আন্তর্জাতিক
রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ করা জেনসেন হুয়াং বিশ্বের ১৩তম ধনী
কদিন আগেই চিপ কোম্পানি এনভিডিয়া বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা পেয়েছে। এখন তারা দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে। কোম্পানিটির এই উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াংয়েরও সম্পদমূল্য বেড়েছে। বদৌলতে তিনি বৈশ্বিক বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি তালিকায় ১৩তম স্থানে উঠে এসেছেন।
তবে জেনসেন হুয়াংয়ের জীবনের পথপরিক্রমা অতটা মসৃণ ছিল না। বিশ্বের এই অতি ধনী একসময় রেস্তোরাঁয় ওয়েটার বা পরিচারক হিসেবে কাজ করতেন। এখন তিনি তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলারের কোম্পানির মালিক। ছোটবেলায় থাইল্যান্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
গতকাল শনিবার অবশ্য জেনসেন হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য কমেছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৩৬০ কোটি ডলার। সেদিন দুপুরে তাঁর সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ১১০ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের দিন শুক্রবার তিনি ছিলেন বিশ্বের ১১তম শীর্ষ ধনী।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর দরকার, বৈশ্বিক বাজারে সেটির মূল উৎস এখন এনভিডিয়া। ফলে চলতি বছর এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর এই কোম্পানির শেয়ারের দাম তিন গুণ বেড়েছে। অথচ চলতি বছর মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গত মঙ্গলবার বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা অর্জন করে এনভিডিয়া। সেই সঙ্গে কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেনসেন হুয়াংয়ের সম্পদমূল্যও বেড়েছে।
এনভিডিয়ার প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায়। এটি সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানি। গ্রাফিক প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ), অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই), মোবাইল কম্পিউটিং ও সিস্টেম অন চিপ ইউনিট (এসওসি) তৈরি করে তারা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের একচেটিয়া ব্যবসা করছে তারা।
জেনসেন হুয়াং ১৯৬৩ সালে তাইওয়ানের তাইনানে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু সেখানে রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে পাঁচ বছর বয়সে তাঁর পরিবার থাইল্যান্ডে চলে যায় এবং ৯ বছর বয়সে তাঁকে ও তাঁর ভাইকে ওয়াশিংটনের টাকোমায় এক চাচার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরপর কেন্টাকির এক বোর্ডিং স্কুলে ভতির করা হয় জেনসেনকে। সেই স্কুলটি ছিল এক ধরনের সংশোধনমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে সমস্যাগ্রস্ত কিশোরদের পাঠানো হতো। কিন্তু জেনসেংয়ের চাচা-চাচি তা জানতেন না।
সেই বোর্ডিং স্কুলে ক্লাসের পর প্রতিদিন জেনসেনকে ছেলেদের বাথরুম পরিষ্কার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার ভাই তখন কাজ করত এক তামাক কারখানায়। একপর্যায়ে তিনি রেস্তোরাঁয় পরিচারক হিসেবে কাজ নেন। তাঁর ভাষ্য, এ কাজ তাঁর লজ্জা ও জড়তা কাটাতে সহায়তা করেছে।
ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন জেনসেন হুয়াং। ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এরপর স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন জেনসেন। পড়াশোনা শেষ করে জেনসেন এলএসআই লজিকের কোরওয়্যারের ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দেন। বছরখানেক চাকরি করার পর ১৯৯৩ সালে ক্রিস মালাচোস্কি ও কার্টিস প্রিমের সঙ্গে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। এনভিডিয়ার সিইও ও প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন তিনি। সে সময় তাঁর বয়স ছিল ৩০। ২০০৭ সালে তাঁর বার্ষিক বেতন ছিল ২৪ দশমিক ৬ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। ফলে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৬১তম সর্বোচ্চ বেতনভোগী সিইও হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
এনভিডিয়া বহুদিন গেমিং কনসোলের চিপ তৈরি করেছে। এই চিপ গেমের ভারী গ্রাফিকস নিয়ন্ত্রণে কাজ করত; কিন্তু কয়েক বছর আগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা গবেষকেরা গেমের জন্য বিশেষায়িত চিপগুলো দিয়ে শক্তিশালী সব অ্যালগরিদম পরিচালনা করা শুরু করেন। এতেই খেলা ঘুরে যায়।
এসব চিপ একই সঙ্গে অনেক ডেটা বিশ্লেষণ ও প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। যেমন মেশিন লার্নিং, ভিডিও এডিটিং ও গেমিং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য ডেটাকে উপযোগী করে তোলা। প্রযুক্তিজগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন সংস্করণ সৃষ্টির বদৌলতে ফুলেফেঁপে ওঠে এই কোম্পানি। গত বছরের মে মাসে এনভিডিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) আরও উন্নত ও উচ্চক্ষমতার নতুন চিপ নির্মাণের ঘোষণা দেয়। ফলে স্টক মার্কেটে কোম্পানিটির বাজার মূলধন এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলারে উঠে যায়। সেখান থেকে এক বছরের মধ্যে তাদের বাজার মূলধন তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।
এনভিডিয়ার চলার পথ অত মসৃণ ছিল না। একাধিকবার ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছে হুয়াংকে। শুরুর দিকে চিপ বানাতে তাঁরা হিমশিম খান। সঠিক ও কার্যকর চিপ বানাতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হন। কয়েক বছর পর অবশেষে সফলতার মুখ দেখেন।
১৯৯৬ সালে যখন এনভিডিয়ার বয়স মাত্র তিন বছর, তখন তাদের প্রধান অংশীদার ভিডিও গেমিং কোম্পানি সেগার সঙ্গে চুক্তি ভেঙে যায়। গেমিং কনসোলগুলোতে থ্রিডি গ্রাফিকসযুক্ত করতে চিপ তৈরির চুক্তি ছিল সেগার সঙ্গে এনভিডিয়ার। অর্থের হিসাবে নতুন একটি কোম্পানির জন্য অনেক বড় চুক্তি ছিল এটি। কিন্তু ভুল নকশা ও উইন্ডোজের সঙ্গে কাজ না করায় এনভিডিয়া বেকায়দায় পড়ে যায়।
হুয়াং সে সময় ভাবেন, এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো সেগার সঙ্গে এ নিয়ে খোলামেলা কথা বলা।
হুয়াংয়ের ভাষ্যে, টাকার কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছিলাম; কিন্তু সেগার সিইও আমাকে অবাক করে দিয়ে চুক্তি ভঙ্গের আগে যতটুকু কাজ হয়েছিল, ততটুকুর অর্থ পরিশোধ করেন। ফলে আরও ছয় মাস টিকে থাকার মতো অর্থের সংস্থান হয় আমাদের। সেই অর্থ চিপ আরআইভিএ ১২৮ তৈরিতে ব্যবহার করে এনভিডিয়া। এটি ডাইরেক্টএক্সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। নতুন চিপটি বাজারের অন্যান্য চিপের তুলনায় উচ্চতর গ্রাফিক রেজল্যুশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। ১৯৯৭ সালে চার মাসের মধ্যে এই চিপের ১০ লাখের বেশি ইউনিট বিক্রি হয়। এটিই তাদের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়। পরের ঘটনাবলি এখন তো ইতিহাস।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই