জাতীয়
আজকের সৃষ্ট নথিপত্রই আগামী দিনের ঐতিহাসিক দলিল: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, আজকের সৃষ্ট নথিপত্রই আগামী দিনের ঐতিহাসিক দলিল তথা মূল্যবান আরকাইভাল উপকরণ। তাই গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের আরকাইভাল মূল্য সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষসহ সবার মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
আজ ৯ জুন ‘আন্তর্জাতিক আরকাইভস দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সচেতন একজন পরিপূর্ণ বাঙালি। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মূল উপাত্ত সংরক্ষণের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে ‘বাংলাদেশ জাতীয় আরকাইভস’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশ জাতীয় আরকাইভস দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপাত্ত ও উপাদানসমূহের কেন্দ্রীয় সংরক্ষণাগার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় আরকাইভসে রক্ষিত পুরাতন নথিপত্র দেশ-বিদেশের সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, গবেষকসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য ইতিহাস চর্চার অমূল্য দলিল। বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের উৎস ও রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও জাতীয় আরকাইভসে রক্ষিত দলিলাদির ঐতিহাসিক মূল্য অনেক বেশি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জাতীয় আরকাইভস আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি স্মার্ট আরকাইভস হিসেবে গড়ে উঠবে এবং অচিরেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধশালী আরকাইভস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক আরকাইভস দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’
তিনি এ উপলক্ষ্যে আরকাইভস ব্যবহারকারী, গবেষক এবং আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি ‘আন্তর্জাতিক আরকাইভস দিবস’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।

জাতীয়
টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি পাইনি: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাজ্যের এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের চিঠির বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন এমন কোনো চিঠি তারা পাননি।
রবিবার (৮ জুন) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আমরা টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি পাইনি। গত ৫ জুন তারিখ থেকে আমরা ছুটিতে আছি।
জানা যায়, আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরে আসবেন। এর মধ্যে রোববার (৮ জুন) যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল–বোঝাবুঝির’ অবসান করতে চান টিউলিপ সিদ্দিক। তাই অধ্যাপক ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফরের সময় তার সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া চিঠিতে টিউলিপ লিখেছেন, আমি যুক্তরাজ্যের একজন নাগরিক, লন্ডনে জন্মেছি এবং গত এক দশক ধরে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করছি।
‘বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি নেই এবং সেখানে কোনো সম্পত্তি বা বাণিজ্য করার কোনো আগ্রহ বা পরিকল্পনা আমার ছিল না, এখনও নেই। আমি বাংলাদেশকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি, কিন্তু দেশটি আমার জন্মভূমি নয়। আমি যুক্তরাজ্যেই বড় হয়েছি, বেড়ে উঠেছি এবং নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করেছি।’
‘আমি দুদকের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করতে চেয়েছি। লন্ডনে আমার আইনজীবীরা এ ইস্যুতে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে কিন্তু দুদক আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে চায়নি। তারা আমাকে তলব করে ঢাকার যে ঠিকানায় চিঠি পাঠাচ্ছে, সেটিও সঠিক নয়।
‘এই যে একটি অলীক অনুসন্ধান দুদক শুরু করেছে— তার প্রতিটি পদক্ষেপ মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করা হচ্ছে এবং তা করা হচ্ছে আমার লিগ্যাল টিমের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ না করেই।’
‘আপনি যুক্তরাজ্য সফরে আসছেন। আমি আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী। আমার সঙ্গে আমার মায়ের বোন ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক নিয়ে যেসব ভুল ধারণা বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের বরাতে ছড়িয়ে পড়েছে, আমি আশাবাদী যে আপনার সঙ্গে আমার সাক্ষাতের পর সেসব দূর হবে।’
প্রসঙ্গত, রাজা চার্লসের আমন্ত্রণে আগামীকাল ৯ জুন চার দিনের এক সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে রাজা এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
জাতীয়
মাঝারি-ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে সরকার খুবই আন্তরিক: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে খুবই আন্তরিক জানিয়ে, এ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পাশাপাশি টেকসই শিল্পায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান। রোববার (৮ জুন) সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০২৫’ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) সব অংশীজন এবং সহযোগী সংস্থাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘অ্যাক্রেডিটেশন : এমপাওয়ারিং স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (এসএমই)’ বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের একটি বৃহৎ অংশ এসএমই খাত থেকে আসে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও এ খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, ক্রেতা ও ভোক্তার পরিবর্তনশীল চাহিদা এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতার মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগ।
ড. ইউনূস বলেন, অ্যাক্রেডিটেশন ব্যবস্থা জাতীয় গুণগতমান অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পণ্য ও সেবার সরবরাহ ব্যবস্থার সব পর্যায়ে গুণগতমান নিশ্চিতকরণ, দক্ষ কারিগরি জনবল সৃষ্টি, বাণিজ্যে কারিগরি বাধা অপসারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএবি এ লক্ষ্যে কাজ করে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ল্যাবরেটরি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সনদ প্রদানকারী সংস্থা এবং পরিদর্শন সংস্থাসহ মোট ১৫৫টি সরকারি, বেসরকারি এবং বহুজাতিক সংস্থাকে আন্তর্জাতিক মান অনুসারে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ দেওয়া হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতীয়
পাসপোর্টে ভেরিফিকেশন বাতিলে ৩ মাসে বিস্ময়কর সাফল্য

পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় এর সুফল পাওয়া শুরু করেছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এই সিদ্ধান্তের পর চলতি বছরে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ৯ লাখ ৩২ হাজার ৮৬টি পাসপোর্ট ইস্যু করেছে অধিদফতর। দেশে পাসপোর্টের ইতিহাসে এটি এক যুগান্তকারী সাফল্য।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভোগান্তি কিংবা দালালদের দৌরাত্ম্য কমায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন আবেদনকারীরা। পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার দিন (২১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৩৮টি পাসপোর্ট আটকে ছিল। কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় এসব আবেদনকারীর কাছে পৌঁছে গেছে।
পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে ইস্যু করা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৩টি পাসপোর্ট, এপ্রিল মাসে ৩ লাখ ২২ হাজার ১৩০টি এবং মে মাসে ইস্যু করা হয়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪২৪টি।
অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নূরুল আনোয়ার বলেন, ভেরিফিকেশনের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়ার পর এখন আবেদন করার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন প্রত্যাশীরা। মাঝখানে তাদের যে সময় লাগতো, সেটি আর লাগছে না।
পাসপোর্ট অধিদফতরে সম্প্রতি সরেজমিন গেলে কথা হয় অনেক সেবা প্রত্যাশীর সঙ্গে। পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের বিষয়ে তারা বলছেন, যেহেতু একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। সেখানে আবার যাচাই-বাছাইয়ের কারণে ভোগান্তির শিকার হতে হতো। অনেক সময় পুলিশ টাকাও দাবি করতো। টাকা না দিলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা তাদের রিপোর্টও দিতো না। এতে পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা নির্ধারিত সময়ের পাসপোর্ট পেতো না। এখন আর কোনও ঝামেলা নেই। আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য দালালদের কাছেও যেতেন অনেকে। দালালকেও টাকা দিতে হতো। এখন দালাল ছাড়াই সরকারের নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে সবাই পাসপোর্ট করতে পারছেন।
পাসপোর্ট প্রত্যাশী একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা বা দালাল ছাড়াই ১০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেলাম। এটি সত্যিই স্বপ্নের মতো।
কীভাবে এত দ্রুত পাসপোর্ট পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। আর বাদবাকি সব অটো হয়ে গেছে। একজন গ্রাহক হিসেবে আমি তো ১০-১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়াতেই পারি। আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি।
কলামিস্ট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. কুদরাত-ই খুদা বলেন, পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ায় নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফলে যথাসময়ে গ্রাহকের পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে বিলম্ব হতো। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক পাসপোর্ট অফিসকে দোষারোপ করত। কিন্তু এখন পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিসের আওতায় যে কোনো প্রয়োজনে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন পাসপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
পাসপোর্ট নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী গোলাম তৌসিফ স্বাক্ষরিত পরিপত্র জারি করা হয়। এতে বলা হয়, পুলিশ ভেরিফিকেশন নয়, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের (এনআইডি) ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেবে সরকার।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়া হবে। পাসপোর্ট পুনঃ ইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সঙ্গে মৌলিক তথ্যের পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে। পাসপোর্ট আবেদনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটাবেজ বা জন্মনিবন্ধন ডেটাবেজের সঙ্গে যাচাই করা হলে তা বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩ এর ৫ (২) ধারার উদ্দেশে পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষ হয়েছে বলে গণ্য হবে।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’ এর উদ্বোধনী বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এখন থেকে পাসপোর্ট পেতে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। পাসপোর্ট আমাদের নাগরিক অধিকার। জন্মসনদ ও এনআইডির মতো পাসপোর্টও এই দেশের নাগরিকদের একটি পরিচয়পত্র। জন্মসনদ ও এনআইডির জন্য আমাদের যেমন পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগেনি, তেমনি পাসপোর্টের জন্যও লাগবে না। এই দেশের নাগরিক হিসেবেই আমরা তা পাবো।’
পরে সরকারের এ সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন আগামীকাল

চারদিনের সফরে আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করা হবে তাকে। এছাড়াও দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ার লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
সফরসঙ্গী হিসেবে তার সঙ্গে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
গত বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, আসন্ন সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে যে টাকা পাচার করা হয়েছে সেগুলো উদ্ধারের বিষয়েও আলোচনা হবে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুধবার এক ব্রিফিংয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।’
এই সফরে অধ্যাপক ইউনুস ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গেও তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এর বাইরেও বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তার যে কর্মসূচি উল্লেখ করেছেন, সে অনুযায়ী এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।’
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের গভীরতা রয়েছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দেশটির বৃহত্তম প্রবাসী জনগণের আবাসস্থল।
এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের বিষয়েও উদ্যোগী হবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি জানান, যুক্তরাজ্য সফরের সময় পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সফরে রাজা তৃতীয় চার্লস অধ্যাপক ইউনুসকে সম্মানজনক ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পুরস্কারে ভূষিত করবেন, যা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন এবং সহযোগিতার প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করবে।
জাতীয়
ঈদের ফিরতি যাত্রায় সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ট্রেনের ফিরতি যাত্রায় যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সমাগমপূর্ণ এলাকায় সকলকে মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঈদ পরবর্তী (ঈদুল আজহার ফিরতি যাত্রা) ট্রেন যাত্রায় সব যাত্রীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য এবং মাস্ক পরিধান করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দেশে কয়েক দফায় সংক্রমণ বেড়েছে এবং জনস্বাস্থ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সরকারিভাবে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, এবং জনসমাগম এড়ানোসহ স্বাস্থ্যবিধি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় এসব বিধিনিষেধ অনেকাংশে শিথিল করা হয়।
সম্প্রতি দেশে আবারও কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা গেছে। এরপরই আবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।