আন্তর্জাতিক
পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে বৈশ্বিক ব্যয় রেকর্ড ১৩ শতাংশ বেড়েছে
২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর ব্যয় ১৩ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৯১.৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে প্রাক্কলনে উঠে এসেছে। চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স-এর (আইসিএএন) হিসাবে এ প্রাক্কলন উঠে এসেছে।
আগের বছরের তুলনায় গত বছর ১০.৭ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করা হয়েছে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে। ব্যয়বৃদ্ধির পেছনে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি।
রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত ব্যাপক ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ফলে শক্তিধর দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বাড়িয়েছে। এর দরুন খরচ বেড়েছে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনেও।
বিশ্বের নয়টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশই এ অস্ত্রের পেছনে খরচ বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিএএন।
২০২৩ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে চীন, ১১.৯ বিলিয়ন ডলার। যদিও এ খাতে বেইজিংয়ের মোট ব্যয় ওয়াশিংটনের চেয়ে অনেক কম। যুক্তরাষ্ট্র এ সময় পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে ব্যয় করেছে ৫১.৫ বিলিয়ন ডলার।
গত বছর পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে আছে রাশিয়া, ৮.৩ বিলিয়ন ডলার। এর পরই যুক্তরাজ্য (৮.১ বিলিয়ন ডলার) ও ফ্রান্সের (৬.১ বিলিয়ন ডলার) অবস্থান।
তবে তথ্যপ্রদানে স্বচ্ছতা না থাকায় কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র বা আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক কর্মসূচি ঘোষণা না করা তিন দেশের (ভারত, পাকিস্তান ও ইসরায়েল) ব্যয়ের হিসাব নিয়ে জটিলতা আছে।
গবেষণার অন্যতম লেখক সুসি স্নাইডার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নিশ্চিতভাবে ‘পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে’। এই অর্থ অস্ত্রের পেছনে খরচ না করে পরিবেশ ও সামাজিক কর্মসূচিতে ব্যবহার করা যেত বলে মনে করেন তিনি।
সুসি স্নাইডার বলেন, এই শত শত কোটি ডলার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এবং পৃথিবীর জীবনকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখা প্রাণী ও গাছপালাকে বাঁচানোর জন্য ব্যবহার করা যেত। সেইসঙ্গে এই অর্থ দিয়ে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবার উন্নতি করা যেত।
আইসিএএন তাদের গবেষণা শুরু করার পর গত পাঁচ বছরে পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে ব্যয় ৩৪ শতাংশ বা ২৩.২ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যয় ৪৫ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যের ব্যয় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালে এ ব্যয় ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক চালানোর পর থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপর্যুপরি পশ্চিমা দেশগুলোকে তার দেশের দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের কথা উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মে মাসে ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিরিজ মহড়াও দেওয়া শুরু করেছে রাশিয়া।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) সংগৃহীত অন্যান্য তথ্য বলছে, সক্রিয় পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে সক্রিয় পারমাণবিক ওয়ারহেড ৯ হাজার ৫৮৫টি। সক্রিয় ওয়ারহেড বাড়ার পেছনে মূল অবদান চীনের। বেইজিংয়ের ওয়ারহেড ৪১০ থেকে বেড়ে ৫০০-তে উন্নীত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সবচেয়ে বড় পারমাণবিক রাষ্ট্র রয়ে গেছে। ১৯৫০-এর থেকেই তারা বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। এই দুটি দেশের কাছেই মোট ওয়ারহেডের প্রায় ৯০ শতাংশ।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩ হাজার ৭০৪টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের বিপরীতে রাশিয়ার ৪ হাজার ৩৮০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েন বা মজুত রয়েছে।
সিপ্রির গবেষকরা বলেছেন, রাশিয়া ২০২৩ সালের জানুয়ারির তুলনায় অপারেশনাল বাহিনীর সঙ্গে প্রায় ৩৬টি বেশি ওয়ারহেড মোতায়েন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও মস্কো তার কোনো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বেলারুশে মোতায়েন করেছে বলে প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন তারা। যদিও পুতিন ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো প্রকাশ্যে বেলারুশে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিবৃতি দিয়েছেন।
প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত অপরিবর্তিত, অর্থাৎ ২২৫টিই আছে (ফ্রান্সেরও ২৯০টিই আছে আগের মতো)। তবে তিন বছর আগে যুক্তরাজ্য বলেছিল, রাশিয়া ও চীনের ‘হুমকি’ ঠেকাতে তারা ট্রাইডেন্ট ওয়ারহেডের সংখ্যার সীমা বাড়িয়ে ২৬০টি করতে ইচ্ছুক।
সিপ্রির গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) কর্মসূচির পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান বলেন, ‘স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারমাণবিক অস্ত্রকে (আর কখনও) এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে দেখিনি।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এলএনজি আমদানি কমাতে পারে চীন
গ্রীষ্মজুড়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানি কমাতে পারে চীন। দেশটি মজুদ সক্ষমতা প্রায় পূর্ণ হওয়ায় এবং স্পট মার্কেটে দাম বাড়ার কারণে সামনের মাসগুলোয় এলএনজি আমদানি কমাবে। এর আগে স্পট মার্কেটে পণ্যটির কম দাম ও সরবরাহ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় চলতি বছরের শুরুর দিকে এলএনজি আমদানি ব্যাপক হারে বাড়িয়েছিল চীন। খবর রয়টার্স।
চীন আমদানি কমালে ইউরোপের দেশগুলোয় এলএনজি সরবরাহ আরো বাড়বে। একই সঙ্গে এতে ইউরোপ ও চীন ছাড়া এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মজুদও বাড়বে।
চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সমুদ্র ও পাইপলাইন দিয়ে চীন রেকর্ড ৫ কোটি ৫০ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছে। এর আগে ২০২১ সালের একই সময়ে দেশটির আমদানির পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৫০ লাখ টন। এছাড়া চীন গত বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৪ কোটি ৭০ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছিল। ২০২২ সালের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৬০ লাখ।
চীনে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে এলএনজির অভ্যন্তরীণ উৎপাদনও বেড়েছে। এ সময় দেশটি রেকর্ড ৭ কোটি ৬০ লাখ টন এলএনজি উৎপাদন করে, গত বছর যা ছিল ৭ কোটি ২০ লাখ টন। ২০২২ সালে চীন ৬ কোটি ৮০ লাখ টন এবং ২০২১ সালে ৬ কোটি ৪০ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছিল।
সম্প্রতি এলএনজির ওপর আমদানিনির্ভরতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। তাই অভ্যন্তরীণ গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলন বাড়ানোয় মনোযোগ দিয়েছে দেশটি।
অন্যদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি-মে মাস পর্যন্ত চীনে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত ও আমদানীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রেকর্ড ১৩ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে। গত বছর এ পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৮০ লাখ টন এবং ২০২১ সালে ১১ কোটি ৪০ লাখ টন।
এদিকে এশিয়ার দেশগুলোয় জুনে এলএনজির আমদানি গত মাসের তুলনায় কিছুটা কমার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলার সংকলিত ডাটা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কেপলারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জুনে এশিয়ার দেশগুলোয় এলএনজি আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে মোট ২ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার টন, আগের মাসে যা ছিল ২ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টন।
এর মধ্যে চীন জুনে ৬১ লাখ ৭০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, আগের মাসে যা ছিল ৬১ লাখ ৯০ হাজার টন। আর গত বছরের জুনে চীন মোট ৬১ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছিল।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাপী তুলা উৎপাদন ও মজুদ বৃদ্ধির আভাস
সারাবিশ্বে চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে তুলা উৎপাদন ও মজুদ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড এগ্রিকালচারাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড এস্টিমেটস (ডব্লিউএএসডিই) প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর ফাইবারটুফ্যাশন, দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
ডব্লিউএএসডিই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী তুলার সমাপনী মজুদ ৮ কোটি ৩৫ লাখ বেলে (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) পৌঁছতে পারে, যা মে মাসের তুলনায় ৪ লাখ ৮০ হাজার বেল বেশি। এছাড়া ইউএসডিএ চলতি মৌসুমে বিশ্বব্যাপী তুলা উৎপাদন আগের পূর্বাভাস থেকে ৯০ হাজার বেল বাড়িয়ে ১১ কোটি ৯১ লাখ ৪০ হাজার বেলে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছে।
তুলা উৎপাদনে তৃতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ডব্লিউএএসডিই প্রতিবেদনে মার্কিন কৃষি বিভাগ দেশটির তুলা উৎপাদন ও মজুদ নিয়েও পূর্বাভাস দিয়েছে। ২০২৪-২৫ মৌসুমের শুরু ও শেষে দেশটিতে তুলা উৎপাদন ও মজুদ বাড়বে বলে জানানো হয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অনুমান অপরিবর্তিত রেখেছে ইউএসডিএ।
এর আগে ইউএসডিএ তার পূর্বাভাসে ২০২৪-২৫ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ১১ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার বেল তুলা উৎপাদন হতে পারে বলে জানিয়েছিল। আরো বলেছিল, এ সময় সমাপনী বৈশ্বিক মজুদ ২৫ লাখ বেল বেড়ে ৮ কোটি ৩০ লাখ বেলে উন্নীত হতে পারে।
তুলা উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ভারত। দেশটির সরকার সম্প্রতি এ পণ্যের ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) বাড়িয়েছে। শিল্প ও বাণিজ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত সরকার তুলার এমএসপি আগের তুলনায় ৫০১ রুপি বাড়িয়ে কুইন্টালপ্রতি ৭ হাজার ১২১ রুপি নির্ধারণ করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত সরকারের এ সিদ্ধান্ত তুলাচাষীদের জন্য সহায়ক হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে দেশটির বস্ত্র শিল্প।
ভারতে এর আগে মিডিয়াম স্ট্যাপল কটনের এমএসপি ছিল ৬ হাজার ৬২০ রুপি। বর্তমানে তা বেড়ে ৭ হাজার ১২১ রুপিতে পৌঁছেছে। এছাড়া দেশটিতে লং স্ট্যাপল কটনের সমর্থন মূল্য ছিল ৭ হাজার ২০ রুপি। বর্তমানে তা বেড়ে ৭ হাজার ৫২১ রুপিতে পৌঁছেছে। গত চার বছরে ভারতে তুলার এমএসপি ৬ হাজার ২৫ রুপি থেকে বেড়ে ৭ হাজার ৫২১ রুপিতে পৌঁছেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি
ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিক্রম মিসরি। তিনি চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। মিসরি বর্তমান পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার স্থলাভিষিক্ত হবেন। ১৫ জুলাই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি।
ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরি ১৯৮৯ ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস (আইএফএস) কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে আছেন। ১৪ জুলাই বিনয় কোয়াত্রার মেয়াদ শেষ হবে। এরপর তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব নেবেন।
মিসরি ১৯৬৪ সালে কাশ্মীরের শ্রীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে ছোটবেলায় পড়াশোনা করেন গোয়ালিয়রে। হিন্দু কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক করেন। এরপর এমবিএ করেছিলেন। ভারতের তিনজন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন মিসরি-ইন্দ্রকুমার গুজরাল (১৯৯৭ সাল), মনমোহন সিং (২০১২ থেকে ২০১৪) ও নরেন্দ্র মোদি (২০১৪ মে থেকে জুলাই)।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরি একাধিক দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতও ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত স্পেনে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তারপর মিয়ানমারে ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত। মিসরি ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, সে সময় পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও চীনের সংঘাত চরমে উঠেছিল।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুনে গালওয়ানে সংঘর্ষের সময় তিনি নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া বেলজিয়াম, পাকিস্তান, আমেরিকা, শ্রীলংকা ও জার্মানিতেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন মিসরি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সার্কভুক্ত দেশকে নিজস্ব মুদ্রা বিনিময়ের সুবিধা দেবে ভারত
সার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ছাড় দিয়ে ২৫ হাজার কোটি রুপির নতুন কারেন্সি সোয়াপ বা নিজস্ব মুদ্রা বিনিময়ের সংশোধিত কাঠামো চালুর কথা জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। অবশ্য এ জন্য আরবিআইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দ্বিপক্ষীয় সোয়াপ চুক্তি করতে হবে।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্কভুক্ত দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এই দেশগুলোকে কারেন্সি সোয়াপ সুবিধা দেবে। আগামী তিন বছরের জন্য কাঠামোটি করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছে আরবিআই।
আরবিআই জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনক্রমে ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য সংশোধিত কারেন্সি সোয়াপ চুক্তি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সুবিধা নেওয়ার মাধ্যমে ভারতীয় মুদ্রাকে সমর্থন দিলে সার্কভুক্ত দেশগুলো বিভিন্ন ছাড় পাবে। এ ছাড়া পৃথক সোয়াপ ব্যবস্থার মাধ্যমে মার্কিন ডলার ও ইউরোতে ২০০ কোটি ডলার অদলবদল চুক্তি বজায় রাখবে আরবিআই।
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সার্কভুক্ত দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা-সংকট ও লেনদেন ভারসাম্যের ঘাটতি মেটাতে ২০১২ সালের নভেম্বরে সার্ক কারেন্সি সোয়াপ চালু করে ভারত। গত বছরের ১১ জুলাই প্রথমবারের মতো ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু হয় মার্কিন ডলারের পাশাপাশি রুপিতে। প্রথমে রুপিতে শুরু হলেও উভয় দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমে এলে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকায়ও এ বাণিজ্যের সুযোগ রয়েছে।
চার কারণে রুপিতে বাণিজ্য করার বিষয়টি সামনে এনেছে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রথমত, ডলার-সংকটে রয়েছে উভয় দেশ। ফলে উভয় দেশ এতে লাভবান হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের দুবার মুদ্রা বিনিময় করার খরচ কমবে। তৃতীয়ত, লেনদেন নিষ্পত্তিতে সময় বাঁচবে। চতুর্থত, অন্য উদ্বৃত্ত মুদ্রা রুপিতে রূপান্তর করে লেনদেন নিষ্পত্তিতে ব্যবহার করা যাবে।
জানা গেছে, টাকা ও রুপিতে উভয় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য করার আলাপ চলছে প্রায় এক দশক ধরে। ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় সম্প্রতি তা আলোর মুখ দেখেছে। কাজটি বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশের দুই ব্যাংক ভারতের দুই ব্যাংকে নস্ট্র হিসাব খুলেছে। এক দেশের এক ব্যাংক অন্য দেশের কোনো ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের উদ্দেশ্যে হিসাব খুললে সে হিসাবকে নস্ট্র হিসাব বলা হয়ে থাকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পেরুতে ৭.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। শুক্রবার (২৮ জুন) মধ্য দেশটির মধ্য উপকূলীয় অঞ্চলে এ কম্পন অনুভূত হয়।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও, পরে তা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এদিকে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, কম্পনটি আটিকুইপা জেলা থেকে ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার (৫ দশমিক ৫ মাইল) দূরে আঘাত হানে। এর শক্তিশালী কম্পন কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি এলাকাতেও অনুভূত হয়। এমনকি, ভূমিকম্পের আঘাত রাজধানী লিমা পর্যন্ত অনুভূত হয়।
প্রাথমিকভাবে ইউএসজিএস জানিয়েছিল, এই ভূমিকম্পের ফলে পেরুর উপকূলরেখা বরাবর কিছু এলাকায় সুনামি হতে পারে। তবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগেই জানিয়েছিল, কিছু উপকূলীয় অঞ্চলে বিপজ্জনক সুনামি হতে পারে। তবে পরে সংস্থাটি জানায়, এই ভূমিকম্প থেকে আর সুনামির হুমকি নেই।
কারাভেলি শহরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আবাসিক এলাকার একটি রাস্তা প্রবলভাবে কাঁপছে ও স্থানীয় লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে।
এ ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী গুস্তাভো আদ্রিয়ানজেন জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পরে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
৩ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার দেশ পেরুতে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়ে থাকে। তাছাড়া দেশটি ভূতাত্ত্বিকভাবে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল ‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ারে’ অবস্থিত। ফলে এখানে প্রতি বছর শতাধিক ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
এর আগে ২০২২ সালের মে মাসের শেষের দিকে পেরুর পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় আজাঙ্গারো শহরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে প্রতিবেশি দেশ বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজও কেঁপে উঠেছিল।
তারও আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে পেরুতে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ২০০৭ সালের ১৫ আগস্ট পেরুর মধ্য উপকূলে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল, যাতে পাঁচ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।