অর্থনীতি
এক বছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১৩ বিলিয়ন ডলার
![এক বছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি ১৩ বিলিয়ন ডলার সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/09/dollar-1.jpg)
আমদানির দায় পরিশোধে সহায়তা দিতে গত অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গেল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিক্রির পরিমাণ ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। এ নিয়ে গত তিন অর্থবছরে বাংলাদেশ বিক্রি করেছে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রি। গ্রস রিজার্ভ এখন ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। তিন বছর আগে যা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে ছিল। আর নিট রিজার্ভ ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কিছু বৈদেশিক ঋণের অর্থ যোগ হওয়ায় গত কয়েক দিনে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমদানি কমানো, অন্যদিকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে। তবে বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ কমা এবং আগের ঋণ পরিশোধের চাপের কারণে আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি রয়েছে। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যের ওপর যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে ডলার সংকটের তেমন উন্নতি হয়নি। ব্যাংকগুলোর সংকট সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে। বেশির ভাগ ডলার দেওয়া হয়েছে সরকারি খাতের জ্বালানি, সার ও খাদ্য আমদানির দায় মেটাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রি করেছিল ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছরে বিক্রি করে ৭৬২ কোটি ডলার। ২০২১ সালের আগস্টের আগ পর্যন্ত ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি ছিল। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করে, তার চেয়ে বাজার থেকে কিনতে হয়েছে বেশি। ফলে ওই সময় রিজার্ভ দ্রুত বাড়ে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজারে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রির বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছিল ৭৯৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনার মধ্যে মানুষের চলাচল সীমিত থাকায় হুন্ডি কমে রেমিট্যান্স অনেক বেড়েছিল। ওই সময়ে বৈশ্বিক চাহিদা কম থাকায় সুদহার তলানিতে নামে। তখন বাংলাদেশ বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ আরও বাড়ানোর নীতি নেয়। এতে করে রিজার্ভ দ্রুত বাড়ে। এখন সেই দায় পরিশোধে চাপে পড়েছে দেশ। আবার ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের ৮৪ থেকে ৮৫ টাকার ডলার এখন ১১৮ থেকে ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। একদিকে সুদহার বৃদ্ধি, আরেকদিকে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে।
চলমান সংকটের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ও আইএমএফসহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার ঋণ। গত বৃহস্পতিবার আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আবার আইডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া গেছে আরও ৯০ কোটি ডলার। গত জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। গত ৪৭ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ২৩০ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে রিজার্ভের সামান্য উন্নতি হয়েছে।
রিজার্ভ আসলে কত
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের এখন তিনটি হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের ঋণের শর্ত মেনে গত বছরের জুলাই থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করতে হচ্ছে। সে অনুযায়ী জুন শেষে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। আর নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। আগের পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব গণনা পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। এর মানে এক বছরে রিজার্ভ কমেছে আরও ৪ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। সে অনুযায়ী কমেছে ২ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। দেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ উঠেছিল সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
অর্থনীতি
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা ১৮ জুলাই
![নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা ১৮ জুলাই সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/03/taka-1-1.jpg)
আগামী ১৮ জুলাই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের ষাণ্মাসিক মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই)। এটি ১৬ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় পাস হবে। তার আগে ১৪ জুলাই মুদ্রানীতি ঘোষণা সংক্রান্ত মূল কমিটি সভা করবে। আগামী বুধবার অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, গবেষণা সংস্থা এবং সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় ষান্মাসিকের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে নীতি সুদহার ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছিল। নতুন সিদ্ধান্ত মতে নীতি সুদহার ৭.৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়। এর ফলে টাকার সরবরাহ কমানোর কথা ছিল। কিছুটা নগদ টাকা কমলেও মূল্যস্ফীতি না কমে উল্টো বেড়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
শরীয়াহভিত্তিক শাখার অর্থ সাধারণ ব্যাংকিংয়ে ব্যবহার নয়
![শরীয়াহভিত্তিক শাখার অর্থ সাধারণ ব্যাংকিংয়ে ব্যবহার নয় সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/06/বাংলাদেশ-ব্যাংক.jpg)
ইসলামিক বা শরিয়াহভিত্তিক শাখায় রক্ষিত সাধারণ হিসাবের অর্থ কনভেনশনাল (সাধারণ বা শরীয়াহ ভিত্তিক নয়) ব্যাংকিং কার্যক্রমে ব্যবহার করা যাবে না। ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা ও উইন্ডোর গ্রাহকদের কনভেনশনাল শাখা ও উপশাখাগুলোর অনলাইনে ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা কীভাবে দেবে এমন নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। গাইডলাইন্স ফর কনডাক্টিং ইসলামিক ব্যাংকিং গাইডলাইন্সে ইসলামিক ব্যাংক এবং কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখার মাধ্যমে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম অধিকতর সম্প্রসারণ ও গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা, উইন্ডোর গ্রাহকদের কনভেনশনাল শাখা ও উপশাখাগুলোতে বেশ কিছু শর্তে অনলাইনে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
শর্তগুলো হলো- গ্রাহকদের ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানে শাখা ও উপশাখায় ইসলামিক ব্যাংকিং হেল্প ডেস্ক থাকতে হবে। ইসলামিক ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে ইসলামিক ব্যাংকিং ডেস্কে পদায়ন করতে হবে। ইসলামিক ব্যাংকিং ডেস্কের মাধ্যমে শুধু ব্যাংকের অনুমোদিত ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা বা উইন্ডোর গ্রাহকদের অনলাইনভিত্তিক আর্থিক লেনদেন তথা গ্রাহক হিসাবে অর্থ জমা, উত্তোলন ও স্থানান্তর সুবিধা দেওয়া যাবে। ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথক ‘ইসলামিক কোর ব্যাংকিং’ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। ইসলামিক ব্যাংকিং লেনদেন ইসলামিক ব্যাংকিং শাখায় রক্ষিত সাধারণ হিসাবের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। ইসলামিক ব্যাংকিং শাখায় রক্ষিত সাধারণ হিসাবের অর্থ কনভেনশনাল ব্যাংকিং কার্যক্রমে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রাহক হিসাব খোলা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম ইসলামিক ব্যাংকিং ডেস্কের মাধ্যমে সম্পাদন করা যাবে না। ইসলামিক ব্যাংকিং ডেস্কের মাধ্যমে অনলাইনে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে শাখাসমূহের দর্শনীয় স্থানে ‘অনলাইন ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হয়’ মর্মে বিজ্ঞপ্তি,ব্যানার, প্লেকার্ড, ফেস্টুন প্রদর্শন করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রপ্তানি খাতে বিকল্প নগদ সহায়তায় নিয়োগ হবে অডিট ফার্ম
![রপ্তানি খাতে বিকল্প নগদ সহায়তায় নিয়োগ হবে অডিট ফার্ম সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/06/bangladesh-bank-4.jpg)
পণ্য রপ্তানিতে ৪৩টি খাতের নগদ সহায়তা কমিয়ে কিছুদিন আগে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার বিকল্প নগদ সহায়তা দিতে অডিট ফার্ম নিয়োগ দিতে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এই নির্দেশনা অনুসরণ করে ব্যাংকগুলোকে অডিট ফার্ম নিয়োগ দিতে হবে। তবে নিয়োগের পর তিন বছরের বেশি একটি অডিট ফার্ম একই ব্যাংকে নগদ সহায়তা/রপ্তানি ভর্তুকির কেস নিরীক্ষার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে না বলেও নির্দেশনায় জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের নগদ সহায়তা বা রপ্তানি ভর্তুকির আবেদনপত্র নিরীক্ষার লক্ষ্যে ব্যাংকের হিসাব নিরীক্ষায় নিয়োজিত নিরীক্ষা ফার্মের সমান সংখ্যক নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগ করা যাবে। তবে, নিয়োজিত নিরীক্ষা ফার্ম অপেক্ষা অতিরিক্ত নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগ আবশ্যক হলে সে বিষয়ের যৌক্তিকতা, সংশ্লিষ্ট ফার্ম থেকে বিগত সময়ে ব্যাংকটিতে নিয়োজিত থাকার তথ্য, নগদ সহায়তার কেসের সংখ্যা ও প্রয়োজনীয় প্রাসঙ্গিক তথ্যসহ নিরীক্ষা ফার্মের সংখ্যা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।
ব্যাংকগুলোকে নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগের সকল ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে সেগুলো হলো- নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ফার্ম (সিএ বা সিএমএ) ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না তা যাচাই করতে হবে। নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকারী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পূর্বানুমোদন থাকতে হবে।
ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ এবং এ আইনের আওতায় জারি করা ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা ফার্ম তালিকাভুক্তি) বিধিমালা, ২০২২-এর তফসিল-১, অনুচ্ছেদ ৪ এর নির্দেশনাসহ এই বিষয়ে অন্যান্য নির্দেশনা পরিপালন করতে হবে।
ব্যাংকের হিসাব নিরীক্ষায় কিংবা নগদ সহায়তা বা রপ্তানি ভর্তুকির কেস নিরীক্ষার লক্ষ্যে একাধারে তিন বছরের জন্য নিয়োজিত কোনো নিরীক্ষা ফার্ম পরবর্তী তিন বছরের জন্য একই ব্যাংকে নগদ সহায়তা বা রপ্তানি ভর্তুকির কেস নিরীক্ষার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে না। নগদ সহায়তা বা রপ্তানি ভর্তুকির কেস নিরীক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সার্কুলারের প্রযোজ্য নির্দেশনা যথারীতি বহাল থাকবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ কমাতে ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক্সিটের সুবিধা
![খেলাপি ঋণ কমাতে ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক্সিটের সুবিধা সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/06/bangladesh-bank1.jpg)
ব্যাংক খাতের প্রধান ক্ষত খেলাপি ঋণ। নানা পদক্ষেপ নিয়েও এ ক্ষত নিরাময় করতে পারছে না নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। উল্টো দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার ঋণ খেলাপিদের ‘এক্সিট সুবিধা’ দিতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন থেকে মাত্র ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে বিশেষ সুবিধা পাবে খেলাপিরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সুবিধা দিয়ে একটি নীতিমালা জারি করেছে।
নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণগ্রহীতার ব্যবসা, শিল্প বা প্রকল্প কখনো কখনো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে বন্ধ হয়ে যায় অথবা লোকসানে পরিচালিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে, ঋণ খেলাপি বা বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত হয়ে যায়, যা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির পর্যায়ে পড়ে না। গ্রাহকের এমন আর্থিক অবস্থার কারণে ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা না থাকা এমন ঋণ এক্সিটের আওতায় আদায় বা সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এক্সিটের আওতায় ঋণ আদায় বা সমন্বয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যাংকগুলো এক্সিটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি বা মানদণ্ড অনুসরণ করছে। তাই এসব সুবিধা দিতে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রয়োজন। এ অবস্থা বিবেচনায় ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখতে এবং ব্যাংকিং খাতে শ্রেণিকৃত ঋণ কমাতে একটি নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নীতিমালায় বলা হয়, এক্সিট প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকসমূহ এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদিত হবে। তবে, ব্যাংক তাদের নীতিমালায় নমনীয় কোনো শর্ত যুক্ত করতে পারবে না।
ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা কম এমন খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা প্রদান করা যাবে।
ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধপূর্বক এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক তা নিষ্পত্তির করবে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এক্সিট সুবিধা অনুমোদিত হতে হবে। তবে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের এক্সিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পাবে।
এ সুবিধার আওতায় মওকুফ যোগ্য সুদ পৃথক ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে এবং সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পর ব্লকড হিসাবে রক্ষিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে গণ্য হবে।
এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধ সূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের অধিক হবে না। তবে, পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসংগত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করতে পারবে।
বিশেষ নির্দেশনা
>> এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণের দায় সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এক্সিটের আগের ঋণের শ্রেণিমান বহাল থাকবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতা যথানিয়মে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। নিয়মিত সিআইবিতে রিপোর্ট করতে হবে।
>> এ সুবিধা আওতায় পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন হিসেবে গণ্য হবে না।
>> এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পূর্ব পর্যন্ত কোনো ধরনের নতুন ঋণ সুবিধা পাবে না।
>> এক্সিট সুবিধার আওতায় অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।
>> ঋণের বিপরীতে যথানিয়মে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে এবং ঋণ সমন্বয়ের পূর্বে ঋণের বিপরীতে গৃহীত জামানত অবমুক্ত করা যাবে না। তবে, ব্যাংক, গ্রাহক ও ক্রেতা আগ্রহী হলে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে আলোচ্য ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে ঋণ সমন্বয় করা যাবে।
>> এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির পর গ্রাহক পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ আদায়ে ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক এ নীতিমালা অনুসরণ করে খেলাপিদের সুবিধা দিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০২৪ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১.১১ শতাংশ। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা এবং তিন মাসে বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে ছিল এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা এবং গত ডিসেম্বরে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ইসলামী ব্যাংকের ৩৩০০ কোটি টাকা বেনামি ঋণ, তথ্য চেয়ে দুদকের চিঠি
![ইসলামী ব্যাংকের ৩৩০০ কোটি টাকা বেনামি ঋণ, তথ্য চেয়ে দুদকের চিঠি সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/Anti-Corruption-Commission-duduk-dudok-dudak1.jpg)
বেসরকারি ব্যাংকিং সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকের আলোচিত ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও নাবিল গ্রুপের ১১টি কোম্পানিকেকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের আলোচিত ঐ ঋণ কেলেঙ্কারির বিস্তারিত তথ্য জানতে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ইসলামী ব্যাংক থেকে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে জামায়াত-শিবির চক্র। ২০১৭ সালে নতুন পরিচালনা পর্ষদ আসার পরও তা বন্ধ হয়নি। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান নাবিল গ্রুপ, যাদের পিওন থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন কর্মচারীর নামে কাগুজে প্রতিষ্ঠান বানিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে বড় অংকের ঋণ দেয়ার ঘটনা ২০২২ সালে জানতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক। গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর আলোচনার জন্ম দেয়। এমনকি জাতীয় সংসদেও ইসলামী ব্যাংকের অনিয়ম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।