আন্তর্জাতিক
প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেল ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি
করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই পিছিয়ে আছে। বিশেষ করে শীর্ষ অর্থনীতিগুলো মূল্যস্ফীতি ও সুদহারের গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খাচ্ছে। একই সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির শ্লথতা নানান ধরনের আশঙ্কা তৈরি করেছে। জাপান ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশও মন্দার কবলে পড়েছে। সেই সময় জিডিপি পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেল ভারত। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (এনএসও) দেয়া তথ্য অনুসারে, মার্চে শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। খবর দ্য হিন্দু ও মিন্ট।
এনএসওর তথ্যানুযায়ী, মার্চে শেষ হওয়া ভারতের চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়েছে। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অর্থনীতির ৭ শতাংশ সম্প্রসারণ ঘটে।
অবশ্য সর্বশেষ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) চেয়ে চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ কমেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এর আগের দুই প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ২ ও ৮ দশমিক ১ শতাংশ। তবে ২০২৩ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ প্রবৃদ্ধি ভারতীয় অর্থনীতিকে ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের আকারের দিকে নিয়ে গেছে, যা পরবর্তী কয়েক বছরে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার লক্ষ্য অর্জনের মঞ্চ প্রস্তুত করছে।
সরকারের দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থিরমূল্যে জিডিপির প্রাক্কলন ছিল ১৭৩ দশমিক ৮২ লাখ কোটি রুপি। আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) সংশোধিত প্রাক্কলন ছিল ১৬০ দশমিক ৭১ লাখ কোটি রুপি। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৭ শতাংশের বিপরীতে ২০২৩-২৪ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি সমন্বয় না করলে চলতি মূল্যে সর্বশেষ অর্থবছরে প্রাক্কলিত জিডিপি ২৯৫ দশমিক ৩৬ লাখ কোটি রুপি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ২৬৯ দশমিক ৫০ লাখ কোটি রুপি। এ হিসাবে মূল্যস্ফীতির সমন্বয় বাদ দিলে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।
এর আগে এনএসও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ দশমিক ৭ শতাংশ সংশোধিত প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস দিয়েছিল। এছাড়া চতুর্থ প্রান্তিকে ৫ দশমিক ৯ থেকে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত মন্থর প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।
এদিকে মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের প্রবৃদ্ধির চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীন ৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নথিভুক্ত করেছে। তবে এটি বার্ষিক ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
আগামী ৪ জুন ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষিত হবে। এর মাত্র দুদিন আগে দেশটির সামষ্টিক অর্থনীতির এ বার্ষিক ডাটা প্রকাশ হলো। জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স বার্তায় লেখেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকের জিডিপি প্রবৃদ্ধির ডাটা অর্থনীতির শক্তিশালী গতিকে দেখায়, যা আরো গতিশীল হতে প্রস্তুত। বার্ষিক ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বলে দিচ্ছে যে ভারত দ্রুততম হতে চলেছে। যেমন আমি বলেছি, ভারত বিশ্বে ক্রমবর্ধমান শীর্ষ অর্থনীতি। এজন্য দেশের পরিশ্রমী মানুষদের ধন্যবাদ জানাই। এটি আগামী দিনের অর্থনীতির জন্য একটি ট্রেলার মাত্র।’
জিডিপির এ হার বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ উল্লেখ করে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘অর্থনীতির সূচকগুলো বলছে, বিশ্ববাজারের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারতীয় অর্থনীতি স্থিতিস্থাপক ও প্রাণবান ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি আরো জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন খাত উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ খাতে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ সম্প্রসারণ ঘটেছে।
এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খনিজ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। এর আগের অর্থবছরে উৎপাদন খাত ২ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। তবে খনিজ খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের শুরুর দিকের কিছু প্রবৃদ্ধি পরিসংখ্যান দিয়েছে ভারত সরকার। তথ্য অনুসারে, প্রাকৃতিক গ্যাস, পরিশোধনাগার পণ্য ও বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ আটটি মূল অবকাঠামো খাতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। গত এপ্রিলে এসব খাতে ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আগের অর্থবছরের সর্বশেষ মাস মার্চে এ আট খাতে উৎপাদন বেড়েছিল ৬ শতাংশ।
এদিকে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের (আরবিআই) বার্ষিক প্রতিবেদনে দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশটির অর্থনীতি ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল শীর্ষ অর্থনীতি হিসেবে স্বীকৃত ভারত, বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। আগামী বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ভারত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। খবর রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
একই অভিযোগে গৌতম আদানির ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগরেরও। এ ছাড়াও রয়েছেন- ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডে’র সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রুপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স আরও বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেকজন নির্বাহী, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কিছু ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিগতভাবে গৌতম আদানিকে ‘নুমেরো উনো’ এবং ‘দ্য বিগ ম্যান’ সাংকেতিক নামে ডাকতেন। আর সাগর আদানি তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ঘুষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ট্র্যাক করতেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটির বেশি ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং বিনিয়োগকারী ও ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে।
তবে আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি আদানি গ্রুপ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুস-জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতে ঘুষ-জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঘুষকাণ্ডে জড়িত এবং বিষয়টি গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্থও সংগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি এবং তার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লাভজনক চুক্তি করেছেন। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়েছে।
এমনকি আদানি গ্রুপ ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ এবং বন্ডও সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমাদের আর্থিক বাজারের সততা রক্ষার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।
অভিযোগ করা হয়েছে, ঘুষকাণ্ড এগিয়ে নিতে গৌতম আদানি নিজেই একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কর্মী সংকটে অতিরিক্ত দুই লাখ ভিসা দেবে জার্মানি
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে কর্মী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে চলমান জনবল সংকট কাটাতে এবার আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে বার্লিন। যার ফলে ইউরোপের দুয়ারে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী। যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ইউরোপের অন্যান্য দেশে কঠোর সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখনই এসব সুযোগ দিল জার্মানি।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মী সংকট কাটাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত ২ লাখ দক্ষ কর্মী ভিসা প্রদান করবে দেশটি। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানান, দক্ষ তরুণরা জার্মানিতে আরও সহজে তাদের প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনা শেষ করত পারবে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব দ্রুত এবং সহজেই জার্মানিতে তাদের কাজ খুঁজে নিতে পারবে।
২০২৩ সালে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, চলতি বছর এই ভিসার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১০ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানে ভিসাসংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জার্মানিতে বিভিন্ন চাকরিতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার পদ খালি রয়েছে। এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরও বেশি হতে পারতো বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশিরা।
ভাষার দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং কম বয়সের ভিত্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পয়েন্ট সিস্টেমে এক বছরের ভিসা দেবে জার্মানি। এজন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ চালু করেছে দেশটি৷ এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা ও চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের মানুষরাও সরাসরি জার্মানিতে যেতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষ কর্মী ভিসার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিয়েছে জার্মান সরকার। আগামী ২০২৫ সালে ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণ। ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
এমআই