অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ আজ
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম জুলাই মাসে বাড়ছে নাকি কমছে, তা জানা যাবে আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই)। এদিন এক মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এ দিন বিকেল ৩টায় সৌদি আরামকো ঘোষিত চলতি মাসের সৌদি সিপি অনুযায়ী চলতি (জুলাই) মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির দাম সমন্বয় সম্পর্কে বিইআরসির নির্দেশনা ঘোষণা করা হবে।
এর আগে কয়েক দফায় বাড়ানো হয় এলিজির দাম। পরে গত ৩ এপ্রিল ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজির সিলিন্ডারে মূল্য ৪০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৪৪২ টাকা। এরপর ২ মে আরও ৪৯ টাকা কমিয়ে কমিয়ে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ধরা হয় ১ হাজার ৩৯৩ টাকা। সবশেষ গত ৩ জুন ৩০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৩ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
‘জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে বড় বাধা চোরাকারবারি’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হলে স্বর্ণের চোরাকারবারসহ জুয়েলারি শিল্পের জন্য যেসব বাধা আছে সেগুলো দূর করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে বা একে সামনে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে স্বর্ণের চোরাচালান বা চোরাকারবার। চোরাকারবারিরা স্বর্ণের চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে। চোরাকারবার বন্ধ হলে চাহিদা বাড়বে এবং শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে অচিরেই জুয়েলারি পণ্য রপ্তানি হবে৷
শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা’র (আইসিসিবি) পুষ্পগুচ্ছে হলে প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনী বাংলাদেশ (আইজেএমইবি) ২০২৪’র সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাজুসের মুখপাত্র ও সাবেক সভাপতি দীলিপ কুমার রায়, সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু, রিপনুল হাসান, মাসুদুর রহমান, গুলজার আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ফিতা কেটে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
অনুষ্ঠানে ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে আমি এই প্রদশর্নীতে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা আগামীতে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমরা আর বিদেশি অলংকার বিক্রি করবো না। দেশে ছোট-বড়-মাঝারি শিল্প গড়ে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি বাড়াবো। দ্রুতই বিশ্ববাজারে আমাদের দেশেই তৈরি অলংকার নিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, আমাদের এই জুয়েরারি শিল্প বাঁকে বাঁকে এগিয়েছে। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আমরা আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের শেষপ্রান্তে চলে এসেছি। এই জুয়েলারি শিল্পের দুটি সমস্যা যা আমাদের পেছনের দিকে টানছে। প্রথমত চোরাকারবারি, যা একটি প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমরা এই প্রদশর্নী থেকে প্রতিজ্ঞা নিতে চাই দেশে আর কোনো চোরাকারবারির প্রশ্রয় দেবো না। বাজুস এর প্রতিবাদ করছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো একটি বাজার ও শিল্পকে ধ্বংস করছে এই অবৈধ পথ। সেটা আমাদের বন্ধ করতে হবে, তা না হলে আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে এই শিল্প করছি সবকিছু পণ্ড হয়ে যাবে।
বাজুসের মুখপাত্র বলেন, আমাদের দ্বিতীয় বাধাটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চান। কিন্তু প্রশাসনের দিক থেকে একটু কার্পণ্য লক্ষ্য করছি। আইনগত বিষয় নিয়ে আমদানি রপ্তানিতে ভ্যাট, ট্যাক্স ও উৎসে করের নামে নতুন করে যে আরেকটি কর আরোপিত হতে যাচ্ছে, এসব কিছুকে আমরা রুখে দিয়ে প্রশাসনকে বলতে চাই, স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে স্বর্ণ চোরাকারবারিসহ এই শিল্পের জন্য বাধাগ্রস্ত করে যে বিষয়গুলো রয়েছে- সবকিছু দূর করে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবো। জুয়েলারি শিল্প বিশ্ববাজারে সমাদৃত হবে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলবো, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বাজুসের সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু বলেন, প্রথমবারের মতো এই প্রদশর্নী আয়োজন করা হয়েছে। আগামীতে আমরা আরও বড় পরিসরে করবো। এই প্রদশর্নীর মাধ্যমে আমরা অনেক মেশিনারির সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। এই শিল্প বড় করতে সবচেয়ে বড় বাধা সোনা চোরাচালান বা চোরাকারবারি। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা কখনো এর সঙ্গে জড়িত নন। চোরাকারবারি যারা তাদের পরিচয় তারা চোরাকারবারি। আর যারা ব্যবসায়ী, আমরা সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দেই, তাদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের যেন মিশিয়ে না দেওয়া হয়। এ খাতের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বক্তারা বলেন, আমরা ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হতে চাই। আর যারা চোরাকারবারি তারা চোরাকারবারি হিসেবেই থাকবে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া প্রদশর্নীতে মেশিনারিজ নিয়ে এলে ভালো হতো। এতে করে এ শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখেশুনে মেশিনারিজ কিনতে পারবেন। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি।
দেশে নতুন জুয়েলারি কারখানা স্থাপন ও পুরাতন কারখানাগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন এবং রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের ঐতিহ্যবাহী ও পণ্যভিত্তিক সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন বাজুস ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেএনসি সার্ভিসেস যৌথভাবে এ প্রদশর্নীর আয়োজন করে। প্রদশর্নীর প্রতিপাদ্য ‘গহনায় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়া’।
প্রথম আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ১০ দেশের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ভারতরেই ৮টি প্রতিষ্ঠানঅংশ নিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রপ্তানি হিসাব নিয়ে ব্যাখ্যা দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
দুই অর্থবছরের ২০ মাসের রপ্তানি হিসাব থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলার উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ওপর দায় চাপিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারকে দেওয়া এক চিঠিতে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বড় এই ঘাটতির ফলে দেশের বিভিন্ন আর্থিক পরিসংখ্যান ওলট–পালট হয়ে পড়েছে। রপ্তানি কমে যাওয়ায় চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতিতে পড়েছে। আর রপ্তানির বিপরীতে প্রত্যাবাসিত অর্থ আসার লক্ষ্য কমে যাওয়ায় আর্থিক হিসাব ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্তে ফিরে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই চিঠি সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এক সভায় এনবিআরের প্রতিনিধি সরবরাহকৃত রপ্তানির ডেটাসেটে একাধিকবার রপ্তানির হিসাব থাকার বিষয়টি ইতিমধ্যে তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানি আয়ের তথ্য–উপাত্ত তফসিলি ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে সংগ্রহ করে থাকে। ফলে সেই তথ্য–উপাত্তের সঙ্গে প্রকৃত রপ্তানির তেমন পার্থক্য থাকে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংগ্রহ এবং ইপিবি কর্তৃক প্রকাশিত রপ্তানিসংক্রান্ত তথ্যে পার্থক্য থাকার কারণগুলোকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, একই রপ্তানি তথ্য এবং পণ্যের এইচএস কোড একাধিকবার ইনপুট দেওয়া হয়েছে। পণ্যের কাটিং, মেকিং এবং ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু তৈরির মাশুল পাওয়ার কথা, কিন্তু ইপিবি কাপড়সহ সব যন্ত্রাংশের হিসাব করেছে। ইপিবি অনেক সময় নমুনা পণ্যের দামও ইনপুট দিয়েছে, অথচ নমুনা পণ্যের কোনো দাম হিসাবে আসার কথা নয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থেকে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রয়কে রপ্তানি হিসবে এবং এসব পণ্য আবার বিদেশে রপ্তানির সময় হিসাব করা হয়েছে। সাধারণত পণ্য রপ্তানির সময় রপ্তানির প্রাথমিক ঋণপত্র মূল্য থেকে কিছুটা কম হয়ে থাকে, যা ইপিবি সমন্বয় করে না। এ ছাড়া স্টকলট, ডিসকাউন্ট এবং কমিশনের কারণে ক্ষয়ক্ষতি ইপিবি কর্তৃক সমন্বয় করা হয় না।
এই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব ব্যাংক, ইপিবি, এনবিআরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানি ব্যয়, রপ্তানি আয়, অদৃশ্য ব্যয়, অদৃশ্য আয়, রেমিট্যান্সের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে সংগ্রহ করে লেনদেন ভারসাম্যের বিবরণী প্রস্তুত করে থাকে। সাম্প্রতিক কালে রপ্তানির বিপরীতে প্রত্যাবাসিত অর্থ আসা কমে যাওয়ায় ট্রেড ক্রেডিট উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মূলত রপ্তানি (শিপমেন্ট) ও প্রকৃত রপ্তানি আয়ের ব্যবধানের কারণে হয়ে থাকে।
চিঠিতে বলা হয়, আর্থিক হিসাবে প্রকৃত ট্রেড ক্রেডিট বলতে রপ্তানি (শিপমেন্ট) ও রপ্তানি আয়ের পার্থক্য এবং আমদানি (শিপমেন্ট) ও আমদানি ব্যয়ের পার্থক্যের যোগফল বোঝানো হয়ে থাকে।
এতে আরও বলা হয়, দেশের রপ্তানি (শিপমেন্ট) তথ্য–উপাত্ত এনবিআর প্রতি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবির কাছে পাঠায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের রপ্তানি (শিপমেন্ট) তথ্য/উপাত্ত ইপিবি প্রকাশ করে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সংশোধিত ডেটাসেট ব্যবহার করার কারণে লেনদেন ভারসাম্যের বিবরণীতে ট্রেড ক্রেডিটসহ চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাব সংশোধিত হয়েছে। তবে এর জন্য সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ, চলতি হিসাবে থাকা উদ্ধৃত সংশোধিত হয়ে আর্থিক হিসাবে সমন্বয় হয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ফের উত্থান
কিছুটা কমার পর গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম এরই মধ্যে প্রায় ১০০ ডলার বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহেই প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৬৪ ডলারের ওপরে। শেষ কার্যদিবস শুক্রবারই বেড়েছে ৩৪ ডলার। এর ফলে দেশের বাজারেও যেকোনো মুহূর্তে সোনার দাম বাড়তে পারে।
গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে লেনদেনের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৩২৪ ডলারে। শেষ সপ্তাহে ২ হাজার ৩৯০ দশমিক ৭৭ ডলারে দাড়ায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে সোনার দাম বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৪৩ ডলার।
সোনার পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপার দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ২১ ডলারে। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেই বেড়েছে ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ বা দশমিক ৮৪ ডলার।
বিশ্ববাজারের এ পরিস্থিতিতে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দেশের বাজারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বাজুসের এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে দেশের বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করা প্রয়োজন। স্বাভাবিকভাবেই সোনার দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশের বাজারে এর আগে সোনার দাম কমানো হয়। বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমানে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৭৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৭৩ টাকা কমিয়ে ৭৯ হাজার ৩৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এনবিআরের রাজস্ব আয় বেড়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা
এক বছর আগের তুলনায় সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে বিশ্ববাজারে আমদানি পণ্যের দাম ছিল কম। তাতে বিদায়ী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) আমদানি খরচ কমেছে। আমদানি খরচ কমলেও আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকা। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯৯ হাজার কোটি টাকা। আমদানি পর্যায়ে কাস্টমস শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর ও জরিমানা থেকে এই রাজস্ব আদায় হয়েছে। অর্থাৎ রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানির কাঁচামাল বাদে আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য (জাহাজভাড়া, বিমাসহ পণ্যের মূল্য) ছিল ৬ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা বা ৬ হাজার ৩২৮ কোটি ডলার। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য কমে দাঁড়ায় প্রায় ৬ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা বা ৫ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ডলারের হিসাবে আমদানি মূল্য কমেছে ৬৮৭ কোটি ডলার বা প্রায় ১১ শতাংশ।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও শুল্ক-কর আরোপের জন্য ডলারের দাম নিয়মিত বাড়ানো হয়েছে। তাতে শুল্ক-কর বাড়েনি এমন পণ্যেও রাজস্ব আদায় বেড়ে গেছে। আবার বছরের পর বছর খেজুর, বাদামের মতো কিছু পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য হালনাগাদ করেছে কাস্টমস। তাতে সেখান থেকেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
বিশ্ববাজারে দাম কমলেও অনেক পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে কমানো হয়নি। এ ছাড়া আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিলাসপণ্য ও অপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক–কর বাড়ানোর প্রভাবও পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। তাতে সব মিলিয়ে আমদানি ব্যয় কমলেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম মাস গত বছরের জুলাইয়ে শুল্ক-কর আরোপের জন্য ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০৮ টাকা ৮০ পয়সা। এরপর আট দফা বিনিময় মূল্য বাড়িয়ে গত ২৩ জুন ১১৭ টাকা ৯৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছরে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৯ টাকা। বিনিময় মূল্য বাড়ার কারণে একই ডলারে আমদানি পণ্যের মূল্য টাকায় বেড়ে যাচ্ছে। আর শতাংশ হারে শুল্ক–কর আদায়ের কারণে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে।
আবার কিছু পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে শুল্ক–করও ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে বাড়তি ছিল। খেজুরের উদাহরণ দেওয়া যাক। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই পণ্যের আমদানি আগের চেয়ে ছয় হাজার টন কমেছে। আমদানি কমলেও খেজুর থেকে রাজস্ব আদায় ৭০ গুণ বেড়ে ৬৬২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কাঁচা মরিচের বাজারে আগুন, দিশেহারা সাধারণ মানুষ
বিভিন্ন অজুহাতে আবারও টালমাটাল রাজধানীর কাঁচাবাজার। অধিকাংশ সবজির দাম পৌঁছেছে কেজি ১০০ টাকার ঘরে। ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে কেবল পটল, মিষ্টিকুমড়া আর পেঁপে। অন্যদিকে কোনোমতেই ঝাল কমছে না কাঁচা মরিচের। এক কেজি কাঁচা মরিচ কিনতে খুচরা বাজারে গুনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ২৮০ টাকা। এমন অবস্থায় বেশ বিপাকেই পড়েছেন ক্রেতারা। নিত্য প্রয়োজনীয় শাকসবজির এমন অস্বাভাবিক দামে নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে তাদের।
আজ শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার বনলতা কাঁচাবাজারের ভেতর ও বাইরের দোকান এবং ধানমন্ডি এলাকার বেশ কয়েকটি ভাসমান সবজির দোকান ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। অথচ এই কাঁচা মরিচ গত সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছিলো ২০০ টাকা কেজি দরে। আর অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত।
সবজির মধ্যে ৫০ টাকা কেজি দরে মিলছে কেবল মিষ্টি কুমড়া, পটল আর পেঁপে। এছাড়া বেগুন ৮০-১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, বরবটি ১১০-১২০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কচুর লতি ৮০-৯০ টাকা, গাজর ৮০-৯০ টাকা, ঢেঁরস ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, আলু ৬০ টাকা এবং ধুন্দল ৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি পিস লাউ, বাঁধাকপি ও ফুলকপি আকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। শাকসবজির দামও চড়া। লালশাক, পালংশাকসহ যেসব আঁটি আগের সপ্তাহগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতো সেগুলো এখন ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
শান্তি নেই মশলার বাজারেও। পেঁয়াজ, রসুন, আদাও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই। খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, রসুন ২১০-২২০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০-৫০০ টাকা, হলুদ ৩৫০-৪০০ টাকা, আদা ৩০০-৫০০ টাকা, জিরা ৮৫০ টাকা এবং দারচিনি ৬০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা মহানগরীর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের খুচরা বাজার দর পর্যালোচনায় খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, ১ সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিলো। ১ মাস আগে এর দাম ছিল ৮৫ টাকা। আর ১ বছর আগে এর দাম ছিল ৮০ টাকা। বাৎসরিক হিসেবে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর রসুনের দাম বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।
কাঁচাবাজারের এমন বাড়ন্ত দামের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকায় সব সবজিই বাইরে থেকে আসে। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জায়গায় বন্যা এবং গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির পরিমাণ কম। যার কারণে বাড়তি দাম দিয়েই পাইকারি অর্থাৎ আড়ত থেকে সবজি কিনতে হচ্ছে। সেই প্রভাবই পড়েছে খুচরা বাজারে।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, কাঁচাবাজারের এমন বাড়তি দামের কারণে চাহিদার তুলনায় কম বাজার করছেন তারা।
শামীম আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাজার মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত কার্যক্রম হয় কি না তা জানি না। সরকারের উদ্যোগে এটি প্রয়োজন। না হলে জীবনযাপন করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এই কয়েকদিনের বৃষ্টি আর বন্যার অজুহাতে সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা কোথায় যাই। কাঁচাবাজারে সবাই নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি কিনে। এখন দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাফি