আইন-আদালত
বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুসহ ৬ জনের নামে চার্জশিট

বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী শিরিন আকতার ও সন্তানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৭ মে) ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় ক্যাপিটাল বনানী ওয়ান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদের কাছ থেকে দুটি দলিলে ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় ক্যাপিটাল বনানী ওয়ান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদের কাছ থেকে দুটি দলিলে ১১০ কোটি টাকায় ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি কেনেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু। কিন্তু দলিল মূল্য দেখানো হয়, ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পরে জমিটি তিনি স্ত্রী শিরিন আকতার, ছেলে শেখ রাফা হাই, শেখ ছাবিদ হাই অনিকের নামে হস্তান্তর করেন। স্ত্রী, সন্তানদের নামে দলিল করে হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তর এবং ছদ্মাবরণের মাধ্যমে বৈধ করার অপচেষ্টায় ভাই বিএম কম্পিউটার্স ও ক্রাউন প্রোপার্টিজের মালিক শেখ শাহরিয়ার পান্না, দলিলদাতা আমিন আহমদ এবং এই প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই দুদকের সহকারী পরিচালক ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজীর সুপারিশ অনুযায়ী, আসামিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে রবিবার (২৬ মে) চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয় দুদক। অনুমোদন পেয়ে আজ সোমবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের হওয়া ৫৯টি মামলায় গত বছরের ১২ জুন আদালতে চার্জশিট বা অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৫ সালে এসব মামলা হলেও কোনো মামলার এজাহারেই আসামি হিসেবে নাম ছিল না ব্যাংকটির চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর। কিন্তু দীর্ঘ আট বছর পর দেওয়া চার্জশিটে ৫৯টি মামলার মধ্যে ৫৮টি চার্জশিটেই আসামি হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন-আদালত
তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হলো কারাগারে

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন– ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম ও সাবেক ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
এর আগে জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারিক প্যানেল ১৫ এপ্রিল আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে ওইদিন শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। এসময় প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
মরদেহ পোড়ানোর নৃশংস ঘটনার বিষয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজন জীবিত ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করেন। এর মধ্যে এক মামলায় ১২ জন ও অন্য মামলায় ১৭ জন আসামি। আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ। শেষের দুইজন তদন্তপ্রাপ্ত আসামি।
জানা গেছে, পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
দেড় দশক দেশ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
মরদেহ পোড়ানো তিন পুলিশ কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১১টায় প্রিজন ভ্যানে কারাগার থেকে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
তারা হলেন, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম এবং সাবেক ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
এর আগে, গত ৮ এপ্রিল প্রসিকিউসনের আবেদনে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। আজ ১৫ এপ্রিল হাজিরের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে চলা ছাত্র আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় এ বর্বর ঘটনা ঘটে। অভিযোগে বলা হয়, ওইদিন ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ, এরপর তাদের মরদেহ একটি পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভয়াবহ এ ঘটনার সময় একজন তরুণ তখনো জীবিত ছিলেন। তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়।
এ ঘটনাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল আদালত ওই তিন কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন। চিফ প্রসিকিউটর জানান, মামলার তদন্ত ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।
লাশ পোড়ানোর নৃশংস ঘটনার বিষয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন লাগিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। যখন এসব মরদেহে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, তখন একজন জীবিত ছিলেন। জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জুলাই গণহত্যা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেপ্তার

নরসিংদী গণহত্যা মামলায় ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চৌধুরী এবং নরসিংদী জেলার জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) মো. সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, পুলিশকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম। সোমবার (১৪ এপ্রিল)নরসিংদীর গণহত্যার মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাইফুলসহ একই অভিযোগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যনাল।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘গুলির নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এরইমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নরসিংদীতে শহিদ হন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিদ ভূইয়া। পুলিশের গুলিতে তাহমিদ নিহত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ। পরে লাশ নিয়ে মিছিল করতে গলে আবারও গুলি ছোড়া হয়। এতে আরও একজন নিহত হন। জুলাই আন্দোলনে শুধু এই জেলাতেই শহিদ হয়েছেন প্রায় ২০ জন। পাশাপাশি হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
জুলাই গণহত্যায় এখন পর্যন্ত ২২ মামলায় ১৪১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র ৫৪ জন। যাদের অধিকাংশই পুলিশ সদস্য। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের জানিয়েছেন, তদন্ত রিপোর্টে বিভিন্ন পেশার আসামিদের চিত্র উঠে আসবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিনা ভোটে ২১ প্রার্থীই জয়ী

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে ২১ প্রার্থীই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনী কার্যক্রমে ২১ পদে ২১ জন প্রার্থী থাকায় রোববার ১৩ এপ্রিল তাদের সবাইকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
জয়ী সবাই বিএনপি জামায়াত সমর্থিত। এর মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৪ পদে বিএনপি অনুসারী এবং একটি সহ-সভাপতি পদ ও দুটি সম্পাদকীয় পদসহ মোট ৭ পদে জামায়াত অনুসারীরা জয়ী হন।
তবে নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মনোনয়ন ফরম কিনতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি নির্বাচনকে অস্বচ্ছ আখ্যা দিয়ে আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসেন পদত্যাগ করেছেন। চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবকটি পদে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
নির্বাচনে জয়ীরা হলেন- সভাপতি পদে আবদুস সাত্তার, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সিরাজ, সহ-সভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনূস, সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুল বারী, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, লাইব্রেরি সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফী বিনতে মোতালেব, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মনজুর হোসাইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে আবদুল জব্বার, নির্বাহী সদস্য পদে- আহসান উল্লাহ মানিক, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, হেলাল উদ্দিন, মেজবাহ উল আলম আমিন, মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, মো. রোবায়তুল করিম, মো. শাহেদ হোসাইন, মোহাম্মদ মোরশেদ, রাহেলা গুলশান ও সাজ্জাদ কামরুল হোসাইন।
এর মধ্যে সহ-সভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনূস, সহ-সাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল জব্বার এবং নির্বাহী কমিটির চার সদস্য হেলাল উদ্দিন, মো. শাহেদ হোসাইন, মো. রোবায়তুল করিম ও মোহাম্মদ মোরশেদ জামায়াত অনুসারী।
এদিকে ঘোষিত তফসিলে গত ১০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিনে মনোনয়নপত্র কিনতে গিয়ে বাধার মুখে ফরম কিনতে পারেননি আওয়ামী লীগ, এলডিপি ও বাম ঘরানার আইনজীবীরা। তারা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশনের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো সমাধান হয়নি।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন সাবেক মহানগর পিপি আবদুর রশীদ। মনোনয়ন ফরম কিনতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বারের ১৩২ বছরের ইতিহাসে পুরো কমিটির সবাই ভোটবিহীনভাবে জয়ী হয়নি। বারের সব সদস্যরা রাজনীতি করেন না। সাধারণ সদস্যরা রয়েছেন। তারা আজকের এই ভোটারবিহীন নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছেন। অতীতে চট্টগ্রাম বারের সব দলমতের আইনজীবীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, জয়ীও হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এবার বারের গুটিকয়েক আইনজীবী পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২১ পদের বিপরীতে ২১ জন ফরম কিনেছেন। আমরা ফরম কিনতে গিয়ে কিছু আইনজীবী ও দুর্বৃত্তদের বাধার মুখে পড়েছি। চট্টগ্রাম বারের জন্য এটি কলঙ্কের ইতিহাস হয়ে থাকলো। বিএনপি-জামায়াতের সাধারণ সমর্থকরাও ভোটারবিহীন এ নির্বাচন আশা করেননি। সুযোগ থাকলেও আমরা আইনি মোকাবিলায় যাচ্ছি না। আমরা সাধারণ সদস্যদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। সাধারণ সদস্যরাই একদিন এটির বিচার করবেন।’
এদিকে বারের এ নির্বাচনকে অস্বচ্ছ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেছেন অ্যাডহক কমিটির সদস্য সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। ১২ এপ্রিল অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ককে দেওয়া পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায় এবং প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় আমি ব্যক্তিগতভাবে মর্মপীড়ায় ভুগছি। যা চট্টগ্রামবারের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে মর্মে আমি মনে করি। এ পরিস্থিতিতে বিবেকের তাড়নায় দায়িত্বপালন থেকে বিরত থাকা এবং পদ থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করাকে আমি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতি সম্মান ও দায়িত্বশীলতার অংশ হিসেবে বিবেচনা করছি।’
এ বিষয়ে কথা হলে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বারের এবারের নির্বাচন নিয়ে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। সবশেষ ঘোষিত তফসিলে আমরা চেয়েছিলাম সবার অবাধ অংশগ্রহণ। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। ২১ পদের সবাই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মানে এখানে ভোটারদের কোনো সম্মান করা হয়নি। বিনাভোটের নির্বাচন হয়েছে। একজন সচেতন আইনজীবী হিসেবে আমাকে পীড়া দিচ্ছে। আমি তিনদিন আগেও অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ককে বলেছি, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে আমি পদত্যাগ করবো।’
তিনি বলেন, ‘অনেককে নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম কিনতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামীপন্থিদের দেওয়া হয়নি। এমন কী এলডিপির অ্যাডভোকেট শাহাদাতকেও মনোনয়ন ফরম কিনতে দেওয়া হয়নি। আমরাতো এ ধরনের নির্বাচন চাইনি। তাই মর্মপীড়া থেকে অ্যাডহক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি।’
এ বিষয়ে কথা হলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমদ বলেন, ‘আমরা একুশ পদের সবাইকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছি।’
নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম কিনতে বাধা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ কেউ করেনি।’ ২১পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ ফরম না কিনলেতো আমার কিছু করার নেই।’
অ্যাডহক কমিটির এক সদস্যের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি (সৈয়দ আনোয়ার হোসেন) আগে কোথায় ছিলেন। তিনি কেন পদত্যাগ করেছেন, তার ব্যক্তিগত বিষয়। কাউকেতো আমরা জোর করে নির্বাচনে আনতে পারবো না। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আমরা সবাইকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেছি।
এ ব্যাপারে কথা বলতে সভাপতি নির্বাচিত হওয়া বিএনপিপন্থি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি। এতে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা করা হয় অ্যাডভোকেট তারিক আহমেদকে। আর আইনজীবী মো. মাসুদুল আলম, মুহাম্মদ কবির হোসাইন, মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এবং মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন শাহীনকে নির্বাচনী কর্মকর্তা করা হয়।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে গেলো বছরের ৩০ ডিসেম্বর প্রথম দফায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। পরে ওই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে ফের চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটি।
নির্বাচনে ২১টি পদের জন্য ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা ছিল মোট ৫ হাজার ৪০৪ আইনজীবীর। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের মাত্র চারদিন আগে পদত্যাগ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সভা করে নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়।