জাতীয়
পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বে সম্মান পাচ্ছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতুকে ‘গর্বের প্রতীক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশকে যথাযথ মূল্যায়ন করছে।
তিনি বলেন, “এখন বাংলাদেশ শুনলেই মানুষ সমীহ করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। বাংলাদেশের জনগণ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজের সমাপনী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সূধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
গত দু’বছরে পদ্মা সেতুর টোল প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলের মত তাঁরও সন্তষ্টি ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, আমি টাকার অংক দিয়ে এটা বিচার করবো না। কারণ এই সেতু আমাদের গর্বের সেতু। এটা টাকার অংক দিয়ে বিচার করার নয়।
বিশ^ ব্যাংকের ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের প্রসংগে তিনি বলেন, “আমি শুধু এটুকু বলতে চাই এই একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে অন্তত সেই মর্যাদা দিয়েছে, আগে যারা কথায় কথায় আমাদের ওপর খবরদারি করতো, আর ভাবখানা ছিল এরা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারেনা, সেই মানসিকতাটা বদলে গেছে। মানুষ এখন গর্ব করে আন্তর্জাতিকভাবে বুক ফুলিয়ে চলত পারে। এটাই সবথেকে বড় পাওয়া”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন বাংলাদেশের নাম শুনলেই মানুষ সমীহ করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। বাংলাদেশের জনগণ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়নি, সফল হয়েছে এবং আমরা এখন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ। সেই সাথে আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি পাশাপাশি প্রজন্মের পর প্রজন্মের উন্নত জীবনের জন্য নেদারল্যান্ডের সাথে চুক্তি করে ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নও আমরা শুরু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, “এটাই সবথেকে বড় পাওয়া যে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা আর এই পতাকা আজকে সারাবিশে^ গর্বের সাথে এগিয়ে যাবে। আমরা এগিয়ে যাব অপ্রতিরোধ্য গতিতে। যত বাধা আসুক ইনশাল্লাহ অতিক্রম করে জাতির পিতার সে আদর্শ বাস্তবায়ন করেই এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”
পদ্মা সেতু নির্মাণ বন্ধে দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের অনেক বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের জনগণের টাকায় সেতুটি নির্মাণ করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন সবাই না করছে আর আমি যখন বলেছি আমি করবো। সে সময় দেশের জনগণ আমার সঙ্গে ছিল। আর আজকে সে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করতে পেরেছি যা আমার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। আর কৃতজ্ঞ আমার দেশবাসীর কাছে।
তিনি বলেন, এই পদ্মা সেতুটা একটি জটিল স্ট্রাকচার। কারণ আমাজনের পরে সবথেকে খরস্রোতা হচ্ছে এই পদ্মা নদী। এই জটিল পরিস্থিতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো নদীর পার ভেঙ্গেছে, নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, একে একে সবকিছু অতিক্রম করে আমরা এই সেতুটি নির্মাণ করেছি।
প্রধধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে দুর্যোগে মৃত্যুবরণকারি এবং সেতুর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং প্রয়াত, তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন এবং প্রকৌশলী, গবেষক, ও বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সেই পদ্মা নদীকে দু’কূলে বেঁধে দেওয়া আর এই সেতু নির্মাণ করা, এই জটিল কাজের সাথে যারা জড়িত সেই সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কৃতর্পক্ষ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নিবেদিত কর্মকর্তা-কর্মচারি, দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞগণ, নিরাপত্তার তদারকিতে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারি সংস্থা এবং নির্মাণ শ্রমিক বৃন্দ তাদের প্রতি আজকে আমি আমার কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতেই আজ আমি এখানে এসেছি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম প্রকল্প সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্মৃতিচারন করে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামান্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
২০০১ সালের ৪ জুলাই মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় ভিত্তিপস্তর স্থাপন ও নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ২৫ জুন এই স্থানে পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন যান চলাচলের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়। এরআগে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়ায় বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণের কাজ চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)। গত দুই বছরে পদ্মা সেতু দিয়ে ১ কোটি ২৭ লাখ যানবাহন চলাচল করেছে। চলতি বছরের ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে যান চলাচল করেছে প্রায় ১৯ হাজার। প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পদ্মা সেতু হওয়ার সুফল বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পদ্মাপাড়ের মানুষ আমরা সবসময় কষ্ট ভোগ করতাম, আসতে-যেতে। প্রথমে ১৯৫২ সালে দাদার সঙ্গে আমরা ঢাকায় যেতে নৌকায় পার হই এই পদ্মা। চার দিন চার রাত লেগেছিল। তখন আব্বা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) জেলে। এই যাতায়াতে কত মানুষের জীবন গেছে। মানুষ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আজকে আর কেউ সেবা বঞ্চিত হয় না।’
শেখ হাসিনা ’৭৫ পরবর্তী সময়ে বিদেশে বাংলাদেশের করুণ ভাবমূর্তির কথা স্মরণ করে বলেন, ক্ষমতা ছিল না, বিদেশে গেছি, তখন বাংলাদেশের নামটা শুনলে কেউ জিজ্ঞাসা করত, এটা কি ভারতের কোনও অংশ? জিজ্ঞেস করত, এদেশে তো শুধু ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। মিসকিন হিসেবে আমাদেরকে হিসেব করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট, ব্যথার ছিল। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন জাতির কোনো মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারব না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটা কি ধরনের বাংলাদেশ?
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে বাধ সাধায় ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে পারিনি। ওই সময় অনেক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিট পাইনি। বাংলাদেশের সম্পদ না বেচায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। শেখ মুজিবের মেয়ে কখনও দেশের সম্পদ বেচে ক্ষমতায় আসে না।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ
আজ শনিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে। তবে দিবসটি যতটা না উৎসবমুখর তার চেয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে বেশি সোচ্চার শিক্ষকরা। এ বছর বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘শিক্ষকের কন্ঠস্বর: শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’।
দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা ও গুণী শিক্ষকদের সম্মাননার আয়োজন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদিদিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায়, বিশ্বিবদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ। এবং ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রধান।
মানুষ গড়ার কারিগর হলেও শিক্ষকরা নিম্ন বেতনে চাকরি করে যাচ্ছেন। প্রাথমিক থেকে উচ্চ স্তরের শিক্ষকরা পর্যন্ত নানা দাবি আদায়ে মাঠে রয়েছেন। এদের মধ্যে চার লাখ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের এন্ট্রি পদ থেকে দশম গ্রেড ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
চলে গেলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী
সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে তিনি রাজধানীর মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
হাসপাতালে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার ছেলে মাহী বি চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার বাবা রাত ৩টা ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পরে মাহী বি চৌধুরী জানান, শনিবার সকাল ৮টায় মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
পরে বাদ জোহর বারিধারা ডিপ্লোম্যাটিক জোনের বাইতুল আতিক সেন্ট্রাল জামে মসজিদে হবে দ্বিতীয় জানাজা। রোববার সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় জানাজা হবে।
এরপর বাদ জোহর গ্রামের বাড়িতে (দয়হাটা, মজিদপুর, মুন্সীগঞ্জ) চতুর্থ জানাজা শেষে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। গত বুধবার ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে রাজধানীর উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
৯৫ বছর বয়সী সাবেক রাষ্ট্রপতি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি আগেও একাধিকবার এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন বলে জানা যায়। নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। খ্যাতিমান চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে (প্রখ্যাত মুন্সেফ বাড়ি) নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৮ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সেসময় তিনি দলটির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ছিলেন। জিয়াউর রহমান সরকারে উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন তিনি। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপর ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। সেই দলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আসিয়ান সংলাপে অংশীদার হতে মালয়েশিয়ার সমর্থন চান ড. ইউনূস
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন অর্ন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২৫ সালে আসিয়ানের আসন্ন সভাপতি পদে মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানাই। আমরা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য মালয়েশিয়ার সক্রিয় ভূমিকার অপেক্ষায় রয়েছি।
দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আনোয়ার ইব্রাহিমের সফর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দুই মাস আগে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর এটি হচ্ছে প্রথম বাংলাদেশ সফর। এই সফর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মালয়েশিয়ার সমর্থনের স্বীকৃতি।
দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা উভয়েই দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো জোরদার করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ড. ইউনূস বলেন, আলোচনায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিপ্লব নজিরবিহীন গণআন্দোলন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাধীনতা ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়বিচারপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ মালয়েশিয়ার অবিচল সমর্থন ও সহযোগিতার প্রশংসা করি।
অভিন্ন মূল্যবোধ, আস্থা ও জনগণের কল্যাণের স্বীকৃতির মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সরকারপ্রধান বলেন, তারা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন করার বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত রোহিঙ্গা ইস্যুটি সমাধানের জন্য তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ইস্যুটি আসিয়ান ফোরামে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।
ঢাকায় অনুষ্ঠেয় চতুর্থ যৌথ কমিশনের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে তিনি দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, তারা কৃষি, জ্বালানি, যোগাযোগ, সুনীল অর্থনীতি, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার ও সংকল্প ব্যক্ত করেছি।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে আজ বিকেলে ঢাকায় আসেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম দুপুর ২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে প্রধান উপদেষ্টা তাকে স্বাগত জানান এবং সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ঢাকা ছাড়লেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী
সংক্ষিপ্ত সফর শেষে ঢাকা ছেড়ে গেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে বহনকারী বিমান মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে।
এদিন দুপুর ২টায় ইসলামাবাদ হয়ে ঢাকায় আসেন আনোয়ার ইব্রাহিম। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। পরে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফের বৈঠক করেন তারা। বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস কনফারেন্স করেন দুই শীর্ষ নেতা। বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১১ বছর পর মালয়েশিয়ান কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন। শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম কোনো শীর্ষ নেতা হিসেবে ঢাকা সফরে এলেন আনোয়ার ইব্রাহিম। সফরকালে তার সঙ্গে ছিল মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আরও জনশক্তি রপ্তানিতে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
বাংলাদেশ থেকে যাতে আরও দক্ষ ও আধা দক্ষ জনশক্তি মালয়েশিয়ায় যেতে পারে সে ব্যাপারে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গভবনে মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এ সহযোগিতা চান বলে তার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা জানানো হয়েছে।
এর আগে বঙ্গভবনে পৌঁছালে মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি।
মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, তার এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগামীতে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, শ্রমবাজার এবং রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে মালয়েশিয়ায় সহযোগিতা চান।
মালয়েশিয়া আসিয়ানের সভাপতি হওয়ায় আনোয়ার ইব্রাহিমকে অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ আশিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে আগ্রহী। মালয়েশিয়া এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনশক্তি রপ্তানির গন্তব্য। আগামীতে যাতে আরও দক্ষ জনশক্তি মালয়েশিয়ায় যেতে পারে সে বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহযোগিতা কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।
সাক্ষাৎকালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। বাংলাদেশি জনশক্তি মালয়েশিয়ার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
এসময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং রাষ্ট্রপতির সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।