শিল্প-বাণিজ্য
২০২৯ সাল পর্যন্ত নগদ সহায়তা অব্যাহত চান ব্যবসায়ীরা

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আন্ডারে সরকারের ২০২৬ সাল পর্যন্ত তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের নগদ সহায়তা দেওয়ার কথা। ব্যবসায়ীরা ২০২৯ সাল পর্যন্ত এ সহায়তা অব্যাহত চান। নগদ সহায়তার কারণেই দেশের এ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ক্রাইসিসেও তারা টিকে আছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
এছাড়া তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করাসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একাধিক দাবি জানান তৈরি পোশাকখাতের ব্যবসায়ী নেতারা। শনিবার (২৫ মে) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান (কচি), ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি নির্বাচিত মাহবুবুল আলম। এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। ডলার সংকটসহ সম্প্রতি ব্যবসায়ীরা কী ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন, বাজেট সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন।
আয়কর আইন অনুযায়ী, রপ্তানিখাতের উৎসে কর ১ শতাংশ নির্ধারিত। তবে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নানা সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে এই করহার ছাড় দেওয়া হয়েছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাকসহ সব ধরনের পণ্য রপ্তানির ওপর উৎসে কর ১ শতাংশ কেটে রাখার আদেশ জারি করা হয়। পরে পোশাক রপ্তানিকারকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ অন্য ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবির মুখে ওই অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে সেটা কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে এনবিআর। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দশমিক ৭০ শতাংশ উৎসে কর দেন রপ্তানিকারকরা।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) বলেন, উৎসে কর যেটা এখন ১ শতাংশ আছে, সেটা দশমিক ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছি।
এর আগে গত মার্চে এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করে তা আগামী পাঁচ বছর কার্যকর রাখার দাবি জানান রপ্তানিকারকরা। পাশাপাশি পোশাক শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে নগদ সহায়তার ওপর আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়। যদিও ২০২৯ সাল নাগাদ এই প্রণোদনা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে পোশাকসহ ৪৩টি খাতে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমায় সরকার। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ হবে। এ লক্ষ্যে, পর্যায়ক্রমে সব ধরনের রপ্তানিতে প্রণোদনা কমানোর অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে রপ্তানি আয়ের ওপর ১ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়া হতো। এতে রপ্তানিকারকরা উৎসাহিত হতেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রণোদনার সর্বোচ্চ হার ১৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে। নতুন নির্দেশনায় অনুযায়ী তৈরি পোশাক খাতে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাচ্ছেন রপ্তানিকারকরা, যা আগে ছিল ১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তীসময়ে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা সম্পূর্ণভাবে একত্রে প্রত্যাহার করা হলে রপ্তানিখাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। সেজন্য সরকার এখন থেকেই বিভিন্ন ধাপে নগদ প্রণোদনার হার অল্প অল্প করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘সরকার ২০২৬ সাল পর্যন্ত নগদ সহায়তা দিতে পারে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আন্ডারে। সেক্ষেত্রে আমাদের বিকল্প নগদ সহায়তা দেওয়ার আগ পর্যন্ত ২০২৯ সালের আগে যেন নগদ সহায়তা প্রত্যাহার না করা হয়। কারণ নগদ সহায়তার কারণে আমরা নতুন বাজার তৈরি করতে পেরেছি। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আজ যে অর্থনৈতিক ক্রাইসিসে টিকে আছি, তা এই নগদ সহায়তার কারণে।’
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বৈশ্বিক মন্দা আমরা মোকাবিলা করছি। নগদ সহায়তার টাকায় নতুন বাজার তৈরি করতে পেরেছি, নানান সহযোগিতা পেয়েছি।
এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, শিল্প এলাকার বাইরের আর কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ না দেওয়া এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলে শিল্প মালিকদের ঋণ না দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, হঠাৎ গ্যাস, বিদ্যুৎ, ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করার অনুরোধ করেছি। এর মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী সেখানে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছেন। আমাদের কোনো গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হয়নি। আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো শিল্পাঞ্চলে হবে। কিন্তু আমরা সেগুলো বুঝে পাচ্ছি না। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সব মিলিয়ে আরও ২-৩ বছর লাগবে। আমাদের যেহেতু ২-৩ বছর আরও লাগবে, এরই মধ্যে যে বিনিয়োগ করেছি সেগুলোর কী হবে? বিভিন্ন সুযোগও প্রয়োজন। আমরা শিল্পাঞ্চলে যেতে চাই। সেখানে গেলে আমরা বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাবো।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় যে অর্থনৈতিক অঞ্চল মীরসরাই, সেটা এখনো প্রস্তুত নয়। আরও ২-৩ বছর লাগবে। রাস্তাঘাট হয়নি সেখানে। সব ঠিক করে আমাদের বুঝিয়ে দিলে আমরা ভবন করবো, সেটাপ করবো। এতে আরও সময় লাগবে।’
প্রস্তাবে পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘মীরসরাইয়ে তো আর জায়গা নেই। এখন শিল্পায়ন হচ্ছে, মানুষ শিল্পাঞ্চলে বিনিয়োগ করতে চায়। আপনি কেন বিনিয়োগ করতে দেবেন না। তাহলে শিল্পাঞ্চল গড়ে দিন আমরা সেখানে যাবো। আমাদের শিল্পাঞ্চলের স্বার্থে, বিনিয়োগের স্বার্থে এটা বিবেচনা করা প্রয়োজন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, পোশাকশিল্প দেশের শীর্ষ রপ্তানি আয় অর্জনের খাত। সরকার এক শিল্পের প্রসারে দীর্ঘদিন ধরেই নানান সুবিধা দিয়ে আসছে। এবারও তাদের প্রস্তাব বিবেচনা করে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।

শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে ১০ দিন

ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। এই সময়ে চতুর্দেশীয় এই বন্দরের সব কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে। তবে স্বাভাবিক থাকবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, ঈদে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সব আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন (রোববার) থেকে আমদানি-রপ্তানি যথারীতি চালু হবে। বাংলাবান্ধা কাস্টমস, আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়াডিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ কবীর বলেন, ঈদে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও ভিসা আর পাসপোর্টধারীদের পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
শিল্প-বাণিজ্য
ঈদে টানা ১০ দিন বন্ধ সোনাহাট স্থলবন্দর

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর।
সোনাহাট কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম আকমল স্বাক্ষরিত এক পত্রে বন্ধের বিষয়টি জানা গেছে।
এতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সোনাহাট স্থলবন্দরের কার্যক্রম ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আগামী ১৫ জুন স্থলবন্দরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বন্দর ১০ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় বন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে।
সোনাহাট স্থল শুল্কস্টেশনের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন জানান, আজ বৃহস্পতিবার (৫জুন) থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত মোট ১০ দিন সোনাহাট স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন থেকে যথারীতি বন্দরের কার্যক্রম চালু হবে।
শিল্প-বাণিজ্য
ঈদে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে হিলি স্থলবন্দর

ঈদুল আযহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। তবে এই সময়ে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য লোড-আনলোড কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রমও স্বাভাবিক থাকবে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন সই করা এক চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ জুন বৃহস্পতিবার থেকে ১৪জুন শনিবার পর্যন্ত টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন রোববার সকাল থেকে যথারীতি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও দু’দেশের বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
অর্থনীতি
১১ মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে— এই ১১ মাসে দেশের মোট পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি মার্কিন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ রিপোর্ট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত মে মাসেই পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ডলারের, যা গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এটি চলতি অর্থবছরের মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির রেকর্ড। এর মধ্যে, সবচেয়ে বড় সুখবর এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। মে মাসে এককভাবে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৯২ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস মিলিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলারে— পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
মূলত, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। শিল্প মালিকরা বলছেন, নতুন বাজার খোঁজা, অর্ডার পণ্যের বৈচিত্র্য এবং উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে এ সাফল্য সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, ইপিবির বিশ্লেষণ বলছে, তৈরি পোশাক ছাড়াও মে মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, প্রকৌশল পণ্য এবং প্লাস্টিক সামগ্রীর রপ্তানি বেড়েছে। তবে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শিল্প-বাণিজ্য
বাজেটে বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব অর্জিত হওয়া দুরূহ: বিসিআই প্রেসিডেন্ট

প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসাবান্ধব হওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব লক্ষ্য অর্জিত হওয়া দুরূহ বলে জানিয়েছেন বিসিআই প্রেসিডেন্ট আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
পাঠানো বক্তব্যে তিনি বলেন, বাজেটে রেভিনিউ আহরনকে প্রধান টার্গেট করা হয়েছে। এ বাজেটে কর্পোরেট কর ও ব্যক্তিখাতের করের উপর অতিমাত্রায় নির্ভর করা হয়েছে। পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারের রাজস্ব আয় কম। কিন্তু এটা যে বাড়বে, সে রকম কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই। করজাল বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ আমরা এ বাজেটে দেখছি না। বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো, ব্যবসাবান্ধব হওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও এসব লক্ষ্য অর্জিত হওয়া দুরূহ।
তিনি আরও বলেন, উৎপাদন খাতের বড় শিল্পের কাঁচামালের ভ্যাট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়বে। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কিভাবে কমাবে আমি ঠিক জানি না। সবকিছু আইএমএফের ফরমুলা অনুযায়ী করা হয়েছে। আইএমএফের ফরমুলা ধরলে তো ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতির মুখে পড়বে। এমনিতেই খরচ অনেক বেশি, জ্বালানির খরচ বেশি, ব্যাংক ঋণের সুদ অনেক বেশি, জ্বালানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। এতসব সংকেটর মধ্যেও যেসব ইন্ডাস্ট্রি মোটামুটি প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে সেখানেও শুল্ক ও কর বাড়ানো হয়েছে। গার্মেন্টস সহ রপ্তানিমুখি শিল্পের নগদ প্রণোদনা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনা হচ্ছে এর ফলে রপ্তানি খাত প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে। আমরা নগদ প্রণোদনার পরিবর্তে কোন ফিসক্যান সাপোর্টও বাজেটে দেখছি না। কটন সুতা ও ম্যান মেইড ফাইবার এর উপর মূসক উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫ টাকা করা হয়েছে। বর্তমানে জ্বালানী সংকটের মধ্যে দেশীয় স্পিনিং মিলসমূহে এই মূসক বৃদ্ধি করলে দেশি টেক্সটাইল ক্ষতির মুখে পড়বে এবং সুতা আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে। স্টিল শিল্পের কাঁচামালের উপর কর ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে ও সিমেন্ট শিল্পে কাঁচামালে মূসক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে যা দেশের আবাসন ও নির্মান শিল্প খাত খরচ বেড়ে যাবে।
আনোয়ার-উল আলম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা যা দেশের শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে বিশেষ করে সিএমএসএমই খাত বেশি ক্ষতির মূখে পড়বে। আমরা এই টার্নওভার কর বাড়ানোর বিষয় পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করছি। ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের বিক্রির উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে যা বিশেষ করে উদীয়মান এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুতর আঘাত হবে, যা ৫ শতাংশ এ কমিয়ে আনা উচিত।
বিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে ১০০ কোটি, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা সুধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এসএমই খাতকে ফরমালাইজেশনের ও ডিজিটাল ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে যা বিসিআই’র প্রস্তাবের প্রতিফলন এ জন্য আমরা অর্থ উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি প্রস্তাব রেখে বলেন, বাজেটে খাত ভিত্তিক বরাদ্দকৃত অর্থ বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি যেন যথাযথ ভাবে ও পূর্ণমাত্রায় ব্যবহৃত হয়। বাজেটের বাস্তবায়নকে যেন নিবিড় কমপ্লায়েন্সের মধ্যে নিয়ে আসা হয়। কারণ বাজেট হল প্রয়োজনের সময় ব্যয় হল না বা অর্থ পাওয়া গেল না তাহলে এর সুফল অর্থনীতি ও জনগন পাবেনা।
কাফি