ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হলেন নাজিম উদ্দিন
![বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হলেন নাজিম উদ্দিন সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/07/nazim-uddin1.jpg)
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন পরিচালক (সাবেক মহাব্যবস্থাপক) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। সোমবার এক আদেশের মাধ্যমে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি ২০০০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর প্রধান কার্যালয়ের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন ও গভর্নর সচিবালয়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সৃজনশীল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এমপ্লয়িজ রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৪’ এর স্বর্ণ পদক দেওয়া হয়।
নাজিম উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের আগে তিনি ১৯৯৮-২০০০ সাল পর্যন্ত জনতা ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় দি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (আইবিবি) থেকে অ্যাসোসিয়েট অব দ্যা ইনস্টিটিউট অব দ্যা ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এআইবিবি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, তুরস্ক, চীন, ভারত, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের বাবা। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ কমাতে ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক্সিটের সুবিধা
![খেলাপি ঋণ কমাতে ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক্সিটের সুবিধা সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/06/bangladesh-bank1.jpg)
ব্যাংক খাতের প্রধান ক্ষত খেলাপি ঋণ। নানা পদক্ষেপ নিয়েও এ ক্ষত নিরাময় করতে পারছে না নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। উল্টো দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার ঋণ খেলাপিদের ‘এক্সিট সুবিধা’ দিতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন থেকে মাত্র ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে বিশেষ সুবিধা পাবে খেলাপিরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সুবিধা দিয়ে একটি নীতিমালা জারি করেছে।
নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণগ্রহীতার ব্যবসা, শিল্প বা প্রকল্প কখনো কখনো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে বন্ধ হয়ে যায় অথবা লোকসানে পরিচালিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে, ঋণ খেলাপি বা বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত হয়ে যায়, যা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির পর্যায়ে পড়ে না। গ্রাহকের এমন আর্থিক অবস্থার কারণে ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা না থাকা এমন ঋণ এক্সিটের আওতায় আদায় বা সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এক্সিটের আওতায় ঋণ আদায় বা সমন্বয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যাংকগুলো এক্সিটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি বা মানদণ্ড অনুসরণ করছে। তাই এসব সুবিধা দিতে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রয়োজন। এ অবস্থা বিবেচনায় ঋণ আদায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখতে এবং ব্যাংকিং খাতে শ্রেণিকৃত ঋণ কমাতে একটি নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নীতিমালায় বলা হয়, এক্সিট প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকসমূহ এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদিত হবে। তবে, ব্যাংক তাদের নীতিমালায় নমনীয় কোনো শর্ত যুক্ত করতে পারবে না।
ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা কম এমন খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা প্রদান করা যাবে।
ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধপূর্বক এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক তা নিষ্পত্তির করবে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এক্সিট সুবিধা অনুমোদিত হতে হবে। তবে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের এক্সিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পাবে।
এ সুবিধার আওতায় মওকুফ যোগ্য সুদ পৃথক ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে এবং সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পর ব্লকড হিসাবে রক্ষিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে গণ্য হবে।
এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধ সূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের অধিক হবে না। তবে, পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসংগত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করতে পারবে।
বিশেষ নির্দেশনা
>> এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণের দায় সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এক্সিটের আগের ঋণের শ্রেণিমান বহাল থাকবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতা যথানিয়মে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। নিয়মিত সিআইবিতে রিপোর্ট করতে হবে।
>> এ সুবিধা আওতায় পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন হিসেবে গণ্য হবে না।
>> এক্সিট সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পূর্ব পর্যন্ত কোনো ধরনের নতুন ঋণ সুবিধা পাবে না।
>> এক্সিট সুবিধার আওতায় অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।
>> ঋণের বিপরীতে যথানিয়মে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে এবং ঋণ সমন্বয়ের পূর্বে ঋণের বিপরীতে গৃহীত জামানত অবমুক্ত করা যাবে না। তবে, ব্যাংক, গ্রাহক ও ক্রেতা আগ্রহী হলে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে আলোচ্য ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে ঋণ সমন্বয় করা যাবে।
>> এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির পর গ্রাহক পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ আদায়ে ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক এ নীতিমালা অনুসরণ করে খেলাপিদের সুবিধা দিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০২৪ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১.১১ শতাংশ। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা এবং তিন মাসে বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে ছিল এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা এবং গত ডিসেম্বরে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিল সরকার
![ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিল সরকার সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/03/tk-taka-1.jpg)
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কম দেখা গেলেও শেষ সময়ে দ্রুত বেড়েছে। গত ২৭ জুন পর্যন্ত সরকার দেশের বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৮৪ হাজার ৮২ কোটি টাকা। যেখানে গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস অর্থাৎ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র ২৭ দিনে ব্যাংকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ২২ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। আবার রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রির কারণে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। ফলে বেশির ভাগ ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে রয়েছে। তবে ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির কারণে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেওয়া বন্ধ রেখেছে সরকার।
তবে গত অর্থবছরের হিসাব চূড়ান্ত হলে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়া, কাঙ্ক্ষিত বিদেশি ঋণ পাওয়া এবং সঞ্চয়পত্রে ঋণ না বেড়ে উল্টো কমে যাওয়ায় সরকারের ঘাটতি সংস্থানে ব্যাংকেই নজর দিচ্ছে সরকার। সাধারণভাবে সরকার ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাতের সুদহার বেড়ে ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হন। গত মে পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ জুন পর্যন্ত বাণিজ্যক ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগের দায় শোধ হয়েছে ৫৩২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৩ লাখ ২০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে এবার ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত অর্থবছর ১৮ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। যদিও জুলাই-মে সময়ে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ উল্টো কমেছে ১৭ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
অর্ধবার্ষিকীতে রূপালী ব্যাংকের সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড
![অর্ধবার্ষিকীতে রূপালী ব্যাংকের সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/05/Rupali-Bank-PLC-1.jpg)
চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক (জানুয়ারি–জুন,২০২৪) হিসাব সমাপনীতে মুনাফায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক পিএলসি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এবারই প্রথম অর্ধবার্ষিকীতে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে ব্যাংকটি। ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসের হিসাব সমাপনীতে পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকারও বেশি।
গত বছর একই সময়ে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৩২০ কোটি টাকা ২০২২ সালে যা ছিল মাত্র ৬৮ কোটি টাকা। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি এবং ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকটি প্রথম বারের মত অবলোপিত ঋণ হিসাব থেকে আদায় করেছে ৪৫ কোটি টাকা ।
২০২২ সালের ২৮ আগস্টে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই তিনি প্রযুক্তি নির্ভর সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধিসহ ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেন। এর মধ্যে খেলাপী ঋণ হ্রাস, ঋণ ও আমানত বৃদ্ধি, আমানত-ঋণ অনুপাত বৃদ্ধি, লোকসানি শাখা কমিয়ে আনা, বিভিন্ন নতুন ঋণ ও আমানত স্কিম চালু, ব্যাংকের সার্বিক সূচকগুলোর মান উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছে। এছাড়া গ্রাহকের দোড়গোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌছানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্ভর সেবা চালু ও পরিধি বৃদ্ধি করেছেন।
মূলত সুদ ও ট্রেজারি থেকে আয় এবং খেলাপী ও অবলোপিত ঋণের আদায় বাড়ায় ব্যাংকটি অর্ধবার্ষিকিতে এই মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সিএমএসএমই ঋণ বৃদ্ধি, রফতানি বাণিজ্যে জোর দেয়া, রেমিট্যান্স আহরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করায় ব্যাংকের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকটি আদায়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা মনে করছেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক ঘোষিত বিশেষ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ফলে এ সাফল্য এসেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাষ্ট্র মালিকানাধীন অন্য ব্যাংকগুলোও দ্রুত তালিকাভূক্ত করা উচিত। এতে করে তারাও জবাবদিহিতার আওতায় আসবে এবং রূপালী ব্যাংকের মত ভালো করার তাগিদ অনুভব করবে। শেয়ার বাজারে তালিকাভূক্ত ব্যাংকটি ২০২৩ সালে বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করেছে। ২০২২ সালে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) যেখানে ছিল ৬৮ পয়সা সেখানে ২০২৩ সালে তা ১ টাকা ৩৫ পয়সায় উন্নীত হয়। সে হিসেবে এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালেও ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচকে লক্ষনীয় অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
সংকটেও বেড়েছে অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা
![সংকটেও বেড়েছে অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/07/bank-1.jpg)
তারল্য ও ডলার সংকটসহ বিভিন্ন সংকটে রয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। তবে এ খাতে খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি বজায় রয়েছে। কিন্তু সংকটের মধ্যেও ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধি, সরকারি বিভিন্ন বিল এবং বন্ডে বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপর ভিত্তি করেই মূলত ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।
তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে দুই হাজার ২৬০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংটির মুনাফা ছিল এক হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ৫৮০ কোটি টাকা।
অপরদিকে আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই সময়ে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিলো ৩২০ কোটি। অর্থাৎ চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ে রূপালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ১৩০ কোটি টকা।
এদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫৭৯ কোটি। গত বছরের একই সময়ে ৪০৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল ব্যাংকটি। এক বছরে ব্যাংটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ১৭২ কোটি টাকা।
এসময়ে চতুর্থ প্রজন্মের মধুমতি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৮০ কোটি, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা বেড়ছে ৯৯ কোটি টাকা। এছাড়া ইউনিয়ন ব্যাংক ২৫০ কোটি ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ২১১ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা অর্জন করেছে।
তবে পরিচালন মুনাফাই একটি ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। আয় থেকে ব্যয় বাদ দিলে যা থাকে, তা-ই হচ্ছে পরিচালন মুনাফা। আর পরিচালন মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ, সঞ্চিতি, করপোরেট কর বাদ দিলে যা থাকে, তা-ই হচ্ছে নিট মুনাফা। নিট মুনাফা থেকেই শেয়ার হোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয় তালিকাভুক্ত ব্যাংক।
বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনঃতফসিল সত্ত্বেও চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এসব ঋণের বিপরিতে প্রভিশন রেখে সরকারের কর পরিশোধের পর নিট মুনাফার হিসাব হবে।পুনঃতফসিলকৃত ঋণকে ‘স্ট্রেসড’ বা ‘দুর্দশাগ্রস্ত’ হিসেবে দেখায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পুনঃতফসিলকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার বেশি। আবার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আদায় অযোগ্য হওয়ায় ব্যাংকগুলো ৬৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। সব মিলিয়ে দেশের ব্যাংক খাতের অন্তত এক-চতুর্থাংশ ঋণই ছিল দুর্দশাগ্রস্ত। খেলাপির খাতায় ওঠা ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো গ্রাহক উচ্চ আদালতে মামলা করছেন। এসব মামলায়ও বিপুল পরিমাণ ঋণ আটকা পড়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে যা বললো ইসলামী ব্যাংক
![গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে যা বললো ইসলামী ব্যাংক সোনালী লাইফ](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/04/Islami-Bank-1.jpg)
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত “শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের অবস্থা এখন আরও খারাপ” শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে নিজেদের মন্তব্য জানিয়েছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। সোমবার (১ জুলাই) ব্যাংকটি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামী ব্যাংক জানায়, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বিষয়ে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তা ইসলামী ব্যাংকিং ধারাকে জনগণের মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি অপপ্রয়াস। দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে সর্বোচ্চ আমানত নিয়ে ইসলামী ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করেই বিনিয়োগ বিতরণ করেছে।
এতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংকগুলো আগ্রাসী ঋণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর। ইসলামী ব্যাংক সম্প্রতি বড় ধরণের কোন বিনিয়োগ বিতরণ করেনি। ব্যাংকের বিতরণকৃত বিনিয়োগের বেশিরভাগই কৃষি, ক্ষুদ্র ও এসএমই বিনিয়োগ। ইসলামী ব্যাংকের এসএমই বিনিয়োগের পরিমাণ মোট বিতরণকৃত বিনিয়োগের ২৩ শতাংশ এবং দেশের মোট এসএমই বিনিয়োগের ১১ শতাংশ। কৃষি ক্ষেত্রে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের মোট বিনিয়োগের প্রায় ২ শতাংশ যার মার্কেট শেয়ার ৭ দশমিক ১০ শতাংশ।
ইসলামী ব্যাংক জানায়, জনবল নিয়োগের বিষয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তাও সঠিক নয়। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রবেশনারি অফিসার ও ফিল্ড অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী সময় সময় মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার নিয়ম অনুসরণ করেই জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এসব সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী ব্যাংক বলে, ইসলামী ব্যাংকিংয়ের মত একটি ক্রমবর্ধমান ও আস্থাশীল ধারার বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সবাই আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।
এমআই