সারাদেশ
ঈদের দিনে ৭ জেলার সড়কে ঝরলো ১২ প্রাণ
সারাদেশে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সড়কে প্রাণ ঝরছে মানুষের। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিচ্ছেন অনেকে। ঈদের দিনেও বজায় আছে এই দুর্ঘটনা ও তাতে প্রাণহানির ধারাবাহিকতা।
সোমবার (১৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে সড়কে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে আরও ১২টি প্রাণ। দেশের সাতটি জেলায় মোট আটটি দুর্ঘটনায় এসব প্রাণহানি ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির খবর মিলেছে গাজীপুর থেকে। এ জেলায় দুটি দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া ময়মনসিংহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও দিনাজপুরে দুইজন করে এবং বগুড়া, নওগাঁ ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে মোট ৯ জন সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন একইদিনে।
দিনের শুরুতেই ভোর পৌনে চারটার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়াল সেতুর ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রাণ হারিয়েছেন দেলোয়ার ও রাকিব নামে মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে নাজিম নামে অপর বন্ধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভোর পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে তিন বন্ধু মোটরসাইকেলে করে টঙ্গীর দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের মোটরসাইকেলটি টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামের সামনে বিআরটিএ’র ফ্লাইওভারের ওপর ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।
এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়ায় গাড়ি চাপায় প্রাণ হারান অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
একইদিন সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঘটে আরেকটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান রবিউল খান (৫০) ও হুমায়ুন খান (৪৫) নামে আপন দুই ভাই। উপজেলার সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মনিরুল ইসলাম নামে আরও একজন আহত হয়েছেন। তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হতাহতদের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রবিউল ও হুমায়ুন ঢাকায় জুতার ব্যবসা করেন। আহত মনির তাদের পূর্বপরিচিত। ঈদের ছুটিতে তিনজন মিলে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাদের মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে দিনাজপুরের বিরামপুরে ঈদের দিনের জন্য সেমাই কিনতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এম এ কে আজাদ (৭০) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। একই দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে মৃত্যু হয় এনামুল হক (৪২) নামে আরেক ব্যক্তির।
সোমবার সকালে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের দিওড় বটতলী নামক স্থানে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ তার বাড়ি থেকে অটোরিকশায় চড়ে সেমাই কিনতে বিরামপুর বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই অটোরিকশায় ছিলেন এনামুল হকও। তাদের অটোরিকশাটি দিওড় বটতলী নামক স্থানে পৌঁছালে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক সেটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে অটোরিকশার দুই যাত্রী আজাদ ও এনামুল গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে, সকাল ৭টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘিতে বাবার সঙ্গে কোরবানির গরু আনতে যাওয়ার পথে ভটভটি উল্টে প্রাণ হারায় আহোনা আবিদ দোহা (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র। বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের বাবলা তলা নামক স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত দোহা নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আদমদিঘী থানার ওসি রাজেশ চক্রবর্তী জানান, স্থানীয় সাইদুজ্জামান তোতা তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে খামারে রেখে আসা কোরবানির গরু আনতে ভটভটিযোগে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাবলাতলা নামক স্থানে মোড় ঘোরার সময় ভটভটিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে ভটভটির নিচে চাপা পড়ে ছেলেসহ গুরুতর আহত হন সাইদুজ্জামান। স্থানীয় লোকজন বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে আদমদিঘী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ছেলে দোহাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একইদিন চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ হারান শুকুর হালসানা (৫৫) নামে এক বৃদ্ধ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এ সময় জীবননগর–চ্যাংখালি সড়কের পিচমোড়ে পৌঁছালে পিছন থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বেলা ১১টার দিকে নওগাঁর নিয়ামতপুরে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ হারায় হৃদয় (১৮) নামে এক তরুণ। তার পরিবারের লোকেরা জানায়, ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করতে নিয়ামতপুরের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় সে। পুলিশ জানায়, দ্রুত গতিতে থাকায় খড়িবাড়ি বাজারে নিয়ামতপুরগামী রাস্তার বাঁকে পৌঁছে আর মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারেনি হৃদয়। রাস্তার পাশে একটি আমগাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার মোটরসাইকেলটির। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
একইদিন দুপুরে আরেকটি মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। ঈদ উপলক্ষে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে প্রাণ হারায় রনি (১৮) ও আশিক (১৭) নামে দুই বন্ধু। উপজেলার পৌর সদরের পাইভাকুরী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঈদ উপলক্ষে ঘোরার জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় ওই দুই বন্ধু। ঈশ্বরগঞ্জ-নেত্রকোনা আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে পার্শ্ববর্তী গৌরীপুর উপজেলার তেলিহাটির দিকে যাচ্ছিল তারা। কিন্তু পথিমধ্যে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার পাইভাকুরী গ্রামের তালুকদার রাইস মিলের কাছাকাছি এসে তাদের মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাইস মিলের দেওয়ালে ধাক্কা খায়। এতে রনি ও আশিক দুজনই গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রথমে রনিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া আশিকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান তিনি। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয় তারও।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
চাঁদপুরে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, চিকিৎসাধীন ৩৬ জন
চাঁদপুরে নতুন করে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব। গত অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বর মাসে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ১৫ জনসহ মোট ৩৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জেলা শহরের পুরানবাজার এলাকার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বেশি। অনেকেই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে নিজের এলাকায় এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর সদর হাসপাতালে অক্টোবর মাসে ১৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নেন। নভেম্বরে ১৯ দিনেই চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৭ জন। নারীর চেয়ে পুরুষেরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে।
সিভিল সার্জনের পরিসংখ্যান বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, অক্টোবরে ৪০১ জন চিকিৎসা নিলেও নভেম্বরে এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ২৫৩ জন। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে মানুষকে সচেতন ও আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শারমিন জানান, আমিসহ আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ সবাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। আমরা সবাই কেরানীগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছি। সেখান থেকে চিকিৎসা জন্য বাড়ি চলে আসি, তারপর চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।
চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার সোহেল বেপারী জানান, আমার স্ত্রী ও বোনকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। পুরানবাজার এলাকা অধিকাংশ লোকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। চাঁদপুর পৌরসভা ঠিকভাবে ওষুধ ছিটায় না। তারা ঠিকভাবে কাজ করলে ডেঙ্গুর উপদ্রব কিছুটা কমে আসতো বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
গাজীপুরে আজকেও শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আজও বিক্ষোভ করেছেন ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড ও বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। অবরোধের কারণে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সকালে কারখানার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নেন তারা। এ সময় সড়ক অবরোধ করলে উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা সঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত অক্টোবরের বেতন পাইনি। বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। বেতন পেলেই আমরা কাজে ফিরব।’
অন্যদিকে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে আশপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ডরিন ফ্যাশন লিমিটেডের কারখানাও আছে। গতকাল সোমবার থেকে ডরিন ফ্যাশন কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করে ১১টার দিকে শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে যান। আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আবার শ্রমিকেরা জিরানী এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।
ডরিন ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা বলেন, ‘১ নভেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখে। গত রোববার খুলে দেয়া হলেও দুপুরের পর আবার ছুটি দিয়ে দেয়া হয়। গতকাল শ্রমিকেরা সকালে কাজে যোগদান করতে গিয়ে দেখেন, কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের কারখানায় কোনো সমস্যা হয়নি। তারপরও কেন কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে? তাই কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন।’
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতিমাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন তারা বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করে। বেক্সিমকো কারখানার এই সমস্যার কারণে গতকাল সংঘর্ষ হয় আরেও কয়েকটি কারখানা ও এলাকাবাসীর মধ্যে। উত্তেজিত হয়ে অ্যামাজন নামক একটি গেঞ্জি তৈরির কারখানায় আগুন দেয় শ্রমিকরা। ওই ঘটনার পর থেকে আশপাশের বেশ কিছু কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা প্রতি মাসেরই আন্দোলন করে বেতন আদায় করছে। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন ভাতা পরিশোধ করা হলেও চলতি মাসের ১৬ তারিখ হয়ে গেলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা বেতন পায়নি। যার কারণে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিনের মতো আজও শ্রমিকেরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। আশপাশের এলাকায় থানা-পুলিশ ও শিল্প পুলিশ মোতায়েন আছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষ, চারজন নিহত
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাস ও পিকআপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে মধুপুর পৌর শহরের মালাউড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
মধুপুর থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসার মো. মঞ্জুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ফজরের নামাজের পর মালাউড়ি এলাকায় বিনিময় বাস ও পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে পিকআপে থাকা ৪ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তাৎক্ষণিক নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
ফ্রেশ টিস্যু পেপারের গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১৪ ইউনিট
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের টিস্যু ফ্যাক্টরির একটি ভবনে আগুন লেগেছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় মেঘনা গ্রুপের ভেতর টিস্যু ফ্যাক্টরি গোডাউনে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের ১৪টি ইউনিট।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট ঝাউচর এলাকায় অবস্থিত মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের টিস্যু কারখানায় ভোরে বিদ্যুৎতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। আগুনে টিস্যু কারখানার প্রায় কয়েকশ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগ উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন বলেন, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড পেপার কারখানায় আগুনের খবর পেয়ে মেঘনা গ্রুপের নিজস্ব ফায়ার সার্ভিসসহ আমাদের প্রায় ১৪টি ইউনিট কাজ করছে। আগুনে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনো বলা যাচ্ছে না।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
অনিয়মে বন্ধ হয় আওয়ামীলীগ নেতার ডায়াগনস্টিক: সিভিল সার্জনের পদত্যাগ দাবী চাঁদপুর জেলা বিএনপি নেতাদের
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলন চাঁদপুরের সমন্বয়ক রাকিব ভূঁইয়াকে সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দালাল কর্তৃক হামলার ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। এতে তাকওয়া, মীম ও গ্রীন ভিউ নামে ৩টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে তাকওয়া নামে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করায় বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে গড়ায়। শেষ পর্যন্ত এসব ঘটনার দায়ভার চাপানো হচ্ছে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নুর আলম দীন এর ওপর।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে সড়কে সিভিল সার্জনের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে চাঁদপুরের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় তাকওয়া, মীশ ও গ্রিণ ভিউ এক্স-রে ডায়াগনস্টিক সেন্টার কার্যক্রম বন্ধ। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান গেটও তালা বদ্ধ।
এসব বিষয় জানার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে সিভিল সার্জনকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় মেডিকেল অফিসার (এমও-সিএস) ডাঃ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন এর সাথে। তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক সিভিল সার্জনকে ফোন দিয়েছেন। তিনি ব্যস্ত আছেন পরে কথা বলবেন এমনটি হয়েছে। কিন্তু তাকওয়াসহ ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হওয়ার বিষয়ে সিভিল সার্জন এর কোন সম্পৃক্ততা নেই। আজকে এসে দেখলাম আমাদের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ।
৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেল, সমন্বয়ক রাকিব ভূঁইয়াকে সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দালাল কর্তৃক হামলার ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি ওই সময় ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরপরে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল এমরান খাঁন। এতে সহযোগিতা করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (এমও-সিএস) ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন, চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজন কুমার দাসসহ একটি যৌথ টিম।
এই বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল এমরান খাঁন বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রোগীরা যাতে কোনো ভাবেই দালাল চক্রের শিকার হতে না হয় এবং সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা যায়। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে যে জটিলতার কথা বলা হয়েছে, তা দ্রুত সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তবে, যদি সঠিক কাগজপত্র না থাকে, তাহলে কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শাখাওয়াত হোসেন এসব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র সম্পর্কে বলেন, আমরা সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত, তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাইসেন্স নবায়ন এবং অন্যান্য নিয়মকানুন মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নুর আলম দীন বলেন, বিএনপির সভাপতির সাথে আমার কিছুই হয়নি। তাকওয়া নামে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করায় এই আন্দোলন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নিউ তাকওয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর মালিক হচ্ছে নাসরিন পারভীন ও কাজী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু। এর মধ্যে নাসরিন পারভীন হচ্ছে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ডাঃ দীপু মনির চাঁদপুর প্রতিনিধি ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন বাবুর স্ত্রী। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে। কিন্তু সেই সাইফুদ্দিন বাবুর স্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার বিষয়টি বিএনপির লোকজন জড়িত থাকায় ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়। বিএনপির নামধারী মহসীন পাটওয়ারী হচ্ছে হাসপাতালের দালালদের মধ্যে অন্যতম। তার অপকর্মের বিষয়ে স্থানীয় পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এসব বিষয়গুলো সামনে আসার কারণে এটি গড়ায় জেলা বিএনপি সভাপতি পর্যন্ত।
চাঁদপুর হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীন বলেন, কোন হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাগজপত্র নবায়ন না থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। এতে আমাদের কোন কিছু করার নেই। কিন্তু এসব কাগজপত্র নবায়ন করতে সয়ম লাগে। এটি কোন সমস্যা না। হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদেরকে নিয়মিত সরকারি কর ও নবায়ন ফি জমা দিতে হবে। এরপরে বাকী কাজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কিন্তু দেখাগেছে অনেক প্রতিষ্ঠান কয়েকবছর তাদের কাগজপত্র নবায়ন করেনি।
এবিষয়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের মন্তব্য জানতে তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোন যোগাযোগ করলে তিনি রিসিভ করেননি। ফলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।