আইন-আদালত
আনার হত্যা: ফয়সাল ও মোস্তাফিজুর ৬ দিনের রিমান্ডে

ঝিনাইদহ-৪ আসানের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় গ্রেফতার ফয়সাল আলী ও মোস্তাফিজুর রহমানের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ তাদের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল বুধবার মামলার পলাতক এ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। এদিন দুপুর থেকে হেলিকপ্টারে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।
এ ঘটনায় ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
মামলার এজাহারে এমপির মেয়ে ডরিন উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইলফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো’।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজখবর করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস কলকাতার বরাহনগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। বাবাকে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবাকে অপহরণ করে। বাবাকে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি।
এছাড়াও আরও কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে, এজাহারে উল্লেখ করেন ডরিন।

আইন-আদালত
শেখ হাসিনা-জয়-পুতুলের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় পৃথক তিন মামলা করে দুদক। এই তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এসব মামলার একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আসামি, অন্যটিতে সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ এবং আরেকটিতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন আসামি।’
আসামিরা আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে বলেও জানান মীর আহমেদ আলী সালাম।
এর আগে গত ২০ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এসব মামলা বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
এসব মামলার অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং তার ছেলে-মেয়ে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের নামে প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০০৯) বরাদ্দ পেয়েছেন। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তার নামে রাজউক প্লটের বরাদ্দপত্র দেয়। সজীব ওয়াজেদ জয় (প্লট নম্বর ০১৫) এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও (প্লট নম্বর ০১৭) ১০ কাঠা করে প্লট পেয়েছেন। জয়ের বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর দেওয়া হয় এবং ১০ নভেম্বর মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। পুতুলের বরাদ্দপত্র দেওয়া হয় ওই বছরের ২ নভেম্বর।
কাফি
আইন-আদালত
স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

সিলেটের বিশ্বনাথে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়াও আরও ১৭ জন আসামির ২ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় মোট ৩২ জন আসামির মধ্যে একজন পলাতক রয়েছেন। আদালতের এপিপি কামাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফাঁসির আদেশপ্রাপ্তরা হলেন- সাইফুল, নজরুল, সদরুল, সিরাজ, জামাল, শাহিন, আব্দুল জলিল ও আনোয়ার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশপ্রাপ্তরা হলেন- ইলিয়াছ, আব্দুন নুর, জয়নাল, আশিক, আছকির, ফরিদ ও আকবর।
জানা যায়, ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের ক্ষেতের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে চান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম। এসময় তাকে বাধা দেন নজির উদ্দিন, তার চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া সুমেল মিয়া। এতে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে সাইফুল আলমের বন্দুকের গুলিতে সুমেল মিয়া নিহত হয়। এসময় সুমেলের বাবা ও চাচাসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হন।
ঘটনার পর সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত কর্মকর্তা রমা প্রসাদ চক্রবর্তী চাঞ্চল্যকর এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
গত ১৩ জুলাই মামলাটি যুক্তিতর্ক শেষে বুধবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। ওইদিন আদালত ৩০ জন আসামিকে কারাগারে পাঠান। মামলায় ৩২ জন আসামির মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন। এছাড়া প্রধান আসামি সাইফুল আটকের পর থেকে প্রায় পৌনে ৪ বছর ধরে কারাগারে আছেন।
কাফি
আইন-আদালত
আবু সাঈদ হত্যা: ৬ আসামি ট্রাইব্যুনালে

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার এএসআই আমির হোসেনসহ ৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরীসহ ছয়জন।
এর আগে সোমবার (২৮ জুলাই) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয়। আসামিপক্ষের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন– অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি এ মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ মামলার অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি হয়।
সোমবার সকাল ১০টার পর কারাগার থেকে এ মামলায় গ্রেপ্তার এএসআই আমির হোসেনসহ চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। অন্য আসামিরা হলেন– বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী।
এর আগে গত ২২ জুলাই এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসি, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনারসহ পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একইসঙ্গে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।
ওইদিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম।
কাফি
আইন-আদালত
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতারে জাতি স্বস্তি পেয়েছে: ল’ইয়ার্স কাউন্সিল

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন সরকার ও সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, খায়রুল হককে গ্রেপ্তারে বিলম্ব হলেও এতদিন পরে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করায় জাতি স্বস্তি পেয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার দুইজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি- বিচারপতি এম এ মতিন ও বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানকে ডিঙিয়ে খায়রুল হককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল মামলার রায় প্রদানকারী হিসেবে খায়রুল হক রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হন। আপিল বিভাগে থাকাকালে তিনি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় দেন, যার মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।
দেশের গণতন্ত্র রক্ষার্থে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখতে দেশের বিশিষ্ট আইনবিদদের জোরালো আবেদন উপেক্ষা করে অবসরের এক সপ্তাহ আগে বিচারপতি খায়রুল হক এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে রায় দেন। যার ফলে দেশে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। বিচার বিভাগের উচ্চপদে আসীন হয়ে এই রায়ের মাধ্যমে তিনি প্রধান বিচারপতির আসনকে কলঙ্কিত করেছেন।
এই রায়ের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদী শাসন, শোষণ এবং বিরোধীদল নির্যাতন ও নিপীড়নে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি এবং মামলার রায় জালিয়াতির মতো অভিযোগে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে।
বিবৃতিতে নেতাকর্মীরা বলেন, বিচারবিভাগ মানুষের সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা। আর এই আস্থার জায়গাটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন খায়রুল হক, শুধুমাত্র তার রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য।
জাতি এখন তার অপরাধের সুষ্ঠু বিচার এবং যথাযথ শাস্তি দেখতে চায় দাবি করে নেতাকর্মীরা বলেন, ‘আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি, যাতে ওই পদে বসে আর কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।’
এসএম
আইন-আদালত
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।
কোন মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তা ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানাতে পারেননি।
দেশে ১৯তম প্রধান বিচারপতি সেবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। পরের বছর (২০১১ সাল) ১৭ মে ৬৭ বছরপূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর নেন।
বিচারাঙ্গনে তুমুলভাবে আলোচিত-সমালোচিত এ বিচারপতির বেশ কয়েকটি রায় চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে।