অর্থনীতি
অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে অপ্রচলিত বাজার সম্ভাবনার এক দুয়ার উন্মোচন করেছে। নতুন নতুন বাজারে এসবের চাহিদা বাড়তে থাকায় রপ্তানি আয়ে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে চলেছে এদেশের তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরে সামগ্রিকভাবেই রপ্তানি আয় বেড়েছে এ খাতে; তবে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে অপ্রচলিত বাজারের আয়ে। এ খাতে রাপ্তানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সবশেষ তথ্য মতে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত অপ্রচলিত বাজার থেকে পোশাক পণ্যের রপ্তানি আয় ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১৮ কোটি ডলার, যা একই সময়ে আগের বছরে ছিল ৭৬৮ কোটি ৯ লাখ ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ এসেছে নতুন বাজার থেকে।
অন্যদিকে, তৈরি পোশাক খাতে সামগ্রিক রপ্তানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে এ খাতে আয় হয়েছে মোট ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অপ্রচলিত বাজারের মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে জাপান থেকে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে জাপানে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৪৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। আগের বছর রপ্তানি হয়েছিল ১৪৫ কোটি ৭৯ লাখ ডলার।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় হয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। সেখান থেকে তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি আয় ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ১০৬ কোটি ডলার। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকলেও বড় ধরনের রপ্তানি আয় এসেছে রাশিয়া থেকেও। দেশের তৈরি পোশাক নতুন এ বাজারে রপ্তানি করে আয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। চলত অর্থবছর আয় হয়েছে ৪৬ কোটি ২৩ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ৪০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীনেও চাহিদা বাড়ছে এখানকার তৈরি পোশাক পণ্যের। চলতি অর্থবছরে দেশটিতে আমাদের রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। আয় হয়েছে ৩১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ২৫ কোটি ২ লাখ ডলার। পাশাপাশি কোরিয়ায় আমাদের তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত ১১ মাসে দেশটি থেকে আমাদের আয় হয়েছে ৫৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার। গত বছর এ আয় ছিল ৫০ কোটি ডলার।
উল্লেখযোগ্য হারে রপ্তানি বেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে; ৫৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ সময়ে দেশটি থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ২৭ কোটি ৩ লাখ ডলার, যা গত বছর ছিল ১৭ কোটি ২ লাখ ডলার।
বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের ৪৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ আসে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি আয় ইতিবাচক থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে আমাদের রপ্তানি কমেছে ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে এই জোন থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করা যুক্তরাজ্যে আমাদের তৈরি পোশাক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে দেশটি থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৫১৬ কোটি ডলার, যা গত বছর ছিল ৪৫৯ কোটি ডলার।
পোশাক পণ্যের রপ্তানি কমেছে আমাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার ভারতেও। প্রতিবেশী দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের রপ্তানি কমেছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ। ১১ মাসে দেশটি থেকে আয় হয়েছে ৭৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরে ছিল ৯৫ কোটি ডলার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রেও ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে গেছে আমাদের তৈরি পোশাকের রপ্তানি। প্রথম ১১ মাসে দেশটি থেকে আয় হয়েছে ৭৪৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। গত বছর একই সময় এ আয় ছিল ৭৭৩ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
কাফি

অর্থনীতি
সবজির বাজার চড়া, বেড়েছে চাল-ডিমের দাম

এ মাসের শুরুতেই প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ টাকা। যা এখন ঠেকেছে ১৫০ টাকায়। সহজ প্রোটিনের উৎস এ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় দারুণ অস্বস্তিতে পড়েছেন নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। অন্যদিকে বাজারে চালের দাম বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই বেশি। এরমধ্যে বেশিরভাগ সবজিও মিলছে না প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে। সঙ্গে গত দুই সপ্তাহ ধরেই পেঁয়াজ, আদা ও এলাচের দাম বেড়েছে।
সবমিলে অনেকগুলো পণ্যের দাম একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গড়পড়তা আয়ের মানুষ। অনেকে সাধ্যের মধ্যে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেই এমনটি জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখন মুদি দোকানে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা হালি, ১৫০ টাকা ডজন। কোথাও এক ডজন নিলে ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকা রাখা হচ্ছে।
মালিবাগ এলাকার দোকানি মফিজুর রহমান বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ডিমের দাম ১২০ টাকা ডজন ছিল। যা এখন ৩০ টাকা বেড়েছে। তারপরও ডিমের সরবরাহ ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, বাজারে সবজির দামও চড়া। বিক্রেতারা জানিয়েছেন টানা বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকার সবজি নষ্ট হয়ে সরবরাহ কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে দামে।
বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, বরবটি ও কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ধরন ভেদে বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকার মতো।
বিক্রেতাদের হিসাবে বর্তমানে ৬০ টাকার নিচে রয়েছে আলু ও পেঁপে। আর ৬০ থেকে ৮০ টাকার আশপাশে দাম রয়েছে শুধু ঢ্যাঁড়স, পটোল, মিষ্টিকুমড়াসহ হাতেগোনা দু-চারটি সবজির।
অবশ্য কারওয়ান বাজার বা বড় পাইকারি বাজারে প্রতিটি সবজির দামই তুলনামূলক কম। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার সবজির দাম কিছুটা বেড়ে যায়।
এদিকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।
পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এরমধ্যে, কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কারওয়ান বাজারে পাইকারি বিক্রেতা জুবায়ের আলী বলেন, উৎপাদন এলাকায় পেঁয়াজের দাম কয়েক দিন বেড়েছে। পাবনা-ফরিদপুর এলাকার মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম প্রায় ৪০০ টাকা বেড়েছে।
বাজারে প্রতি ১০০ গ্রামে এলাচ আগে ৪০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন সেটি সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় উঠেছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আদার দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা।
অন্যদিকে, চালের চড়া দামে নিম্নমুখী কোনো প্রবণতাই লক্ষ্য করা যায়নি। মাস দেড়েক ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজিরশাইল রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চাল সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়লো

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বর্তমানে রিজার্ভ বেড়ে এখন ৩০৮৩৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০.৮৩ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০৮৩৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০.৮৩ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২৫৮২৭ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫.৮২ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ১০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৩০২৪৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৫২৩২ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫.৩২ বিলিয়ন ডলার।
গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০০০৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪৯৮৮ দশমিক ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। দেশের মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
কাফি
অর্থনীতি
প্রথম ১০ দিনেই ১ লাখ করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল

২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন চালুর পর থেকে প্রথম ১০ দিনে (১৩ আগস্ট পর্যন্ত) ৯৬ হাজার ৯৪৫ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অনলাইন রিটার্ন দাখিল শুরুর প্রথম ১০ দিনে ২০,৫২৩ জন করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। সে হিসেবে এ বছরের ই-রিটার্ন দাখিলের দৈনিক গড় সংখ্যা গত বছরের দৈনিক গড় সংখ্যার প্রায় ৫ গুণ।
চলতি বছর গত ৩ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক বিশেষ আদেশ জারি করে জানায়, দেশে ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি ব্যতীত সারা দেশের সব ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার (Individual Taxpayers) অনলাইনে (www.etaxnbr.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১১ আগস্ট বিশেষ আদেশটি প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদেরকেও অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত/যুগ্মকর কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তিনি পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য যেকোনো মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip প্রিন্ট নিতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট করতে পারেন।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। উক্ত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতাগণ ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন হতে করদাতাগণ ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা লিখিতভাবে জানাতে পারবেন এবং সমাধান পাবেন।
এছাড়াও ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাগণকে যথাসময়ে www.etaxnbr.gov.bd পোর্টাল ব্যবহার করে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
অর্থনীতি
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত বেড়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা

দেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে। এখন আর টাকা জমা বা উত্তোলনের জন্য মানুষকে জেলা কিংবা উপজেলা শহরে যেতে হয় না- হাতের নাগালেই মিলছে ব্যাংকিং সুবিধা। পাশাপাশি ঋণ ও প্রবাসী আয়ের সেবাও দিচ্ছে ব্যাংকের এজেন্ট ও আউটলেটগুলো। তবে চলতি বছরের জুন প্রান্তিকে এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা কমেছে। তবে এসময়ে আমানত বেড়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৪৬ লাখ ৭১ হাজার ৪২২টি। জুন শেষে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬ হাজার ২৩৬টি— অর্থাৎ তিন মাসে হিসাব কমেছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ১৮৬টি।
এ সময়ে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ২ হাজার ৬৪২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। মার্চ শেষে আমানত ছিল ৪২ হাজার ৯৬৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, যা জুন শেষে দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ৬০৫ কোটি ৭২ লাখ টাকায়।
ঋণ বিতরণেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মার্চ শেষে ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ২৬ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা, যা জুন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকায়— বা ২ হাজার ৩৭১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বেড়েছে।
প্রবাসী আয়ও বেড়েছে ২ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। মার্চ শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় ছিল ১ লাখ ৮১ হাজার ২০৪ কোটি টাকা, যা জুন শেষে দাঁড়ায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকের বড় অংশই গ্রামীণ এলাকার। বর্তমানে গ্রামীণ গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৪ হাজার ৩১১ জন। এর মধ্যে নারী গ্রাহক ১ কোটি ২০ লাখ ৭৮ হাজার ৯৬৬ জন।
তবে এ সময়ে এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা কমেছে। মার্চ শেষে এজেন্ট ছিল ১৫ হাজার ৮৩৮টি, যা জুন শেষে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৩৭৩টি- তিন মাসে কমেছে ৪৬৫টি। একই সময়ে আউটলেট কমেছে ৪৬৬টি, মার্চের ২১ হাজার ২৩টি থেকে নেমে জুনে হয়েছে ২০ হাজার ৫৫৭টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, যা এখন সারাদেশে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অর্থনীতি
সাবেক তিন গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে তাদের লেনদেন, অ্যাকাউন্ট খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে আজ বুধবার ব্যাংকগুলোকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।
ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়ার তালিকায় রয়েছেন– সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আতিউর রহমান বিদেশে চলে যান। আব্দুর রউফ তালুকদার পলাতক অবস্থায় গত বছরের ৭ আগস্ট ই-মেইলযোগে পদত্যাগ করেন।
তালিকায় থাকা ৬ ডেপুটি গভর্নরের মধ্যে সরকার পতনের পর দুদকের মামলায় জেলে থাকা এস কে সুর চৌধুরী এবং বিএফআইইউ প্রধান থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া মো. মাসুদ বিশ্বাস রয়েছেন। আরও আছেন মাসুদ বিশ্বাসের আগে দীর্ঘদিন বিএফআইইউ প্রধানের পদে থাকা আবু হেনা মো. রাজী হাসান, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছের।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেকের অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেন, কেওয়াইসিসহ যাবতীয় তথ্য তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে হবে। কোনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে থাকলে সেই তথ্যও জানাতে বলা হয়েছে।