এগ্রিবিজনেস
এসিআই বায়ো-অর্গানিক সারে টিএসপি-ডিএপি ছাড়াই সম্ভব ধানের উৎপাদন
যশোরের ঝিকরগাছায় অবস্থিত এসিআই ফার্টিলাইজারের গবেষণা কেন্দ্রে মঙ্গলবার (৭ মে) মাঠ দিবস আয়োজন করেছে। এসিআই ফার্টিলাইজার তাদের গবেষণা কেন্দ্রের জমিতে ধান চাষে হেক্টর প্রতি ৫০০ কেজি ব্রি উদ্ভাবিত বায়ো অর্গানিক সার ব্যবহার করেছে যেখানে কোন প্রকার টিএসপি বা ডিএপি সার ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়াও শতকরা ৩০ ভাগ নাইট্রোজেন অর্থাৎ ইউরিয়া কম ব্যবহার করা হয়েছে। এতে করে গবেষণা কেন্দ্রের ধানে শতভাগ অনুমোদিত মাত্রায় রাসায়নিক সারের চাইতেও এই ধানের ট্রায়াল প্লটে বিঘায় ২ মন ধানের ফলন বেশি হয়েছে।
মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ডিডি ড. সুশান্ত কুমার তরফদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. আবু তালহা এবং ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাসুদ হোসেন পলাশ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এসিআইর পক্ষ থেকে এসিআই ফার্টিলাইজারের বিজনেস ডিরেক্টর কৃষিবিদ বশির আহমেদ, শাহ মোহাম্মদ আরেফিন, কৃষিবিদ জাহিদুল ইসলাম এবং গবেষক মো. রোকিবুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এসিআই ফার্টিলাইজার ব্রি উদ্ভাবিত বায়ো-অর্গানিক সার সাধারণত শাকসবজির অবশিষ্টাংশ, বায়োচার এবং রক ফসফেট, উপকারী ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি থেকে তৈরী হয়। উপকারী ব্যাকটেরিয়াসমূহ নাইট্রোজেন ফিক্সেশন, রক ফসফেটকে উদ্ভিদের জন্য সহজলভ্য করে এবং গাছের বৃদ্ধির জন্য হরমোনসমূহ সরবরাহ করে।
উল্লেখ্য, ব্রি উদ্ভাবিত বায়ো-অর্গানিক সার উতপাদন ও বাজারজাতকরনের জন্য ইতিমধ্যে এসিআই ফার্টিলাইজারের সাথে সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন হয়েছে। এই সার ব্যবহারে একদিকে যেমন রাসায়নিক সারের সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি সহ ফসলের কাংখিত ফলন নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
পেঁয়াজ সংরক্ষণে গবেষণায় সাফল্য, কমবে দাম
মসলাজাতীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম পেঁয়াজ। দেশে প্রতিবছর অসংখ্য পেঁয়াজ পচে যায়। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এবার এক গবেষণায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে সাফল্য এসেছে।
গত কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, আম, কলা, পটোল, করলাসহ অন্যান্য পচনশীল ফসল সংরক্ষণে গামা রশ্মি (রেডিয়েশন) প্রয়োগের পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা। এ গবেষণায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে সাফল্য পাওয়া গেছে। গবেষক দলে ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম এবং একই বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার।
গবেষকরা জানান, মসলাজাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ অন্যতম। দেশে প্রতিবছর অসংখ্য পেঁয়াজ পচে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে পেঁয়াজ কম থাকলেই দাম বেড়ে যায়। এতে ক্রেতারা বেশি দামে কিনতে বাধ্য হন। এসব বিষয় চিন্তা করে ২০২০ সাল থেকে পোস্ট হারভেস্ট গবেষণাগারে বিভিন্ন ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালায় বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ। বিভিন্ন ফসল সংরক্ষণের জন্য গামা রেডিয়েশন ডোজ নির্দিষ্ট করা হয়।
পেঁয়াজের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ১০০ গ্রাম ডোজ গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের গাছ গজানো বন্ধ হয়েছে। এতে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস ও পচন কম হচ্ছে। এর মাধ্যমে পেঁয়াজের গুণগত মান বজায় রেখে ঘরের তাপমাত্রায় প্রায় ৭-৯ মাস সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এতে বাংলাদেশে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমবে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধ হবে এবং স্থিতিশীল থাকবে পেঁয়াজের বাজার।
এদিকে আরেকটি স্বস্তির বিষয় হচ্ছে ‘জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড’ সম্প্রতি ময়মনসিংহের ভালুকায় দেশের প্রথম বিশেষায়িত পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। এর মাধ্যমে অত্যাধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে সারা বছর পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ভোক্তাদের ধারাবাহিকভাবে ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহের লক্ষ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
অনিয়ন ইমপেক্ট ক্লাস্টার প্রকল্প (২০২২-২৪) এর আওতায় পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করা হয়। নেদারল্যান্ডস সরকার ও বিভিন্ন বাংলাদেশি এবং নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য ভালো মানের পেঁয়াজের ধারাবাহিক সরবরাহের পাশাপাশি চাষীদের কাছে মানসম্পন্ন পেঁয়াজ বীজ সরবরাহসহ পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্পটি ভারতীয় পেঁয়াজের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশি পেঁয়াজে স্বনির্ভরতা অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে অবদান রাখবে।
জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফিরোজ এম হাসান জানান, পচনশীল বস্তু হওয়ায় প্রতি বছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে দেশব্যাপী পেঁয়াজের সংকট দেখা যায়। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে সংরক্ষণের অভাবেই নষ্ট হয় ৩০ ভাগ পেঁয়াজ। যার ফলে প্রান্তিক কৃষক ও ভোক্তা উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা এই পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বছরব্যাপী ধারাবাহিকভাবে ভোক্তাদের ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহ করতে পারবো। পাশাপাশি কৃষকরাও পেঁয়াজের যৌক্তিক দাম পাবেন।
বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরীন আখতার জানান, গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজের দুটি জাত ‘তাহেরপুরী’ ও ‘লালতীর কিং’-এ গাছ গজানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়েছে। এর ফলে পেয়াজ পঁচবে দেরিতে।
উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, রান্নাবান্না করলে পেঁয়াজ লাগবেই। ফলে দাম বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেক ক্রেতা বাজার থেকে বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ কিনে ঘরে রেখে দেন। কিন্তু পচনের কারণে চটজলদি করেই রান্না করে খেতে হয়। এছাড়া ব্যবসায়ী ও কৃষকরাও পচনের কারনে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে পারছে না। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে। এতে কৃষক, ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাও উপকৃত হবে।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বাণিজ্যিকভাবে রেডিয়েশন প্রয়োগ করার জন্য বিশ্বব্যাংকের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিনা আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র ও গাজীপুরে গামা সেন্টার স্থাপন করার কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
কৃষিখাতে অবদানের জন্য এআইপি হলেন ড. আনসারী
কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানে ২০২১ সালের জন্য ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা অ্যাগ্রিকালচারালি ইম্পর্ট্যান্ট পারসন (এআইপি) নির্বাচিত হয়েছেন দেশের অন্যতম বহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী।
সম্প্রতি ২০২১ সালের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এক গেজেটের মাধ্যমে ড. এফ এইচ আনসারীসহ মোট ২২ ব্যক্তিকে ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা অ্যাগ্রিকালচারালি ইম্পর্ট্যান্ট পারসন (এআইপি) নির্বাচিত করেছে। নির্বাচিত এআইপিরা চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সিআইপির মতো বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
দেশে কৃষি খাতে সাফল্যের অন্যতম কারিগর কৃষক, কৃষিবিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, খামারিসহ কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্তদের প্রতিবছর সম্মান জানাতে ও উৎসাহিত করতে এআইপি সম্মাননা চালু করে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালে এআইপি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। সে আলোকে ২০২০ সালের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ১৩ জন ব্যক্তিকে এআইপি সম্মাননা দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
এআইপি সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা নির্ধারিত এক বছরের মেয়াদে সচিবালয়ে ঢোকার পাস, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ, বিমান ও রেলের টিকিটে অগ্রাধিকার এবং নিজে ও পরিবারের সদস্যদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় কেবিনে অগ্রাধিকার পাবেন।
এবার মোট পাঁচটি ক্যাটাগরি বা শ্রেণিতে এআইপি নির্বাচন করা হয়েছে। এগুলো হলো কৃষিশ্রেণি (উদ্ভাবন জাত বা প্রযুক্তি), কৃষি উৎপাদন বা বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পশ্রেণি, রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণি, স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত কৃষি সংগঠন শ্রেণি এবং বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শ্রেণি।
কৃষি (উদ্ভাবন জাত বা প্রযুক্তি) শ্রেণিতে নির্বাচিত ব্যক্তিরা হলেন এসিআই লিমিটেডের অ্যাগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট এ কে এম ফারায়েজুল হক আনসারী, কুমিল্লার কৃষি উদ্যোক্তা এম এ মতিন, জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্লাহ ও বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ।
কৃষি উৎপাদন বা বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পশ্রেণিতে ১০ জন এআইপি হয়েছেন। তাঁরা হলেন টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো. ছানোয়ার হোসেন, ফরিদপুরের খান বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী শাহীদা বেগম, খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুরেশ্বর মল্লিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের গ্রিন প্ল্যানেট অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. রুহুল আমীন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অ্যাগ্রো বেজড সোশিও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন, পাবনার ঈশ্বরদীর তন্ময় ডেইরি খামারের স্বত্বাধিকারী মো. আমিরুল ইসলাম।
এই শ্রেণিতে আরও আছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আল বারাকা মৎস্য খামার অ্যান্ড হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী মাছুদুল হক চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের সিরাজ বহুমুখী খামারের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম ও শেরপুর সদর উপজেলার মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন নার্সারি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. হজরত আলী।
রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণিতে দুটি প্রতিষ্ঠান এআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন গাজীপুর সদর উপজেলার লিভিং আর্ট গার্ডেনের পরিচালক কে এম সবুজ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মোহা. রফিকুল ইসলাম।
স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত কৃষি সংগঠন শ্রেণিতে তিনজনকে এআইপি নির্বাচিত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ, চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন তিলোত্তমার প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীন ও সাতক্ষীরার ধানদিয়া সিআইজি মহিলা সমবায় সমিতির সভাপতি শিখা রানী চক্রবর্তী।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক পেয়েছেন এমন তিনজনকে ২০২১ সালের জন্য এআইপি নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অন্নপূর্ণা অ্যাগ্রো সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী রাম নিবাস আগরওয়ালা, ঢাকার নবাবগঞ্জের অমিত ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মায়া রানী বাউল ও পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. আবদুল খালেক।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
কাঁচা মরিচের কেজি ৩৫ টাকা!
চলতি শীত মৌসুমে কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে পণ্যটির দাম কমেছে। দিনাজপুরের হিলি সবজি বাজারে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে হিলি সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধেকে নেমেছে কাঁচা মরিচের দাম। ৬০ টাকা কেজি দরের মরিচ খুচরা বাজারে বর্তমান বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি দরে। পাইকারি বাজারে তা বেচাবিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা।
কাঁচামরিচ কিনতে আসা আব্দুল আজিজ বলেন, বর্তমান সবধরনের সবজির দাম একটু চড়া আছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম একেবারে কম। ৩৫ টাকা কেজি দরে এক কেজি মরিচ কিনলাম। গত এক সপ্তাহ আগেও ৬০ টাকা কেজি দরে মরিচ কিনেছিলাম।
পাঁচবিবি ও বিরামপুর হাট থেকে কাঁচা মরিচ পাইকারি দরে কিনে আনছেন হিলির ব্যবসায়ীরা। হিলি বাজারের কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের দাম কমছে। আমরা ৩৫ টাকা কেজি হিসেবে মরিচ খুচরা বিক্রি করছি। এই মরিচ পাঁচবিবি আর বিরামপুর থেকে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারি কিনে আনছি।
মরিচ চাষি আকরাম হোসেন বলেন, এবার শীতে আমার মরিচের ক্ষেতের কোনো ক্ষতি হয়নি। ১৫ কাঠা জমিতে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আগে ৬০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি করেছিলাম। বর্তমান বাজারে মরিচের আমদানি বেশি তাই দামও কমে গেছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
শীতের সবজি সংগ্রহের নিয়ম
শীতকালে যেসব সবজি পাওয়া যায়, সেগুলোই শীতের সবজি। শীতের শুরুতে বা শীত শুরুর মাস খানেক আগে যেসব উৎপাদিত সবজি সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হয়, সেগুলোকে শীতের আগাম সবজি বলা হয়। এ সময়ে বাজারে শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, টমেটো, লাউ, মুলা, কুমড়া, মিষ্টিকুমড়া পাওয়া যায়।
ধরনভেদে বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলে এসব সবজি সংগ্রহ করতে হয়। আসুন জেনে নিই শীতের সবজি সংগ্রহের নিয়ম-
ঢ্যাঁড়শ
কোমল ও কচি অবস্থায় এর ফল তুলতে হবে। তা না হলে ফল শক্ত ও খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফল বের হওয়ার ৩-৫ দিন পর ঢ্যাঁড়শ খাওয়ার উপযোগী হয়। ফল তোলা না হলে কাণ্ডের বৃদ্ধি কমে যায় এবং ফলন কম হয়।
ধুন্দল
বীজ বোনার দেড় থেকে দুই মাস পর থেকে ধুন্দল ফল ধরা শুরু হয়। এটি দুই-তিন মাস পর্যন্ত চলতে থাকে। গাছে ফল ধরার ৮-১০ দিন পরই সংগ্রহের উপযোগী হয়। ফল কচি অবস্থায় সংগ্রহ করা উচিত। এতে পুষ্টিমান বজায় থাকে। বেশি পরিপক্ব ফলের স্বাদ ও পুষ্টিমান দুটিই কমে যায়।
বরবটি
শুঁটি পরিপূর্ণ লম্বা ও মোটা হলে এবং বীজের অংশ সামান্য স্ফীত হতে শুরু করলে বরবটি তোলা যাবে।
লাউ
ফলের ত্বকের লোমশ ভাগ পরিপক্বতার সাথে সাথে কমতে থাকে। ফলের লোমশ ঘনত্ব দেখেও এর সংগ্রহ উপযোগিতা নির্ণয় করা যায় এবং সংগ্রহ করতে হয়।
বীজ বপনের ২০-২৫ দিন পর থেকে সংগ্রহ করা যায়। শাকের জন্য ঘন করে লাগালে ফসল ২০ দিন পর এবং মুলার জন্য ৪০ দিন পর থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত সংগ্রহ করা যাবে।
শিম
ফুল ফোঁটার ২০-২৫ দিন পর সংগ্রহ করা যায়। শুঁটি পরিপূর্ণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে বীজের অংশ কিছুটা স্ফীত হওয়ার পর পরই সংগ্রহ করতে হবে। অতিরিক্ত পরিপক্ব শুঁটিতে আঁশ জন্মালে কোমলতা ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এগ্রিবিজনেস
ঘন কুয়াশায় বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধানের বীজতলা ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারা বিবর্ণ হয়ে হলুদ ও লালচে রং ধারণ করছে। কৃষকরা চারা রক্ষায় কোথাও বীজতলায় ছাই ছিটিয়ে, কোথাও ওষুধ ছিটিয়ে, কোথাও রাতে বোরো বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে চারা রক্ষার চেষ্টা করছেন। জমিতে চারা রোপণের আগেই শীত ও কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
এছাড়া কিছু বীজতলায় চারা বের হয়নি। কোনো বীজতলায় আবার চারা মারা যাচ্ছে। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চাষির কপালে।
যশোর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, গত রোববার যশোরে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার ও শুক্রবার ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেখা মেলেনি সূর্যের।
এদিকে, বোরো ধানের বীজতলা সবেমাত্র বড় হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে শীত ও কুয়াশার কারণে নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের কুয়াশার কারণে ধানের চারা হলুদ হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় তারা রাতের বেলায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখছেন। শীত ও ঘন কুয়াশা যদি আরও বাড়তে থাকে তাহলে বীজতলা কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, শীত ও কুয়াশা তীব্র হলে অর্থাৎ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে ধানের চারা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে যশোরে এই মুহূর্তে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির উপরে আছে।
তিনি বলেন, যশোরে এই মুহূর্তে ৭৫ হেক্টর জমিতে প্লেটে করে বিশেষ প্রযুক্তিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এসব বীজতলা ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নেই। সাধারণ পদ্ধতিতে যে বীজতলা করা হয়েছে সেগুলোকে রক্ষা করতে দিনের বেলায় ক্ষেত থেকে পানি সরিয়ে রাতে সেচ দেওয়াসহ সূর্য না উঠা পর্যন্ত পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে যশোর জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর। এর মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার উফশী জাতের এবং হাইব্রিড জাতের ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর। এরই মধ্যে কৃষক ৮ হাজার ৭৩ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করেছে।
এদিকে, বগুড়ার বেশির ভাগ উপজেলাতেই বীজতলার ক্ষতি হওয়ায় বোরো চাষের আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রতিকূল আবহাওয়া সহনশীল শুকনা বীজতলা তৈরি করেছেন বহু কৃষক। নানা সুবিধার কারণে শুকনা বীজতলা করতে কৃষক আগ্রহ বাড়ছে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বীজতলা তৈরি হয়েছে ৯ হাজার ৬৭১ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে আড়াই হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিনে বগুড়ায় সারিয়াকান্দি, গাবতলী, সোনাতলা, শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ মাঠের বীজতলাই বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে। কোথাও হলুদ, কোথাও কালচে এবং লাল বর্ণ ধারণ করেছে চারা।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় সূর্যের দেখা মিলছে না। দিন-রাত থাকছে কুয়াশা। তাই এই উপজেলার বেশির ভাগ ধান চাষির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন জানান, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রা বীজতলার জন্য ক্ষতিকর। আমরা কৃষকদের বীজতলা পলিথিনে ঢেকে দেওয়া, পানিতে ডুবিয়ে রাখা, সালফারযুক্ত ওষুধ ছিটানো, জিপসাম ও ইউরিয়া সার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি।
এদিকে, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় শুকনা বীজতলা করতে প্রতিবছর কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এবারের মৌসুমে উপজেলায় মোট এক হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে নানা জাতের বোরো ধানের বীজতলা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত হেক্টর জমিতে শুকনা বীজতলা করা হয়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, শুকনা বীজতলায় বীজ ধান মাটিতে ফেলার পর থেকে জমিতে লাগানোর আগে চারা তোলা অবধি পুরো বীজতলা পলিথিনে ঢেকে রাখতে হয়। শুকনা বীজতলায় বীজ ধান থেকে খুবই ভালো হারে চারা বের হয়ে থাকে। এ ছাড়া ঘন কুয়াশা ও শীতজনিত রোগ থেকে বীজতলার চারা পুরোপুরি রক্ষা পায়।
গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকের বীজতলাগুলোর বিবর্ণ চিত্র। কৃষকদের স্বপ্নের এই চারা বাঁচাতে নানাভাবে চেষ্টা করছেন তারা।
গত ১০ দিন ধরে গাইবান্ধা জেলাজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কৃষিমাঠে বোরো বীজতলার চারা সবুজ থেকে ক্রমশ হলদে রঙসহ শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে এসব বীজতলা রক্ষায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়ছেন কৃষক।
জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত গাইবান্ধা জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষি ফসলের ওপর নির্ভশীল। এসবের মধ্যে তাদের প্রধান ফসল ইরি-বোরো ধান। এ দিয়ে জীবিকা নির্বাহের স্বপ্ন দেখেন তারা। এবারও তা ব্যর্তয় ঘটেনি। চলতি মৌসুমে ১ লাখ ২৮ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হেক্টর জমিতে সমলয় চাষাবাদ করা হবে।
এসব জমির চারা চাহিদা পূরণে বীজতলা করা হয়েছে ৬ হাজার ৫৬৫ হেক্টর। কৃষকের স্বপ্নের এই বীজতলা থেকে ইতোমেধ্য গঁজিয়ে উঠছে ধানগাছ। এসব চারা উঠিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়ার কথা।
স্থায়ী শৈত্যপ্রবাহের কারণে কৃষকের অন্যান্য ফসল ক্ষেতসহ বোরো বীজতলায় নানা রোগবালাই দেখা দিয়েছে। টানা কুয়াশার দাপটে চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগের দিকে যাচ্ছে বলে জানান তারা।
রাঙ্গা মিয়া নামের এক কৃষক জানান, দেড় একর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে বীজ বপণ করেছেন। এসব বীজ গজিয়ে ওঠার পর ভালোমানের চারা উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এরই মধ্যে প্রচন্ড শীতের কুয়াশায় বীজতলায় সবুজ রঙ থেকে হদলদে রঙে পরিণত হচ্ছে। সেই সাথে গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কৃষি বিভাগের লোকজনকে জানানো হলেও কেউ পরামর্শ দিতে আসেনি। ওইসব বীজতলা নষ্ট হলে কীভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে সেই চিন্তায় ভুগছে এই কৃষক।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, শীতের কুয়াশার সময় বীজতলায় পানি ধরে রাখাসহ পলিথিনের ছাউনি দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হবে। আর বীজতলার পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দেওয়া আবশ্যক। সেই সাথে দৈনন্দিন সকালে রশি টেনে চারা থেকে কুয়াশার শিশির ঝরে ফেলা জরুরি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ইতোমধ্যে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর অর্জন হয়েছে। সেই সাথে শৈত্যপ্রবাহে যেন বীজতলা নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় কৃষকদের সঙ্গে। তেরাইল গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সূর্যের আলো না পাওয়ার কারণে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তেরাই গ্রামের আরেক ধানচাষি আজগর আলি বলেন, চারাগুলো সামান্য বড় হয়েছিল। এরই মধ্যে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ঘন কুয়াশা কেটে না গেলে চারার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। তখন চারা কিনে জমিতে লাগাতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
চাষি মো. মজনুল হক বলেন, ‘এক কাঠা ধানের বীজতলা তৈরি করতে ২ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়। যে কুয়াশা আর শীত পড়ছে তাতে চারা নষ্ট হয়ে গেলে চারার দাম অনেক বেড়ে যাবে। কৃষি অফিসের পরামর্শ পেলে আমরা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব।’
বামন্দী মাঠের মো. সোজা আলী বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে করছি তারপরও যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে চারা কিনে ধান লাগাতে গেলে খরচ আরও বেড়ে যাবে। এমনিতেই সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ঘন কুয়াশার কারণে সরিষা ও গমের ক্ষতি হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় বোরোর বীজতলা ৪ শ ৭ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উফশী ৩ শ ৫৭ হেক্টর আর হাইব্রিড ৫০ হেক্টর। বোরোর বীজ জমিতে লাগানো হলে মোট রবি ফসল হবে ২৭ হাজার ১ শ ১৪ হেক্টর। অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে কিছু বীজতলার চারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, শৈত্যপ্রবাহের সময় স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। চারার মাথায় জমে থাকা শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে। তাহলে বোরোর চারায় কোনো ক্ষতি হবে না। সরিষার কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি হবে না।
অর্থসংবাদ/এমআই