আন্তর্জাতিক
রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ করা জেনসেন হুয়াং বিশ্বের ১৩তম ধনী

কদিন আগেই চিপ কোম্পানি এনভিডিয়া বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা পেয়েছে। এখন তারা দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে। কোম্পানিটির এই উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াংয়েরও সম্পদমূল্য বেড়েছে। বদৌলতে তিনি বৈশ্বিক বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি তালিকায় ১৩তম স্থানে উঠে এসেছেন।
তবে জেনসেন হুয়াংয়ের জীবনের পথপরিক্রমা অতটা মসৃণ ছিল না। বিশ্বের এই অতি ধনী একসময় রেস্তোরাঁয় ওয়েটার বা পরিচারক হিসেবে কাজ করতেন। এখন তিনি তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলারের কোম্পানির মালিক। ছোটবেলায় থাইল্যান্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
গতকাল শনিবার অবশ্য জেনসেন হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য কমেছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৩৬০ কোটি ডলার। সেদিন দুপুরে তাঁর সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ১১০ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের দিন শুক্রবার তিনি ছিলেন বিশ্বের ১১তম শীর্ষ ধনী।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর দরকার, বৈশ্বিক বাজারে সেটির মূল উৎস এখন এনভিডিয়া। ফলে চলতি বছর এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর এই কোম্পানির শেয়ারের দাম তিন গুণ বেড়েছে। অথচ চলতি বছর মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গত মঙ্গলবার বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির তকমা অর্জন করে এনভিডিয়া। সেই সঙ্গে কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেনসেন হুয়াংয়ের সম্পদমূল্যও বেড়েছে।
এনভিডিয়ার প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায়। এটি সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানি। গ্রাফিক প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ), অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই), মোবাইল কম্পিউটিং ও সিস্টেম অন চিপ ইউনিট (এসওসি) তৈরি করে তারা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের একচেটিয়া ব্যবসা করছে তারা।
জেনসেন হুয়াং ১৯৬৩ সালে তাইওয়ানের তাইনানে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু সেখানে রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে পাঁচ বছর বয়সে তাঁর পরিবার থাইল্যান্ডে চলে যায় এবং ৯ বছর বয়সে তাঁকে ও তাঁর ভাইকে ওয়াশিংটনের টাকোমায় এক চাচার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরপর কেন্টাকির এক বোর্ডিং স্কুলে ভতির করা হয় জেনসেনকে। সেই স্কুলটি ছিল এক ধরনের সংশোধনমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে সমস্যাগ্রস্ত কিশোরদের পাঠানো হতো। কিন্তু জেনসেংয়ের চাচা-চাচি তা জানতেন না।
সেই বোর্ডিং স্কুলে ক্লাসের পর প্রতিদিন জেনসেনকে ছেলেদের বাথরুম পরিষ্কার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার ভাই তখন কাজ করত এক তামাক কারখানায়। একপর্যায়ে তিনি রেস্তোরাঁয় পরিচারক হিসেবে কাজ নেন। তাঁর ভাষ্য, এ কাজ তাঁর লজ্জা ও জড়তা কাটাতে সহায়তা করেছে।
ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন জেনসেন হুয়াং। ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এরপর স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন জেনসেন। পড়াশোনা শেষ করে জেনসেন এলএসআই লজিকের কোরওয়্যারের ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দেন। বছরখানেক চাকরি করার পর ১৯৯৩ সালে ক্রিস মালাচোস্কি ও কার্টিস প্রিমের সঙ্গে এনভিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। এনভিডিয়ার সিইও ও প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন তিনি। সে সময় তাঁর বয়স ছিল ৩০। ২০০৭ সালে তাঁর বার্ষিক বেতন ছিল ২৪ দশমিক ৬ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। ফলে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৬১তম সর্বোচ্চ বেতনভোগী সিইও হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
এনভিডিয়া বহুদিন গেমিং কনসোলের চিপ তৈরি করেছে। এই চিপ গেমের ভারী গ্রাফিকস নিয়ন্ত্রণে কাজ করত; কিন্তু কয়েক বছর আগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা গবেষকেরা গেমের জন্য বিশেষায়িত চিপগুলো দিয়ে শক্তিশালী সব অ্যালগরিদম পরিচালনা করা শুরু করেন। এতেই খেলা ঘুরে যায়।
এসব চিপ একই সঙ্গে অনেক ডেটা বিশ্লেষণ ও প্রক্রিয়াজাত করতে পারে। যেমন মেশিন লার্নিং, ভিডিও এডিটিং ও গেমিং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য ডেটাকে উপযোগী করে তোলা। প্রযুক্তিজগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন সংস্করণ সৃষ্টির বদৌলতে ফুলেফেঁপে ওঠে এই কোম্পানি। গত বছরের মে মাসে এনভিডিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) আরও উন্নত ও উচ্চক্ষমতার নতুন চিপ নির্মাণের ঘোষণা দেয়। ফলে স্টক মার্কেটে কোম্পানিটির বাজার মূলধন এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলারে উঠে যায়। সেখান থেকে এক বছরের মধ্যে তাদের বাজার মূলধন তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।
এনভিডিয়ার চলার পথ অত মসৃণ ছিল না। একাধিকবার ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছে হুয়াংকে। শুরুর দিকে চিপ বানাতে তাঁরা হিমশিম খান। সঠিক ও কার্যকর চিপ বানাতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হন। কয়েক বছর পর অবশেষে সফলতার মুখ দেখেন।
১৯৯৬ সালে যখন এনভিডিয়ার বয়স মাত্র তিন বছর, তখন তাদের প্রধান অংশীদার ভিডিও গেমিং কোম্পানি সেগার সঙ্গে চুক্তি ভেঙে যায়। গেমিং কনসোলগুলোতে থ্রিডি গ্রাফিকসযুক্ত করতে চিপ তৈরির চুক্তি ছিল সেগার সঙ্গে এনভিডিয়ার। অর্থের হিসাবে নতুন একটি কোম্পানির জন্য অনেক বড় চুক্তি ছিল এটি। কিন্তু ভুল নকশা ও উইন্ডোজের সঙ্গে কাজ না করায় এনভিডিয়া বেকায়দায় পড়ে যায়।
হুয়াং সে সময় ভাবেন, এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো সেগার সঙ্গে এ নিয়ে খোলামেলা কথা বলা।
হুয়াংয়ের ভাষ্যে, টাকার কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছিলাম; কিন্তু সেগার সিইও আমাকে অবাক করে দিয়ে চুক্তি ভঙ্গের আগে যতটুকু কাজ হয়েছিল, ততটুকুর অর্থ পরিশোধ করেন। ফলে আরও ছয় মাস টিকে থাকার মতো অর্থের সংস্থান হয় আমাদের। সেই অর্থ চিপ আরআইভিএ ১২৮ তৈরিতে ব্যবহার করে এনভিডিয়া। এটি ডাইরেক্টএক্সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। নতুন চিপটি বাজারের অন্যান্য চিপের তুলনায় উচ্চতর গ্রাফিক রেজল্যুশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। ১৯৯৭ সালে চার মাসের মধ্যে এই চিপের ১০ লাখের বেশি ইউনিট বিক্রি হয়। এটিই তাদের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়। পরের ঘটনাবলি এখন তো ইতিহাস।

আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম

বিশ্ববাজারে কয়েক ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে সয়াবিন বীজ, পাম তেল ও সূর্যমুখী তেলের দাম। বাড়তে পারে সানফ্লাওয়ার ও পাম তেলের দামও। তবে আরেক ধরনের তেলের দাম কমেছে।
ট্রেড ইকোনোমিকসের তথ্যমতে, শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে প্রতি বুশেল সয়াবিনের বীজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২২ ডলার ৭৫ সেন্টে। মাস ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ। অপরদিকে পাম তেলের দামও মাস ব্যবধানে প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে বর্তমানে প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭২ ডলার ১৬ সেন্টে। আর প্রতি টন সূর্যমুখীর তেল বিক্রি হচ্ছে ৮২ ডলারে। সপ্তাহ ব্যবধানে ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ আর মাস ব্যবধানে ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়েছে ।
অপরদিকে ক্যানোলার দাম কমেছে। পূর্বাভাস বলছে, ক্যানোলার দাম নিম্নমুখী থাকতে পারে। সর্বশেষ তথ্যমতে, মাস ব্যবধানে ২ দশমিক ৩১ শতাংশ দাম কমে প্রতি টন এই তেল বিক্রি হচ্ছে ৪৭৭ ডলার ৫৯ সেন্টে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে এক সপ্তাহের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর পেছনে দুটি বড় কারণ- আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার কমার সম্ভাবনা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক ঘিরে উত্তেজনা।
ব্রেন্ট ক্রুড বেড়ে ১ দশমিক ২১ ডলার বা ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৬ দশমিক ৮৪ ডলারে এবং মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) বেড়ে ১ দশমিক ৩১ ডলার বা ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৩ দশমিক ৯৬ ডলারে লেনদেন শেষ করেছে।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণায় ভারতে চালের দাম বাড়ল

বাংলাদেশের ৫ লাখ টন শুল্কমুক্ত চাল আমদানির ঘোষণার পর ভারতে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটিতে মাত্র দু’দিনে চালের দাম ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে চাল রপ্তানির তোড়জোড়ে দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও সরবরাহে সাময়িক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।
দেশটির পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ ও দক্ষিণ ভারতের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বাংলাদেশ সাময়িকভাবে চালের ওপর ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক তুলে নেবে বলে তাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল। যে কারণে পেট্রাপোল সীমান্তের গুদামে পণ্য প্রস্তুত রেখেছিলেন তারা।
বুধবার বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে চাল আমদানির ২০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। এরপরই ভারতীয় ব্যবসায়ী বাংলাদেশে চাল রপ্তানিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণার পর ভারতের বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে স্বর্ণা চালের দাম প্রতি কেজি ৩৪ রুপি থেকে বেড়ে ৩৯ রুপিতে পৌঁছেছে। এছাড়া মিনিকেট ৪৯ রুপি থেকে বেড়ে ৫৫ রুপি, রত্না চাল ৩৬-৩৭ রুপি থেকে বেড়ে ৪১-৪২ রুপি এবং সোনা মসুরি ৫২ রুপি থেকে বেড়ে ৫৬ রুপি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
দেশটির চাল রপ্তানি ও বিপণন প্রতিষ্ঠান রাইসভিলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুরজ আগরওয়াল জানান, বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বুধবার দুপুরে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর সেদিন রাত থেকেই ভারত থেকে চালের ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, খরচ ও পরিবহন—উভয় দিক বিবেচনায় পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে চাল রপ্তানি করাটা সুবিধাজনক। যে কারণে উত্তরপ্রদেশ ও দক্ষিণ ভারতের কারখানা মালিকরাও এই স্থলপথেই বাংলাদেশে চাল রপ্তানি করছেন।
স্বর্ণা চালের চাহিদা সারা ভারতে রয়েছে। অন্যদিকে, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে মিনিকেট চালের জনপ্রিয়তা আছে। এছাড়া উত্তর ভারতে বেশি খাওয়া হয় রত্না চাল। আর সোনা মসুরি দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দাদের অন্যতম প্রধান পছন্দ।
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখা ও মূল্যস্ফীতি থেকে ভোক্তাদের স্বস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে চাল আমদানির শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে চালের দাম ১৬ শতাংশ বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ওই অর্থবছরে ১৩ লাখ টন চাল আমদানি করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।
আন্ধ্রপ্রদেশের চালকল মাকিল সি কে রাও বলেন, ‘‘আমার ট্রাকগুলো বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।’’
চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হালদার ভেঞ্চার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেশব কুমার হালদার বলেন, বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি সরবরাহ রয়েছে এবং ভারতে সরকারি ও বেসরকারি মজুত ভালো অবস্থায় আছে। এতে বৈশ্বিক চালের দাম কমেছে। বাংলাদেশের এই রপ্তানি অর্ডার ভারতীয় বাজারে চাহিদা সৃষ্টি করে আবার চাঙ্গা ও বৈশ্বিক দামের পতন আংশিকভাবে সামলাতে সাহায্য করবে।
আন্তর্জাতিক
সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন জেলেনস্কি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার (১৬ আগস্ট) জেলেনস্কি নিজে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে তাদের দুজনের আলোচনা হবে।
গতকাল শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হয়েছে। এরপরই ওয়াশিংটনে তাদের তাদের বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, “শান্তি অর্জনে সর্বোচ্চটা দিতে ইউক্রেন তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রুশ নেতার সঙ্গে বৈঠক ও তাদের মূল আলোচনার বিষয়গুলো নিয়ে আমাকে অবহিত করেছেন। এই পরিস্থিতি তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি প্রভাব রেখেছে। সোমবার, হত্যা ও যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা করতে আমি ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করব। এই আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ।”
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প প্রস্তাব দেন পুতিন ও জেলেনস্কি চাইলে বৈঠক করতে পারেন। আর তাকে যদি এতে রাখা হয় তাহলে তিনি থাকবেন। জেলেনস্কি ট্রাম্পের এ প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সমস্যা সমাধানে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব পর্যায়ের বৈঠক হওয়া উচিত।
ট্রাম্প দাবি করেন, জেলেনস্কি ও পুতিন দুজনই তাকে তাদের বৈঠকে চান। তবে রাশিয়া পরবর্তীতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের সময় ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
আন্তর্জাতিক
ফোন দিয়ে নরওয়ের অর্থমন্ত্রীর কাছে নোবেল পুরস্কার চাইলেন ট্রাম্প

বেশ কিছুদিন ধরেই নোবেল নিয়ে আলোচনায় রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাঝেই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। নরওয়েতে ফোন করে সরাসরি নোবেল পুরস্কার চেয়েছেন ট্রাম্প!
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) নরওয়ের দৈনিক ‘দাগেনস নর্যিংস্লিভ’ পত্রিকার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দাগেনস নর্যিংস্লিভ বলছে, বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য গত মাসে নরওয়ের অর্থমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন ডয়ন ট্রাম্প। এসময় তার কাছে সরাসরি নোবেল পুরস্কারই দাবি করে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী জেন্স স্টলটেনবার্গ যখন অসলোর রাস্তায় হাঁটছিলেন, তখন হঠাৎ করে তাকে ফোন করেন ডয়ন ট্রাম্প। ফোনে তিনি নোবেল পুরস্কার দাবি করেন এবং শুল্ক নিয়েও আলোচনা করতে চান।
এদিকে রয়টার্সকে দেওয়া এক মন্তব্যে ট্রাম্পের ফোনকলের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেছেন, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস স্টোয়েরের সাথে ট্রাম্পের ফোনালাপের আগে শুল্ক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই ফোনালাপ হয়েছিল।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারসহ হোয়াইট হাউসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এই ফোন কলে যুক্ত ছিলেন বলেও জানিয়েছেন স্টলটেনবার্গ। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।
তবে নরওয়ের পত্রিকাটি জানিয়েছে, ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব স্টলটেনবার্গের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প এবারই প্রথম নোবেল পুরস্কারের প্রসঙ্গ তোলেননি। আগেও এ কাজ করেছেন তিনি।
এর আগে, ইসরায়েল, পাকিস্তান, কম্বোডিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ শান্তি চুক্তি বা যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ‘আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন’ দেওয়ার বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেও বলেছেন, হোয়াইট হাউসের চারজন পূর্বসূরির পাওয়া এই সম্মাননা তিনিও পাওয়ার যোগ্য।
প্রসঙ্গত, নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতি বছর শত শত প্রার্থীকে মনোনীত করা হলেও বিজয়ীদের নির্বাচন করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। এই কমিটির পাঁচ সদস্যকে নরওয়ের পার্লামেন্ট নিয়োগ দেয়।
আন্তর্জাতিক
ভারতে তীর্থযাত্রীদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল কাদার স্রোত, নিহত ৬০

বৃহস্পতিবার ভারতের স্বাধীনতা দিবসে হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ওই ঘটনার পরদিন সেখানে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে এটি হিমালয়ের এই ধরনের দ্বিতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো ও ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৃষ্টির ফলে ভারী কাদা ও বন্যার পানি বৃহস্পতিবার চাসোতি গ্রামকে ঢেকে দেয়। ওইখানে তীর্থযাত্রীরা জনপ্রিয় তীর্থস্থল মাচাইল মাতার দিকে যাওয়ার আগে দুপুরের খাবারের জন্য জমায়েত হয়েছিল। সেই সময় কাদা ও পানিতে অনেক তীর্থযাত্রী ভেসে যায়।
আহত তীর্থযাত্রী রাকেশ শর্মা বলেন, আমরা একটি বিশাল শব্দ শুনলাম এবং সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের মতো পানি ও কাদা এসে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল। মানুষ চিৎকার করছিল। কিছু মানুষ চেনাব নদীতে পড়ে গেল। অন্যরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে।
শুক্রবার উদ্ধারকর্মীরা কাদা ও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে শাবল, দড়ি ব্যবহার করে এবং স্থায়ী নয় এমন সেতু পার করে মানুষকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ব্যাগ, জামাকাপড় ও অন্যান্য জিনিসপত্র কাদায় আচ্ছাদিত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়েছিল। পাশাপাশি ভাঙা বিদ্যুৎ খুঁটিও দেখা যাচ্ছিল।
একজন উদ্ধারকর্মী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, আমাদের বলা হয়েছে, আরও ১০০-১৫০ জন মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারে।
মাচাইল যাত্রা হলো হিমালয়ের উচ্চভূমির মাচাইল মাতার মন্দিরের প্রতি একটি জনপ্রিয় তীর্থযাত্রা। এই মাতা দেবী দুর্গার এক রূপ। তীর্থযাত্রীরা চাসোতি থেকে মন্দির পর্যন্ত হেঁটে যান। কারণ সেখানে গাড়ির রাস্তা শেষ হয়।
এক সপ্তাহ আগে হিমালয়ের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে একটি সম্পূর্ণ গ্রাম বন্যা ও ভূমিধসে ভেসে যায়।
ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে প্রায় দুই ঘণ্টার বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রকৃতি আমাদের পরীক্ষা করছে। সাম্প্রতিক কয়েক দিনে আমাদের ভূমিধস, মেঘভাঙা বর্ষণ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, মেঘভাঙা বর্ষণ হলো এক ঘণ্টার মধ্যে ১০০ মিলিমিটারের বেশি হঠাৎ ও প্রবল বর্ষণ। এই বর্ষণ বিশেষ করে বর্ষাকালে পাহাড়ি এলাকায় হঠাৎ বন্যা, ভূমিধস এবং ধ্বংস ঘটাতে পারে।