পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণের সম্ভাবনা অপার: স্পিকার

পুঁজিবাজার একটা বিশেষায়িত ক্ষেত্র। পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণের সম্ভাবনা অপার। মেয়েরা যেভাবে সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে, পুঁজিবাজারেও তারা এগিয়ে আসবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে জেন্ডার গ্যাপ দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি।
বুধবার (২২ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘পুঁজিবাজারে নারী ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার- ২০২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আব্দুর রহমান খান এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বক্তব্য দেন।
এর আগে ‘পুঁজিবাজারে নারী’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মডারেটর ছিলেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার। বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি সঙ্গীতা আহমেদ, অ্যাসোসিয়েশন অফ ফ্যাশন ডিজাইনার্স অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদ, ইউনিলিভার বাংলাদেশের পরিচালক শামীমা আক্তার এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডসের সহ-সভাপতি মনিজা চৌধুরী ডিশকাসনে অংশ নেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বে নারী ক্ষমতায়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে সমগ্র বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং লিঙ্গ সমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
স্পিকার বলেন, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে যেন নারীরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শক্ত অবিস্থান তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে নারীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসকল প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, সেগুলো দূর করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। তিনি অনলাইন ও অটোমেটেড ট্রেডিং প্লাটফর্ম চালু করেছেন। পুঁজিবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
কাফি

পুঁজিবাজার
সূচক নিম্নমুখী, দুই ঘণ্টায় ১৭২ শেয়ারের দরপতন

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের নেতিবাচক প্রবণতায় চলছে লেনদেন। এদিন প্রথম দেড় ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭২ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, মঙ্গলবার (০৩ জুন) ডিএসইর লেনদেন শুরুর দুই ঘণ্টা পর অর্থাৎ বেলা ১২টা পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান সূচক বা ‘ডিএসইএক্স’ ৮ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৬৮০ পয়েন্টে।
প্রধান সূচকের সঙ্গে শরিয়াহ সূচক বা ‘ডিএসইএস’ ১ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট কমে আর ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৩ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১০২১ ও ১৭৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আলোচ্য সময়ে ডিএসইতে মোট ১০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ১৭২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯৭ কোম্পানির শেয়ারদর।
এসএম
পুঁজিবাজার
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের আয় কমেছে ৩৩ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ঢাকা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ৩১ মার্চ,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৪-মার্চ’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ৩৩ শতাংশের বেশি।
বুধবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএসে) হয়েছে ৫০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৭৫ পয়সা।
গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৬ টাকা ৫৬ পয়সা।
এসএম
পুঁজিবাজার
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ঢাকা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদেরেক ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দেবে।
সোমবার (০২ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে লভ্যাংশ সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা, যা আগের বছর ২ টাকা ৮৪ পয়সা ছিল।
ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য আগামী ৭ আগস্ট কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ জুলাই।
পুঁজিবাজার
প্রতিবারের মতো এবারও বাজেটকে অভিনন্দন জানালো ডিএসই

চরম সংকটে থাকা পুঁজিবাজার ঘিরে বাজেটে যে আশার আলো খুঁজছিলেন বিনিয়োগকারীরা, তা পূরণ হয়নি। টানা দরপতন আর কমে যাওয়া লেনদেনে বিপর্যস্ত পুঁজিবাজারে প্রত্যক্ষ কোনও প্রণোদনা না থাকায় বিনিয়োকারীদের হতাশা আরও বেড়েছে। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিলো বাজেটে শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে কার্যকর ও স্পষ্ট উদ্যোগ থাকবে, থাকবে মূলধনি মুনাফা বা লভ্যাংশ আয়ে কর রেহাই। কিন্তু এসব কিছুই মেলেনি ঘোষিত বাজেটে। অথচ প্রতিবারের মতো ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটকে পুঁজিবাজারবান্ধব বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ফ্যাসিস্ট সরকারের বাজেটেও বিনিয়োগকারীদের জন্য কার্যকরী কোনো উদ্যোগ না থাকলেও তখনও বাজেটকে অভিনন্দন জানিয়েছিলো ডিএসই। পুঁজিবাজারের মূল শক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো উদ্যোগ না থাকলেও প্রতিবার বাজেটকে সমর্থন ও অভিনন্দন জানানোকে-‘হয়তো ডিএসই কিছু না বুঝে নইলে সরকারকে খুশি করাতেই’ এমনটি করে বলে মন্তব্য করেছে শেয়ারবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন। এর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ডিএসইর চেয়ারম্যান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ উপদেষ্টাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। সেই সঙ্গে বাজেট পুঁজিবাজারবান্ধব বলে মন্তব্য করেন।
এরআগে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ না করাসহ কয়েকটি দাবি করেছিলো ডিএসই। কিন্তু বাজেটে তার কোনটিই রাখা হয়নি। অথচ বাজেট ঘোষণার পরেই সমর্থন জানিয়ে অভিনন্দন জানায় ডিএসই। সেসময় ডিএসই জানায়, উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করার কৌশল নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ, উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী পরিকল্পিত কর্মপন্থা ও ব্যবস্থাপনা কৌশল বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়াও, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সরকার পুঁজিবাজারকে আন্তর্জাতিককরণের লক্ষ্যে নানাবিধ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুঁজিবাজারের সহায়ক ইকোসিস্টেম ও সার্বিক সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন করার জন্য আগের বছরের বাজেটের শেয়ারবাজারবান্ধব নীতি বলবত রাখায় ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে আবারো অভিনন্দন জানাচ্ছে।
এদিকে, দীর্ঘদিনের পতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ নেমে এসেছে পাঁচ বছর আগের অবস্থানে। রাজপথে নামা বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন, নতুন সরকারের বাজেটে বাজারকে চাঙা করতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট প্রস্তাবে প্রত্যক্ষভাবে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনও উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা দেখা যায়নি।
বাজেট পরবর্তী ডিএসইর প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সমালোচনা করে বলেন, ডিএসই বরাবরই সরকারের খুশি করতে ব্যস্ত। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজেটে কোনো প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তবুও ডিএসইিএটাকে পুঁজিবাজারবান্ধব বলে মনে করছে। এটি নতুন নয়, ডিএসই সুযোগকে কাজে লাগায়। এরআগেও ফ্যাসিস্ট সরকারের বাজেটেও কোনো প্রকার উদ্যোগ না রাখলেও এমনকি ডিএসইর প্রস্তাব না রাখলেও তাতে সমর্থন ও অভিনন্দন জানিয়েছিলো।
তবে বাজেটে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে পার্থক্য বাড়ানো, ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেনে উৎসে কর হ্রাস এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব।
বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহার শর্তসাপেক্ষে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার হবে সাড়ে ২৭ শতাংশ। তবে নির্ধারিত কিছু শর্ত পূরণ করলে এই ব্যবধান ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শর্ত হলো— সব ধরনের লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করা এবং নির্ধারিত সীমার বেশি লেনদেন নগদে না করা।
ব্রোকারেজ হাউজের প্রতি ১০০ টাকার লেনদেনে বিদ্যমান ৫ পয়সা উৎসে কর কমিয়ে ৩ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি, মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করহার ১০ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশে আনার ঘোষণা এসেছে বাজেটে।
তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব উদ্যোগ মূলত প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে প্রণোদনা হিসেবে বিবেচিত হলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীর সরাসরি উপকারে আসবে না। স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ মূলধনি মুনাফা ও লভ্যাংশ আয়ে কর অব্যাহতির প্রস্তাব দিলেও তা বিবেচনায় নেয়নি সরকার।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আগে তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টা তা পুরোপুরি আমলে নেননি। ফলে বাজারে ভালো কোম্পানি আনার যে প্রয়াস, তাতে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাজার সংস্কারের নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন চলছে ধীরগতিতে। এতে শেয়ারবাজারের মন্দা আরও প্রকট হয়েছে। বাজেট-পরবর্তী সময়ে বাজারে এসব ঘোষণার কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
এসএম
পুঁজিবাজার
বাজেটে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা পায়নি কিছুই

চরম হতাশাজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশের পুঁজিবাজারে। টানা দরপতনে লোকসানের ধাক্কা সামলাতে না পেরে বাজারবিমুখ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমে পাঁচ বছর আগের স্থানে ফিরে গেছে। সেই সাথে কমেছে লেনদেনও। তবে বিক্ষুব্ধ ও হতাশাগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশা নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন বাজেটের দিকে। কিন্তু বাজেট ঘিরে তাদের আশা ছিল যতটা প্রাপ্তি, সেই তুলনায় হতাশাজনক। কারণ, সরাসরি বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন- এমন কোনো প্রণোদনা নেই ঘোষিত বাজেটে। সর্বোপরি বাজেটে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা পায়নি কিছুই।
বর্তমানে বাজারের লেনদেন যে পর্যায়ে নেমেছে, তাতে বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারী সবারই কেবল লোকসানের অঙ্কই প্রতিদিন বাড়ছে। ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শেয়ারবাজার নিয়ে আশাবাদী হয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু সেই পরিবর্তনের মাস না ঘুরতেই শেয়ারবাজার আবারও দীর্ঘ মন্দার কবলে। এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীরা রাজপথেও নেমেছেন প্রতিবাদে। এতে কোনো লাভ হয়নি বিনিয়োগকারীদের। তাদের হতাশই করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তবে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বাজেটে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানির মধ্যকার করপোরেট করহারের ব্যবধান বৃদ্ধি, ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর ধার্য কর কমানো এবং শেয়ারবাজারের মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করহার হ্রাস। এসব প্রণোদনার সুবিধাভোগী শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সরাসরি বিনিয়োগকারীরা এর কোনো সুবিধা পাবেন না। যদিও বাজেটের আগে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয় থেকে শুরু করে মূলধনি মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছিল স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে।
বাজেট প্রস্তাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শেয়ারবাজারে কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে শর্তসাপেক্ষে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ করপোরেট কর ছাড় পাবেন। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে এ সুবিধা পাওয়া যাবে। এ জন্য তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানির করহারের ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শর্তসাপেক্ষে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহার হবে ২০ শতাংশ। আর তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহার হবে সাড়ে ২৭ শতাংশ। তবে শর্তসাপেক্ষে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিগুলোর করহার আরও আড়াই শতাংশ কম হবে। এই শর্তের মধ্যে রয়েছে নির্ধারিত করবর্ষে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সব আয় ও প্রাপ্তি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। পাশাপাশি ৫ লাখ টাকার বেশি লেনদেন ও বার্ষিক ৩৬ লাখ টাকার বেশি সব ধরনের লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনের শর্ত পূরণ করলে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন করহারের ব্যবধান কমে ৫ শতাংশে নেমে আসবে।
এ ছাড়া ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর থেকে উৎসে কর কিছুটা কমানো হয়েছে। বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকার লেনদেনে ৫ পয়সা কর আদায় করা হয়। আগামী বাজেটে এই কর কমিয়ে ৩ পয়সায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর শেয়ারবাজারের মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর ১০ শতাংশ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শেয়ারবাজারের মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সাড়ে ৩৭ শতাংশ হারে করপোরেট কর দেয়। আগামী অর্থবছরে তা কমিয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করপোরেট করহারের ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে। তবে শর্তসাপেক্ষে এই ব্যবধান সাড়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও সাধারণভাবে এই ব্যবধান ৫ শতাংশ। যদিও ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির মধ্যে করহারের ব্যবধান ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু বিএসইসির সেই প্রস্তাব পুরোপুরি আমলে নেননি অর্থ উপদেষ্টা। তাই সাধারণভাবে ৫ শতাংশ করহারের সুবিধা নিতে ভালো কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসতে কতটা আগ্রহী হবে, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভালো কোম্পানিগুলো বাজারে আসতে আগ্রহী না। কারণ, তালিকাভুক্ত হলে অনেক ধরনের নিয়মকানুন পরিপালন করতে হয় কোম্পানিগুলোকে। তালিকাভুক্তির জন্য বাড়তি অর্থও খরচ হয়। তাই ভালো সুবিধা না পেলে এসব কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে না।
এদিকে গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাজারের সংস্কারের নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন খুব ধীরগতিতে এগোচ্ছে। ফলে সংস্কারের সুফলও নেই বাজারে। এ কারণে তীব্র মন্দায় ভুগছে শেয়ারবাজার। বাজেট ঘিরে বিনিয়োগকারীদের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, সেটিরও খুব বেশি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বাজেট-পরবর্তী শেয়ারবাজারে তার কী প্রভাব পড়ে, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা। বিনিয়োগকারীদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন—ঘোষিত বাজেট শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে পারবে কি?
কাফি