আন্তর্জাতিক
আবুধাবিতে ১৩০ কোটি ডলারের নতুন আকর্ষণ রিম মল

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাজধানী আবুধাবিতে সর্বশেষ আকর্ষণ হিসেবে যুক্ত হলো শপিং কমপ্লেক্স রিম মল। সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ স্থাপনা দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দিয়েছে ডেভেলপার কোম্পানি আল ফারওয়ানিয়া প্রপার্টি ডেভেলপার্স।
এ সময় ১ লাখ ৮৬ হাজার বর্গমিটারের কমপ্লেক্সটি ঘুরে দেখেন দেশটির টলারেন্স অ্যান্ড কোএক্সিজেন্ট বিষয়ক মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ান। মলের অন্যতম আকর্ষণ স্নো পার্ক পরিদর্শন করেন মন্ত্রী, যার আয়তন ৯ হাজার ৭০০ বর্গমিটার। স্নো পার্কে রয়েছে ২০টি রাইড এবং বরফের তৈরি বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় স্থাপনা ও বিনোদন উপকরণ।
রিম আইল্যান্ডে ১৩০ কোটি ডলার খরচে নির্মিত শপিং মলটি আবুধাবিতে পর্যটক সমাগমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা। ইউএইকে বিশ্বের শীর্ষ পর্যটক গন্তব্য হিসেবে সাজাতে কাজ করছে দেশটির সরকার। রিম মলকে এরই অন্যতম কৌশলগত অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এ মল ঘোরাঘুরি ও কেনাকাটার আদর্শ অভিজ্ঞতা দেবে। পারিবারিক ওয়ান-স্টপ-শপ গন্তব্য হিসেবে খুচরা খাত, খাবারের আয়োজন ও বিনোদন কেন্দ্র দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো মল। এখানে ইউএইর স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন খাতের বৈশ্বিক চেইনগুলো যোগ দিয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট ব্লুমিংডেলের বিউটি ইন দি ওয়ার্ল্ড ও ভক্সের সিনেমাসের প্রাইভেট সিনেমা রুম। এছাড়া মলজুড়ে ব্যবহার হয়েছে ডিজিটাল কার্যক্রম। এর মাধ্যমে কন্টাক্টলেস শপিংয়ের পাশাপাশি চলাচলে পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা।

আন্তর্জাতিক
জিরো ওয়েস্ট প্রকল্প এগিয়ে চলছে, তুরস্কজুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে ডিপোজিট ব্যবস্থা

তুরস্ক তার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টায় একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে, কারণ ডিপোজিট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা (ডিএমএস) এই বছরের শেষ নাগাদ জাতীয় পর্যায়ে পুরোপুরি বিস্তৃত হওয়ার পথে রয়েছে। পরিবেশ, নগরায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বর্জ্যকে কেবল আবর্জনা হিসেবে না দেখে একে মূল্যবান কাঁচামালে রূপান্তর করা, যা পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।
ডিপোজিট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, যা প্রথম নারী এমিনে এরদোয়ানের উদ্যোগে গৃহীত জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়িত জিরো ওয়েস্ট প্রকল্পের সর্বশেষ ধাপ, তা ইতিমধ্যে সাকারিয়া প্রদেশে সফলভাবে পাইলট হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এই প্রাথমিক পর্যায়ের পর, মন্ত্রণালয় আরও ছয়টি প্রদেশে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে: এরজুরুম, মারসিন, গাজিয়ানতেপ, সামসুন, ইজমির ও কনিয়া। এই শহরগুলোতে রিটার্ন মেশিন স্থাপন কাজ চলছে, এবং গভর্নর ও মেয়ররা সমন্বয় কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ, এই ব্যবস্থা তুরস্কের সকল ৮১টি প্রদেশ ও জেলায় চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রায় ৪ হাজার ৫০০টি স্বয়ংক্রিয় রিটার্ন মেশিন নিরাপদ ও সহজে প্রবেশযোগ্য স্থানে যেমন সরকারি ভবন, পৌরসভা ও চেইন দোকানগুলোতে স্থাপন করা হবে, যাতে সহজে বর্জ্য সংগ্রহ করা যায়।
নাগরিকরা “ডিপোজিট প্যাকেজিং রিটার্নস (ডিওএ)” নামক মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে কিউআর কোড স্ক্যান করতে পারবেন এবং উপযুক্ত প্যাকেজিং সামগ্রী মেশিনে ফেলে দিতে পারবেন। প্রতিটি আইটেমের বিনিময়ে তারা অর্থ উপার্জন করবেন, যা তাদের ইলেকট্রনিক ওয়ালেটে জমা হবে। এই সহজ প্রক্রিয়াটি জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে এবং দেশের ক্রমবর্ধমান বৃত্তাকার অর্থনীতিকে সহায়তা করে।
মন্ত্রণালয় একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করেছে, যা রিয়েল-টাইমে মেশিনের পূর্ণতা পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে দ্রুত টিম পাঠিয়ে মেশিন খালি করে, যাতে নিরবিচারে সেবা চালু রাখা যায়।
ডিপোজিট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার প্রত্যাশিত প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৬ সালের মধ্যে, তুরস্ক প্রত্যাশা করছে যে প্রতি বছর আনুমানিক ২৫ বিলিয়ন বর্জ্য বোতল পুনর্ব্যবহার করে ৫২০ মিলিয়ন ইউরো (৬০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আয় করবে। এই কাঁচামাল প্রবাহ বিভিন্ন খাতে-যেমন টেক্সটাইল ও অটোমোটিভ শিল্পে — আমদানি নির্ভরতা কমাবে, এবং তুরস্কের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও শক্তিশালী করবে।
এছাড়াও, এই তহবিলগুলো নতুন সরকারি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করবে। সরকার সারা দেশে হাজার ভূমিকম্প-প্রতিরোধী বাড়ি এবং ১৫০টির বেশি নতুন স্কুল নির্মাণে সম্পদ বরাদ্দ করার পরিকল্পনা করছে, যা দেশের অবকাঠামো এবং জনকল্যাণকে উন্নত করবে।
এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পটি তুরস্কের টেকসই উন্নয়ন ও বৃত্তাকার অর্থনীতির নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে, যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে একটি চ্যালেঞ্জ থেকে রূপান্তরিত করা হচ্ছে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সুযোগে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে গোপনে সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন আ.লীগ নেতারা

দেশে শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দেশ থেকে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের তদন্ত করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ধারণা করা হয়, এর একটি বড় অংশই পাচার হয়েছে যুক্তরাজ্যে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এর শীর্ষ নেতারা এবং হাসিনার আস্থাভাজন বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীই এই সম্পদ পাচারের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
তবে হাসিনার সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সাবেক ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের বিলাসবহুল সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রি ও পুনঃঋণায়নের (রিফাইন্যান্স) প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ব্রিটিশ প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর এক যৌথ অনুসন্ধানে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি লেনদেনের তৎপরতা বাড়তে শুরু করে। বিশেষ করে বিলাসবহুল এলাকাগুলোর বাড়িঘর ও অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে শুরু হয় অস্বাভাবিক রকমের বিক্রয় ও ফ্রিজিং কার্যক্রম।
২০২৪ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) প্রায় ১ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট জব্দ করে, যার মালিকানা ছিল হাসিনার সাবেক বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের। এর কিছুদিন পরই সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে থাকা প্রায় ২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকার ৩০০টির বেশি সম্পত্তি জব্দ করা হয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধু গত এক বছরেই যুক্তরাজ্যের জমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে অন্তত ২০টি উল্লেখযোগ্য সম্পত্তি লেনদেনের আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহানের নামে নাইটসব্রিজে চারতলা বাড়ি, যেটি প্রথমে হস্তান্তর, পরে বিক্রি করা হয় এক গোপন হিসাবরক্ষকের মালিকানাধীন কোম্পানির কাছে (মূল্য ৭.৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড)।
তার ভাই শাফিয়াত সোবহান সারে’র ভার্জিনিয়া ওয়াটারে ৮ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি প্রাসাদোপম ম্যানসনের মালিকানা পরিবর্তন করেন।
সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান ২০২৪ সালের জুলাইয়ে রিজেন্টস পার্কে অবস্থিত ১০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের টাউনহাউস বিক্রি করেন এবং আরও তিনটি সম্পত্তির জন্য ‘রিফাইন্যান্স’ আবেদন করেন।
এদিকে, সালমান এফ রহমানের পরিবারের মালিকানাধীন লন্ডনের গ্রোসভেনর স্কয়ারে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ইতোমধ্যে এনসিএ কর্তৃক ফ্রিজ করা হয়েছে।
তবে এই পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে—বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে এবং তারা যেকোনো তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ যেন এসব সম্পত্তি বিক্রি, স্থানান্তর বা বন্ধক রাখতে না দেওয়া হয়। গভর্নর মনসুর বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত, অনেকেই ইতোমধ্যে সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছেন। তাই কঠোরভাবে এসব সম্পদ ফ্রিজ করা অত্যন্ত জরুরি।’
ব্রিটেনের সংসদীয় দুর্নীতিবিষয়ক অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের প্রধান জো পাওয়েল বলেন, ‘ইতিহাস বলছে—যদি যথাসময়ে সম্পদ জব্দ করা না হয়, সেগুলো মুহূর্তেই গায়েব হয়ে যায়। লন্ডন যেন দুর্নীতিপরায়ণ ধনীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
তদন্তে আরও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এই বিপুল সম্পত্তির লেনদেনে যুক্তরাজ্যের আইনজীবী ও পরামর্শদাতারা যথাযথ যাচাইবাছাই করেছেন কি না? তাদের ভূমিকা ও সতর্কতা নিয়ে ইতোমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অনুসন্ধান কেবল বাংলাদেশে দুর্নীতির চিত্র উন্মোচন করছে না, বরং আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের নীতি ও দায়িত্ববোধকেও এক কঠিন পরীক্ষার মুখে দাঁড় করিয়েছে।
আন্তর্জাতিক
শুল্কের প্রভাব, মার্কিন পরিবারের ব্যয় বাড়তে পারে ২৪০০ ডলার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার ফলে মার্কিন ভোক্তাদের ব্যয় বাড়বে। তামা ও বিদেশি পণ্যে নতুন শুল্ক কার্যকর এবং তা স্থায়ী হলে চলতি বছর মার্কিন পরিবারগুলোকে গড়ে অতিরিক্ত ২ হাজার ৪০০ ডলার ব্যয় করতে হতে পারে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের বিভিন্ন শুল্কের কারণে মার্কিন ভোক্তাদের ক্ষেত্রে গড় কার্যকর শুল্কহার দাঁড়াবে প্রায় ১৮ শতাংশ, যদি ঘোষিত শুল্ক কার্যকর হয় এবং তা বহাল থাকে। গবেষকেরা বলছেন, এটি হবে ১৯৩৪ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যকর হওয়া সর্বোচ্চ শুল্কহার। খবর ফোর্বস ম্যাগাজিন
গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী, এসব শুল্কের ফলে স্বল্প মেয়াদে মার্কিন ভোক্তা মূল্যস্ফীতি হতে পারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। যার অর্থ হলো ২০২৫ সালে প্রতিটি মার্কিন পরিবার গড়ে বাড়তি দামে পণ্য কিনতে গিয়ে ২ হাজার ৪০০ ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এ ক্ষতির মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার কমানোর মতো পদক্ষেপ নেবে কি না, তার প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। সুদহার হার কমলে মার্কিন পরিবারের অর্থনীতিতে বাড়তি প্রভাব পড়তে পারে, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এই শুল্কনীতির কারণে চলতি বছরে বেকারত্বের হার বাড়তে পারে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। মার্কিন অর্থনীতির মোট উৎপাদন বা জিডিপি শূন্য দশশিক ৭ শতাংশ কমে যেতে পারে। এই শুল্ক দীর্ঘ মেয়াদে বহাল থাকলে জিডিপি প্রতিবছর গড়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমবে। ফলে প্রতিবছর আনুমানিক ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি হতে পারে।
যদিও নির্মাণ ও কৃষি খাতের ওপর এ শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, মার্কিন উৎপাদন খাতের ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ট্রাম্পের শুল্ক সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে পারে পোশাক, টেক্সটাইল ও জুতার বাজারে। স্বল্প মেয়াদে এসব পণ্যের দাম ৩৭ থেকে ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। যদিও দীর্ঘ মেয়াদে এ মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা হ্রাস পেয়ে ১৮ শতাংশের আশপাশে স্থির হতে পারে।
এ ছাড়া ধাতু, চামড়ার পণ্য ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির দামেও বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। স্বল্প মেয়াদে দাম বেড়ে যেতে পারে যথাক্রমে ৪৩, ৩৯ ও ২৬ শতাংশ পর্যন্ত। মোটরযান, ইলেকট্রনিকস ও রাবার-প্লাস্টিকজাত পণ্যের দামও ১১ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খাদ্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধির চাপ তুলনামূলকভাবে কম হলেও নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে সবজি, ফলমূল ও বাদামজাত পণ্যের দাম গড়ে ৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হওয়ায় কফি ও কমলার রসের মতো জনপ্রিয় খাদ্যপণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আশঙ্কা।
আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির জরিপে দেখা গেছে, ৮৩ শতাংশ ব্যবসায়িক নেতা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে আগামী ছয় মাসে পণ্যের দাম বাড়াতে হবে। জরিপে অংশ নেওয়া ৩০০ ব্যবসায়িক নেতা ও করপোরেট নির্বাহীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি জানিয়েছেন, শুল্কের কারণে তাঁদের মুনাফার হার ইতিমধ্যে সংকুচিত হয়েছে। যদিও তাঁরা বলছেন, ভোক্তাদের ওপর এখনো পুরোটা প্রভাব পড়েনি।
বর্তমানে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে শুল্ক। প্রায় সব দেশের পণ্য আমদানিতে তিনি শুল্ক আরোপ করেছেন। অর্থনীতিবিদদের বড় একটি অংশ শুরু থেকেই সতর্ক করে আসছেন, শুল্কের কারণে মার্কিন বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে। শেষমেশ তা মন্দার দিকেও ধাবিত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজে বক্তব্য রাখার সময় বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতে ৫টি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। যদিও তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি কোন দেশের কতটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, বাস্তবে বিমানগুলো আকাশ থেকে নামিয়ে ফেলা হচ্ছিল। আমি মনে করি পাঁচটি জেট গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
এপ্রিল মাসে ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এরপর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয় এবং মে মাসে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, সংঘর্ষের প্রথম দিনে কিছু বিমান হারানোর পর কৌশল পরিবর্তন করে ভারত পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ নেয়।
ভারত দাবি করেছে, তারাও পাকিস্তানের একাধিক বিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। তবে তারা স্বীকার করেছে যে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বিমান ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটিই ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ থামানোর মূল কারণ।
ভারত বর্তমানে এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। তবে পাকিস্তান ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জোটভুক্ত দেশ, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সম্পর্ক কিছুটা জটিল।
আন্তর্জাতিক
অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা ভারতে নেই: মোদি

পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে শুক্রবার রাজ্যে নির্বাচনী সভা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজ্যের শিল্পশহর দুর্গাপুরে বিজেপির ‘পরিবর্তন সংকল্প সভা’য় অংশ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে মোদি বলেন, বাংলা পরিবর্তন চায়, দুর্নীতিমুক্ত সরকার চায়, বিজেপিকে চায়।
তিনি বলেন, কেউ বাংলায় কথা বলুক কিংবা না বলুক, ভারতীয় নন এমন অনুপ্রবেশকারীদের যেভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে। অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা নেই।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। বাংলায় এবার বিজেপির সরকার গঠন করতে হবে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯৪টি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে আজকের সভায় তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার ডাক দেন তিনি।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নারীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মোদি। তৃণমূলকে সমর্থন না দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে একবার সরকার গঠনের সুযোগ দিতে রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, একসময় গোটা দেশের মানুষ কাজের জন্য বাংলায় আসত। আজ এই বাংলার মানুষই কাজের খোঁজে অন্য রাজ্যে যায়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আবার সেই দিন ফিরবে।
বিজেপি সবসময় বাংলা ভাষাকে সম্মান জানিয়েছে দাবি করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সব বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষা সম্মানের সঙ্গে স্বীকৃত। তাই বিজেপিই এই বাংলাকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন। সেই ভোটের আগেই নরেন্দ্র মোদির সভা দিয়ে বিজেপি ভোট প্রচার শুরু করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।