আন্তর্জাতিক
ইমাম রেজার মাজারে চিরনিদ্রায় গেলেন রাইসি

টানা কয়েক দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থানীয় সময় অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের শহর মাশহাদেই শায়িত হলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। গত ১৯ মে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় দুর্গম এক পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন তিনি। তাঁর সঙ্গে নিহত অন্যান্য কর্মকর্তার মধ্যে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানও ছিলেন। প্রত্যেককেই দেশের বিভিন্ন শহরে একই দিনে সমাহিত করা হয়েছে।
বিদেশি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার রাইসির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। বিকেলে প্রেসিডেন্টের মরদেহ যখন দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের বিরজান্দ থেকে নিয়ে আসা হয় তখন মাশহাদের শহীদ মাশিনেজাদ বিমানবন্দরে বিশাল জনসমাগম দেখা যায়। পরে শোকগ্রস্ত মানুষের ভিড়ের মধ্য দিয়ে সুসজ্জিত একটি ট্রাকে করে তাঁর কফিন নিয়ে যাওয়া হয় ইমাম রেজার মাজারের দিকে। সোনার গম্বুজ বিশিষ্ট ইমাম রেজা মাজারেই দাফন করা হয়েছে রাইসিকে। রাজধানী তেহরান থেকে ৯০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ইরানের পবিত্রতম শহর মাশহাদেই নবম শতাব্দীতে শায়িত হয়েছিলেন ইমাম আলী আল-রেজা।
দ্য ন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মাশহাদের পাঁচ শতাধিক মসজিদকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে গত বুধবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে রাইসির জানাজায় নেতৃত্ব দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি। জানাজার সময় রাইসির নাতিদের আলিঙ্গন করতে দেখা যায় খামেনিকে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বুধবার দেশটির মিত্র ও প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা তেহরানের শোক সভায় অংশ নেন। তাঁদের স্বাগত জানান বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মোহাম্মদ মোখবার। আগামী ২৮ জুন ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই দায়িত্বে থাকবেন মোখবার।
এদিকে রাইসির সঙ্গে নিহত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানকেও আজ বৃহস্পতিবার রাজধানী তেহরানে অবস্থিত শাহ আবদোলাজিম মাজারে সমাহিত করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক
রাশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প, দেশে দেশে সুনামি সতর্কতা

রাশিয়ার কামচাটকা উপকূলের কাছে শক্তিশালী ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের পরে ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ায় সুনামির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। যদিও এই অঞ্চলে ঢেউয়ের উচ্চতা তুলনামূলকভাবে কম হবে।
ফিলিপাইনের ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি সংস্থা বলেছে, আজ বুধবার দুপুরে এক মিটারেরও কম উচ্চতার সুনামি ঢেউ উপকূলে আঘাত করবে। তাই ফিলিপাইনের ২০টির বেশি প্রদেশের বাসিন্দাদের সমুদ্রের কাছাকাছি না যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভূ-তত্ত্ব সংস্থা পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকটি উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে। সেখানকার বাসিন্দাদের শান্ত থাকার পাশাপাশি সমুদ্রতট থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো জরুরি উদ্ধারের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
জাপান, হাওয়াই ও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কামচাটকায় ৩ থেকে ৪ মিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ দেখা গেছে, আর জাপানের হোক্কাইডো শহরে ৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ঢেউ আঘাত করেছে।
হাওয়াইয়ের গভর্নর জশ গ্রিন সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সবাইকে সুনামি সতর্কতা মানতে বলেছেন।
কামচাটকায় ভূমিকম্পের কারণে কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং আরও শক্তিশালী কম্পনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সুনামি সতর্কতা চীন, গুইম, পেরু ও ইকুয়েডরের গ্যালাপাগোস দ্বীপেও দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়ায় বিমানবন্দরে ১৫ বাংলাদেশি আটক

মালয়েশিয়ার কুচিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেই আটক হয়েছেন ১৫ জন বাংলাদেশি। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক ফেসবুক পোস্টে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, তারা কুয়ালালামপুর থেকে একটি ফ্লাইটে করে সারাওয়াক প্রদেশের কুচিংয়ে পৌঁছানোর পরই এ অভিযান চালানো হয়।
প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা গেছে, আটক ব্যক্তিদের মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে প্রবেশের কোনো রেকর্ড নেই। পাসপোর্ট পরীক্ষা করে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আরও জানান, তাদের পাসপোর্টে ব্যবহৃত হয়েছে ভুয়া ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, দালালদের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা। প্রতিজনের কাছ থেকে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।
আটকদের সবাইকে সেমুজা ইমিগ্রেশন ডিটেনশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৫৯/৬৩ সালের অভিবাসন আইনের আওতায় তদন্ত শুরু করেছে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, গত ২৫ জুলাই কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাত ঘণ্টাব্যাপী বিশেষ অভিযানে ৮০ বাংলাদেশিসহ ৯৯ জন বিদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়। মালয়েশিয়ার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা সংস্থা (AKSEM) জানিয়েছে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ফ্লাইটের যাত্রীদের টার্গেট করে ওইদিন টার্মিনাল-১-এ এ অভিযান চালানো হয়। যাচাই-বাছাইয়ে নিরাপত্তা শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক
নিউইয়র্কে বন্দুক হামলায় বাংলাদেশিসহ নিহত ৪

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি বহুতল অফিস ভবনে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন নিহত হয়েছে। নিহত একমাত্র পুলিশ সদস্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, মিডটাউনে হামলায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন। এই ঘটনায় নিহত পুলিশ সদস্য বাংলাদেশি অভিবাসী।
তিনি আরও বলেন, নিহত অফিসার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিউইয়র্ক পুলিশে কর্মরত ছিলেন ও তিনি বাংলাদেশ থেকে আসা একজন অভিবাসী। মেয়র অ্যাডামস তাকে ‘অফিসার ইসলাম’ বলে উল্লেখ করেন।
নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের কমিশনার জেসিকা টিশ জানিয়েছেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওই কর্মকর্তার নাম দিদারুল ইসলাম। তিনি বিবাহিত ছিলেন ও তার দুটি সন্তান রয়েছে। এছাড়া, তার স্ত্রী তৃতীয় সন্তানের মা হতে চলেছেন।
জেসিকা টিশ বলেন, আমরা তাকে যে কাজটি করতে বলেছিলাম সে সেই কাজটিই করছিলেন। তিনি চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এদিকে, সন্দেহভাজন হামলাকারী নিজেই নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজ।
কাফি
আন্তর্জাতিক
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সম্মত: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শনিবার বলেছেন, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন। সীমান্তে তিন দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।
থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, থাইল্যান্ড নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে সৎ অভিপ্রায় দেখতে চায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যমে জানান, থাইল্যান্ড আর কম্বোডিয়া দুই দেশই শান্তি আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ও ফুমথামের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি সংঘাত বন্ধ না হয়, তাহলে কোনো দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তি হবে না। উভয় পক্ষই তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চেয়েছে।
যদিও ট্রাম্পের প্রস্তাবের আগে, কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল থাইল্যান্ড। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ব্যাংককে শান্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে নমপেন। বলছে, সংঘর্ষের কোনো মানে নেই, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। এ প্রস্তাবের জবাবে থাইল্যান্ড সাফ জানিয়ে দেয়, কম্বোডিয়ার আন্তরিকতা প্রমাণ করলেই হবে শান্তির আলোচনা।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সংঘাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ও আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
কাফি
আন্তর্জাতিক
ইতালির ব্যস্ত সড়কে বিমান বিধ্বস্ত, সব আরোহী নিহত

সড়কে ছুটছিল গাড়ি, ঠিক সে সময়ই আচমকাই মুখ থুবড়ে পড়ে ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাতে আগুন ধরে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি এ দুর্ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারের ওই দুর্ঘটনায় বিমানের চালক এবং তার সঙ্গিনী, অর্থাৎ একমাত্র যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। এ সময় ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে আহত হয়েছেন দুটি গাড়ির চালকও। তবে তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
উত্তর ইতালির লম্বার্দি প্রদেশের ব্রেসিয়া শহরের একটি হাইওয়েতে ঘটেছে এই কাণ্ড। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে ব্যস্ত সেই হাইওয়েতে প্রচণ্ড গতিতে আছড়ে পড়ে ইতালির একটি ফ্রেসিয়া আরজি আল্ট্রালাইট উড়োজাহাজ। ভিডিয়োতে দেখা গেছে যে রাস্তায় ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে আগুন ধরে গেছে।
বিমান বিধ্বস্তের পর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে বিমানের চালক সার্জিও রাভাগলিয়া (৭৫) এবং তার বান্ধবী অ্যান মারি ডি স্টেফানো’র (৬০)। সার্জিও পেশায় আইনজীবী এবং শৌখিন পাইলট ছিলেন। তিনি এবং অ্যান উভয়েই লম্বার্দির রাজধানী শহর মিলানের বাসিন্দা ছিলেন।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সড়কে বিমানটিকে জরুরিকালীন অবতরণ করানোর চেষ্টা করছিলেন পাইলট। কিন্তু তার পরিবর্তে বিমানটি ভেঙে পড়ে রাস্তায়। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, দুর্ঘটনার মুহূর্তে জ্বলন্ত বিমানটির পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে যাওয়া কয়েকটি গাড়ি। সেগুলোর মধ্যে দুটি গাড়ির চালক আহত হয়েছেন।
বিমান ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ এবং দমকলবাহিনী। যদিও ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বিমানটি। ব্রেসিয়া শহরের পাবলিক প্রসিকিউটর দপ্তর এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে অহমদাবাদের লোকালয়ে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। সেটির গন্তব্য ছিল লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইক। ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬০ জনের। নিহতদের মধ্যে বিমানটির যাত্রী ছিলেন ২৪১ জন।