ধর্ম ও জীবন
অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা দান করলে সওয়াব হবে?
উপার্জনের ক্ষেত্রে ইসলাম সবসময় হালাল-হারামে গুরুত্ব দিতে বলেছে। কারণ, হারাম পন্থায় উপার্জন করলে বরকত নষ্ট হয়ে যায়। যার উপার্জন হারাম তার সারা জীবনই ধ্বংসের মুখে। কারণ, তার খাবার-দাবার, পোশাক সবই হারাম উপার্জনের এমনকি সন্তান-সন্ততির শরীরও হারাম খাবারে পূর্ণ। এক কথায় তার পুরো জীবন প্রতিষ্ঠিত হারামের ওপর। এমন ব্যক্তি অঢেল সম্পদ উর্পাজন করলেও বরকত থেকে বঞ্চিত। আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত।
তাই হালাল উপার্জনে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, এতে রয়েছে বরকত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে থাকে তাকে এর মধ্যে বরকত দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস, ২৩১১)
হালাল রিজিক অনুসন্ধান করা আবশ্যক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, অন্যান্য ফরজ কাজ আদায়ের সঙ্গে হালাল রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরজ।’ (বায়হাকী, হাদিস, ৪৬০)।
অপর এক হাদিসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা কেবল পবিত্র বস্তুই কবুল করেন। যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে এক মুষ্টি খেজুরও দান করে, আল্লাহ তা নিজ হাতে গ্রহণ করেন। এরপর তা ওই ব্যক্তির জন্য পরিচর্যা করতে থাকেন- যেমন তোমাদের কেউ উটের বাচ্চার পরিচর্যা করে। ওই সামান্য পরিমাণ খেজুর বাড়তে বাড়তে এক সময় পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়। (বুখারি, হাদিস, ১৪১০; মুসলিম, হাদিস, ১০১৪)
হাদিসের মাধ্যমে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, ইসলামে হারামে উপায়ে উপার্জনের কোনো স্থান নেই এবং একে বৈধতা দেওয়ার কোনো উপায় নেই। তবে কেউ যদি অবৈধভাবে উপার্জন করে ফেলে তাহলে তার জন্য এই সম্পদ নিজের কাছে রাখার অনুমতি নেই; প্রকৃত হকদারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। হকদারের খোঁজ না পেলে তা দান-সদকার নিয়ত না করে জনকল্যাণে ব্যয় করে দিতে হবে। এতে ওই ব্যক্তির কোনো সওয়াব হবে না। কারণ অবৈধ আয়ে ভালো কাজ করলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল করেন না এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদের সদকা কবুল করেন না। (মুসলিম, হাদিস, ২২৪; তিরমিজি, হাদিস, ০১; নাসায়ি, হাদিস, ১৩৯)
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, বান্দা হারাম পথে উপার্জন করবে, এরপর তা থেকে আল্লাহর পথে খরচ করবে এবং তাতে বরকত দেওয়া হবে বা সে তা থেকে সদকা করবে এবং তা কবুল করা হবে- এমন ধারণা অমূলক। বরং ওই ব্যক্তি মৃত্যুর পর সেই সম্পদ রেখে গেলে তা তাকে আরও বেশি জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে। (আহমাদ, হাদিস, ৩৬৭২; বাজ্জার, হাদিস, ২০২৬)
অন্য এক হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি হারাম উপার্জন করবে, এরপর তা সদকা করবে- সেই সদকায় কোনো সওয়াব হবে না; বরং অবৈধ উপার্জনের গুনাহের বোঝা তার ঘাড়ে চেপেই থাকবে। (ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৩২১৬; হাকিম, হাদিস, ১৪৪০)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
অত্যাচারীর ওপর যেভাবে আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অফুরন্ত সুযোগ দিয়ে রাখেন। মন্দ-ভালো সব ধরনের সুযোগ দিয়ে রাখেন। এজন্য নির্ধারিত সময় দেন তিনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ বিনয়ী হয়ে পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সম্বল তৈরি করেন।
পৃথিবীর জীবনে অহংকার, বড়াই করে অন্যের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেন না। পরোপকারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। সমাজে ভালো সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। মানুষের ভালোবাসা কুড়ান।
কেউ আবার রবের দেওয়া সুযোগের অপব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। অন্যের ওপর জুলুম, নির্যাতন, যাচ্ছেতাই আচরণ করেন। ক্ষমতার সামনে তারা এতোই অন্ধ হয়ে যান যে, পরিণতি, পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ভাবার ফুরসত থাকে না তাদের।
আচার-আচরণে তারা বুঝিয়ে দেন যে তাদের দমানোর অথবা উশৃঙ্খল জীবনের রাশ টানার কেউ নেই পৃথিবীতে। কোনো পরাশক্তিও তাদের কিছু করতে পারবে না। এমন বেপোরোয়া ভাবনা তাদের আরও বেশি উশৃঙ্খলা জীবনযাপনে উস্কে দেয়। তারা নিজেদের আরও বেশি অপরাজেয় ভেবে বসেন।
কিন্তু এই ক্ষমতা, শক্তি বা যাচ্ছেতাই জীবন চিরস্থায়ী নয়, আল্লাহ তায়ালা একদিন এর রাশ টেনে ধরেন। মানুষকে তার ক্ষুদ্রতা বুঝিয়ে দেন। যখন আল্লাহ তায়ালা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকা সীমালঙ্ঘনকারীদের পাকড়াও করেন, তখন তাদের কোনো কূট-কৌশল কাজ করে না। কোনো পন্থাই তাদের মুক্তি দিতে পারে না। ক্ষমতার লাগাম তখন পাল্টে যায়। এক সময় নিজের পক্ষে কাজ করা শক্তিগুলোই নিজের বিরুদ্ধে কাজ করা শুরু করে।
সীমালঙ্ঘনকারী প্রতাবশালীদের শেষ মুহুর্তের অসহায়ত্ব নিয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
الَّذِیۡنَ طَغَوۡا فِی الۡبِلَادِ ۪ۙ ١١ فَاَکۡثَرُوۡا فِیۡہَا الۡفَسَادَ ۪ۙ ١٢ فَصَبَّ عَلَیۡہِمۡ رَبُّکَ سَوۡطَ عَذَابٍ ۚۙ ١٣ اِنَّ رَبَّکَ لَبِالۡمِرۡصَادِ ؕ
যারা দেশে-দেশে অবাধ্যতা প্রদর্শন করেছিল। এবং তাতে ব্যাপক অশান্তি বিস্তার করেছিল। ফলে তোমার প্রতিপালক তাদের উপর শাস্তির কষাঘাত হানলেন। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সকলের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। (সূরা ফাজর, আয়াত : ১১-১৩)
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
اِنَّ بَطۡشَ رَبِّكَ لَشَدِیۡدٌ
তোমার রবের শাস্তি বড়ই কঠিন। (সূরা বুরুজ, আয়াত : ১২)
এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারীকে পৃথিবীতে সুযোগ ও অবকাশ দিয়ে থাকেন। আবার যখন তাকে ধরেন তখন আর ছাড়েন না। এই হাদিসের বর্ণনাকারী সাহাবী আবু মূসা আশ’আরী বলেন, তারপর রাসূল সা. কোরআনের এই আয়াতটি পাঠ করলেন, যেখানে বলা হয়েছে-
وَ كَذٰلِكَ اَخۡذُ رَبِّكَ اِذَاۤ اَخَذَ الۡقُرٰی وَ هِیَ ظَالِمَۃٌ ؕ اِنَّ اَخۡذَهٗۤ اَلِیۡمٌ شَدِیۡدٌ
তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও এ রকমই হয়ে থাকে যখন তিনি পাকড়াও করেন কোন জনপদকে যখন তারা যুলমে লিপ্ত থাকে। অবশ্যই তাঁর পাকড়াও ভয়াবহ, বড়ই কঠিন। (সূরা হুদ, আয়াত ১০২)
অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা যেমন পূর্ববর্তী অত্যাচারী জনপদসমূহকে ধ্বংস করেছেন, একইভাবে ভবিষ্যতেও তিনি অত্যাচারীদেরকে পাকড়াও করার ক্ষমতা রাখেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি সা. বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই অত্যাচারীদেরকে ঢিল দেন। কিন্তু যখন তাদেরকে পাকড়াও করেন, তখন কোন সুযোগ দেন না। (বুখারি, মুসলিম)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
পর্যটন ভিসায় ওমরাহ পালনের সুযোগ!
হজ মৌসুম শেষে গত মাস থেকে আবারও শুরু হয়েছে উমরাহর মৌসুম। উমরাহ পালন সহজ করে দিতে সৌদি আরব বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত, ভ্রমণ এবং পর্যটন ভিসাধারী সবাইকে উমরাহ করার সুযোগ দিয়েছে দেশটি। এর ফলে শুধু উমরাহর ভিসার জন্য কাউকে আর অপেক্ষা করতে হবে না।
এসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কারণে আগামী বছর দেড় কোটি মানুষ ওমরাহ পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা নিচ্ছে দেশটি। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অবকাঠামোর সম্প্রসারণ এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। যার মধ্যে সেবা দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশন করা হবে। এই খবর জানিয়েছে গালফ নিউজ।
সৌদি সরকারের একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওমরাহ উপলক্ষে মক্কা ও মদিনার ১৫টি ইসলামিক ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা ঢেলে সাজানো হবে। দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘ওকেজ’ জানিয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০টি স্থাপনা ঢেলে সাজানো এবং ওমরাহকারীর বার্ষিক সংখ্যা তিন কোটিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা হিসেবে ‘গেস্ট অব আল্লাহ’ নামের একটি প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে। ২০১৯ সালে থেকে এই প্রোগ্রাম চালু করা হয়।
গত বছর সৌদিতে সব মিলিয়ে ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ মক্কার পবিত্র কাবা শরীফে ওমরাহ পালন করেছেন। ‘গেস্ট অব আল্লাহ’ সেবা প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সবচেয়ে বেশি ওমরাহ পালন করেছেন পাকিস্তানি নাগরিকরা। যার সংখ্যা ছিল ২০ লাখ। এ ছাড়া, মিসর থেকে ১৭ লাখ এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ১৪ লাখ মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজের প্রাক-নিবন্ধন শুরু সোমবার
আগামী বছরের হজের প্রাক-নিবন্ধন সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে। রোববার (১১ আগস্ট) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত আগামী বছরের ২০২৫ (১৪৪৬ হিজরি) হজের প্রস্তুতিমূলক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১২ আগস্ট থেকে হজের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
প্রাক-নিবন্ধনের ভাউচারমূলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজে গমনেচ্ছুরা এই কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকে ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধনের অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বৈষম্য অবসানে ৭ দাবি জানিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
দেশের সার্বিক বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি আরও ৭ ধর্মীয় বৈষম্যের অবসান চান জনপ্রিয় বক্তা ও ইসলামি ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ। রোববার (১১ আগস্ট) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘যে বৈষম্যের কথা কেউ বলে না’ শিরোনামের এক পোস্টে তিনি এ বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, কোটা-কেন্দ্রিক বৈষম্যের অবসান হলেও আমাদের সমাজে আরো অনেক বৈষম্য বিরাজমান। নতুন বাংলাদেশে সেসব বৈষম্যেরও অবসান হোক, এই কামনা সবার।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, দুঃখের বিষয় হলো, কিছু বৈষম্য নিয়ে সমাজে আলাপ-আলোচনা থাকলেও একটি বৈষম্য নিয়ে কেউ কথা বলে না। সেটি হলো, দাড়ি-টুপি-হিজাব এবং এর ধারক-বাহকদের প্রতি বৈষম্য। এ দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেমদের সাথে যুগ যুগ ধরে নানা রকম বৈষম্যমূলক আচরণ চলে আসছে।
ফেসবুক পোস্টে তিনি পয়েন্ট করে কিছু বৈষম্যের তালিকা দেন। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো-
১. আমাদের সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের জাতীয় পুরস্কার দেয়ার রেওয়াজ থাকলেও আলেম সমাজ ও ইমাম-খতিবদের জন্য সে রকম কোনো ব্যবস্থা নেই।
২. অন্যদের ছোটখাটো অবদানও অনেক ফলাও করে প্রচার হয়। অথচ আলম-সমাজ ও ধার্মিকদের বড় বড় অবদানগুলোকেও অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়।
৩. শুধু মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের হওয়ার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকরি বা পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
৪. এ দেশে কোনো গানের কনসার্ট হলে মিডিয়াগুলো ফলাও করে তার নিউজ প্রচার করে। অথচ কনসার্টের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লোকের উপস্থিতির মাহফিলগুলো মিডিয়ার মনোযোগ থেকে বঞ্চিত থাকে।
৫. বাজেটের সময় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, এমনকি রিকশাওয়ালাদের কাছ থেকেও বাজেট ভাবনা জানতে চাওয়া হয়। অথচ আজ পর্যন্ত কোনো আলেমের কাছ থেকে বাজেট বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
৬. রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজে এমন অনেক ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণ দেখা যায়, যারা এ দেশের এক শতাংশ মানুষেরও হয়ত প্রতিনিধিত্ব করে না। অথচ সেসব বিষয়ে প্রচুর জনসম্পৃক্ত ও বিজ্ঞ আলেমদের অংশগ্রহণ সাধারণত দেখা যায় না।
৭. সকল যোগ্যতা থাকার পরও একজন টুপি পরিহিত বা শ্মশ্রুশোভিত যুবক যদি সংবাদ পাঠক হতে চায়, তাকে কি সংবাদ পাঠ করতে দেওয়া হবে? এটা কি ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়? এটা কি ধার্মিকদের প্রতি বৈষম্য নয়?
ফেসবুক বার্তার শেষ অংশে তিনি বলেন, এ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মস্থল, সবখানে দাড়ি-টুপি ও হিজাব পরিহিতরা বৈষম্যের শিকার হন। ইসলাম ও ইসলামপন্থিদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ এই সমাজের সাধারণ চিত্র। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
শিগগিরই দেশে ফিরছেন মিজানুর রহমান আজহারী
শিগগির দেশে ফিরছেন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি নিজেই।
আজ মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, অনেকে আমাকে মেসেজ করে ও ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে জানতে চেয়েছেন আমি কবে দেশে ফিরবো। আমি তাদের বলতে চাই, আমি দ্রুতই দেশে ফিরবো। আপনাদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষাতে রয়েছি আমি নিজেও। শিগগির সাম্য, মানবিকতার মুক্ত-স্বাধীন, বাংলাদেশে আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই।
দীর্ঘ ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, তাজা রক্তের মাধ্যমে যারা আন্দোলনকে সফল করেছেন সেই শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ও রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং এখনো কষ্ট করে যাচ্ছেন তাদের শুভেচ্ছা জানাই।
আন্দোলন সফরের পর দেশে যেসব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এ নিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারলেই সঠিকভাবে বিজয় উদযাপন হবে।
সংখ্যালঘুদের প্রতি অন্যায় না করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে অনেকে সুযোগ নিয়ে সংখ্যালঘুদের উপসনালয় ও স্থাপনায় চালাবে এবং ইসলামপন্থী ও মাদরসার ছাত্রদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে। তাই যারা এই বিজয়ে খুশি নয় তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বিশেষ করে মাদরাসার ছাত্রদের বলেন, আপনারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কেউ যেন তাদের ওপর আক্রমণ করতে না পারে যে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকুন। এসব ক্ষেত্রে যদি আমরা ভুল করে ফেলি তাহলে বাংলাদেশে ইসলাম অনেক পিছিয়ে পড়বে।
সদ্য পদত্যাগী স্বৈরাচার সরকারের পতনের ঘটনা সামনে এনে তিনি বলেন, ক্ষমতার দম্ভে আমরা নিজেদের প্রকৃত অবস্থা ভুলে যাই, যাচ্ছেতাই আচরণ করি মানুষের সঙ্গে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল কোনো অত্যাচারই দীর্ঘস্থায়ী নয়, তাই এসব ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, যারা নতুন সরকার ব্যবস্থায় আসবে তাদেরকেও এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে এবং শিক্ষা নিতে হবে। তাদেরকেও অত্যাচার পরিহারের পথ অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এক সরকার যায়, অন্যজন আসে, বিদ্বেষ-জিঘাংসা চলতেই থাকে। নতুন সরকার ব্যবস্থায় আমারা এমন কিছু দেখতে চাই না। আমরা ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এমআই