জাতীয়
কে এই এডিসি সাকলায়েন?
চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে সম্পর্কের জেরে চাকরি হারিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনারের (এডিসি) দায়িত্বে থাকা গোলাম সাকলায়েন। পরীকাণ্ডে আলোচনা শুরুর পর প্রথমে সাকলায়েনকে ডিবি থেকে সরিয়ে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়েছিল।
পরে সেখান থেকে তাকে ঝিনাইদহ ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হয়। এবার পরীকাণ্ডে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো সেই সাকলায়েনকে।
তাকে পরীকাণ্ডে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর খবরে চারদিকে যখন চলছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কে এই গোলাম সাকলায়েন শিথিল।
জানা গেছে, জীবনের প্রায় প্রতিটি ধাপে শীর্ষে থাকা গোলাম সাকলায়েন শিথিল ৩০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়ে চাকরিতে যোগ দেন। তবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পূর্বে পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণেও পেয়েছিলেন বেস্ট প্রবেশনারি অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি মাস্টার্স অব পুলিশ সায়েন্সেও প্রথম হয়েছিলেন তিনি। সবশেষ সাহসিকতা ও দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্যদের পদক রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পান তিনি। দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বন্দুকযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ কাজ ও অসীম সাহসিকতার জন্যই তাকে এসব পদক দেওয়া হয়।
সাকলায়েন ডিএমপির গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রীও প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ২০২১ জুলাইয়ে পরীমণির সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময়কালে তার স্ত্রী ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি জেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
গোলাম সাকলায়েনের জীবনের উত্থানের পথ এতটা মসৃণ ছিল না। তার জীবনের গল্পটাও ছিল সংগ্রাম মুখর। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মার পাড়ে মোক্তারপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া সাকলায়েন সব প্রতিকূলতা জয় করেই আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছে ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে সারদা সরকারি পাইলট অ্যাকাডেমি হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪ দশমিক ৬৩ নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। পরে রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখানে পড়ালেখা করতে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছিল তাকে। মধ্যবিত্ত পরিবারে তার বাবা ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কিন্তু তার ছিল মেরুদণ্ডের সমস্যা। ফলে সাকলায়েনকে রাজশাহীতে মেসে রেখে পড়ানোর সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। ফলে প্রতিদিন ৫০ কিলোমিটার সাইকেলে করে চারঘাট থেকে রাজশাহী এসে কলেজে ক্লাস করতেন তিনি।
এসএসসির মতো এইচএসসির ফলটাও আশানুরূপ ছিল না সাকলায়েনের। এ পরীক্ষায় তিনি জিপিএ ৩ দশমিক ৮০ পান। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় এ বিভাগে প্রথম হয়েছিলেন তিনি। এরপর একটি বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং সেন্টারে সাধারণ জ্ঞানের শিক্ষক ও টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছেন। নিজে কোচিংয়ে পড়ার সুযোগ না পেলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ছয় বছর গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষদের সন্তানদের বিনা মূল্যে পড়িয়েছেন তিনি। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন তার পড়ানো প্রায় ৫০০ ছেলে-মেয়ে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষার পর ফল পাওয়ার আগেই ৩০তম বিসিএসে ‘অবতীর্ণ’ বা ‘অ্যাপিয়ার্ড’ হিসেবে আবেদন করেন সাকলায়েন। তার প্রথম চয়েজ ছিল পুলিশ ক্যাডার। ৩০তম বিসিএসের কার্যক্রম যখন চলছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের পরীক্ষায় প্রথম হন সাকলায়েন। একই সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবেও টিকে যান, যোগ দেন সেই চাকরিতে। পোস্টিং হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সে অবস্থায় অংশ নেন ৩০তম বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষায়। কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন সে পরীক্ষায়। এরপর সারদা পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করে তাতে হয়েছেন প্রথম। বেস্ট প্রবেশনারি অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করে পরে পেয়েছেন বেস্ট অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। বিভাগের সবার পরামর্শে পেশাগত দক্ষতার তাত্ত্বিক জ্ঞান বাড়িয়ে নিতেই একসময় ফের ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, পুলিশ সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে। তাতেও প্রথম হন তিনি। কিন্তু সমালোচিত অভিনেত্রী পরীমণির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়ে ডিবি থেকে ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (দাঙ্গা দমন বিভাগ, পশ্চিম) বদলি হন এ পুলিশ কর্মকর্তা। এছাড়া সাকলায়েনের বিরুদ্ধে করা হয় তদন্ত কমিটি।
২০২১ সালের ১৩ জুন উত্তরা বোট ক্লাবে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমণি। পরদিন উত্তরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। এরপর পরীমণির সঙ্গে এডিসি গোলাম মোহাম্মদ সাকলায়েনের সম্পর্কের উপলক্ষ এ মামলার তদন্ত।
পরীমণি-সাকলায়েন কাণ্ডে বিভাগীয় তদন্তে বেরিয়ে আসে, এই নায়িকার সঙ্গে প্রায়ই রাতে বিভিন্ন স্থানে দেখা যেত এডিসি সাকলায়েনকে। রাত গভীর হলে গাড়ি নিয়ে বের হতেন তারা। মাঝেমধ্যে পরীমণির বাসায়ও যেতেন সাকলায়েন।
সর্বশেষ পরীমণি সাকলায়েনের বাসায় তার স্ত্রী না থাকা অবস্থায় গিয়ে প্রায় ১৮ ঘণ্টা সময় কাটান। এরপর জনসমক্ষে আসে তাদের একান্ত ঘনিষ্ঠ দৃশ্য। সিসিটিভির ফাঁস হওয়া দৃশ্যে দেখা যায়, ২০২১ সালের ১ আগস্ট রাত ৮টার দিকে চিত্রনায়িকা পরীমণিকে নিয়ে নিজবাসায় অবস্থান করেন গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম মোহাম্মদ সাকলায়েন।
সিসি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৮টার দিকে রাজারবাগের মধুমতি ভবনের সামনে থামে পরীমণির হ্যারিয়ার গাড়ি। ওই ভবনের ১০ তলায় সাকলায়েনের সরকারি বাসা। সাকলায়েন নিজে নেমে এসে রিসিভ করেন পরীমণিকে। এর কিছুক্ষণ পর সাকলায়েনের বাসায় প্রবেশ করেন পরীমনির খালাতো বোন ও তার স্বামী। পরে রাত ২টার দিকে পরীমণিসহ তিনজনই বের হয়ে যান বাসা থেকে। ঘটনার বেশ কিছু দিন পর ফাঁস হয় এই ফুটেজ।
এর জেরে গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খালা-২ শাখা থেকে উপসচিব রোকেয়া পারভিন জুঁই স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করার জন্য দরখাস্ত করা হয়।
উপসচিবের আবেদনের সর্বশেষ বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপবিধি ৩(খ) বিধি মোতাবেক ‘গুরুদণ্ড’ হিসেবে চাকরি হতে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’ দণ্ডের বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ১০ জনের
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০ জন মারা গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮৬ জন। আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৩৭৩ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯৩৮ জন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৫ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮১ হাজার ৪৫৬ জন। মারা গেছেন ৪৪৮ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জ্বালানি খাতে ৩ মাসে সাশ্রয় ৩৭০ কোটি টাকা: জ্বালানি উপদেষ্টা
জ্বালানি খাতের সরকারি ক্রয়ে গত তিন মাসে ৩৭০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে শিল্প খাতে জ্বালানি সংকট নিয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। চলতি সপ্তাহে ৪০টি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের দরপত্র দেওয়া হবে।
পাবলিক সেক্টরে প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিকে থাকতে হলে ঘুষ বাণিজ্য থেকে বের হতে হবে। সরকারি ক্রয়কে প্রতিযোগিতার মধ্যে আনার প্রয়োজন রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সখ্য করে আর ব্যবসা হবে না। ভালো ব্যবসায়ীদের জন্যই উপযোগিতা তৈরি করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
অক্টোবরে সড়ক-রেল-নৌপথে ঝরলো ৫৭৫ প্রাণ
বিদায়ী অক্টোবর মাসে বাংলাদেশে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত এবং ৮১৫ জন আহত হয়েছেন। ওই মাসে রেলপথে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় ৫৭৫ জন নিহত এবং ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অক্টোবরে ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত এবং ২৩৯ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩০ দশমিক ৫৩ শতাংশ, নিহতের ৩৪ দশমিক ৩১ শতাংশ ও আহতের ২৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।
সংগঠনটি জানিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ জন চালক, ১৩৭ জন পথচারী, ৫১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৩ জন শিক্ষার্থী, ১৮ জন শিক্ষক, ৭৬ জন নারী, ৬২ জন শিশু, ৫ জন চিকিৎসক, ৯ জন সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
দুর্ঘটনার শিকার হওয়া যানবাহনের মধ্যে ২৪ দশমিক ৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বাস, ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস।
দুর্ঘটনার কারণগুলো হলো- ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়া, ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, দশমিক ২৫ শতাংশ ট্রেনের সঙ্গে অন্য যানবাহনের সংঘর্ষ, দশমিক ৭৫ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচানো এবং ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ অন্যান্য কারণ।
অক্টোবরে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ২৯ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩০ দশমিক ৩৯ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে।
সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে ও ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং দশমিক ২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জুলাই বিপ্লবে আহত বাবুকে নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড
জুলাই বিপ্লবে আহত মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হবে।
বাবুর বয়স ৩৬ বছর। কাজ করতেন নয়াপল্টনের ছাপাখানায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বন্ধ হয়ে যায় ছাপাখানা। কিন্তু বাসায় বসে থাকেননি তিনি। জড়িয়ে পড়েন স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে। শনির আখড়ায় বাসা হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন আন্দোলনে যেতেন।
জানা যায়, ২০ জুলাই সকালের দিকে আন্দোলনে যোগদান করেন বাবু। গলি থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান সড়কে যান। এ সময় হেলিকপ্টার দিয়ে টহল দিচ্ছিল বিজিবি। হঠাৎ হেলিকপ্টার থেকে গুলি শুরু হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবু ৫-৬ হাত দূরে ছিটকে পড়ে। পুলিশ তাকে ঘিরে ধরে রাখে। রক্তে ভিজে যায় রাস্তা। পরিচিত একজন তার বোনকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। বোন বাবুর চার বন্ধুসহ ভাইকে উদ্ধার করতে আসে। কিন্তু পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাস্তায় পড়ে থাকে বাবু।
৫-৬ ঘণ্টা পর বোনের জামাই এসে বাবুকে স্থানীয় একটি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানেও শুরু হয় বিড়ম্বনা। কেন হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে? এ অভিযোগে চিকিৎসা শুরু করতেও দেরি হয়। এদিকে রক্তশূন্য হয়ে বাবু মৃতপ্রায়।
মুক্তিযোদ্ধা বাবা এদিন চিকিৎসকদের পায়ে পর্যন্ত ধরেন।
এদিকে মেয়ে হাজতে বন্দি। তাকে ছাড়াতে যান মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান। পুলিশ তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। পরে রাতে পুলিশ ফোন করে স্বামীকে চার হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলে। ধারদেনা করে টাকা দিলে মুক্তি মেলে বাবুর বোনের। আর বাবুর বন্ধুদের পাঠানো হয় কারাগারে।
আহত বাবুর পেটের নিচের অংশ দিয়ে ঢুকে কোমরের পেছন দিয়ে বের হয়ে যায় বুলেট। গুলি ছিন্নভিন্ন করে বাবুর খাদ্যনালি, মূত্রথলি, কোমরের হাড়।
চিকিৎসকরা তার পেটে দুইবার অপারেশন করেছেন। তার খাদ্যনালির অনেকাংশ কেটে ফেলতে হয়। বাকি অংশ পেটে ফুটো করে আলাদা করে মলত্যাগের রাস্তা বানানো হয়। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয় না। পরে সেপ্টেম্বর মাসে তাকে বিএমএমইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। কিছুদিন পর অবস্থা আরও খারাপ হয় বাবুর। মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় দেশের বাইরে পাঠানোর। ১৫ দিন আগে থাইল্যান্ডের চিকিৎসক এসে বাবুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তারা তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন।
মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তিনি দ্রুত বাবুকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদ বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা বাবুকে দ্রুত বিদেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। শুক্রবার তার টিকিট পাওয়া যায়। আজ বেলা ১১টার বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে তাকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হবে। দেশটির বেজথানি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে বাবুকে। এরই মধ্যে গণবিপ্লবে আহত আরও চারজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এলডিসি দেশগুলোতে ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন চাইলো বাংলাদেশ
জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) আজারবাইজানের বাকুতে কপ-২৯-এর চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে এলডিসি মন্ত্রী এবং ইইউ মন্ত্রীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে অবশিষ্ট সমস্যার সমাধানে উভয় পক্ষের সহযোগিতার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সমতাভিত্তিক চুক্তি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলেন, অনেক সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তিনি উভয় পক্ষকে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে কপ২৯-এ একটি অর্থবহ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে এলডিসি মন্ত্রীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তাদের মূল অবস্থান তুলে ধরেন।
ইইউ মন্ত্রীরা এলডিসি দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়গুলো স্বীকার করেন এবং জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন, নির্গমন হ্রাস এবং গ্লোবাল স্টকটেক প্রক্রিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।