অর্থনীতি
আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৭ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৫.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যদিও আগামী অর্থবছরে সরকার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট শীর্ষক জুন মাসের প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই অর্থবছরেও প্রবৃদ্ধির হার খুব একটা বাড়বে না বলে তারা পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। সেটা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কিছুটা বেড়ে হবে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আগামী অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। শুধু তাই নয় সরকার মনে করছে মধ্য মেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধির হার আরও বাড়বে।
প্রবৃদ্ধির বিষয়ে প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশে আমদানি নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে শিল্প কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে সরকারি কেনাকাটা ও বিনিয়োগ থাকার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড একভাবে চলে গেছে, কিন্তু উচ্চমূল্যের কারণে মানুষের প্রকৃত মজুরি ও পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। এতে ব্যক্তি মানুষের ভোগ অনেকটাই কমে গেছে।
এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় সরকার দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করায় ঋণের সুদ আরও বেড়েছে। এতে সমাজের ভোগের চাহিদায় টান পড়েছে।
ব্যাংকিং খাতে যে বিপুল পরিমাণ নিয়ে খেলাপি ঋণ তৈরি হয়েছে তা বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে আসায় ব্যক্তি পর্যায়ের ভোগ কিছুটা স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক এবং সেই সঙ্গে বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগেও গতি আসবে।
এদিকে বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত তিন বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি এবারই প্রথম স্থিতিশীল হবে। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৬ শতাংশ আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ২৪.৮৮ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান
বাংলাদেশকে ২৪ দশমিক ৮৮ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান। প্রতি ডলার সমানে ১১৯ টাকা ৫০ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের মধ্যে ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।
জাপান সরকারের ৪৫তম ওডিএ লোন প্যাকেজের প্রথম ব্যাচের আওতাধীন ‘যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কনসট্রাকশন প্রজেক্ট ও চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ সিস্টেম ডেভলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় চুক্তি সই হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ-জাপান সরকারের মধ্যে বিনিময় নোট ও ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বিনিময় নোট ও ঋণচুক্তি সই করেন। জাপান সরকারের পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি চুক্তিতে সই করেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এনইসি-২ সভাকক্ষে ঋণ চুক্তি সই হয়।
‘যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কনসট্রাকশন প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পে জাইকা ঋণ ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা)। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। প্রকল্পটির জন্য জাপান সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে দিয়ে আসছে। প্রকল্পের ঋণের সুদের হার নির্মাণ কাজের জন্য ১ দশমিক ৭০ শতাংশ, পরামর্শকের জন্য ০ দশমিক ৪০ শতাংশ, এককালীন ফি শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধকাল ৩০ বছর। এর মধ্যে ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড। প্রকল্পে তৃতীয় ধাপে ২৩ দশমিক ৭ কোটি ডলার দেবে চীন।
চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৫ হাজার ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রকল্পে জাইকা ঋণ ৪ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল জানুয়ারি ২০২৫ হতে নভেম্বর ২০৩২ পর্যন্ত। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো চট্টগ্রাম শহরে উপযুক্ত পয়োনিস্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, পয়োনিস্কাশন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পাম্পিং স্টেশন এবং পাইপলাইন ইত্যাদির মতো পয়োনিস্কাশন সুবিধা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং জলজ পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখা। প্রকল্পটির জন্য জাইকা বিভিন্ন পর্যায়ে ঋণ দিয়েছে। প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের জন্য জাইকা ১৩ কোটি ডলার ঋণ দেবে।
এ ঋণের (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) সুদের হার শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, এককালীন ফি শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধ কাল ৩০ বছর (১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ)। দ্বি-পাক্ষিক পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন সেক্টরে উল্লেখযোগ্য সহায়তা দিচ্ছে করেছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, পল্লী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নসহ অন্যান্যখাতের প্রকল্পে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার অনুদান সহায়তা হিসেবে জাপান সরকার ৩২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো এক হাজার ৮৯০ টাকা
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮৯০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম কমানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ২০, ২২ ও ২৪ নভেম্বর তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ২০ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের একভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ২ হাজার ৯৪০ টাকা। এরপর ২২ নভেম্বর বাড়ানো হয় ১ হাজার ৯৯৪ টাকা। আর ২৪ নভেম্বর বাড়ানো হয় ২ হাজার ৮২৩ টাকা। ফলে তিন দফায় প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ে ৬ হাজার ৭৫৭ টাকা।
টানা তিন দফা দাম বাড়ানোর পর এখন কিছুটা কমানো হলো। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৯০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮০৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের একভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫৪০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির একভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩১৮ টাকা কমিয়ে ৯৪ হাজার ৩২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ২৪ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৭০৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৩০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯৭১ টাকা বাড়িয়ে ৯৫ হাজার ৬৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ সোমবার পর্যন্ত এ দামেই সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অনলাইনে রিটার্ন জমা পাঁচ লাখ ছাড়ালো
গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেমটি করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সিস্টেমটি ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ৫ লাখ অতিক্রম করেছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) এনবিআর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২০২৪-২০২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা সহজে নিজের রিটার্ন তৈরি করে অনলাইনে দাখিল করতে পারছেন। সিস্টেমটি ব্যবহার করে গত ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ৫ লাখ অতিক্রম করেছে। আর অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের জন্য রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা অতিক্রম করেছে ১২ লাখ ৫০ হাজার।
যে সকল করদাতা ইতোমধ্যে সফলভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছে এনবিআর। এছাড়া অন্যান্য ব্যক্তি করদাতাদের যথাসময়ে পোর্টাল ব্যবহার করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করেছে সংগঠনটি।
এনবিআর আরও জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা সহজে এবং দ্রুত তাদের ২০২৪-২০২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করে দাখিলকৃত রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, টিআইএন সনদ ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারছেন। একইসঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করদাতারা কর পরিশোধের সুবিধা ও কর সমন্বয়ের সুবিধা পাচ্ছেন। এই বিষয়ে কল সেন্টার ও ইমেইলের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
ইতোমধ্যে সকল তফশিলি ব্যাংক, সকল মোবাইল টেলিকম প্রতিষ্ঠান, কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিনিধি, আয়কর আইনজীবী এবং প্রশিক্ষণপ্রার্থী করদাতাসহ প্রায় ২ হাজার ৪০০ জনকে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে এনবিআর।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২১ সালে ই-সিস্টেম চালু করার পর ২০২১-২০২২ কর বছরে ৬১ হাজার ৪৯১ জন, ২০২২-২০২৩ কর বছরে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮১ জন ও ২০২৩-২০২৪ কর বছরে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৭ জন করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুখ থুবড়ে পড়েছে এডিপি বাস্তবায়ন, একযুগে সর্বনিম্ন
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাস জুলাই-অক্টোবরে সর্বনিম্ন অর্থছাড় হয়েছে। এতে গত এক যুগের মধ্যে আলোচ্য সময়ে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপি থেকে সরকার বড় ধরনের কাটছাঁট করতে চায়। তারই প্রভাব পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও কাটছাঁটের প্রভাব পড়েনি বড় বরাদ্দ পাওয়া এলজিইডি ও সড়ক খাতে। তবে বরাবরের মতোই উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত।
রোববার (২৪ নভেম্বর) চার মাসের এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে আইএমইডি।
এতে দেখা যায়, চার মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। গত এক যুগে এর চেয়ে কম এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটে নেই। সে আলোকে বলা যায়, গত এক যুগে এত কম এডিপি বাস্তবায়ন হয়নি।
গত চার মাসে ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা অর্থছাড় হয়েছে, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পর সর্বনিম্ন। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা ছাড় হয়েছিল এই সময়ে। তার আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছাড় হয়েছিল ৩২ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা। মাস হিসেবে শুধু গত অক্টোবরে অর্থছাড় হয়েছে ৮ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। যেখানে আগের অর্থবছরের অক্টোবর মাসে ছাড় হয়েছিল ১১ হাজার ৮২ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা কাটছাঁট হতে পারে। এ কারণে বেশি প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে অর্থছাড় করা হচ্ছে। প্রকল্পের অগ্রাধিকার যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ধরা হয় ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোন প্রকল্প বেশি প্রয়োজনীয়, কোনটির প্রয়োজনীয়তা কম তা যাচাই বাছাই চলছে। প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে আছে। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হচ্ছে। ফলে সরকারকে ব্যয় কমাতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে অপচয়মূলক ব্যয় কমানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে খরচ কমানোর বড় জায়গা হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
উন্নয়নশীল দেশের জন্য ৩০ হাজার কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি
আজারবাইজানে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলার পাওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এই চুক্তি ২০৩৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। দুই সপ্তাহের দর-কষাকষির পর বাকুতে কপ ২৯ এর প্রতিনিধিরা শনিবার সমঝোতায় পৌঁছান। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও অভিযোজন ব্যয় বাবদ উচ্চ কার্বন নির্গমনকারী উন্নত দেশগুলো বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ের আশ্বাস দিয়েছে। যদিও এই অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। চুক্তিতে বার্ষিক এক দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলারের বিস্তৃত জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য অর্জনের কথাও রাখা হয়েছে।
এরমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি দুই তহবিলই থাকছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ মোকাবিলার জন্য এই অর্থ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। কপ ২৯ এর আসর শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু তহবিল নিয়ে ২০০ দেশ সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় সময় আরো বাড়ানো হয়। এক পর্যায়ে উন্নয়নশীল ও দ্বীপদেশগুলোর প্রতিনিধিরা হতাশা ব্যক্ত করে সম্মেলন থেকে ওয়াকআউট করেন৷ জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো চুক্তি দুর্বল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এর আগের চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়নে দরিদ্র দেশগুলোকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উন্নত দেশগুলো। তবে তা দুই বছর পর ২০২২ সালে গিয়ে বাস্তবায়িত হয়। এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালে। নতুন সমঝোতায় তহবিলের অঙ্ক বাড়লেও তা যথেষ্ট নয় বলে সমালোচনা করেছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সায়মন স্টিল এই চুক্তিকে মানবতার বীমা বলে অভিহিত করেছে।
তিনি বলেন, এই যাত্রা কঠিন হলেও আমরা একটি চুক্তি সরবরাহ করতে পেরেছি। তার আশা চুক্তির মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির বিকাশ এবং শতাধিক মানুষের জীবন রক্ষা পাবে। নতুন কর্মসংস্থান, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং সবার জন্য সস্তা ও পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির দুয়ার উন্মোচন হবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
তবে বলেছেন, যেকোনো বিমা পলিসির মতই এটা তখনই কাজ করবে যদি প্রিমিয়াম সবটা এবং সময়মত পরিশোধ করা হয়। অল্প কয়েকজনের প্রতিরোধ জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, এটা ঠিক যে কারো কারো প্রতিরোধের কারণে আজকে রাতের এই চুক্তিটি যথেষ্ট হয়নি। যারা এখানে অগ্রযাত্রা থামাতে, জলবায়ু ন্যায্যতাকে রুখতে এবং আমাদের জাতিসংঘের বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে এসেছিলেন তারা খুবই বাজেভাবে হেরে গেছেন। ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে তারা ত্যাগ করেননি বলে জানান বেয়ারবক। তার মতে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তিটি কেবল সূচনা।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ঐতিহাসিক দায় কেউ ভুলে যায়নি৷ তরুণ প্রজন্মের সদস্য হিসেবে এটা পরিষ্কার: আমরা অতীতের সমাধান দিয়ে ভবিষ্যতের জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবো না৷ আমরা জানি আজকে শুধু আমাদের সিদ্ধান্ত দিয়ে সব প্রয়োজন মেটানো যাবে না৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোর হতাশা প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ নিয়ে সবাই খুশি নয়।
ভারতের প্রতিনিধি চাঁদনি রায়না বলেছেন, এশিয়ান দেশগুলো এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি বলেন, আমরা এই ফলাফলে হতাশ৷ কারণ উন্নত দেশের দলগুলো স্পষ্টতই তাদের দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছা প্রকাশ করছে।
তিনি আরো বলেন, আমি দুঃখের সাথে বলতে চাই এই নথিটি একটি বিভ্রম ছাড়া আর কিছু না। আমরা যে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি তার সমাধান এটি করবে না। তাই, এই নথি গ্রহণে বিরোধিতা করছি আমরা।
অন্যদিকে, দ্বীপদেশ মালাওয়ির কূটনীতিক এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জোট এলডিসির প্রধান বলেছেন, আমরা কী আশা করছি তা পাওয়া এখানে লক্ষ্য নয়। কয়েক বছরের আলোচনার পর আমরা আর এই নিয়ে উচ্চাভিলাষী নই। নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু কমিশনার ভপকে হুকস্ট্রা মনে করেন, তহবিলের অঙ্ক ট্রিলিয়ন ডলার না হলেও তা প্রথম পদক্ষেপ মেটানোর মতো।
তিনি বলেন, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই তহবিল এবং কাঠামো দিয়ে এক দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলারের (লক্ষ্যমাত্রায়) পৌঁছাতে পারবো। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আশা করছেন, এই চুক্তি মেনে আরো বাস্তবতার দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, আমি আরো উচ্চাভিলাষী ফলাফল আশা করেছি। …কিন্তু এই চুক্তিটি নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর দিয়েছে। এটি অবশ্যই সম্পূর্ণ এবং সময়মতো বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিশ্রুতিগুলো দ্রুত নগদায়ন করতে হবে।
এমআই