জাতীয়
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বিষয়ক সম্মেলন

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) যৌথ উদ্যোগে এবং চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, ঢাকাস্থ চীনের দূতাবাস, চায়না কাউন্সিল ফর দি প্রমোশন অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি) চায়না চেম্বার অফ ইন্টারন্যাশনাল কমার্সের (সিসিওআইস) সহযোগিতায় ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বেটউইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) চীনের বেইজিংয়ের চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইংয়ের শাংগ্রি-লা সার্কেল হোটেলে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক ব্যবসায়ীদের নিকট বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এবং বিভিন্ন দেশের সাথে পারস্পারিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধারাবাহিকভাবে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চীনের বেইজিংয়ের উক্ত সামিট আয়োজন করা হয়, যার প্রধান আলোচ্যসূচি ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয়, সহজতর ও লাভজনক দেশ হিসেবে চীনের ব্যবসায়ীদের নিকট তুলে ধরা।
শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (এসজেডএসই) ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (এসএসই) কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসিতে বিনিয়োগ করে ডিএসই’র ২৫% শেয়ার ধারণ করেছে। কৌশলগত অংশীদার হিসেবে ইতোমধ্যে ডিএসইয়ের বিভিন্ন প্রযুক্তিগত অবকাঠামো উন্নয়নে শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড কাজ করছে, যার মধ্যে ডিএসই’র ভি-নেক্সট প্ল্যাটফর্ম অন্যতম। এই ভি-নেক্সট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে কোনরকম তালিকাভুক্তি ছাড়াই স্টার্টআপ ও এসএমই কোম্পানি দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিকট শেয়ার বিক্রয় করার প্রস্তাব করে মূলধন উত্তোলন করতে পারে। এই শেয়ার বিক্রয় প্রস্তাব ভি-নেক্সট প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে চীনের স্টক এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে চীনসহ অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারীর কাছে পৌছাতে পারে।
চীনের বেইজিংয়ে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় সামিটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সামিটটি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির ভাষণে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং পর্যটনের মতো বিষয়ে চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি তথ্যপ্রযুক্তি, পর্যটন, কৃষি ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, রিয়েল স্টেট, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গ্রিন টেকনোলজি, টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় খাতে ব্যবসায় সম্প্রসারণ তথা বিনিয়োগের আহ্বান করেন এবং চীনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে গড়ে তোলা হাইটেক পার্ক ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন। এসময় বাংলাদেশের সস্তা ও দক্ষ জনশক্তি এবং আইটি ফ্রিল্যান্সারের কথা উল্লেখ করেন তিনি। ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ সহজ ও সুন্দর করতে সরকারের নেওয়া নানাবিধ উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য লোর একটিতে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি চীনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে পোর্টফোলিও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিরলসভাবে কাজ করছে বলে জানান। সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ডেরিভেটিভস মার্কেট ও বলিষ্ঠ বন্ড মার্কেট উন্নয়নের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
উক্ত সামিটে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেল (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। এতে আরো বক্তব্য রাখেন চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, হুয়াওয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং এবং চাইনেস কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিসি) চেয়াম্যান ওয়াং টংজহু।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম উক্ত অনুষ্ঠানে ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বেটউইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচক যেমন- উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার, বৃহৎ দেশীয় বাজার, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড, দক্ষ জনবল, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রভৃতি উল্লেখ পূর্বক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এবং সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রসংশা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের বলে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসাথে তিনি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের দৃঢ় ও সম্ভাবনাময় অবস্থানের চিত্র তুলে ধরে পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস করার জন্য ক্রমাগত উন্নয়নের নিমিত্ত বিএসইসি কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ উল্লেখ করেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি অন্যান্যের মধ্যে বলেন, বাংলাদেশে চীনা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। চীনা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশই সঠিক জায়গা।
উক্ত সামিটে গেস্ট অফ হোনোর হিসেবে বক্তব্য রাখেন চীন সরকারের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স এইচ.ই. এমএর. লি ফেই। একইসাথে সামিটে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান।
উক্ত অনুষ্ঠানে ‘প্যানেল ডিসকাশন বেটউইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না বিজনেস লিডার্স’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বিএএসআইএস)’ প্রেসিডেন্ট রাসেল টি আহমেদ, সংসদ সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, ‘ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই)’ প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, টাইগার নিউ এনার্জির সিইও এমএস. নিকলে মাও, ‘বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা এবং সিবিসি ফাইন্যান্সের এমআর. লেও উক্ত প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। প্যানেল আলোচনায় আলোচকবৃন্দ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
সামিট অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মোট ১৮টি সমঝোতা স্মারক বিনিময় হয় যার মধ্যে নগদ ও হুয়াওয়ে টেকনোলজির মধ্যকার, চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) ও নিংবো সিক্সিং কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যকার, বিলিয়ন ১০ কমিউনিকেশন লিমিটেডে ও সিএইচটিসি (হেংইয়াং) ইন্টেলিজেন্ট ইভি কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যকার, বিলিয়ন ১০ কমিউনিকেশন ও নিংবো সান ইস্ট সোলার কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যকার, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি ও শিঝুয়াং এনরিক গ্যাস ইকুইপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (সিআইএসমসি এনরিক) মধ্যকার এবং দেশবন্ধু গ্রুপ, সেমটেক্স ও চায়না কেমিকাল সিএনসিইসির মধ্যকার সমঝোতা স্মারক অন্যতম।
এছাড়াও সামিটে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ বিষয়ক ৬টি ব্রেক আউট সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যথা- ১) আপগ্রেডিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার: পেভিং ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড কানেক্টিভিটি, ২) টুওয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট টেকনোলজি & কমিউনিকেশন, ৩) একসেলেরাটিং দ্যা এনার্জি ট্রান্সিশন, ৪) বুস্টিং ট্রেড, বিজনেস এন্ড ইনভেস্টমেন্ট, ৫) ক্রিয়েটিং অপরচুনিটিজ ইন এগ্রিকালচার এন্ড আগ্রো-প্রসেসিং, ৬) অ্যাডভান্সিং বেঞ্চমার্ক ইন টেক্সটইল অ্যান্ড লেদার।
প্রায় সাত’শর বেশি অংশগ্রহণকারীর উপস্থিতিতে চীনে এই সফল সামিটটি আয়োজনের ফলশ্রুতিতে চীন ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বাংলাদেশের বৈদেশিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক সম্প্রসারণ হবে বলে উপস্থিত বিশেষজ্ঞগণ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য যে, চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কাফি

জাতীয়
বুধবার ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

ঢাকার ধামরাইয়ে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ধামরাই গ্রিডের ছয়টি ৩৩ কেভি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর ধামরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মহিষাসী ৩৩ কেভি ফিডারের সোর্স রাইজার পরিবর্তন এবং এ কে এইচ ৩৩ কেভি ফিডারের আর-ফেজ ক্ল্যাম্পের উচ্চ তাপমাত্রার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই সময় ধামরাই গ্রিডের টি-১ ট্রান্সফর্মারসহ বাস-১ বন্ধ থাকবে। ফলে ধামরাই, রেডিও, মহিষাসী, ইনসেপ্টা, এ কে এইচ ও ট্রান্সফর্মার-১—এই ৬টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে, যোগ করেন তিনি।
এদিকে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
কাফি
জাতীয়
অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে জুলাই সনদ প্রকাশ করবো: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে আমরা ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করবো বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার নতুন হাইকমিশনার সুসান রাইল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে এ কথা বলেন তিনি।
সাক্ষাতে অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রম, নির্বাচন প্রস্তুতি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘অনেক বছর পর মানুষ, বিশেষ করে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাওয়া তরুণরা, একটি বাস্তব ও মুক্ত ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি এটি একটি উৎসবমুখর এবং আশাব্যঞ্জক উপলক্ষ হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার ভিসা কার্যক্রম পুনরায় চালুর জন্য দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিসার আবেদন অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ৬৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন, যার মধ্যে ১৪ হাজার শিক্ষার্থী।
তার সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলো তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি বিশৃঙ্খল সময়ের পর আমরা এখন ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মনোযোগ রয়েছে সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর- যা একটি শক্তিশালী বাংলাদেশের ভিত্তি গঠনে সহায়ক।
আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে একটি মসৃণ ও শান্তিপূর্ণ উত্তরণ সম্ভব হয়। আগামী মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে আমরা ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করবো।’
এসময় নির্বাচনী সহায়তা বিষয়ে হাইকমিশনার রাইল বলেন, অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি ও পরিচালনাগত সক্ষমতা বাড়াতে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার অনুদান দেবে।
বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বার্ষিক ১৬ দশমিক ২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
হাইকমিশনার রাইল আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অভিবাসীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।’
তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস কর্মসূচির মাধ্যমে তৈরি হওয়া তিন হাজারের বেশি বাংলাদেশি অ্যালামনাই এখন দেশের অগ্রগতিতে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে।’
জবাবে অধ্যাপক ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বেশি স্কলারশিপ দেওয়ার আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান।
জবাবে হাইকমিশনার রাইল বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি আরও ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার মানবিক সহায়তা দিয়েছে বিভিন্ন অংশীদার সংস্থার মাধ্যমে। এর ফলে ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অস্ট্রেলিয়ার মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে।’
তিনি বলেন, ‘যখন মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে, তখন রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।’
বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব নিয়ে হাইকমিশনার রাইল বলেন, ‘এখানে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি ও গতিশীল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি মুগ্ধ।’
কাফি
জাতীয়
করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৮

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। ৩১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নতুন করে করোনা আক্রান্ত ১৮ জনসহ দেশে এই পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮৭৬ জনে। সেই সঙ্গে করোনায় দেশে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫০৬ জন।
মহামারি শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু’দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।
কাফি
জাতীয়
তেহরানের ৪০০ বাংলাদেশিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব

তেহরানের বাংলাদেশিদের স্থানান্তরিত করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। তেহরানের প্রায় ৪০০ বাংলাদেশিকে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব এ তথ্য জানান।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা বিষয়ে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী জানান, তেহরানে বাংলাদশিরা নিরাপদ স্থানে যেতে চান। ইতোমধ্যেই ১শ জন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তেহরানের ৪শ নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হবে। তারপর তাদের নিরাপদে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, তেহরানে বাংলাদেশি নাগরিক ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা হুমকির মধ্যে আছেন। তেহরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ইতোমধ্যেই স্থানান্তর করা হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের প্রায় ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হবে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েল ইরানে বিভিন্ন স্থানে সামরিক হামলা শুরু করে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানে প্রতিদিনই হতাহত বাড়ছে। এদিকে ইসরায়েলেও ইরান পাল্টা হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
কাফি
জাতীয়
একদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২৪৪ জন

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৪৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩৮ জনই বরিশাল বিভাগের। যদিও মঙ্গলবার ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি। এর আগের দিন সোমবার ও ডেঙ্গুতে মৃত্যুশুণ্য ছিল এবং আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৩৪ জন।
এই চলতি মাসের ১৭ দিনে মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ১২১ জন। আর সব মিলিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৬ হাজার ৪৬৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। এছাড়া এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩০ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩২ জন,ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১ জন এবং রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৪ জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২০৯ জন ডেঙ্গুরোগী। আর এ বছর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৯৮ জন। এর আগের বছর ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ৫৭৫ জন।
কাফি