অর্থনীতি
বুধবার থেকে নতুন সময়সূচিতে চলবে ব্যাংক
সরকার ঘোষিত অফিস সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাংক লেনদেনের নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামীকাল থেকে নতুন সূচি অনুযায়ী ব্যাংকের লেনদেন ও অফিস কার্যক্রম চলবে।
নতুন নিয়মে বুধবার (১৯ জুন) থেকে ব্যাংকগুলোর লেনদেন শুরু হবে সকাল ১০টায়, যা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আর ব্যাংকগুলোর অফিস খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
এতদিন ব্যাংক লেনদেন হয়েছিল সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা এবং ব্যাংকগুলোর অফিস চলে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। সেই হিসাবে ব্যাংক লেনদেন আধা ঘণ্টা ও অফিস এক ঘণ্টা বেশি সময় চলবে। এর আগে গত ৯ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সরকার ঘোষিত অফিস সময়সূচির অনুবর্তনে পরবর্তী নির্দেশন না দেওয়া পর্যন্ত ১৯ জুন থেকে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা ও সাপ্তাহিকসহ টানা পাঁচ দিনের ছুটি শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার (১৮ জুন)। বুধবার (১৯ জুন) খুলছে অফিস-আদালত, সঙ্গে খুলছে ব্যাংক বিমা ও শেয়ারবাজার।
ত্যাগের মহিমায় সারা দেশে সোমবার (১৭ জুন) পালিত হয় মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ উপলক্ষ্যে ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন (রোব, সোম ও মঙ্গলবার) তিনদিন ছুটি। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এ কারণে এবারের ঈদের ছুটি পড়েছে পাঁচদিন। ফলে টানা পাঁচদিন ঈদের ছুটি শেষে বুধবার অফিসপাড়ায় যোগ দেবেন কর্মজীবীরা। খুলবে ব্যাংক-বিমা, শেয়ারবাজার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
তবে যারা ঢাকার বাইরে ঈদ করতে গেছেন সরকারি বেসরকারি বেশিরভাগ কর্মজীবী তাদের অনেকে এক দুদিন ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। ফলে অফিস আদালতে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হতে আগামী সপ্তাহ লেগে যাবে। তখনই রাজধানী ফিরবে আগের রূপে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নিত্যপণ্যের সাপ্লাই-চেইন স্থিতিশীল রাখার আহ্বান এফবিসিসিআইর
ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, ডাল, মসলাসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম জনগণের নাগালে রাখতে সাপ্লাই-চেইন স্থিতিশীল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুটিকয়েক কর্পোরেট কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল না থেকে, এসব পণ্য আমদানিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আমদানিকারকদের সমান সুযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা। এছাড়া আমদানি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার পাশাপাশি নিত্যপণ্যের কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণের দাবিও জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত খাদ্যজাতীয় নিত্যপণ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআইর পরিচালক এবং বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ এনায়েত উল্যাহ।
সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চিনি, মসলাসহ নিত্যপণ্যের কালোবাজারি রোধে এফবিসিসিআই ইতোমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছে। ভ্যাট নিয়েও কথা হয়েছে, আশা করি, একটি ইতিবাচক ফলাফল মিলবে।
নিত্যপণ্যের বাজারের সমস্যা ও সমাধানে উপায় নির্ধারণে এই খাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মতামত আহ্বান করেন তিনি।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে দেশের বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়। এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এ জন্য সবার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যবসায়ীসহ সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা নিত্যপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহ নিয়ে বাস্তবভিত্তিক একটি তথ্যভাণ্ডার বা ডাটাবেজ তৈরির প্রস্তাব জানান। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির জন্য কর্পোরেট কোম্পানিদের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে টিসিবিকে সরাসরি নিত্যপণ্য আমদানির আহ্বান জানান তারা। পাশাপাশি টিসিবির সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বন্ধ চিনিকলগুলো চালুর প্রস্তাব রাখেন বক্তারা। এছাড়া নিত্যপণ্যের চোরাচালান বন্ধে সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদারের পরামর্শ দেন ব্যবসায়ীরা।
সভায় এফবিসিসিআইর পরিচালকসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নেমে আসবে: অর্থমন্ত্রী
সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি পৌনে ৭ শতাংশে এবং মধ্য মেয়াদে সোয়া ৭ শতাংশে পৌঁছাবে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির হারও সাড়ে ৬ শতাংশে নেমে আসবে। শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট আমরা এমন এক সময়ে প্রণয়ন করছি যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চলমান মধ্যপ্রাচ্য সংকটসহ নানা বৈশ্বিক সংকটের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও মূল্যস্ফীতি-সহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। তাই এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে ইতোমধ্যে সংকোচনমূলক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে; নীতি সুদহার (রেপো) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়ে ৮.৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে এবং ব্যাংক সুদের হার সম্পূর্ণরূপে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। তাছাড়া রপ্তানি উৎসাহিতকরণ এবং প্রবাস আয়ে গতি সঞ্চারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডলারের বিনিময় হারের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। মুদ্রানীতির সংকোচনমূলক উদ্যোগের সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা রাজস্ব নীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করেছি, যেমন বাজেট ঘাটতি হ্রাসকরণ, কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় নিরুৎসাহিতকরণ এবং বিভিন্ন খাতে কৃচ্ছতাসাধনের উদ্যোগ। আমাদের গৃহীত এসব নীতি-কৌশলের ফলে আশা করছি আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নেমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এ কথা অনস্বীকার্য যে দীর্ঘমেয়াদে এ পন্থা অবলম্বন করা হলে প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। অথচ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের প্রয়োজন ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি। এ অবস্থায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন এবং প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখা– এ দুটি আপাত বিপরীতমুখী লক্ষ্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে আমরা এবারের বাজেট প্রণয়ন করেছি। আমরা দৃঢ়ভাবে আশা রাখি যে প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আমরা সাধ ও সাধ্যের মধ্যে ব্যবধান ঘুচিয়ে শিগগিরই উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে পারব।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইতোমধ্যে আমরা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের সব যোগ্যতা অর্জন করেছি এবং ধারাবাহিক উন্নয়নের একটি টেকসই ভিত্তি অর্জন করেছি। গত দেড় দশকে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৭ শতাংশেরও বেশি; জিডিপির মানদণ্ডে ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ অর্থনীতি। এই ভিত্তির ওপর ভর করে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত-সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার সাজিয়েছে। এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা মোট ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছি। এবারের বাজেটে সম্পদ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত অগ্রাধিকারগুলো অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসাহিতকরণ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ইত্যাদি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রেখেছি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট বরাদ্দ বৃদ্ধির হার ১১.৬ শতাংশ হলেও শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতে বাড়ানো হয়েছে ৩৯ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানের চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর আমরা যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো দেশে শিল্পায়ন ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য যে কাঙ্ক্ষিত অনুকূল ও সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা। আমরা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র মাধ্যমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া ব্যবসা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে আগামী ২০২৪-২৫ থেকে ২০২৬-২৭ পর্যন্ত সময়ে ১১০টি সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রস্তাবিত বাজেটে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সহায়ক অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পদ সঞ্চালনের পরিকল্পনা করেছি। এসব উদ্যোগের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগামী অর্থবছরে ৬.৭৫ শতাংশে এবং মধ্যমেয়াদে ৭.২৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আমরা আশা রাখছি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের জন্য বড় ঋণের অনুমোদন দিল বিশ্বব্যাংক
বে টার্মিনাল গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়নের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে বিশ্বব্যাংক। এ লক্ষ্যে গতকাল শুক্রবার ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৬৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পর্ষদ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হলে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। বন্দরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে আমদানি ও রপ্তানি ব্যয় অনেকাংশে কমবে। এর মাধ্যমে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগেও গতি আসবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বা বে টার্মিনাল সামুদ্রিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে সমুদ্রের পানির স্রোত ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া থেকে পোতাশ্রয়কে রক্ষায় করতে ছয় কিলোমিটার জলবায়ুসহিষ্ণু বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বন্দরের প্রবেশদ্বার, অববাহিকা ও সংযোগকারী চ্যানেলগুলো ড্রেজিং করা হবে। নতুন আধুনিক এই বে টার্মিনাল বিশ্বের শীর্ষ টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলো দ্বারা পরিচালিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর মাধ্যমে প্যানাম্যাক্স জাহাজের মতো বড় আকারের জাহাজ বন্দরে ঢুকতে পারবে। সেই সঙ্গে এসব জাহাজে মালামাল ওঠানো-নামানোর সময় কমবে। ফলে প্রতিদিন আনুমানিক ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের এই বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে বে টার্মিনালে বেসরকারি বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচিত হবে। সরকারি বিনিয়োগের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগের সম্মিলনে বে টার্মিনালে বিনিয়োগ করার বিষয়ে বেসরকারি খাতের আগ্রহ তৈরি হবে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতে নির্মিত একটি টার্মিনালে বিনিয়োগের বিষয়ে চিন্তা করছে বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাত বিষয়ক প্রতিষ্ঠান আইএফসি বা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন।
সন্দ্বীপ চ্যানেলে বে টার্মিনাল নির্মিত হবে। এর অবস্থান চট্টগ্রাম বন্দরের পশ্চিমে; টার্মিনাল থেকে ঢাকামুখী সড়ক কাছাকাছি। এই টার্মিনালে বাংলাদেশের ৩৬ শতাংশ কন্টেইনার ওঠানামা করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিপিং কোম্পানি, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, মালবাহী ফরওয়ার্ডারসহ ১০ লাখের বেশি মানুষ এর মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিসিবির জন্য ৪৯৩ কোটি টাকার তেল কিনছে সরকার
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ৪৯৩ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকার সয়াবিন তেল ও রাইস ব্রান অয়েল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৩৩১ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার সয়াবিন তেল এবং ১৬২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার রাইস ব্রান অয়েল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এই তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
জানা যায়, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা ৪৮ পয়সা। এতে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে মোট খরচ হবে ৩৩১ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে এই সয়াবিন তেল কেনা হবে।
এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত পুনঃদরপত্র পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রতি লিটার ১৪৭ টাকা ৩৫ পয়সা হিসাবে এই রাইস ব্রান তেল কিনতে মোট খরচ হবে ১৬২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের ৬৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন
বাংলাদেশের জন্য ৬৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার ৬৩৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১১৭.৫১ টাকা ধরে)। শনিবার (২৯ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এ তথ্য জানায়। ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক বোর্ড এই অর্থ অনুমোদন করে।
সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশকে বে-টার্মিনাল গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বিনিয়োগে সহায়তা করতে ৬৫ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হচ্ছে; যা বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতার উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করবে এবং বন্দর বৃদ্ধির মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি খরচ কমিয়ে আনবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বে টার্মিনাল সামুদ্রিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ কিলোমিটার জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক ব্রেকওয়াটার নির্মাণ করা হবে। নতুন এই আধুনিক বে টার্মিনাল আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটরদের দ্বারা পরিচালিত হবে। এই টার্মিনালে প্যানাম্যাক্স জাহাজের মতো বড় আকারের জাহাজগুলোর জন্য সুযোগ বাড়াবে এবং জাহাজের টার্নঅ্যারাউন্ড সময়কে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯০ শতাংশ এবং এর ৯৮ শতাংশ কনটেইনার প্রবেশ করে। তবে এই বন্দর দিয়ে ছোট ফিডার জাহাজগুলো প্রবেশ করতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করে। যা উল্লেখযোগ্য সক্ষমতার সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়। বে টার্মিনাল একটি গেম চেঞ্জার হবে। এটি বর্ধিত বন্দর সক্ষমতা এবং পরিবহন খরচ ও সময় হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতার উন্নতি ঘটাবে। এর মাধ্যমে মূল বৈশ্বিক বাজারে নতুন সুযোগ উন্মোচন করবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পটি কন্টেইনার টার্মিনালগুলোর উন্নয়নের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগকে একত্রিত করবে। সরকারি অর্থায়নের সাথে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং সামগ্রিক বে টার্মিনাল উন্নয়নের সাথে যুক্ত ঝুঁকি কমাতে অবদান রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ট্রান্সপোর্ট স্পেশালিস্ট এবং প্রকল্পের দলনেতা হুয়া টান বলেছেন, বে টার্মিনাল দেশের সমুদ্রবন্দর অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারের সংযোগ উন্নত করতে অবদান রাখবে। বে টার্মিনাল, চট্টগ্রাম বন্দরের পশ্চিমে আনন্দনগর/সন্দ্বীপ চ্যানেলে অবস্থিত এবং ঢাকার সাথে বিদ্যমান সড়ক ও রেল যোগাযোগের কাছাকাছি, বাংলাদেশের কন্টেইনারের পরিমাণের ৩৬ শতাংশ পরিচালনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কাফি