জাতীয়
ভূমি সেবাকে জনবান্ধব করার মাধ্যমেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব: ভূমিমন্ত্রী

ভূমি সেবাকে সহজলভ্য ও জনবান্ধব করে গড়ে তোলার মাধ্যমেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। আগামী ৮-১৪ জুন সারা দেশে সপ্তাহব্যাপী ‘ভূমিসেবা সপ্তাহ-২০২৪’ উদযাপিত হবে বলে জানান তিনি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট ভূমিসেবা, স্মার্ট নাগরিক’।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ভূমি ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভূমিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এ সময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘ভূমিসেবা সপ্তাহ-২০২৪’ চলাকালীন সেবাগ্রহীতাদের গুরুত্বপূর্ণ যেসব সুবিধা প্রদান করা হবে তার মধ্যে রয়েছে, ই-নামজারির আবেদন করার বিষয়ে অবহিতকরণ ও সহযোগিতা প্রদান, নিষ্পত্তিকৃত এলএ কেইসের ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান, অনলাইনে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা সরবরাহ, অনলাইনে আবেদনকৃত মৌজাম্যাপ ডাক বিভাগের মাধ্যমে সরবরাহ, মাঠপর্যায়ে চলমান জরিপ কার্যক্রম বিষয়ে গণশুনানি, আপত্তি/আপিল দাখিল ও নিষ্পত্তির কার্যক্রম গ্রহণ ও রেকর্ড হস্তান্তরসহ জনগণকে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান ইত্যাদি।
ভূমিমন্ত্রী জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ভূমি অফিসে সেবা গ্রহীতাদের সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন জিজ্ঞাসার সরাসরি উত্তর প্রদানের জন্য সেবা বুথ স্থাপন করা হবে এবং সেখানে একজন কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। এবার প্রথমবারের মতো ৮টি বিভাগে বিশেষভাবে প্রস্তুত ৮টি গাড়ি ভ্রাম্যমাণ স্মার্ট ভূমি সেবা প্রদান করবে বলে ভূমিমন্ত্রী জানান। এ ছাড়া ভূমিসেবা নিয়ে সহজবোধ্য বই ‘ভূমি আমার ঠিকানা’ বিতরণ করা হবে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় ল্যান্ড সার্ভিস গেটওয়ের (এলএসজি) মাধ্যমে ২য় প্রজন্মের মিউটেশন, খতিয়ান ও এলডি ট্যাক্সের আন্তঃসংযোগ স্থাপন, শতভাগ হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিতকরণ ও দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন, সম্পূর্ণ ক্যাশলেস ভূমি অফিসসহ সর্বোচ্চ রাজস্ব বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ এবং হয়রানিমুক্ত ও নাগরিকবান্ধব প্রত্যাশিত ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। ভূমিসেবাকে সহজলভ্য ও জনবান্ধব করে গড়ে তোলার মাধ্যমেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভূমিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, উল্লিখিত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করলে ভূমিসেবা প্রদানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও উজ্জীবিত নাগরিকবান্ধব ভূমি কর্মকর্তা এবং ভূমিসেবা সম্পর্কে অবহিত ও প্রশিক্ষিত নাগরিক পাবে বাংলাদেশ। এতে পূর্ণ হবে স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট নাগরিক তৈরির উদ্দেশ্য।
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে মন্ত্রী বলেন, দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার নিজনিজ বিভাগে আজ (৬ জুন) অথবা আগামীকাল (৭ জুন) প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করবেন। এতে স্মার্ট ভূমিসেবা, নাগরিকদের প্রাপ্তি, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা এবং নিজ বিভাগের আওতাভুক্ত জেলায় বিশেষ কর্মসূচির ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনাররা বিস্তারিত জানাবেন। সপ্তাহব্যাপী সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হবে।
মন্ত্রী জানান, ভূমিসেবা সপ্তাহ-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভূমি বিষয়ক কুইজ ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। অন্যদিকে, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের দক্ষতার ভিত্তিতে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে অনলাইনে সেবা ড্যাশবোর্ড যেমন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে তেমনি মাঠ পর্যায়ে ভূমি অফিসে আকস্মিক পরিদর্শন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষে নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং হবে।
ভূমি সচিব বলেন, ভূমিসেবা গ্রহীতাদের সুবিধার্থে ঢাকায় ভূমি ভবনে নাগরিকসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে নাগরিকগণ সকল ধরনের ভূমিসেবা গ্রহণ করতে পারছেন। সচিব আরও জানান, সারা দেশে এজেন্ট তথা ল্যান্ড সার্ভিস ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগের মাধ্যমে একই ধরনের সেবা দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনের পর ভূমি ভবনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সেমিনার হলে ‘মৌজা ও প্লটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্পের জাতীয় পর্যায়ের সেমিনার’ এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
এ সময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মৌজা ও প্লটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্পের টিম লিডার মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত, প্রকল্প পরিচালক মো. কফিল উদ্দিনসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরামর্শকগণ এবং ভূমি জোনিংবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।
কৃষিজমি সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় মৌজা ও প্লটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত ব্যক্ত করেন।

জাতীয়
‘বাজেট ধনী ও গরীবের মধ্যে বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দেয়’

জাতীয়
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বিকেলে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ দ্বিতীয় দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এতে চলমান রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আলোচনা হবে।
রবিবার (১ জুন) রাজধানীতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সোমবার (২ জুন) আবারও বৈঠকে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকটি বিকেল সাড়ে ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই উপপ্রেস বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই সংলাপের মধ্যে দিয়ে জুলাই সনদ ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হওয়া যাবে বলে আশা করছি।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আরও বলেন, ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। সোমবার ছাড়াও ঈদের আগে-পরে আরও দু-একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম দফার আলোচনা শেষ হয় ১৯ মে। প্রথম দফায় কমিশনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দফায় বৈঠক শুরু হতে যাচ্ছে আজ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়।
সেই সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জাতীয়
ট্রেনে ফিরতি যাত্রা: আজ বিক্রি হবে ১২ জুনের টিকিট

ঈদুল আজহা শেষে ঘরমুখো মানুষের ফেরার সুবিধার্থে আন্তঃনগর ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ বিক্রি করা হবে আগামী ১২ জুনের ট্রেনের টিকিট।
সোমবার (২ জুন) সকাল ৮টায় বিক্রি শুরু হবে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট। এবং দুপুর ২টায় বিক্রি শুরু হবে পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
ঈদ উপলক্ষ্যে রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে জানা গেছে, আন্তঃনগর ট্রেনের ৯ জুনের আসনের টিকিট ৩০ মে বিক্রি হয়েছে; ১০ জুনের আসনের টিকিট ৩১ মে বিক্রি হয়েছে; ১১ জুনের আসনের টিকিট ১ জুন বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ১৩ জুনের আসনের টিকিট ৩ জুন; ১৪ জুনের আসনের টিকিট ৪ জুন এবং ১৫ জুনের আসনের টিকিট ৫ জুন বিক্রি হবে।
আরও জানা গেছে, ঈদের পরে ৭ দিনের ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। এসময় কেনা টিকিটগুলো যাত্রীরা রেলওয়েকে ফেরত দিতে পারবেন না। প্রতিজন টিকিটপ্রত্যাশী ৪টি আসনের টিকিট একবারে একসঙ্গে কিনতে পারবেন। একটির বেশি আসনের টিকিট কিনলে সহযাত্রীদের নাম টিকিট কেনার সময় লিখতে হবে।
জাতীয়
কৃষি ও গবেষণায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন

কৃষি, পাট, সামুদ্রিক মাছ ধরাসহ গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও ব্যবসায় সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত চীন।
রোববার (১ জুন) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সফররত চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এ কথা বলেন। খবর বাসসের
তিনি প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, যেসব চীনা কোম্পানি আমার সঙ্গে এসেছে তারা খুবই উৎসাহিত। আপনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তা প্রশংসনীয়। এসব কোম্পানি আমাকে বলেছে, আপনার উদ্যোগ দেখে তারা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভোক্তাবাদ প্রসঙ্গে চীনা মন্ত্রী জানান, রাত ১০টার পরও বিপণিবিতানে ক্রেতাদের উপস্থিতি তাকে মুগ্ধ করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনও বিপুল সম্ভাবনা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে, বিশেষ করে কৃষি এবং গভীর সমুদ্র ও নদীভিত্তিক মাছ চাষে। চীনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকেই একটি উৎপাদন ইউনিটে রূপান্তর করা সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে চীনা মন্ত্রী বলেন, আমরা জানতে আগ্রহী যে, কৃষির কোন কোন খাতে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা সম্ভব। তিনি চাষের জমি উন্নয়ন, পানি সংরক্ষণ ও আধুনিক চারা রোপণ প্রযুক্তির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার দৃষ্টিতে কৃষি শুধুই একটি শিল্প নয়, বরং এটি একটি সামাজিক সংগঠনের রূপ।
মাছ ও সামুদ্রিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী চীনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চান। তিনি বলেন, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার প্রযুক্তিতে চীন বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
চীনা মন্ত্রী উল্লেখ করেন, চীন-বাংলাদেশ সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূসের পাট খাত পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা নিয়ে দেওয়া বক্তব্য তাকে আকৃষ্ট করেছে।
তিনি বলেন, চীন প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের পাট আমদানি করে, যা বাংলাদেশের মোট পাট রপ্তানির প্রায় ১০ শতাংশ। গবেষণা ও পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে পারলে এর পরিমাণ বহুগুণ বাড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, আপনার (ড. ইউনূস) বক্তব্যের পরপরই চীনা পাট ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের পাট পণ্য নিয়ে গবেষণা শুরু করবে।
চীনা মন্ত্রী বলেন, আমাদের সহযোগিতা কেবল ব্যবসায় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। গবেষণাতেও যৌথভাবে কাজ করা উচিত। যদি বাংলাদেশ এই গবেষণায় অংশ নেয়, তাহলে পাট চীনের জন্য একটি উপযুক্ত পণ্য হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের পাটপণ্য ডিজাইনাররা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারেন। তিনি চীনা মন্ত্রীর এই আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থানের প্রশংসা করেন এবং চীনকে বাংলাদেশের পাশে বন্ধুর মতো থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অধ্যাপক ইউনূস চীনা মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনার কথা আমার কানে সংগীতের মতো শোনায়। তিনি চীনা মন্ত্রীর উষ্ণ ভাষণ এবং বড়সংখ্যক চীনা বিনিয়োগকারী নিয়ে আসার জন্য সাধুবাদ জানান।
তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আজকে আপনার ভাষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এত বেশি বিনিয়োগকারী এসেছেন, যা আমাদের জন্য একটি ভালো বার্তা- পুরো জাতি এটি লক্ষ্য করেছে।
তিনি তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, সেখানে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও ব্যবসা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সফরের সময় অনেক আন্তরিক আলোচনা হয়েছে। আপনার সফর এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
কাফি
জাতীয়
সোমবার মহাসমাবেশ করবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে সোমবার মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার (১ জুন) নতুন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সরকার দাবি মেনে না নেওয়ায় সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে৷ মহাসমাবেশে শুধু বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো চালু রেখে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ মিনারে যোগ দেবেন।
সাতটি দাবি নিয়ে গত ১২ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন এই কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অবস্থান কর্মসূচির ১২তম দিনে আন্দোলনরতদের সঙ্গে সংহতি জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য মানা হবে না। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা মাঠে পরিশ্রম করে দেশের জনগণকে বিদ্যুৎসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তারা কোনো অন্যায্য দাবি নিয়ে আসেননি। মানবিক মর্যাদাপূর্ণ জীবনের জন্য আন্দোলন করছেন। তারা মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করেননি, বিদ্যুৎসেবা চালু রেখে সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন করছেন। পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীরা অশান্ত হলে দেশে অন্ধকার নেমে আসবে। তাদের সে পথে ঠেলে দেবেন না।
তিনি বিদ্যুৎ উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। আলোচনার মাধ্যমে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলন কর্মসূচিতে এনসিপির পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, পতিত স্বৈরাচারের ফ্যাসিবাদী কাঠামো রয়ে গেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে। এই কাঠামো ভাঙতে সবাইকে হাত লাগাতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণসহ দুই দফা দাবিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামেন সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী।
কাফি