আন্তর্জাতিক
মোদির মন্ত্রিসভায় শপথ নিলেন যারা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তার সঙ্গে পরপর শপথ নিয়েছেন নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরাও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান চলছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও অন্তত ৭০ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের মন্ত্রিসভায় এখন পর্যন্ত শপথ নিয়েছেন ৩০ জন মন্ত্রী, ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী ও স্বতন্ত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন পাঁচজন। তবে কাকে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে শুরু হয় নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠান। তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের নেতা নরেন্দ্র মোদি। এরপর একে একে শপথ নেন মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও। শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন মতে, মোদির পরেই শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এরপর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শাহের পর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। তারপরই মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হলেন তিনি।
এরপর শপথ নেন মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ওই রাজ্যেরই বিদিশা কেন্দ্রের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শিবরাজ সিং চৌহান। শিবরাজের পর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী ও রাজ্যসভার সংসদ সদস্য নির্মলা সীতারামন। নির্মলার পর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য এস জয়শঙ্কর।
জয়শঙ্করের পর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং এবার হরিয়ানার কার্নাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় পাওয়া প্রবীণ বিজেপি নেতা মনোহরলাল খট্টর। এরপর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার ছেলে জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী। এবার কর্নাটকের মান্ড্য কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি।
কুমারস্বামীর পর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিদায়ী মন্ত্রিসভায় ক্রেতাসুরক্ষা, খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এরপর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য এবং বিদায়ী মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
এ ছাড়াও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন এনডিএর শরিক দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার (হাম) নেতা জিতনরাম মাঝিঁ। এরপর শপথ নেন এনডিএর শরিক দল জেডিইউ-র রাজিবরঞ্জন সিং। নীতিশের দলের এই নেতা বিহারের মুঙ্গের আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।
এ ছাড়া মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সংসদ সদস্য বীরেন্দ্র কুমার, এনডিএর শরিক দল টিডিপির নেতা কে রামমোহন নাইডু, কর্নাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি সংসদ সদস্য প্রহ্লাদ জোশি ও ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সংসদ সদস্য জুয়েল ওরাওঁ।
আরও শপথ নিয়েছেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার গ্রামোন্নয়নবিষয়কমন্ত্রী এবং বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ গিরিরাজ সিং, বিদায়ী মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী এবং বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অশ্বিনী বৈষ্ণব, মধ্যপ্রদেশের গুনা আসনে বিজেপি সংসদ সদস্য এবং বিদায়ী মন্ত্রিসভায় বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে।
এমআই

আন্তর্জাতিক
দ্রুত ডুবে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম শহরগুলো

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর আবহাওয়া ও প্রকৃতি। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের খেসারত দিতে হচ্ছে কম-বেশি কম দেশকে। বাদ পড়ছে না উন্নত বিশ্বও। এই সমীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে, সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাবার কারণে দ্রুত ডুবে যাচ্ছে পৃথিবীর বড় শহরগুলো।
জাকার্তার বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী আর্না আজ যে ঘরে থাকেন, সেই বাড়ির জানালা এক সময় তার বুকের সমান উচ্চতায় ছিল। এখন তা হাঁটুর নিচে। বারবার বন্যা মোকাবেলা করতে গিয়ে পরিবারটিকে মেঝেতে এক মিটার পর্যন্ত কংক্রিট জমা করতে হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়ি যেমন নিচে নামছে, তেমনি বাড়ছে পানিবন্দি জীবনের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা। মাঝেমধ্যে এমনও হয়েছে—নৌকায় ঘরের ভেতরে চলাফেরা করতে হয়েছে।
আর্নার শহর জাকার্তা পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত ডুবে যাওয়া শহরগুলোর একটি। উত্তর জাকার্তায় তার বাড়ি এখন রাস্তার চেয়েও অনেকটা নিচু। মসজিদ, খেলার মাঠ, এমনকি পুরনো বন্দর—সবই এখন জলের নিচে।
এ একক ঘটনা নয়। নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার ৪৮টি উপকূলবর্তী শহর আশঙ্কাজনক গতিতে ভূমি ধসে পড়ছে। জাতিসংঘের জনসংখ্যা উপাত্ত ব্যবহার করে বিবিসি হিসাব করেছে, এসব শহরের অন্তত ৭ কোটি ৬০ লাখ মানুষ এমন এলাকায় বসবাস করে যেখানে প্রতি বছর গড়ে এক সেন্টিমিটার বা তার চেয়েও বেশি ভূমি ধস হয়।
চীনের তিয়ানজিন শহরে ২০২৩ সালে ভূমিধসের কারণে তিন হাজার মানুষকে বহুতল ভবন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। এ শহরের কিছু অংশ ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১৮ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ডেবে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো অতিরিক্ত মাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন। এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এ প্রবণতা আরো তীব্র করে তুলছে। ফলে ঘন ঘন বন্যা, লবণাক্ত পানি অনুপ্রবেশ, পানির মানের অবনতি এবং কৃষিজমির ক্ষয় দেখা দিচ্ছে।
বিশেষ করে নদীবাহিত বদ্বীপ অঞ্চলে গড়ে ওঠা শহরগুলো যেমন জাকার্তা, ব্যাংকক, হো চি মিন সিটি ও সাংহাই—সবচেয়ে ঝুঁকিতে। প্রায় অর্ধেক জাকার্তা এখন সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে। শহরটির ভৌগোলিক অবস্থান এমন এক স্থানে, যেখানে ১৩টি নদী এসে সমুদ্রে মিশেছে।
এ সংকটের মুখে ইন্দোনেশিয়া সরকার নতুন রাজধানী ‘নুসান্তারা’ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা বর্নিও দ্বীপে অবস্থিত। এখানে বিশাল জলাধার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ব্যবস্থা তৈরি করে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এ প্রকল্পটি সমালোচিত এর বিশাল ব্যয় (৩৪ বিলিয়ন ডলার) ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে।
আফ্রিকার লাগোস শহরেও একই সমস্যা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন শহরে দেয়ালগুলো উঁচু হতে থাকে, তখন ‘বোল ইফেক্ট’ তৈরি হয়, যা বৃষ্টির পানি আটকে ফেলে এবং তা সাগরে ফেরত যেতে পারে না। ফলে বন্যা বাড়ে। জাকার্তা ও হো চি মিন সিটি এরই মধ্যে পাম্পিং স্টেশন তৈরি করেছে, কিন্তু এটি মূল কারণকে সমাধান করে না।
অন্যদিকে, জাপানের টোকিও এ সংকটের কার্যকর সমাধান খুঁজে পেয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে তারা ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। পানির ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করে। এর ফলে শহরের ভূমি ধস প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
জাপানের অভিজ্ঞতা দেখায়, যথাযথ পরিকল্পনা, শক্তিশালী নীতিমালা এবং সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংকট মোকাবেলা সম্ভব। কিন্তু সেটি করতে হলে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, বিনিয়োগ এবং ভবিষ্যতের প্রতি দায়বদ্ধতা। নাহলে পৃথিবীর আরো অনেক শহর ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে জলমগ্ন ইতিহাসে।
আন্তর্জাতিক
ঈদ উপলক্ষে ৬৪৫ কয়েদিকে ক্ষমা করে দিলেন ওমানের সুলতান

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬৪৫ জন কারাবন্দিকে ক্ষমা করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক। ক্ষমাপ্রাপ্ত কারাবন্দিদের মধ্যে ওমানি নাগরিকদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিকও আছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সুলতানের দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতি থেকে জানা গেছে এ তথ্য। খবর গালফ নিউজের।
মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদিদের মধ্যে কতজন বিদেশি নাগরিক আছেন, তা উল্লেখ করা হয়নি বিবৃতিতে। তবে, বলা হয়েছে যে এই বিদেশিদের শিগগিরই নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
১৯৫৫ সালে জন্ম নেওয়া হাইথাম বিন তারিক ওমানের সিংহাসনে আরোহন করেন ২০২০ সালে। তিনি একইসঙ্গে ওমানের সুলতান এবং প্রধানমন্ত্রী। সিংহাসনে আরোহনের আগে তিনি ওমানের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বৃহস্পতিবারের রাজকীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মাননীয় সুলতান মানবিক মূল্যবোধের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারই প্রতিফলন হলো ঈদুল আজহার আগে ৬ শতাধিক কারাবন্দির মুক্তি। এদের মধ্যে যারা বিদেশি নাগরিক, তাদের রাষ্ট্রীয় খরচে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ওমান সবসময়েই দয়া, ঐক্য এবং সামাজিক সংহতিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। মাননীয় সুলতান মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদি এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে ঈদ উল আযহা

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে আজ (শুক্রবার, ৬ জুন) পালিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আযহা। সকালেই ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পালন করছেন কুরবানির আনুষ্ঠানিকতা।
চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশেই আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়াতেও।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিনায় ফিরছেন হাজিরা
ভৌগোলিক কারণে ঈদের প্রথম আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ায়। আজ ঈদ পালন করছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়ও।
এছাড়া ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী কয়েক ঘণ্টা আগে-পরে ঈদ উদযাপন হচ্ছে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মরক্কো, মৌরিতানিয়া, ব্রুনেই এবং মালয়েশিয়ায় ঈদ উল আযহা উদযাপিত হবে আগামীকাল শনিবার।
আন্তর্জাতিক
হজ পালনে সৌদি পৌঁছেছেন ১৫ লক্ষাধিক বিদেশি হজযাত্রী

চলতি বছর হজ পালনের জন্য ১৫ লাখের বেশি আন্তর্জাতিক হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বুধবার (৪ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির হজ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঘাসসান আল-নুয়াইমি। তবে এবার সৌদির স্থানীয় হজযাত্রীর সংখ্যা কতজন, তা জানানো হয়নি।
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হজ, যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলিমের জীবনে একবার পালন করা ফরজ। এতে রয়েছে ধারাবাহিকভাবে নির্ধারিত কিছু ইবাদত ও আনুষ্ঠানিকতা, যা মক্কা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে সম্পন্ন করতে হয়।
গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ১৬ লাখ ১১ হাজার ৩১০ জন হজযাত্রী হজ করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।
এ বছর গত বুধবার থেকে হজযাত্রীরা আরাফার ময়দানে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ প্রচণ্ড গরমে (যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি) হেঁটে মালপত্র বহন করে আরাফার দিকে যাচ্ছেন। অনেককে বয়স্ক সঙ্গীদের সাহায্য করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আরাফায় পৌঁছে বিশ্রাম নিচ্ছেন বা খাবার খাচ্ছেন, এরপর তাঁবুর উদ্দেশে যাত্রা করছেন।
মক্কা নগরীর দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আরাফার ময়দান একটি পবিত্র পাথুরে স্থান। এর ধর্মীয় তাৎপর্য অনেক। কোরআনে এই স্থানের উল্লেখ রয়েছে এবং ধারণা করা হয়, হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণ এখানেই দিয়েছিলেন।
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, আরাফার দিন হলো বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন, যখন আল্লাহ তার বান্দাদের নিকট আসেন এবং তাদের গুনাহ মাফ করেন।
হজযাত্রীরা মধ্যরাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করে নামাজ, দোয়া ও আত্মমগ্নতায় সময় কাটান। বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর তারা মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হবেন। সেখানে তারা শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
দশকের পর দশক ধরে সৌদি আরব হজ ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে। তবে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জই রয়ে গেছে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র গরম দিন দিন আরও উদ্বেগ তৈরি করছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বিন আবদুর রহমান আল-জালাজেল সম্প্রতি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, হজযাত্রীদের স্বস্তি দিতে ১০ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে বেড সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং প্যারামেডিকের সংখ্যা তিনগুণ করা হয়েছে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
মরক্কোতে খরা-সংকটে কোরবানি বন্ধ, সরকারি আদেশ জারি

গত কয়েক বছর ধরে প্রচণ্ড খরা চলছে মরক্কোতে। এছাড়া আরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে দেশটি। যে কারণে পশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। যার কারণে যেসব পশু অবশিষ্ট আছে সেগুলো রক্ষায় এ বছর কোরবানি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে দেশটি।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ মরক্কোতে কাল শুক্রবার (৬ জুন) উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন বিশ্বের সব মুসল্লি পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে মুসলিম প্রধান দেশ মরক্কোতে এ বছর কোরবানি না দিতে রাজকীয় ডিক্রি (সরকারি আদেশ) জারি করা হয়েছে।
দেশটির ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ তৌফিক রাষ্ট্রায়াত্ত্ব টিভিতে বুধবার (৪ জুন) রাজা পঞ্চম মোহাম্মদের জারি করা রাজকীয় ডিক্রিটি পড়ে শোনান। এই ডিক্রিতে রাজা পঞ্চম মোহাম্মদ সাধারণ মানুষকে এ বছর কোরবানি না দিতে অনুরোধ জানান।
কেন এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত?
মরক্কোর সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশটিতে গত কয়েক বছর ধরে প্রচণ্ড খরা চলছে। এছাড়া আরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে মরক্কো। যে কারণে পশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। যেসব পশু এখনো অবশিষ্ট আছে সেগুলো রক্ষায় এ বছর কোরবানি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া কৃষিখাতের স্থায়িত্ব রক্ষাতেও এমন বিতর্কিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সাধারণ মানুষ যেন এই সরকারি আদেশ অমান্য করতে না পারেন সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ও তদারকি বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া পশু পরিবহনের পথেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। কেউ আদেশ অমান্য করে পশু কোরবানি করলে তাকে বিপুল অর্থ জরিমানা এমনকি কোরবানির পশু জব্দ করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে।
তবে দেশটির একটি কৃষি সংগঠনের প্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আমের জানিয়েছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কৃষকদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এমনিতেই খরার কারণে তারা লসে আছেন। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঈদকে সামনে রেখে তারা পশু প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু এখন কৃষকরা যদি এগুলো বিক্রি করতে না পারেন তাহলে আরও ক্ষতির মুখে পড়বেন। তিনি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সরকারি বাহিনী বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে সাধারণ মানুষের কেনা ভেড়া জব্দ করছে। এটি ভাইরাল হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন তারা এই সরকারি আদেশ কোনোভাবেই মানবেন না এবং ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন।
কাফি