অর্থনীতি
ভোমরা বন্দর আগামী দিনের প্রাণকেন্দ্র হবে: প্রতিমন্ত্রী
ভোমরা বন্দরের সেবা কার্যক্রম পেপারলেস করার লক্ষ্যে বেনাপোল ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের পর তৃতীয় বন্দর হিসেবে ভোমরা স্থলবন্দরে অটোমেশন চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দরের ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের ই- পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১২ শত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থলবন্দরটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। আগামী দিনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে ভোমরা বন্দর। এক কথায় এটি ‘হিরো’ পোর্ট হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের (জিএটিএফ) অর্থায়নে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে সম্পাদিত ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম প্রতিবেশী দেশের সাথে পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম সচল রাখার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সকল স্থলবন্দরে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, ভোমরা বন্দরে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সুবিধা-অসুবিধা আছে। নতুন কোনো কিছুতে ধীরে ধীরে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাই। ব্যবসাবান্ধব ও ব্যবসাকে আরও স্মুথ করার জন্য ভোমরা বন্দরে ই-পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধন করা হলো। স্থলবন্দরগুলোতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সন্ত্রাসীগোষ্ঠী যদি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ না নিতো, তাহলে চ্যালেঞ্জগুলো থাকত না। আমরা স্থলবন্দরগুলোর আপডেট করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান, সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সুইস কন্টাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (জিএটিএফ) ডিরেক্টর ফিলিপ আইলার, সুইসকন্টাক্টের ডিরেক্টর (গ্লোবাল প্রোগ্রামস) বেনজামিন ল্যাং, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী ও এইচ আর মাকসুদ খানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না: অর্থ উপদেষ্টা
স্বচ্ছতা না থাকলে অনেকেই পার পেয়ে যায়। তবে একটা মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করব আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে ১১তম আইসিএসবি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিগত সময়ে অনেক অপরাধ হয়েছে। আমরা কিছুদিনের জন্য এসেছি। সব কাজ করতে পারবো না। তবে আমরা নিশ্চিত করবো যাতে সবাই শাস্তি পায়। আমরা একটা ম্যাসেজ দিতে চেষ্টা করছি, অন্যায় করে কেউ কিন্তু পার পাবেন না। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আসবেন।
বাংলাদেশের পুরো সুশাসন নিয়েই আমরা চিন্তিত জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, সরকারি কোনো অর্থই যেন অপচয় না হয়। অনেক অর্থের অপচয় হয়েছে, জবাবদিহিতা ছিল না। গত সময়ে অনেকেই অনেক কিছু করেছে। সবাইকে হিসাব দিতে হবে। পার্থিব ও পরকালে দুই জায়গায় হিসাব দিতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় রোল প্লে করে বেসরকারি খাত। কোম্পানির উপর যদি আস্থা না থাকে তাহলে বিদেশি বিনিয়োগের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। এক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা অনেক। হিসাব প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত থাকেন তারা আসলে থার্ড আই হিসেবে কাজ করেন। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য কোম্পানি সেক্রেটারি বা অ্যাকাউন্টেন্টদের অনেক ভূমিকা রয়েছে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আমাদের যে জনশক্তি আছে তাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনীতি দ্রুত সময়ে ঘুরে দাঁড়াবে। এরই মধ্যে অনেক সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অনেক সম্পদ লুট করা হয়েছে। ব্যক্তিগত হোক আর দেশের সম্পদ হোক, অপচয় বা দুর্নীতি করা যাবে না। যেসব দুর্নীতি হয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এতদিন কোনো জবাবদিহি ছিল না। অনেক অনিয়ম হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। কারণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বেশির ভাগই হয় বেসরকারি খাতে। আমাদের আস্থা ধরে রাখতে হবে। ব্যাংকিং খাতে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা এর নেতিবাচক ফলাফল লক্ষ্য করছি। বিনিয়োগের পরিবেশ ধরে রাখতে হবে। যদি আস্থা না থাকে তাহলে বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আসবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন করপোরেট গভর্ন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এবং আইসিএসবি-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এম নুরুল আলম প্রমুখ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংক নোট থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে শেখ মুজিবের ছবি
দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোট থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দেওয়া হতে পারে বলে বাংলাদেশে ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে। সব ধরনের ব্যাংক নোটের নতুন ডিজাইন চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নকশার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি বাদ যেতে পারে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থবিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব এলিশ শরমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে নতুন নোটের জন্য নির্দিষ্ট নকশার প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ করেছে।
অনুরোধে নতুন মুদ্রার নকশা প্রবর্তনের তত্ত্বাবধানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সরকার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি রাখতে চাইলে নতুন ডিজাইনের নোট ছাপানোর কোনো প্রয়োজন হতো না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নতুন ডিজাইন ও বৈশিষ্ট্যের নোট প্রচলনে কী ধরনের ডিজাইন করা সমীচীন হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির সুপারিশ গ্রহণপূর্বক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থবিভাগে প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
বর্তমানে বাংলাদেশের ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে। কোনো কোনো নোটের দুপাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এছাড়া ধাতব মুদ্রাগুলোতেও তার ছবি রয়েছে।
নতুন ডিজাইনের এ প্রবর্তনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে প্রতিষ্ঠিত মুদ্রামান থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার মাত্র দুদিন আগে ৫০০ ও ১০০০ টাকার ব্যাংক নোটে শেখ মুজিবের ছবি আরও বেশি স্পষ্ট করে ছাপাতে নতুন দুটি ডিজাইন এবং ২০ টাকা ও ১০০ টাকার নোটের মুদ্রণ পদ্ধতি পরিবর্তন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর বিভিন্ন নোটের নতুন ডিজাইন করে সরকারের কাছে তা জমা দিতে ছয় মাস সময় চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির নির্দেশিকা অনুসারে প্রতিটি নোটের জন্য চারটি ভিন্ন ডিজাইন তৈরি করা হবে।
পরে এ কমিটির অনুমোদন নিয়ে ডিজাইনগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে। তবে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসতে ২০ থেকে ২২ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান এক কর্মকর্তা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শেখ মুজিবের ছবি-সম্বলিত নোট পরিবর্তন করা হবে কি না — সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
নকশার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই নতুন নোটের জন্য সুপারিশ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি নোটের চারটি ডিজাইনের মধ্যে অন্তত একটি ডিজাইনে শেখ মুজিবের ছবি যুক্ত করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের ছবিযুক্ত নোটগুলো অনুমোদন করেছিলেন।
নতুন নোটের অনুমোদন প্রক্রিয়া একই পদ্ধতিতে হবে। চারটি নকশা তৈরি করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এটির ডেপুটি গভর্নর-১-এর নেতৃত্বে মুদ্রা ও ডিজাইন অ্যাডভাইজরি কমিটির কাছে নকশাগুলো জমা দেবে।
এ কমিটিতে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এবং চিত্রশিল্পীরা থাকেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার আগে নকশাগুলো তারা পর্যালোচনা করবেন।
মন্ত্রণালয় তারপর নকশাগুলো পর্যালোচনা করবে এবং অনুমোদন পাওয়ার পর একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র বা সরাসরি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে কোনো বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে নোটগুলোর জন্য নতুন প্লেট তৈরি করা হবে।
প্লেট তৈরির প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা জটিলতার কারণে নতুন নোট প্রবর্তনের পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন নোটের ছাপার তদারকি করবে সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এটির উচ্চ মূল্যমান নোটের (১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা) বর্তমান কাগজের মজুত ও আমদানিতব্য কাগজ দ্বারা আনুমানিক ১৩ মাস মুদ্রণ কার্যক্রম চলমান রাখা যাবে।
এর ফলে নতুন ডিজাইন চূড়ান্ত এবং প্রস্তুত করার সময় বর্তমান ডিজাইনের নোটগুলো বাজারে প্রচলিত থাকবে।
১৮ সেপ্টেম্বর অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘অনুমোদিত ১০০০, ৫০০, ১০০ ও ২০ টাকার নোটের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের কার্যাবলী প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে [হাসিনা সরকারের পতন] উক্ত অনুমোদন মোতাবেক বাস্তবায়নাধীন কার্যক্রম চলমান রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে আপনাদের মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হলো।’
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এটি নতুন সরকারি নির্দেশিকাগুলোর ওপর ভিত্তি করে নকশার কাজ চালিয়ে যাবে, যার মধ্যে নোট থেকে শেখ মুজিবের ছবি সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
ব্যাংক নোটের নতুন এ সিরিজ অনুমোদিত হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করবে যে, কাগজের বর্তমান স্টক এবং উচ্চ মূল্যমান নোটগুলো পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কয়েক বছরে নতুন ডিজাইন করা নোটগুলির সঙ্গে যেন প্রতিস্থাপন করা হয়।
ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশি মুদ্রায় শেখ মুজিবের ছবি একটি বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্য। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়। এসব নোটের প্রত্যেকটিতেই শেখ মুজিবের ছবি ছিল।
তবে পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের সময়ে নতুন নতুন নোট প্রচলনের পাশাপাশি পুরোনো নোটগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি সম্বলিত ১০ ও ৫০০ টাকার নোট ছাপে। আর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ মুজিবের ছবিযুক্ত ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন চালু করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।
এরপর সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাগুজে নোটেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে ২০১১ সালের ১১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ২, ৫, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সাত বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিনগুণ
গত ৭ বছরে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। সাত বছরে তা এক লাখ ৩৭ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা বেড়ে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা হয়েছে।
খাত হিসাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এরপরই রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর তুলনা কম খেলাপি ঋণ বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০২৪ সালে ১ জুলাই বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। সাত বছরে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬৮ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ বা ২১৫ শতাংশ।
সাত বছর আগে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বর্তমানে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশ।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। যাদের খেলাপি ঋণের হার ৩০ থেকে ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল, এখনো খারাপ। বাকি চারটি ব্যাংকের অবস্থাও খারাপ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ার কারণে খেলাপি হয়েছে এসব ঋণ। ক্ষেত্র বিশেষে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে আরও খারাপ হয়েছে।
বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ দুই হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। সাত বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা।
সাত বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের হার ছিল ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৩২ দশকিক ৭৭ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার বেশি। এর মধ্যে তিনটির ৪০ শতাংশ আর একটি খেলাপির হার ৩০ শতাংশ। সাত বছর আগেও এমন অবস্থা ছিল না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর।
রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে গত সাত বছরে। দেশে কর্মরত বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার কম। এসব ব্যাংক নীতি কঠোরভাবে পরিপালন করার কারণে ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
তথ্যে দেখা যায়, বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সাত বছর আগে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার প্রায় একই ছিল। ব্যাংকেরগুলোর ঋণ বিতরণের পাশাপাশি খেলাপি ঋণের হার একই হারে বৃদ্ধির কারণে পরিমাণ বাড়লেও খেলাপির হার বাড়েনি।
বর্তমানে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ২৩০ কোটি টাকা। যা সাত বছর আগে ছিল দুই হাজার ৩২১ কোটি। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাবিস্তানের বিতরণ করা ঋণের প্রায় পুরোটাই খেলাপি। অন্যদিকে কমার্শিয়াল ব্যাংক সিলনের খেলাপি ঋণের হার এক শতাংশ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশে প্রথম ড্রোন কারখানা স্থাপনে চুক্তি, ব্যয় সাড়ে ৪ কোটি ডলার
বাংলাদেশি কোম্পানি স্কাই বিজ লিমিটেড ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে (বেপজা ইজেড) মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি, যা মূলত ড্রোন হিসেবে পরিচিত) তৈরির কারখানা স্থাপন করবে।
বেপজাধীন ইপিজেডসমূহ ও বেপজা ইজেড এলাকায় এটি হতে যাচ্ছে ড্রোন তৈরির প্রথম কারখানা যেখানে ৫৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এ লক্ষ্যে, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ঢাকার বেপজা নির্বাহী দপ্তরে স্কাই বিজ লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর এবং স্কাই বিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসীম উদ্দিন আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৭ হাজার ৩১৪ পিস বিভিন্ন ধরনের ড্রোন তৈরি করবে যা কৃষিকাজে কীটনাশক স্প্রে, অগ্নিনির্বাপণ, জরুরি উদ্ধারকাজ, পণ্য সরবরাহ, সিনেমাটোগ্রাফি, ম্যাপিং প্রভৃতি কাজে ব্যবহৃত হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় স্কাই বিজ লিমিটেডের প্রশংসা করে বলেন, বেপজা সর্বদা বৈচিত্র্যময় পণ্যে বিনিয়োগ উৎসাহিত করে। তিনি ড্রোনের মতো একটি উচ্চপ্রযুক্তির বৈচিত্র্যময় পণ্য তৈরির লক্ষ্যে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে নির্বাচনের জন্য স্কাই বিজ লিমিটেডকে ধন্যবাদ জানান। ড্রোন তৈরির এই উদ্যোগের প্রশংসা করে নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ড্রোন তৈরিতে বিনিয়োগের পথিকৃৎ হিসেবে এবং রপ্তানি বাস্কেটকে প্রসারিত করতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূণ ভূমিকা রাখবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পাঁচ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রির তারিখ ঘোষণা
বাংলাদেশ ব্যাংকে ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বন্ড বিক্রির জন্য নিলাম অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর)। বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে মঙ্গলবার ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বন্ড বিক্রির নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এ নিলামে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অভিহিত (লিখিত) মূল্যের বন্ড ইস্যু করা হবে। এ বন্ডের জন্য বার্ষিক কাট অব ইয়েল্ড হারে কুপন বা মুনাফা ষাণ্মাষিকভিত্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, নিলামে শুধু সরকারি সিকিউরিটিজের প্রাইমারি ডিলারের ভূমিকায় নিয়োগ পাওয়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিড দাখিল করতে পারবে। তবে অন্যান্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও নিজস্ব খাতে তাদের ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের জন্য প্রাইমারি ডিলারের মাধ্যমে নিলামে বিড দাখিল করতে পারবে।
অভিহিত (লিখিত) মূল্যে প্রতি ১০০ টাকা মূল্যের বন্ড ক্রয়ের জন্য কাঙ্ক্ষিত প্রাইস ও বন্ড ক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখ করে নিলামে সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থাপিত এফএমআইর মাধ্যমে বিড দাখিল করতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
তবে বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতি নিয়ে ম্যানুয়াল বিডস ইন সিলড কভারস পদ্ধতিতে বিড দাখিল করা যাবে।
এদিকে নিলামে অংশগ্রহণের বিস্তারিত নির্দেশনা এরই মধ্যে প্রাইমারি ডিলারসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এমআই