়ন করলে পরবর্তী সব ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ হবে।
ফাউন্ডেশন মনে করে, যানবাহনের চালকরা তাদের নিয়োগপত্র, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকার কারণে মানসিকভাবে অস্থির থাকেন। তাদের মধ্যে জীবনবোধ ঠিকমতো কাজ করে না। সবসময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন। ফলে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। এ প্রেক্ষাপটে পরিবহন চালকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করলে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের সমন্বয় এবং ধারাবাহিকতা নেই। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ঈদের আগে-পরে ১২ দিনে দেশে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১২ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ১০৫৭ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ৪৭ জন ও শিশু ৬৩ জন।
তথ্যমতে, ১২১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১০৭ জন, যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৪৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫১ জন, অর্থাৎ ১৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
এসময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৮ আহত হয়েছেন। ৩২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। যার মধ্যে রয়েছে-
১.দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ-র সক্ষমতা বাড়াতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে; ৮. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৯. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ১০. গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে মোটসাইকেল ব্যবহার নিরৎসাহিত করতে হবে; ১১. ঈদের আগে-পরে সরকারী ছুটির সঠিকভাবে বিন্যাস করতে হবে; ১২. সড়ক, নৌ ও রেলপথে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; ১৩. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ১৪. গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে এবং ১৫. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
জাতীয়
দেশে ফিরেছেন ২৯ হাজার ৭৩ হাজি

পবিত্র হজ পালন শেষে মঙ্গলবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত ২টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২৯ হাজার ৭৩ জন হাজি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৯৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরেছেন ২৪ হাজার ৪৭৮ জন।
বুধবার (১৮ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এয়ারলাইনস, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস, ঢাকা ও সৌদি আরবের সূত্রে হজ বুলেটিনের আইটি হেল্প ডেস্ক জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৭৪টি ফিরতি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে ১০ হাজার ৮০, সৌদি এয়ারলাইনসে ১২ হাজার ২১৪ ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসে ফিরেছেন ৬ হাজার ৭৭৯ জন।
এদিকে, হজ পালন করতে গিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ৩২ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী। এদের মধ্যে ২১ জন মক্কায়, ১০ জন মদিনায় এবং একজন আরাফায় মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। এরপর একই দিন রাত ২টা ২০ মিনিটে চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে হজযাত্রীদের বহনকারী প্রথম বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় গত ১০ জুন। এদিন সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ‘এসভি-৩৮০৩’ ৩৭৭ হাজিকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ১০ জুলাই।
কাফি
জাতীয়
প্রস্তাবিত বাজেট হতাশার বাজেটে রূপান্তর হয়েছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

প্রস্তাবিত বাজেট হতাশার বাজেটে রূপান্তর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ফেলো ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘এই সরকার সাধারণ সরকার নয়, কিন্তু বাজেটে যে প্রস্তাব করা হয়েছে গতানুগতিক।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সিটিজেন প্লাটফর্ম ফর এসডিজি আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ অবহেলিতরা কী পেয়েছে’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় ফেলো ভট্টাচার্য বলেন, ‘যে প্রত্যাশা থেকে ৫ আগস্ট হয়েছিল এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে প্রয়োজন সামনে এসেছিল, বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়নি; পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর যে দাবি ছিল তা প্রতিফলিত হয়নি। ফলে প্রস্তাবিত বাজেট হতাশার বাজেটে পরিণত হয়েছে। ’
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাকে সংকুচিত করা হয়েছে। এর ফলে প্রস্তাবিত বাজেট একদিক সংশ্লিষ্ট বছরের জন্য বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, পাশাপাশি আগামী বছরের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ’
তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা ৬০০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করেছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতি ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০০ টাকা হয়েছে। এতে বাজেটে প্রকৃত অর্থেই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কমেছে। এর ফলে পরবর্তী যে সরকার আসবে এবং বাজেট প্রণয়ন করবে সে সরকারের কাছে থেকে আদায় করতে ন্যায্যতা হারাবে।
হিসাববিদ জিয়া হাসান বলেন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রি কমে গেছে, মূল্যস্ফীতির প্রভাবে এটা হয়েছে। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবে মূল্যস্ফীতির এ চিত্র প্রতিফলিত হয়নি।
ক্যাপিটাল মার্কেট একেবারে শেষ হয়ে গেছে; কারণ, সরকার বাজেটে ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য কিছু করেনি বলে মন্তব্য করেন আইসিএমএবি-এর সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন আহমেদ।
তৃতীয় লিঙ্গের সঞ্জিবনী সুধা বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দ থাকে কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। ফলে তৃতীয় লিঙ্গের জীবন মানের উন্নতি হয় না, কর্মসংস্থান হয় না। ফলে আয় নেই। তাই জীবন ধারণের জন্য পথে পথে মানুষের কাছে হাত পাততে হয়। বাজেটে এই শ্রেণির মানুষের জন্য বাজেটে আগেও থাকতো না, এবারও তাই হয়েছে। ’
তৃতীয় লিঙ্গের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়ে ব্যাংক থেকে নিজে চাকরিচ্যুত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মূলধারাতে আসার ক্ষেত্রে সরকার যেমন পাশে দাঁড়ায় না, আবার প্রতিষ্ঠানগুলোও সহায়ক ও মানবিক না।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
কাফি
জাতীয়
এসএসএফ’কে দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করে যেতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীকে (এসএসএফ) দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৮ জুন) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এসএসএফ-এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রঘোষিত ভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদানে পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি চারিত্রিক দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্ববোধ এবং মানবিক গুণাবলীর বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। সব ধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। এর ফলে নিরাপত্তা হুমকির ধরনও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। তাই শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসএসএফ সেই দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আশা করি, এসএসএফ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকি পর্যালোচনা করবে এবং তা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। সম্প্রতি এসএসএফ যমুনা ভবনের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করেছে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এসএসএফকে বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করতে হয়, যা অনেক সময় জনভোগান্তি সৃষ্টি করে। আমি বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি-যতটা সম্ভব জনভোগান্তি এড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি ফ্লাইটের জন্য প্রায় এক ঘণ্টা অন্যান্য ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকত, এতে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি হতো। আমি সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছি। আশা করছি, এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে।
জনবিচ্ছিন্ন না হয়ে, বরং জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য রেখে এসএসএফ তার দায়িত্ব সফলভাবে পালন করবে, বলেন অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি আরও জানান, এসএসএফ-এর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও সরঞ্জামাদির আধুনিকায়নের কাজ চলমান রয়েছে। বিশেষ করে গত বছরের ৫ আগস্ট বাহিনীর কিছু যান ও সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা দ্রুত সময়ের মধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খুব শিগগিরই এসএসএফ তাদের ১২ বছরের পুরনো VHF রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সর্বাধুনিক UHF সিস্টেম সংযোজন করবে। এতে তাদের অভিযানিক সক্ষমতা আরও বাড়বে।
তিনি জানান, বাহিনীর ইনডোর ফায়ারিং রেঞ্জ সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী মাস থেকে এটি চালু হবে। এ প্রকল্পের জন্য ভূমি বরাদ্দ ও অন্যান্য সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
জাতীয়
সচিবালয়ে আজও কর্মচারীদের বিক্ষোভ

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আজ বুধবারও (১৮ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন সরকারি কর্মচারীরা।
বেলা সোয়া ১১টায় কর্মচারীরা সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করছেন। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে আজকে বিক্ষোভ মিছিলে কর্মচারীদের সংখ্যা কম।
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে এ আন্দোলন হচ্ছে।
বিক্ষোভে কর্মচারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানবো না, ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কালো আইন’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘সারা বাংলার কর্মচারী, এক হও লড়াই কর’ স্লোগান দিচ্ছেন।
ঈদের ছুটির পর গত সোমবার (১৬ জুন) ফের আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। গতকালও তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।