অর্থনীতি
এনজিওর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বাড়ছে
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। যাদের একমাত্র ভরসা বেসরকারি নানা সংস্থা। এনজিও পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ ও বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা ঋণ পেয়ে থাকেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এপ্রিলের শেষ প্রান্তিক পর্যায়ে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করেছে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান। যা তার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল শেষে গ্রামীণ ব্যাংকসহ ১১টি ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান মোট ১২ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। যা ২০২৩ সালের একই সময়ে (এপ্রিল-২০২৩) এসব প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগই দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে। একই সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়ের পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার ৩০ কোটি টাকা।
বর্তমানে ক্ষুদ্রঋণ ও বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ৩ কোটি ৪১ লাখ গ্রাহক ১৩ হাজার ১৭৮টি শাখার মাধ্যমে ঋণ সেবা নিয়ে থাকেন। চলতি বছরের এপ্রিল শেষে সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক এবং এএসএ (আশা)। এই তিন প্রতিষ্ঠান মোট বিতরণ করা ঋণের ৭৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ বিতরণ করেছে।
দেশের মধ্যে কার্যক্রম চালানো শীর্ষ ১১ এনজিওর ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। যাদের বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার ১২ কোটি টাকা। গত এপ্রিলে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক। একই সময়ে ব্র্যাকের ঋণ আদায়ের পরিমাণ ৬ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। ব্র্যাকের বর্তমাণ ঋণের স্থিতি ৪১ হাজার ৩১৪ কোটি এবং বকেয়া ঋণ ১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা।
এনজিও প্রতিষ্ঠান আশা গত এপ্রিলে ঋণ বিতরণ করেছে ৩ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আদায়কৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা, বকেয়া ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। আশার ঋণের স্থিতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। গ্রামীণ ব্যাংক এপ্রিলে বিতরণ করেছে ১ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। তাদের ঋণ আদায়ের পরিমাণ ১ হাজার ৫০৫ কোটি, বকেয়া ঋণ ৪২১ কোটি টাকা। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের স্থিতি ১৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
এছাড়া আলোচিত সময়ে ব্যুরো বাংলাদেশ ৮৬১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। তাদের আদায়ের পরিমাণ ১ হাজার ১১১ কোটি, বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৩৪১ কোটি টাকা এবং ঋণের স্থিতি ১০ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। টিএমএসএস’র ঋণ বিতরণ ছিল ৬৯৬ কোটি, আদায় ৬৮৩ কোটি টাকা। এনজিও প্রতিষ্ঠান টিএমএসএস’র বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৩৬৪ কোটি টাকা এবং বর্তমান ঋণের স্থিতি ৫ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সৌরবিদ্যুতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ইন্দোনেশিয়া
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৫০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির জ্বালানি খাতের শীর্ষ কোম্পানি পিটি পারতামিনা পাওয়ার ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) যৌথভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করবে।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে কোম্পানি দুটির মধ্যে এ-সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি সই হয়। সিপিজিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও পারতামিনা পাওয়ার ইন্দোনেশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পরিচালক ফাদলি রহমান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হিরু হারতান্তো সুবুলো উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি পারতামিনা পাওয়ারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হলো। এ সমঝোতার আলোকে ৫০০ মেগাওয়াট সোলার প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে তারা। এ প্রকল্পে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। এজন্য যৌথ একটি কোম্পানি গঠন করে ৫০ শতাংশ করে শেয়ারে মালিকানায় থাকবে পারতামিনা ও সিপিজিসিবিএল।’
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। তিনি জানান, মহেশখালীতে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্য ক্ষেত্র রয়েছে। পারতামিনা ৫০০ মেগাওয়াট দিয়ে শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে সেখানে আরো বিনিয়োগ বাড়বে।
তিনি আরো জানান, ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য জ্বালানি আমদানি করছে বাংলাদেশ, বছরে যা প্রায় সাড়ে তিন মিলিয়ন টন। এছাড়া সেখান থেকে মিনারেল পণ্যও আমদানি হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে সৌরভিত্তিক বৃহৎ কোনো প্রকল্পে একক বিনিয়োগকারী হিসেবে প্রবেশ করবে ইন্দোনেশিয়া। এর আগে পটুয়াখালীর পায়রায় ৫০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) আধা মালিকানায় ‘বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (রিনিউয়েবল)’ নামে একটি যৌথ মূলধনি কোম্পানি গঠন করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে ১১টি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। বেসরকারি খাতে চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে নয়টি পিপিএ-আইএ স্বাক্ষরিত প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মোট ২৬৯ মেগাওয়াট। বেসরকারি খাতে চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে ২৯টি এলওআই স্বাক্ষরিত হয়েছে। এগুলোর মোট উৎপাদনক্ষমতা ২ হাজার ৬০৮ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনায় ২০৪১ সালের মধ্যে মোট ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এ পরিকল্পনায় ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি হবে তার মোট ১০ শতাংশ থাকবে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ। এ লক্ষ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষত জামালপুর, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, পায়রা, বাগেরহাটের রামপাল ও দেশের বিভিন্ন চরাঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশী অর্থায়নে সৌরবিদ্যুতের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
গ্যাস সরবরাহ আগামী সপ্তাহে বাড়তে পারে: প্রতিমন্ত্রী
আগামী সপ্তাহে গ্যাস সরবরাহ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের নসরুল হামিদ বলেন, চলতি সপ্তাহে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল। তবে সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালে নতুন ত্রুটির কারণে তা হয়নি। সিঙ্গাপুর থেকে ডুবুরি দল আসছে। টার্মিনালে ত্রুটি মেরামতের পর আগামী সপ্তাহে গ্যাস সরবরাহ বাড়তে পারে।
এর আগে বাংলাদেশ কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ও পিটি পারতামিনা পাওয়ার ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় বাংলাদেশে ৫০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে দুই প্রতিষ্ঠান।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নসরুল হামিদ বলেন, সরকার পরিবেশবান্ধব জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিভিন্ন উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪৭টি প্রকল্প চলমান। সেখান থেকে ৩৭৪৯ দশমিক শূন্য ৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এ ছাড়া প্রক্রিয়াধীন ৭৯টি প্রকল্প থেকে ৯৩১৮ দশমিক ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। বর্তমানে ১১টি সৌরভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ এবং পারতামিনা পাওয়ার ইন্দোনেশিয়ার পক্ষে স্ট্র্যাটেজিক পরিচালক ফাদলি রহমান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হিরু হারতান্তো সুবুলা বক্তব্য দেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ ও ক্যাসকেলের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত
পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে একসঙ্গে কাজের বিষয়ে বিজিএমইএ ও ক্যাসকেলের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ জুলাই) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ক্যাসকেলের (সাবেক সাসটেইনেবল অ্যাপারেল কোয়ালিশন) সিইও কলিন ব্রাউন ও বিজিএমইএ নেতাদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বলা হয়, পোশাক কারখানাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন ক্রেতাদের জন্য ভিন্ন আচরণবিধি এবং একাধিক অডিট সম্পাদন কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানগুলোর সময় এবং অর্থের অপচয় করে না, বরং প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অডিট প্রক্রিয়া জটিল এবং কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন কষ্টসাধ্য করে। এরকম প্রেক্ষাপটে পোশাক শিল্পে পরিবেশগত ও সামাজিক সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়ন ও অডিটের জন্য প্রটোকলগুলোকে একত্রিত করার বিষয়ে একসঙ্গে কাজের ব্যাপারে তারা সম্মত হন।
বৈঠকে সোশ্যাল ও টেকনিক্যাল অডিটের জন্য শিল্পে সর্বজনস্বীকৃত সমন্বিত আচরণবিধি (ইউনিফাইড কোড অব কনডাক্ট) প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি কচি বিশ্বব্যাপী ক্রেতা, প্রস্তুতকারক এবং শ্রমিকসহ সব স্টেকহোল্ডারের সুবিধার্থে এ ধরনের একটি সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়ার জন্য ক্যাসকেলকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটি ছাড়া শিল্পকে দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই করা সম্ভব হবে না।
ক্যাসকেলের সিইও বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প দুর্দান্ত অগ্রগতি অর্জন করলেও শিল্পে আরো করণীয় আছে। আমরা সাপ্লাই চেইনের সবাই চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। বিজিএমইএ ও ক্যাসকেল একসঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে সাপ্লাই চেইনজুড়ে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে অভিন্ন লক্ষ্য অর্জন করতে পারে, শিল্পের জন্য টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারে।
বৈঠকে শিল্পের আরো বিকাশের জন্য ডিউ ডিলিজেন্স ডাইরেকটিভের মতো আসন্ন প্রবিধানগুলো অনুসরণ করা এবং কর্মীদের কল্যাণ বাড়াতে কারখানাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, তথ্য শেয়ার, অনুশীলন ও উদ্ভাবনমূলক সমাধান প্রভৃতি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়।
উভয়পক্ষ একমত পোষণ করেন, ক্যাসকেল কারখানা পর্যায়ে আচরণবিধি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে, যাতে করে এ বিষয়গুলো প্রতিপালনে কারখানাগুলোর সক্ষমতা বাড়ে।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক আশিকুর রহমান (তুহিন), পরিচালক শামস মাহমুদ, পরিচালক আবরার হোসেন সায়েম, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল ও পরিচালক শেহরিন সালাম ঐশী।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন কমেছে বাংলাদেশিদের
চলতি বছরের মে মাসে দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ খরচ কমিয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা। এ ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরে খরচ কমেছে ৪১ কোটি টাকা আর বিদেশে কমেছে ৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে চলতি বছরের মে মাসে ৩ হাজার ১৯৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দেশের ভেতর লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। আর বিদেশে লেনদেন হয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ভিসা কার্ডে। ‘মাস্টার কার্ড’-এর মাধ্যমে ৫৪৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আর এমেক্স কার্ডের মাধ্যমে ৩১৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
সূত্র বলছে, দেশের ক্রেডিট কার্ডে মোট লেনদেনের প্রায় শতভাগই হয়েছে মার্কিন ব্র্যান্ড ভিসা, মাস্টার কার্ড ও এমেক্সের মাধ্যমে। ডিনারস কার্ড, কিউক্যাশ, জেসিভি ও ইউনিয়নপে ব্র্যান্ডের কার্ডের মাধ্যমে তেমন কোনো লেনদেনই হয়নি।
দেশের অভ্যন্তরে, বাইরে ও দেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোয়। দেশের অভ্যন্তরে এ খাতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫১ দশমিক ০৯ শতাংশ।
এছাড়া খুচরা কেনাকাটায় ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ, সেবার বিল পরিশোধে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ, নগদ উত্তোলনে ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ, ওষুধ ও ফার্মেসিতে ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ, পোশাক কেনাকাটায় ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, অর্থ স্থানান্তরে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, ট্রান্সপোর্টেশনে ৩ দশমিক ২০ শতাংশ, ব্যবসাসেবায় ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, পেশাগত সেবায় দশমিক ৭১ শতাংশ এবং সরকারি সেবায় দশমিক ৪১ শতাংশ লেনদেন হয়।
দেশভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের বাইরে লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার হয়েছে ভারতে, ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ; যার পরিমাণ ৭৬ কোটি টাকা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ৮ দশমিক ৩৮, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৭ দশমিক ৯৬, যুক্তরাজ্যে ৭ দশমিক ৬৮, সিঙ্গাপুরে ৭ দশমিক শূন্য ৩১ এবং কানাডায় ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নের দাবি ব্যবসায়ীদের
আমদানি-রফতানি সহজীকরণ এবং বাণিজ্য ত্বরান্বিতকরণে দ্রুত ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। সোমবার (১৫ জুলাই) এফবিসিসিআইর মতিঝিল কার্যালয়ে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) বিষয়ক এক কর্মশালায় এই দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি মাহবুবুল আলম।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করে মাহবুবুল আলম বলেন, দেশের অর্থনীতির আকার যত বড় হচ্ছে, ততই ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সব অংশীজনের মতামত নিয়ে চলতি বছরের মধ্যেই ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এটি বাস্তবায়নের ফলে সরকারের যেমন রাজস্ব বাড়বে, তেমনি ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কমবে বলেও মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
মাহবুবুল আলম আরও বলেন, বিএসডব্লিউ বাস্তবায়ন হলে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় কমবে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ আরও উন্নত হবে। যা ব্যবসা, বাণিজ্য এবং অর্থনীতিকে বেগবান করবে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা একটি মাত্র প্ল্যাটফর্ম থেকে বাণিজ্য সংক্রান্ত সব তথ্য জানতে পারবেন। এক জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় সব লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন।
এরইমধ্যে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডোর ট্রেড পোর্টাল এবং ট্রেড রেজিস্ট্রেশন মডিউল সম্পন্ন হয়েছে বলে কর্মশালায় জানান আয়োজকরা। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর, পরিবেশ অধিদফতর এবং সিএলপি প্রক্রিয়াকরণের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। অন্যান্য সংস্থার নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং সিএলপি প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিএসডব্লিউ প্রকল্পের পরিচালক এবিএম শফিকুর রহমান জানান, বিএসডব্লিউ সিস্টেমে আপাতত ১৯টি এজেন্সিকে যুক্ত করা হবে, যারা বিভিন্ন লাইসেন্সিং সেবা দিয়ে থাকে। এরইমধ্যে বিএসডব্লিউ পোর্টাল তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে এটি উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সমাপনী বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ আমিন হেলালী বলেন, বেসরকারি খাতের হাত ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। যদিও এতদিন আমাদের ব্যবসা, বাণিজ্য অনেকটা অগোছালোভাবেই এগিয়েছে। তবে এখন সময় এসেছে নিজেদের শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার। বেসরকারি খাতকে আরও শক্তিশালী করতে হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগিতা প্রয়োজন। ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়ন হলে ব্যবসার ব্যয় কমার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।
কর্মশালায় এফবিসিসিআইর পরিচালক, সাধারণ পরিষদের সদস্য, ব্যবসায়ী নেতা ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই