আন্তর্জাতিক
ভারতের পাম অয়েল আমদানি ৩৪ শতাংশ বেড়েছে

চলতি বছরের এপ্রিলে ভারতের পাম অয়েল আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় দেশটি মোট ৬ লাখ ৮৪ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করেছে। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ভারতের বাণিজ্য সংস্থা সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (এসইএ) এ তথ্য জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ায় দেশটি পাম অয়েল আমদানি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এসইএর বিবৃতি অনুসারে, ভারত এপ্রিলে মোট ১৩ লাখ ৪ হাজার ৪০৯ টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যার মধ্যে ৫২ শতাংশই ছিল পাম অয়েল। এসইএ আরো জানায়, গত মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে টনপ্রতি পাম অয়েলের দাম ১০০ মার্কিন ডলার কমেছে। দাম কমে যাওয়ার কারণেই এ সময় পরিশোধিত, ব্লিচড, আরবিডি পামোলিন ও অপরিশোধিত পাম অয়েলের (সিপিও) আমদানি বাড়িয়েছে ভারত।
ভারত গত বছরের এপ্রিলে ১ লাখ ১২ হাজার ২৪৮ টন আরবিডি পামোলিন আমদানি করেছিল। চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ টনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে দেশটির অপরিশোধিত পাম অয়েলের আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৮ টনে দাঁড়িয়েছে, গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৬ টন।
এছাড়া গত বছরের এপ্রিলে ৩ হাজার ৯৯০ টন অপরিশোধিত পাম কার্নেল অয়েল আমদানি করেছিল ভারত। চলতি বছরের এ সময় তা প্রায় ছয় গুণ বেড়ে ২৩ হাজার ৬১৮ টনে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের দামও কমেছে। বাণিজ্য সংস্থা এসইএর দেয়া তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ৪০ মার্কিন ডলার কমেছে, সূর্যমুখী তেলের দাম কমেছে টনপ্রতি ১৫ মার্কিন ডলার। দাম কমে যাওয়ায় এসব তেলের আমদানিও বাড়িয়েছে ভারত। এপ্রিলে দেশটি মোট ৬ লাখ ২০ হাজার ৩১৫ টন সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেল আমদানি করেছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫১৪ টন ছিল সয়াবিন তেল। গত বছরের একই সময় সয়াবিন তেল আমদানির এ পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৫৫ টন। তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ভারতের সূর্যমুখী তেলের আমদানি কমেছে। দেশটি এপ্রিলে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৮০১ টন সূর্যমুখী তেল আমদানি করেছে, গত বছরের একই সময় যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ১২২ টন।
এপ্রিলে ভারতের অভোজ্যতেলসহ সামগ্রিক উদ্ভিজ্জ তেল আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়ে ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৮ টন হয়েছে। গত বছর আমদানির এ পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৫০ হাজার ১৮৯ টন।

আন্তর্জাতিক
আকাশ থেকে গাজায় ত্রাণ ফেলল কানাডা

ইসরায়েলি নারকীয় গণহত্যা ও তাণ্ডবের মাঝে গাজার দুর্ভিক্ষ চরমে। খাবারের অভাবে মারা যাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা। পশুপ্রাণীও ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছে। এবার অভুক্ত গাজাবাসীর জন্য বিমান থেকে খাদ্যসামগ্রী ফেলেছে কানাডা। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আবারও গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে দেশটি। এই প্রথমবারের মতো কানাডার সামরিক বাহিনী নিজেদের বিমান থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা ফেলেছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) কানাডার সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় কানাডার সশস্ত্র বাহিনী একটি সিসি-১৩০জে হারকিউলিস বিমান ব্যবহার করে গাজা ভূখণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ত্রাণ ফেলা হয়েছে। বিমান থেকে ২১ হাজার ৬০০ পাউন্ড ত্রাণ ফেলেছে সশস্ত্র বাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার বাসিন্দাদের জন্য কানাডা, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, জার্মানি এবং বেলজিয়াম মোট ১২০টি খাদ্য সহায়তার প্যাকেট ফেলেছে।
আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায় কানাডার সরকার। এ ঘোষণার ফলে গাজায় চলমান অমানবিক যুদ্ধের অবসানে ইসরায়েলের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কানাডা দাবি করছে, ইসরায়েলি বাধার মুখে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থাগুলোর জন্য গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
দেশটির সরকার বলেছে, মানবিক সহায়তা কাজ বাধাগ্রস্ত করাটা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। তবে এই বিষয়ে অটোয়ায় নিযুক্ত ইসরায়েলি দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। যদিও ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার ও গাজায় মানবিক সংকটের জন্য হামাসকে দায়ী করে আসছে।
গত মার্চে গাজায় খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। পরবর্তীতে বিশ্ব নেতাদের সমালোচনার মুখে মে মাসে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে এই উপত্যকায় এখনও কিছু বিধি-নিষেধ জারি রেখেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। সূত্র: রয়টার্স।
আন্তর্জাতিক
গাজার পুরোটাই দখলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পুরোটা দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশটির একাধিক শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট, চ্যানেল ১২, ওয়াইনেট এবং আই২৪নিউজ গতকাল সোমবার এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, এই পরিকল্পনার ফলে গাজার প্রতিটি অংশে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযান সম্প্রসারিত হবে। এমনকি হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের যেসব এলাকায় রাখা হয়েছে, সেগুলোও এই অভিযানের আওতায় আসবে।
চ্যানেল ১২-এর প্রধান রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমিত সেগালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর দপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুরোপুরি আত্মসমর্পণ না করলে হামাস নতুন করে কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেবে না। আমরাও আত্মসমর্পণ করব না। তাই এখনই পদক্ষেপ না নিলে জিম্মিরা না খেয়ে মারা যাবেন এবং গাজা হামাসের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যাবে।’
নেতানিয়াহুর এমন পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে পরিকল্পনাটি প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে আল-জাজিরা নেতানিয়াহুর দপ্তরে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা শুরু হওয়ার প্রায় দুই বছর হতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তার আগেই এই পরিকল্পনার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি হামলা ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির কারণে গাজায় প্রাণহানি বাড়ছেই। ক্ষুধায় কাতর জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করতে এবং যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুর প্রতি আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে।
গতকাল সোমবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৬ জন ছিলেন ত্রাণ সংগ্রহে যাওয়া মানুষ। গাজার চিকিৎসা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে নেতানিয়াহু নিজ দেশেও প্রবল চাপের মুখে আছেন। সম্প্রতি জিম্মি রম ব্রাস্লাভস্কি এবং এভিয়াটার ডেভিডের দুর্বল-শীর্ণ চেহারার ভিডিও প্রকাশের পর ওই চাপ আরও বেড়ে গেছে।
গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের শুরুতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের সবাইকে যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। শত্রুর পরাজয়, জিম্মিদের মুক্ত করা এবং গাজা যেন আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে না ওঠে, এসবই নিশ্চিত করতে হবে।’
হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ওসামা হামদান এদিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি নৃশংসতার বিষয়ে ‘চোখ বন্ধ রাখার’ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, একগুঁয়েমি, অহংকার এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে গড়িমসি করার কারণে নেতানিয়াহু ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবনকে ‘ঝুঁকির মুখে’ ফেলেছেন।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ৯৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু রয়েছে অন্তত ১৮ হাজার ৪৩০ জন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের হাতে এখনও ৪৯ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক
সৌদিতে ৭ মাসে ২৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবে আবারও বেড়েছে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে দেশটিতে ১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে নজিরবিহীন। এছাড়া দেশটিতে চলতি বছরের সাত মাসে ২৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অভিযোগে নতুন করে আরও দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার ও রোববার মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ১৫ জনের শাস্তি কার্যকর হয়, যাদের বেশিরভাগই বিদেশি নাগরিক।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২২ সালের মার্চের পর এই প্রথম এত কম সময়ের ব্যবধানে এতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। ওই সময় একদিনেই ৮১ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল সন্ত্রাসের অভিযোগে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছিল।
এসপিএর তথ্য অনুযায়ী, সদ্য মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৩ জন হাশিশ পাচার, একজন কোকেন পাচার এবং অন্যরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে দণ্ডিত হন।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির হিসাব বলছে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সৌদি আরবে ২৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধেই প্রাণ গেছে ১৬১ জনের, যাদের মধ্যে ১৩৬ জনই বিদেশি।
এই প্রবণতাকে ‘নজিরবিহীন গতি’ বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনজিও রিপ্রাইভ-এর প্রধান নির্বাহী জিদ বাসিওনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যেখানে হাশিশের মালিকানা ও ব্যবহারে শিথিলতা বাড়ছে, সেখানে সৌদির এই কড়া অবস্থান গভীর উদ্বেগের।’
তিনি আরও বলেন, ‘সৌদিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের বড় একটি অংশ বিদেশি নাগরিক—এটা স্পষ্টভাবে বৈষম্যমূলক।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া সৌদির ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধ’-এর ফল এখন দেখা যাচ্ছে। কারণ, সেই সময় যাদের আটক করা হয়েছিল, তাদের বিচার প্রক্রিয়া এখন শেষ হয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে।
একসময় মাদক মামলায় মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রেখেছিল সৌদি সরকার। কিন্তু ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে পুনরায় তা চালু করে। পরিসংখ্যান বলছে, ওই বছর ১৯ জন, ২০২৩ সালে ২ জন এবং ২০২৪ সালে অন্তত ১১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে কেবল মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সৌদি সরকার একদিকে উদার সংস্কারের কথা বললেও অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে ‘ভিশন-২০৩০’-এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।
তবে দেশটির প্রশাসনের দাবি, মৃত্যুদণ্ড জনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় এবং শুধু সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই এই সাজা কার্যকর করা হয়।
আন্তর্জাতিক
ইয়েমেনে নৌকাডুবি, ৬৮ অভিবাসীর মৃত্যু

ইয়েমেনের উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় কমপক্ষে ৬৮ জন শরণার্থী এবং অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইয়েমেন উপকূলে নৌকাডুবে যাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ৬৮ জন আফ্রিকান শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে এবং ৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ইয়েমেনে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রধান আবদুসাত্তোর এসোয়েভ রোববার বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, ১৫৪ জন ইথিওপীয়কে নিয়ে নৌকাটি ইয়েমেনের আবিয়ান প্রদেশের উপকূলে ডুবে যায়।
তিনি জানিয়েছেন, নৌকাডুবির ঘটনায় ১২ জন বেঁচে গেছেন। খানফার জেলায় ৫৪ জন শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃতদেহ ভেসে এসেছে এবং আরও ১৪ জনকে বিভিন্ন স্থানে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং তাদেরকে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ইয়েমেনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এর আগে জানিয়েছিল যে, দুর্ঘটনায় ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
জাঞ্জিবারের স্বাস্থ্য অফিসের পরিচালক আব্দুল কাদের বাজামিল বলেছেনদ, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শাকরা শহরের কাছে নিহতদের সমাহিত করার ব্যবস্থা করছে এবং কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অনুসন্ধানের সুযোগ অব্যাহত রয়েছে।
ইয়েমেন এবং আফ্রিকার শৃঙ্গ অঞ্চলের মধ্যেকার সমুদ্রপথ উভয় দিকের ভ্রমণকারী শরণার্থী এবং অভিবাসীদের জন্যই একটি সাধারণ রুট কিন্তু এটি বেশ বিপজ্জনক পথ। ২০১৪ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই অঞ্চলে ইয়েমেনিদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে হুথি বিদ্রোহীরা এবং সরকারি বাহিনী একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছিল যার ফলে ইয়েমেনে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে এবং চলমান মানবিক সংকট কিছুটা লাঘব হয়েছে।
তবে আফ্রিকার সংঘাত, বিশেষ করে সোমালিয়া এবং ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে আসা কিছু লোক ইয়েমেনে আশ্রয় নিয়েছে অথবা দেশটি ব্যবহার করে উপসাগরীয় দেশগুলোতে ভ্রমণের চেষ্টা করেছে। আইওএম-এর তথ্য অনুসারে, এই পথটি বিশ্বের ‘সবচেয়ে ব্যস্ত এবং সবচেয়ে বিপজ্জনক’ অভিবাসন রুটের মধ্যে একটি।
ইয়েমেনে পৌঁছানোর জন্য পাচারকারীরা প্রায়ই বিপজ্জনক পথে অতিরিক্ত যাত্রীবাহী নৌকায় করে লোহিত সাগর বা এডেন উপসাগর হয়ে লোকজনকে পারাপার করে।
আইওএমের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ৬০ হাজারের বেশি শরণার্থী এবং অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছেন যা আগের বছরের মোট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ২০০।
আন্তর্জাতিক
আবারও ‘স্বাস্থ্যকর শহরের’ স্বীকৃতি পেলো মদিনা

আবারও ‘স্বাস্থ্যকর শহর’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে সৌদি আরবের মদিনা নগরী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মদিনা শহরকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে। ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্রতম নগরী মদিনা এবার ৮০ পয়েন্ট অর্জন করে এই স্বীকৃতি পেয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ)।
এই স্বীকৃতির মাধ্যমে জেদ্দার পরই মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ‘স্বাস্থ্যকর নগরী’ হিসেবে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করলো মদিনা শহর।
একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজনে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ফাহাদ আলজালাজেলের কাছ থেকে এই স্বীকৃতি সনদ গ্রহণ করেন মদিনা অঞ্চলের গভর্নর প্রিন্স সালমান বিন সুলতান।
প্রিন্স সালমান বলেন, এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে যে, নাগরিকদের জীবনের মান উন্নয়নে নেতৃত্ব কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু স্থানীয়ভাবে নয়, বরং আন্তর্জাতিকভাবে একটি উন্নয়ন মডেলে পরিণত হচ্ছে মদিনা শহর। যা সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ডব্লিউএইচও-এর এই স্বীকৃতি অর্জনের জন্য একটি শহরকে ৮০টি মানদণ্ড পূরণ করতে হয়,যার মধ্যে রয়েছে— পার্ক ও খোলা জায়গা, হাঁটার উপযোগী এলাকা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও স্কুলের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।
ডব্লিউএইচও মদিনা ছাড়াও সৌদি আরবের আরও ১৪টি শহরকে ‘স্বাস্থ্যকর শহর’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শহরগুলো হলো, তায়েফ, তাবুক, আদ-দিরিয়াহ, উনায়জা, জালাজেল, আল-মানদাক, আল-জুমুম, রিয়াদ আল-খুবরা, শারুরাহ।
এখন মদিনা বিশ্বব্যাপী এমন এক উদাহরণ, যেখানে আধুনিক উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা একত্রে কাজ করছে।