অর্থনীতি
অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ঢাবি ভিসির

দেশের টাকা বিদেশে নিয়ে যারা কোম্পানি খুলছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন জানতে চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, দেশের অর্থ নিয়ে গিয়ে যারা বিদেশে কোম্পানি খুলছেন তাদের পরিচয় জানাতে আমাদের অসুবিধা কোথায়? তারা যদি প্রপার চ্যানেলে টাকা পাঠিয়ে না থাকেন, অর্থ পাচার করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? এ আইনগুলো কারা তৈরি করেছেন। কেন তৈরি করেছেন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে ‘প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি এই আয়োজন করে।
সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাজেটের অর্থ কোথায় যাচ্ছে, সেটার বিষয়ে আলোচনা ও প্রশ্ন তোলা উচিত। বড় বিনিয়োগ পাতালে হচ্ছে। যার থেকে রিটার্ন আসবে না। বেশি প্রয়োজন ন্যায্যতা নিশ্চিত করা। দরিদ্ররা অবিচারের কারণে আরো দরিদ্র হচ্ছে। আমি দুর্নীতি নিয়ে চিন্তিত নই। অপচয় নিয়ে চিন্তিত।
স্বাগত বক্তব্য দেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ।
আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া, এনবিআরের সদস্য এম এম ফজলুল হক, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।
এমআই

অর্থনীতি
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল, বাড়লো করহার

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বা ‘কালোটাকা’ সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রেখেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি ফ্ল্যাট ও ভবন নির্মাণে করের হার বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ প্রস্তাব দেন।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, নির্ধারিত হারে কর প্রদান করলেই কোনও প্রশ্ন ছাড়াই সেই অর্থ বৈধ বলে গণ্য করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে শর্ত থাকছে—অর্থটি যেন কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে অর্জিত না হয় এবং বিদ্যমান আইন-পরিপন্থি না হয়।
এলাকা ভেদে কর-হার
সরকারিভাবে নির্ধারিত এলাকা ভেদে ফ্ল্যাট বা ভবন কেনা এবং নির্মাণে কালোটাকা সাদা করতে হলে প্রতি বর্গফুটে নির্দিষ্ট হারে কর দিতে হবে। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল ও দিলকুশায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের অ্যাপার্টমেন্ট বা ভবনের ক্ষেত্রে কর হবে প্রতি বর্গফুটে ২ হাজার টাকা। একই এলাকায় ২ হাজার বর্গফুটের কম আয়তনের ক্ষেত্রে কর নির্ধারিত হয়েছে ১৮০০ টাকা।
ধানমন্ডি, উত্তরা, মহাখালী, লালমাটিয়া, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কাওরান বাজারসহ অন্যান্য অভিজাত এলাকায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের অ্যাপার্টমেন্ট বা ভবনের ক্ষেত্রে কর হবে ১৮০০ টাকা এবং অনধিক আয়তনের ক্ষেত্রে ১৫০০ টাকা।
অপরদিকে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোতে বড় ফ্ল্যাটের (১৫০০ বর্গফুটের বেশি) ক্ষেত্রে কর প্রতি বর্গফুটে ৭০০ টাকা এবং ছোট ফ্ল্যাটে (১৫০০ বর্গফুটের কম) কর ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা সদরের পৌর এলাকায় বড় ফ্ল্যাটের জন্য কর প্রতি বর্গফুটে ৩০০ টাকা এবং ছোট ফ্ল্যাটের জন্য ২৫০ টাকা। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বড় ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে কর ১৫০ টাকা এবং ছোট ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা।
ভবন নির্মাণেও সুযোগ
শুধু অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কেনা নয়, ভবন নির্মাণেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। এলাকা ভেদে প্রতি বর্গফুটে ৫০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত কর দিয়ে এই সুবিধা নেওয়া যাবে।
শর্তসাপেক্ষে বৈধতা
তবে দুটি শর্ত উল্লেখযোগ্য: ১. অর্থটি যদি অপরাধমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয়, তবে তা বৈধ করা যাবে না। ২. অর্থের উৎস বৈধ না হলে, আইনের এই ধারায় সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
বিতর্ক ও পর্যালোচনা
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে এ ধরনের সুযোগের প্রচলন থাকলেও গত বছর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২ সেপ্টেম্বর এই বিধান বাতিল করে। তবে চলতি বাজেটে পুনরায় তা চালু করা হলো, যদিও কর-হার বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এই সুবিধাকে দীর্ঘদিন ধরে ‘অনৈতিক’ ও ‘সৎ করদাতার প্রতি বৈষম্যমূলক’ বলে সমালোচনা করে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের সুযোগ বাস্তবে কালোটাকার স্রোত থামায় না, বরং এটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যমতে, স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকার অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা হয়েছে। তবে ১৯৯১-১৯৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকার এই সুবিধা বাতিল রেখেছিল। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ সে পথে এগোয়নি
কাফি
অর্থনীতি
ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবায় খরচ কমবে

ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবায় খরচ কমছে। প্রস্তাববিত বাজেটে এসব খাতে কর কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট সেবার ওপর উৎসে কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
জাতীয় বাজেট প্রস্তাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, ইন্টারনেট সেবার ওপর উৎসে কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি মোবাইল অপারেটরদের টার্নওভার কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই প্রস্তাবনা পাস হলে আরো দাম কমবে ইন্টারনেটের। একই সঙ্গে মোবাইলসেবা- টক টাইম, এসএমএসের খরচও কমবে।
কাফি
অর্থনীতি
বাজেটে দুদকের জন্য বরাদ্দ ১৯১ কোটি টাকা

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জন্য ১৯১ কোটি এক লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ বাবদ বরাদ্দ ছিল ১৬৪ কোটি টাকা।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এই বাজেট উপস্থাপন করছেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর সংশোধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন অনুসরণে দুর্নীতি দমন কমিশন যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত ‘দুদক সংস্কার কমিশন’ সম্প্রতি তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে, যা যাচাইপূর্বক দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
কাফি
অর্থনীতি
নির্বাচনী বছরে ইসি পাচ্ছে তিন হাজার কোটি টাকা

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে আগামী এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনসহ অন্যান্য খাতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য দুই হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (০২ জুন) অর্থ উপদেষ্টার দেওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সরকার পরিচালনা খাতে দুই হাজার ৭২৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, আর উন্নয়ন খাতে ২২৯ কোটি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান যে কাজগুলো বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে সেগুলো হলো- রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং এ সংক্রান্ত ডাটাবেইজ ও ডাটা সেন্টার রক্ষণাবেক্ষণ; জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ; রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য নির্বাচন ও উপ-নির্বাচন পরিচালনা; জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত ও বিতরণ এবং সেবা দেওয়া।
আরও রয়েছে, নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তিকরণ; নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন সম্পর্কিত আইনের প্রস্তাবনা প্রস্তুতকরণ এবং বিধিমালা, প্রবিধি ও নীতিমালা প্রণয়ন; রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধন করা রাজনৈতিক দলের প্রতীক সংরক্ষণ; এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সভা-সমিতি, সেমিনার-ওয়ার্কশপের আয়োজন ও অংশগ্রহণ এবং চুক্তি প্রণয়ন।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে যে খাতগুলো সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে, সেগুলো হলো- দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন, চারটি পৌরসভা সাধারণ নির্বাচন, ১০টি উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন, ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পাদন; কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন; ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণের কার্যক্রম; পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত, মুদ্রণ ও বিতরণ; উন্নতমানের (স্মার্ট) জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ; শূন্য থেকে ১৮ বছর বয়সের নিচে নাগরিক নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ।
আরও রয়েছে, এনআইডি সিস্টেমের অডিট ও ডকুমেন্টশন; প্রবাসে অবস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবাসেই নিবন্ধনকরণ ও স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ; এনআইডি মিনি আর্কাইভ/লাইব্রেরি স্থাপন; কুমিল্লায় অবস্থিত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় তথা আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশন ভবন স্থাপন এনআইডি সিস্টেমকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর কমন প্ল্যাটফর্মে সংযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সাইবার সেন্সর সিস্টেম স্থাপন; জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই/শনাক্তকরণ সংক্রান্ত পার্টনার সার্ভিস অব্যাহত রাখা; এবং নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম।
২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেট ইসির জন্য পরিচালনা খাতে ৭৯৩ কোটি টাকা ও উন্নয়ন খাতে ৪৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
কাফি
অর্থনীতি
বাজেটে ব্যাংকে সঞ্চয়কারীদের জন্য সুখবর

ব্যাংকে সঞ্চয় রাখা মানুষের জন্য নতুন বাজেটে ভালো খবর এসেছে। বর্তমানে ব্যাংকে বছরে একবার এক লাখ টাকার বেশি জমা হলেই ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তিন লাখ টাকার কম জমা পর্যন্ত আবগারি শুল্কে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ তিন লাখ টাকা অতিক্রম করলেই কেবল আবগারি শুল্ক দিতে হবে।
সোমবার বিকেলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনায় এ তথ্য উঠে আসে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দিতে কতিপয় ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এক লাখ টাকার পরিবর্তে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবারের বাজেটটি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।
অর্থ-উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাত্র অল্প কয়েক মাসে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে স্থিতিশীল করার কাজটি প্রায় সম্পন্ন করে আনা সম্ভব হলেও পরিপূর্ণ সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে আমাদের এখনো অনেকটা পথ পেরোতে হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাওয়ার প্রবণতা দেখা গেলেও তা এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত এপ্রিল মাসে মার্কিন প্রশাসনের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাবও আমাদের অর্থনীতির ওপর পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এছাড়া, সম্প্রতি যে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করা হয়েছে, তার কোনো নেতিবাচক প্রভাব আপাতত বাজারের ওপর পড়ার সম্ভাবনা না থাকলেও, এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে। এসব ঝুঁকি মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বৈষম্যহীন ও টেকসই ভিত্তি নিশ্চিত করা এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
অর্থ-উপদেষ্টা বলেন, আপাতত প্রবৃদ্ধির গতি বৃদ্ধির পরিবর্তে অর্থনীতির ভিত মজবুত করার দিকে আমরা অধিকতর মনোযোগ দিচ্ছি। এ শক্তিশালী ভিতই হবে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের সোপান। আগামীর সেই বাংলাদেশে সবার জন্য মানসম্মত জীবন এবং সব স্তরে বৈষম্যহীন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা প্রদান হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য পূরণে আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। ইনশা আল্লাহ্, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের সব মুক্তিকামী মানুষের জন্য এক অনুকরণীয় আলোকবর্তিকা।