আন্তর্জাতিক
ব্যাংক ডাকাতি থেকে মন্ত্রিসভা, গল্পকেও যেন হার মানালেন আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী

পকেটে ফুটো পয়সাও ছিল না। তারপরও স্বপ্ন দেখতেন কোটিপতি হওয়ার। সেই স্বপ্নের ঘোরে কৈশোরেই লুট করে নেন একটি ব্যাংক। তার পর থেকেই দারিদ্র্যের কষাঘাত আর বঞ্চনার জীবন থেকে মুক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা মাথায় জেঁকে বসে গ্যাটন ম্যাকেনজির।
খুব সহজে ও দ্রুত ওপরে ওঠার সিঁড়ি হিসেবে অপরাধজগৎকে বেছে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণভিত্তিক মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর (কালারড) এই যুবক। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন গ্যাংস্টার।
তবে একসময় সেই অপরাধের জগৎ থেকে বের হয়ে শুরু করেন ব্যবসা-বাণিজ্য। খনি থেকে শুরু করে নাইট ক্লাব—বিনিয়োগ করেন নানা খাতের ব্যবসায়। সেখানেও আসে সাফল্য। তবে তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে এর চেয়েও বড় উচ্চতায়।
একসময়ের অপরাধজগতের এই নেতা জীবনযুদ্ধের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মন্ত্রিসভায়। নতুন সরকারের অধীন দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর।
ম্যাকেনজি অবশ্য রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন অনেক আগেই। গড়েছেন একটি রাজনৈতিক দলও। মিশ্র জাতিগোষ্ঠীই দলটির সবচেয়ে বড় সমর্থক।
গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় নির্বাচন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সিরিল রামাফোসা। তবে তাঁর নেতৃত্বাধীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) এবার নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করেন রামাফোসা। গত রোববার তাঁর মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দেন ম্যাকেনজিকে।
মন্ত্রী হওয়ার পর ৫০ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, ফুটবল খেলার পোশাকে একজোড়া বুট হাতে বসে আছেন তিনি। যেন বুটজোড়া পায়ে দিয়েই মাঠে নেমে পড়বেন। ওই ছবির শিরোনামে ম্যাকেনজি লেখেন, ‘শুভকামনা জানিয়ে পাঠানো সব বার্তার জন্য ধন্যবাদ। আমি শিগগিরই উত্তর দেব। কাজে নেমে পড়তে হবে। তাই এখন নিজেকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত আছি।’
ম্যাকেনজি যেভাবে সব প্রতিকূল পরিস্থিতি উতরে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন, তা দক্ষিণ আফ্রিকায় নজির সৃষ্টি করেছে। ১৬ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগেই তিনি প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করেন। এরপর পুরোদস্তুর গ্যাংস্টার বনে যান। সাত বছর কাটান কারাগারে। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শপথ নেন নিজেকে বদলে ফেলার। স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনসংগ্রামের গল্প তুলে ধরেন তিনি।
২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক পাবলিক ব্রডকাস্টার এসএবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাকেনজি বলেন, ‘আমার পকেটে হয়তো ১২ র্যান্ড (দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রা) ছিল। কিন্তু আমার মনের মধ্যে ছিল বিলিয়ন র্যান্ড। আর এই বিষয়ই মানুষ বোঝার চেষ্টা করে না। তারা যা নেই, তা নিয়েই ভাবে, তা পাওয়ার জন্য কী করতে হবে, সেদিকে মনোযোগ দেয় না।’
ম্যাকেনজির বক্তব্য এখন স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করছে, দিচ্ছে অনুপ্রেরণা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাক পাচ্ছেন। তাঁর জীবনী নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন বই।
কারাগারে ম্যাকেনজির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ক্যানি কুনেন নামের এক কয়েদির। পরবর্তী সময়ে তাঁর সঙ্গে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি নাইট ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। জিম্বাবুয়েতে শুরু করেন খনির ব্যবসা। যৌথ উদ্যোগে আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে তাঁদের।
দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আইওএলের তথ্য অনুসারে, নাইট ক্লাবটি একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। কেপটাউনে ম্যাকেনজির নামে নিবন্ধিত ক্লাবের একটি শাখার বিরুদ্ধে ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাবটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তখন ম্যাকেনজি বলেছিলেন, ‘ক্লাব করা নিয়ে আমি আগ্রহী নই। অন্য প্রকল্প নিয়ে আমি ব্যস্ত। আমরা জার ব্র্যান্ডের (এই ব্র্যান্ডের অধীন ক্লাবটি পরিচালিত হতো) ইতি টেনেছি। এটি নিয়ে কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই।’
বর্তমানে রাজনীতিবিদ হিসেবেই বেশি পরিচিত ম্যাকেনজির। ২০১৩ সালে তিনি প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্স নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। বন্ধু ক্যানি কুনেনকে দেন দলের নির্বাহীর দায়িত্ব।
এক দশকের বেশি সময় পর জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের ২ শতাংশ নিজেদের পক্ষে আনতে সক্ষম হয়েছে দলটি। ওয়েস্টার্ন কেপের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নিজেদের ভালো অবস্থানের জানান দেয় দলটি।
রাজনৈতিক দলটির স্লোগান—‘ওনস বাইজা নি।’ আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবহৃত এই কথার অর্থ, ‘আমরা ভয় পাই না।’ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর। সংসদে দলটি এই জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ম্যাকেনজি বলেন, ‘প্যাট্রিওটিক অ্যালায়েন্সের হাত ধরে প্রথমবারের মতো মিশ্র জাতিগোষ্ঠীর কেউ সংসদে জায়গা করে নিল। আমরাই একমাত্র দল, যেটি সংসদে সব বর্ণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাগিসো পোই বলেন, সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নির্বাচনী এলাকায় ম্যাকেনজির বেশ কদর আছে।
ম্যাকেনজি মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার শিশুদের নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। খেলাধুলায় শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে মাদকাসক্তি ও অপরাধের হার কমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।
তবে ম্যাকেনজি চেয়েছিলেন পুলিশবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তাঁর দাবি, জীবনের একটা সময় একটি অপরাধী চক্রের নেতা ছিলেন। তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় অপরাধের উচ্চ হার কমাতে তিনিই সবচেয়ে ভালো কিছু করতে পারেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলো ভারত

২০২০ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। এর অধীনে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহণ করতে পারতো। গত সপ্তাহে বাংলাদেশকে দেওয়া সেই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত।
ভারত এই পদক্ষেপ কেন নিলো, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ভারতের বন্দরগুলোতে যানজট তৈরি হচ্ছে। পণ্য পরিবহণ করতে বহু সময় লেগে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ওই জট কাটাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নেপাল-ভুটানে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। অর্থাৎ ওই দুই দেশে ভারতের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য করতে পারবে বাংলাদেশ।
রণধীর আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও জানিয়েছেন ভারত চায় বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্ক। আমরা গণতান্ত্রিক সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা বাংলাদেশ গঠনের পাশে আছি।
এদিকে ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত জানিয়েছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। দুই দেশের মধ্যে যে টানাপড়েন চলছে, তার জেরেই ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মতে, বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্য এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আরও একটি নজির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে কোনো আপস করেন না। এই পদক্ষেপ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ অবৈধ ৫০৬ শ্রমিক আটক

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের মেদান ইম্বিতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। অভিযানে ৫০৬ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক জাকারিয়া শাবান জানান, মেদান ইম্বি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অভিবাসীদের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত ছিল। এখানকার অনেক দোকানঘরের উপরের তলা ভাড়া নিয়ে অবৈধ অভিবাসীরা বসবাস করত।
অভিযানকালে পালানোর চেষ্টাকালে দুই বিদেশি পুরুষ আহত হন। এছাড়া উঁচু হিলের জুতা পরা এক মহিলাও পালাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ ডিপার্টমেন্টের ইমার্জেন্সি মেডিকেল রেসপন্স সার্ভিস ইউনিট তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হওয়া অভিযানে মোট ৮৯৫ জনকে পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে ৭৪৯ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক এবং ১৪৬ জন স্থানীয়। আটকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি ছাড়াও নেপালি (১৪২ জন), ইন্দোনেশিয়ান (১০৯ জন) এবং কিছু ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কান নাগরিকও রয়েছেন।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, আটকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বৈধ কাগজপত্র না থাকা, ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া এবং ওয়ার্কিং ভিজিট পাসের অপব্যবহার। অনেক কর্মীকে দেখা গেছে যাদের জোহরের ওয়ার্কিং ভিসা থাকলেও তারা কুয়ালালামপুরে অবস্থান করছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের মন্তব্যকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বললো ভারত

ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আহ্বানকে অপ্রয়োজনীয় ও লোক দেখানো বলে দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আমরা ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ সরকার মুসলিমদের ওপর হামলা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তাহানির ঘটনার নিন্দা জানায় বলেও উল্লেখ করেছেন শফিকুল আলম।
এরর জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে তুলনা করার একটা চেষ্টা।
গত সপ্তাহে মুসলিম-অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি জেলায় এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে অগ্নিসংযোগ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ড. ইউনূস বাংলাদেশকে বের করে আনছেন: হিলারি ক্লিনটন

বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনে মুখবন্ধ লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্টলেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। এতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন।
হিলারি লিখেছেন, গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন এক অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীর পতনের পর একজন সুপরিচিত নেতা জাতিকে গণতন্ত্রের দিকে পরিচালিত করার জন্য এগিয়ে আসেন—তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কয়েক দশক আগে ড. ইউনূস বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি লাখ লাখ দরিদ্র ব্যক্তিকে (যাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই ছিলেন নারী) ঋণ প্রদান করেন যাতে তারা ব্যবসা গড়ে তুলতে পারে এবং তাদের পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে পারে। ইউনূস পিছিয়ে পড়া নারীদেরকে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এবং তাদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ইউনূসের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল যখন তিনি তৎকালীন গভর্নর বিল ক্লিনটন এবং আমাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একই ধরনের কর্মসূচি স্থাপনে সহায়তা করার জন্য আরকানসাসে ভ্রমণ করেছিলেন। তারপর থেকে, আমি বিশ্বের যেখানেই ভ্রমণ করেছি, আমি তার কাজের অসাধারণ প্রভাব দেখেছি – অনেক জীবন পরিবর্তিত হয়েছে, সম্প্রদায়গুলোর উন্নতি হয়েছে এবং তাদের আশার পুনর্জন্ম হয়েছে।
তার মতে, মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনছেন। তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার পুনরুদ্ধারে কাজ করছেন, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করছেন এবং একটি ন্যায়সঙ্গত ও মুক্ত সমাজের ভিত্তি স্থাপনে এগিয়ে যাচ্ছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। পরদিন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করার পরে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীত করেন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।
মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিমের মধ্যে একজন। এবছর টাইম ম্যাগাজিন তার নাম বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বিমান হামলা, নিহত ৩৮

ইয়েমেনের রাস ইসা জ্বালানি বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১০২ জন। হুথি পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আল মাসিরাহর সূত্র দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
হুথি পরিচালিত সংবাদ মাধ্যমের বরাতে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা।
দেশটির স্বাস্থ্য-বিষয়ক অফিসের বরাতে আল মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনীর এই হামলার লক্ষ্য হুথি জঙ্গি গোষ্ঠীর জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা। হামলায় ৩৮ জন নিহত হওয়ার পাশপাশি ১০২ জন আহত হয়েছেন।
হুথিরা হতাহতের যে সংখ্যা বলছে এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পেন্টাগনের তরফে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
তবে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে বলছে, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল হুথিদের ক্ষমতার অর্থনৈতিক উৎসকে ভেঙে দেওয়া।
গত মাসে হুথিদের বিরুদ্ধে বড় আকারের হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে যে লোহিত সাগরের জাহাজে হুথিদের আক্রমণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা থামবে না।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুথিরা লোহিত সাগরে চলাচলকারী বেশ কিছু জাহাজে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। হুথিরা বলছে যে তারা গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ইসরায়েলের সাথে সংযুক্ত জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সময় তারা জাহাজে হামলা বন্ধ করে দেয়। যদিও গত মাসে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ আবারও শুরু হলে হুথিরাও হুঙ্কার দিয়েছিল— তারা আবারও লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালাবে। তবে শেষ পর্যন্ত হামলার কোনো দাবি এখনও করেনি হুথিরা।
জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বৃহস্পতিবারের হামলাটি সবচেয়ে বড় হামলাগুলোর মধ্যে একটি।
হুথি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্চ মাসে দুই দিনের মার্কিন হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।