জাতীয়
রাজউকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দে নতুন বিধিমালা
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভূমি, প্লট, স্পেস ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে নতুন বিধিমালা জারি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গত ২৫ এপ্রিল ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ভূমি, প্লট, স্পেস ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ) বিধিমালা, ২০২৪’ জারি করা হয়।
বিধিমালায় রাজউকের ভূমি বা আবাসিক প্লট, বাণিজ্যিক প্লট, বাণিজ্যিক স্পেস, শিল্প প্লট, প্রাতিষ্ঠানিক প্লট বা ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ল্যান্ড অ্যালোটমেন্ট) রুলস, ১৯৬৯’ ছিল। যেটি বাতিল করে নতুন বিধিমালা জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রাজউক পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা বা উন্নয়নের জন্য নির্ধারিত কোনো প্রকল্পের ভূমি বা কোনো আবাসন প্রকল্পের অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানে চিহ্নিত ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে। প্লট বরাদ্দ দিতে জনসাধারণের কাছে আবেদন আহ্বান করে কমপক্ষে দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।
ভূমি বা আবাসিক প্লটের বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক এবং বয়স কমপক্ষে ২৫ বছর হতে হবে।
কোনো ব্যক্তি ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ পাওয়ার আবেদন করার অযোগ্য হবে না, যদি তিনি নিজ নামে বা তার স্ত্রী বা স্বামীর নামে ইতোপূর্বে কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে কোনো আবেদন দাখিল করলে আবেদন বাতিল করতে হবে এবং তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ভূমি বা আবাসিক প্লট অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করার পর যদি প্রমাণিত হয় যে, বরাদ্দ গ্রহীতা মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে প্লটের বরাদ্দ নিয়েছেন, তবে ওই বরাদ্দ ও হস্তান্তর বাতিল করতে হবে। এক্ষেত্রে মূল বরাদ্দ গ্রহীতা হস্তান্তর গ্রহীতাকে দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দিবে।
প্লটের ধরন ও আকারভেদে ভূমি বা আবাসিক প্লটের সংখ্যা যোগ্য আবেদনকারীর তুলনায় কম হলে উন্মুক্ত লটারি ও তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রকাশের মাধ্যমে বরাদ্দ দিতে হবে।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি, সংসদ-সদস্য, বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী, সরকারি কর্মচারি, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী (নিবাসী), সাংবাদিক, স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বেসরকারি চাকরিজীবী ও শিক্ষক, শিল্পী, সাহিত্যিক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, আইনজীবী, আইন ও আইনগত দলিলাদি নিরীক্ষা কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী, কৃষিবিদ, প্রকৌশলী, স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ, চিকিৎসক, মূল অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আবাসিক প্লট সংরক্ষণ করা যাবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের আওতাধীন যে কোনো প্রকল্পের আবাসিক প্লটে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের জন্য ২ শতাংশ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার কর্মচারীদের জন্য ২ শতাংশ এবং কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা যাবে।
বিধিমালা অনুযায়ী, রাজউক জনস্বার্থে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে আবাসিক প্লট বরাদ্দ দিতে পারবে- মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী বা সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি; সংসদ-সদস্য; বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ পরিবারের সরাসরি সদস্য এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে বা কর্তৃপক্ষের আইন প্রণয়নবিষয়ক কাজে উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রেখেছেন এমন সরকারি কর্মচারী বা এমন কোনো পেশাজীবী যিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত না থেকেও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনসেবা বা জনকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বা করেছেন বা এমন কোনো ব্যক্তি যিনি জনগণ বা রাষ্ট্রের কল্যাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন বা নিবেদিত প্রাণ কোনো সমাজকর্মী বা সমাজসেবক।
কোনো বরাদ্দ গ্রহীতা সাময়িক বরাদ্দ প্রাপ্তির পর যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রথম কিস্তির অর্থ যথাসময়ে পরিশোধ না করলে আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দিয়ে বরাদ্দপত্র বাতিল করা যাবে।
ভূমি বা আবাসিক প্লট বরাদ্দ গ্রহীতাকে আবশ্যিকভাবে ইজারা দলিল রেজিস্ট্রেশন করার পর ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে সর্বোচ্চ চার বছরের মধ্যে বসবাস উপযোগী করে বাড়ি নির্মাণ করতে হবে। কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে ব্যর্থ গহলে প্রতি বছর প্রতি কাঠার জন্য ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।
বাণিজ্যিক প্লট বা বাণিজ্যিক স্পেস, শিল্প প্লট, প্রাতিষ্ঠানিক প্লট, বরাদের আবেদন, বরাদ্দের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে বিধিমালায়।
ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, রাজউক কোনো আবাসিক প্রকল্পে অধিক সংখ্যক জনগণের আবাসন ব্যবস্থা করার জন্য উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যম ও স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য এক বা একাধিক এলাকা বা ব্লক আকারে ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করতে পারবে।
কর্তৃপক্ষের আওতাধীন যে কোনো প্রকল্পে নির্মিত ফ্ল্যাটের মোট সংখ্যার ১০ শতাংশ সরকারি কর্মচারীদের জন্য, ৩ শতাংশ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের মাধ্যমে বরাদ্দের জন্য, ৩ শতাংশ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বরাদ্দের জন্য এবং ২ শতাংশ কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ মূল্য কিস্তিতে পরিশোধের পর অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ মূল্য কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে পরবর্তী ১৫ বছরের কিস্তিতে বা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে পারবে। কর্তৃপক্ষ আবাসিক ফ্ল্যাটের মূল্য নির্ধারণের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন করতে পারবে।
রাজউক নিম্ন-আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় চিহ্নিত এলাকায় বা কর্তৃপক্ষের কোনো আবাসন প্রকল্পের অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানে চিহ্নিত স্থানে ভবন নির্মাণ করে সাশ্রয়ী ভাড়া বা মূল্য পরিশোধের ভিত্তিতে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিতে পারবে বলে বিধিমালায় জানানো হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
আইজিপির বাসভবনে প্রবেশে ‘নিষেধাজ্ঞা’
বর্তমান আইজিপি দায়িত্ব নেওয়ার পর বদলি-পদোন্নতি তদবিরের জন্য তার বাসভবনে অনুমতি ছাড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তার বাসভবনে যাওয়ার আগে অনুমতি গ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইজিপির বাসায় প্রায় সময় পুলিশ সদস্যদের ভিড় থাকত। পুলিশ সদস্যরা তাদের বিভিন্ন দাবি কিংবা তদবির নিয়ে যেতেন আইজিপির বাসায়। এক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতো। বর্তমানে সেই সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনুমতি ছাড়া এখন কেউ আইজিপির বাসভবনে যেতে পারবেন না।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মিয়া মাসুদ করিম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আদেশে বলা হয়, পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সাক্ষাতের জন্য বাসভবনে যেতে হলে পূর্বানুমতি প্রয়োজন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
আদেশের কপিটি পাঠানো হয়েছে- পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন), র্যাব মহাপরিচালক, সিআইডি প্রধান, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর, রেলওয়ে পুলিশের প্রধান, হাইওয়ে পুলিশের প্রধান, আর্মড পুলিশের প্রধান, সারদা পুলিশ একাডেমি, নৌ পুলিশের প্রধান, ডিএমপি কমিশনার, ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান, এসবি প্রধান, শিল্পাঞ্চল পুলিশ প্রধান, পিবিআই প্রধান, এটিইউ প্রধান, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল।
এছাড়াও সকল রেঞ্জ ডিআইজি, সকল মেট্রোপলিটন কমিশনার, সকল অতিরিক্ত ডিআইজি, সকল জেলা পুলিশ সুপারদেরকে আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে।
গত ২০ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে আইজিপি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বাহারুল আলমকে।
বাহারুল আলম ২০০৭-০৮ সালে এসবি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। পরে পুলিশ সদরদপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সদরদপ্তরের শান্তিরক্ষা বিভাগে পুলিশ লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সিনিয়র পুলিশ অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেন। এর আগে ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, কসোভো ও সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
দুই দফা পদোন্নতিবঞ্চিত বাহারুল আলম ২০২০ সালে অবসরে যান। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়।
এদিকে সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্ট আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আত্মগোপনে চলে যান। পরদিন মধ্যরাতে নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পান মো. ময়নুল ইসলাম।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সরকার গৃহীত কার্যক্রমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের টেকসই উন্নয়নের ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব যুক্ত করার চিন্তা করছে সরকার।
সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে এই তত্ত্বের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে বলে মনে করছেন সরকারের নীতি-নির্ধারকরা।
‘থ্রি-জিরো তত্ত্ব’ আর্থিক স্বাধীনতা, কর্মঠ জনশক্তি তৈরি এবং পরিবেশ উন্নয়নে বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকর একটি মডেল। এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। সেগুলো হচ্ছে- জিরো দারিদ্র্য, জিরো বেকারত্ব ও জিরো নেট কার্বন নিঃসরণ। আর তা অর্জনে প্রয়োজন তারুণ্য, প্রযুক্তি, সুশাসন ও সামাজিক ব্যবসা।
গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বজুড়ে আলাদা সম্মান পেয়েছেন তার এই থ্রি জিরো তত্ত্বের জন্য।
এসডিজির লক্ষ্যগুলোর মূল পরিকল্পনায় রয়েছে- সবার জন্য কল্যাণকর পৃথিবী এবং টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণ।
থ্রি জিরো তত্ত্বের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ বলেন, ‘আমরা এজডিজির সঙ্গে থ্রি জিরো তত্ত্ব যুক্ত করার চেষ্টা করছি। এসডিজির ওপর সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে আমাদের একটি কর্মশালা চলছে, সেখানে এই তত্ত্বের বিষয়ে আলোচনা করছি। আমরা চাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে সব পর্যায়ে থ্রি জিরো তত্ত্বের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি হোক।’
তিনি উল্লেখ করেন, এসডিজির লক্ষ্য পূরণের কার্যক্রমের মধ্যে থ্রি জিরো তত্ত্ব রাখা হয়েছে, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কারোর ওপর এই তত্ত্বের প্রয়োগ চাপিয়ে দিতে চান না। আমাদের উদ্দেশ্য হলো- যার ভালো লাগবে তিনি এটি গ্রহণ করবেন এবং কাজে লাগাবেন। এ কারণে এসডিজির বাইরে সরকারের কোনো বড় পর্যায়ে থ্রি জিরো তত্ত্ব নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
থ্রি জিরো তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো- দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা। এই তত্ত্বের ব্যাপারে অধ্যাপক ইউনূসের ভাষ্য, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিজেই দারিদ্র্য সৃষ্টি করে এবং এই ব্যবস্থার অধীনে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব নয়। মানুষ এককভাবে দারিদ্র্যতা তৈরি করে না, আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোর ভেতরেই তৈরি হয় দারিদ্র্য।’
তার মতে, ভালো চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা তৈরিতে জোর দিতে হবে। তিনি বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমরা জন্মেছি সমস্যা সমাধানের জন্য, কারো অধীনে চাকরি করার জন্য নয়। তাই তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে হবে। কারো অধীনে নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই।’
সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে বাসযোগ্য নিরাপদ পৃথিবী ও নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বকে বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি সম্মেলনে নিজের ভাষণে এই তত্ত্ব উপস্থাপন করে বলেছেন, এটি এক নতুন সভ্যতার জন্ম দেবে। গড়ে তুলবে এক নতুন পৃথিবী, যা সবার জন্য বাসযোগ্য হবে।
তিনি এও বলেছেন, এই তত্ত্ব প্রয়োগ করে জীবনশৈলী পাল্টানো সম্ভব। পরিবেশের নিরাপত্তার জন্যই দরকার এই নতুন জীবনধারা বা ‘লাইফস্টাইল’। সেই যাপন চাপিয়ে দেওয়া হবে না। তা পছন্দ করতে হবে। যুব সম্প্রদায় তা আনন্দের সঙ্গে ভালবেসে গ্রহণ করবে। এভাবে যুবসমাজের প্রত্যেকে নিজেদের ‘থ্রি জিরো পারসন’ হিসেবে গড়ে তুলবে।
‘থ্রি জিরো পারসন’ কেমন, তার ব্যাখ্যায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সেই ব্যক্তি কার্বন নিঃসরণ করবে না। অর্থাৎ সে হবে ‘জিরো কার্বন’। সে সম্পদের একক মজুতদার হবে না। তার সম্পদ হবে সামাজিক ব্যবসাভিত্তিক। অর্থাৎ সে হবে ‘জিরো দরিদ্র’ এবং এভাবেই তারা প্রত্যেকে উদ্যোগী হয়ে পূরণ করবে ‘জিরো বেকারত্বের’ তৃতীয় শর্ত। অর্থাৎ মুহাম্মদ ইউনূসের মতে, দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামাতে পারলে দুশ্চিন্তামুক্ত ও বাসযোগ্য এক নতুন পৃথিবী গড়ে উঠবে।
থ্রি জিরো পারসন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে থ্রি জিরো ক্লাব বিশেষ ভূমিকা পালন করে বলে উল্লেখ করেন কর্মজীবনে অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের সহকর্মী লামিয়া মোরশেদ। তিনি মনে করেন এই ক্লাবের সদস্যরা থ্রি জিরো তত্ত্ব সম্পর্কে সচেতন হন এবং একসময় নিজেরা থ্রি জিরো পারসন হিসেবে গড়ে ওঠেন।
ইউনূস সেন্টারের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা লামিয়া মোরশেদ বলেন, সারা পৃথিবীজুড়ে বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার ৬০০টি থ্রি জিরো ক্লাব রয়েছে, যার প্রতিটি অধ্যাপক ইউনূসের নতুন সভ্যতার স্বপ্নে অনুপ্রাণিত। এসব ক্লাবের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গড়ে উঠেছে।
বিশ্বের অসংখ্য বিভিন্ন নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্রি জিরো ক্লাব গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে এই ক্লাব সমানভাবে গড়ে উঠেনি। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী বা অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে এই থ্রি জিরো ক্লাব তৈরির আগ্রহ দেখানোটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অধ্যাপক ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্বের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করতে হয়েছে।
এ বিষয়ে লামিয়া মোরশেদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশে থ্রি জিরো ক্লাব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল, এখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ায় দিন দিন এর পরিসর বাড়ছে। এখন অনেকে এগিয়ে আসছেন। বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ইদানীং থ্রি জিরো তত্ত্ব নিয়ে কর্মশালা অনেক বেড়ে গেছে। এটা কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ নয়, এটা যে যার অবস্থান থেকে নিজ উদ্যোগে করছেন। শুধু নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তারা জানিয়ে দেন যে আমরা এটা করছি।’
তিনি জানান, থ্রি জিরো ক্লাব ইচ্ছে করলেই কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় দেখা হয়। তারা যে কাজগুলো করছে সেগুলো গুরুত্ব সহকারে করছে কি-না এবং সেটি টেকসই কি-না, এসব দেখার পরেই রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়।
টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রবক্তা অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে লামিয়া মোরশেদ বলেন, ‘ স্যার সবসময় বলেন আমাদের সমাজে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো আমরা নিজেরাই সৃষ্টি করেছি। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য তরুণরা উপযুক্ত ব্যক্তি, কারণ তাদের মাথায় অনেক নতুন নতুন আইডিয়া আছে, তারা সেটা কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান করে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে। এজন্য ১২ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যারা রয়েছেন, তাদেরকে তিনি বলেন তোমরা থ্রি জিরো ক্লাব করতে পারো।’ ৪ থেকে ৫ জন মিলে এই ক্লাব করা যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
লামিয়া মোরশেদ মনে করেন নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্বকে প্রকৃতপক্ষে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, মাইক্রোক্রেডিট ও মাইক্রো ফাইন্যান্সের পর ড. ইউনূসের নবীন প্রোগ্রাম হলো সামাজিক ব্যবসা। এই ধারণার মূল বিষয় হলো একজন তার নিজের চাকরির ব্যবস্থা করবে পাশাপাশি অন্যদের চাকরির সুযোগ করে দেবে। অর্থাৎ আমি একটি ঋণ নিয়ে একটি কাজ শুরু করলাম যেখানে আরও তিন-পাঁচজন লোক কাজ করবে তাদের কর্মসংস্থান হবে। এই ব্যবসা থেকে যে মুনাফা আসবে তা জনকল্যাণে ব্যয় হবে।
মুনাফার অর্থ স্বাস্থ্য, শিক্ষা কিংবা পরিবেশের উন্নয়নে ব্যয় হতে পারে। এভাবে আমরা টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক ইউনূস সবসময় দারিদ্র বিমোচন, উদ্যোক্তা তৈরি ও পরিবেশ দূষণ কমানোর ওপর জোর দেন উল্লেখ করে লামিয়া মোরশেদ বলেন, ‘ড. ইউনূস সবসময় বলেন যদি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকে তাহলে আমরা সামনে এগিয়ে যাবো কীভাবে। তাই প্রতিটি কাজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে। তার যে উন্নয়ন তত্ত্ব তা কেবল বাংলাদেশকে ঘিরে নিয়ে নয়, সেটি সারা বিশ্বের কল্যাণ এবং ভবিষ্যতকে কেন্দ্র করে।’
এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের সামাজিক ব্যবসার মূল থিম হচ্ছে-এখান থেকে আমি কোন লাভ করব না তবে আমার মূল টাকা ফেরত আসতে হবে। যাতে করে ওই অর্থ আবার অন্য আরেকটি সামাজিক কার্যক্রমে ব্যবহার করা যায়। মুহাম্মদ ইউনূস আগে থেকেই বলতেন মাইক্রোক্রেডিটের সঙ্গে সামাজিক কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। সামাজিক কার্যক্রম মনকে অনেক তৃপ্তি দেয়, কারণ এতে মানুষ অনেক উপকৃত হয়।
তিনি জানান, বিশ্বের ৩৯টি দেশের ১১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার রয়েছে। যেখানে মাইক্রোক্রেডিটের বিজনেস গুলো শিখানো হয়। তাদের আগ্রহে থ্রি জিরো ক্লাব তৈরি হচ্ছে। এ ক্লাবের মূল লক্ষ্য হলো শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নিঃসরণ অর্জন করা।
লামিয়া মোরশেদ জানান, আগামী জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য যুব সম্মেলনে (ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল) থ্রি জিরো বিষয়টা রাখা হবে। খেলাধুলা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিনোদনের অংশ হিসেবে কাজ করে, এটাকে কীভাবে সামাজিক কার্যক্রমের অংশ বানানো যায়, সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। একটা টুর্নামেন্টে অনেক মানুষ অংশগ্রহণ করে, সেখানে যদি আমরা একটি থিম দেয় যে আমরা জিরো ওয়েস্ট এর দিকে এগিয়ে যাবো, আমরা প্লাস্টিক ব্যবহার করব না, আমরা রাস্তায় ময়লা ফেলবো না। এই বিষয়ে যদি আমরা সচেতনতা তৈরি করতে পারি তাহলে সমাজে অনেক বড় পরিবর্তন আসবে।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মেসির মতো খেলোয়াড় যদি বলেন যে আমরা জিরো ওয়েস্ট করব তাহলে এই বার্তাটি পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। থ্রি জিরো তত্ত্বের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে আমরা এ ধরনের কিছু কাজ করার চেষ্টা করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্ব পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন কমনওয়েলথ সচিবালয়ের আন্তর্জাতিক ট্রেড বিভাগের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা সংস্থা র্যাপিড এর চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের সব সূচকে অভীষ্ট অর্জনের ক্ষেত্রে ‘থ্রি জিরো থিওরি’ অনুঘটন হিসেবে কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি মনে করেন থ্রি জিরো তত্ত্বের ধারণা বাংলাদেশে তরুণদের ক্ষমতায়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে কৃষিসহ অন্যান্য খাতে একটি নতুন বিপ্লব ঘটানোর সম্ভাবনা রাখে। আমাদের দেশে উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে না, অথচ উদ্যোক্তা বিকাশ ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন কোনোভাবে সম্ভব নয়।
ড. রাজ্জাক বলেন, থ্রি জিরো তত্ত্ব কাজে লাগানো গেলে দেশে সর্বস্তরে উদ্যোক্তা গড়ে উঠবে এবং অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন অর্জন করা যাবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
নেতৃত্বের পরিবর্তনেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে জাপান
রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে জাপান কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার অগ্রগতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকার জাপান দূতাবাস। এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, জাপান বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। গত আগস্টে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আসার পর আমি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উন্নয়নে কী প্রয়োজন এগুলো নিয়ে আলাপ হয়েছে। জাপান বাংলাদেশের প্রয়োজন জানতে পারলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাবে। জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়।
কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি) থেকে জাপানি সৈনিকদের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করেছে জাপানের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জাপানি সৈনিককে ওয়ার সিমেট্রিতে ৮১ বছর আগে সমাহিত করা হয়। ২৪টি সমাধির মধ্যে ২৩টিতেই সৈনিকদের দেহাবশেষের বিভিন্ন অংশ পাওয়া গেছে। এগুলো ঢাকায় আনা হয়েছে। ২৩ সৈনিকের দেহাবশেষের পাওয়ার পর কিছু অংশ জাপানে ডিএনএ টেস্ট করার জন্য নিয়ে যাবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল। ডিএনএ টেস্টে জাপানি সৈন্য নিশ্চিত হওয়া গেলে পরবর্তীতে তাদের দেহাবশেষ জাপানে নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয় গত ১৩ নভেম্বর। খনন কাজ ২৪ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দিন আগে এ কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ডেঙ্গুতে একদিনে বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আরও ১১ জন মারা গেছেন। যা চলতি বছর একদিনে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যু। এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০৭৯ জন।
আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে ৯ জনই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা। এর মধ্যে পাঁচজন উত্তর সিটির, চারজন দক্ষিণ সিটির। বাকি দুজন খুলনা বিভাগের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১০৭৯ জন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৯৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ২৭২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৯৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১২১ জন, খুলনা বিভাগে ১৪৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫ জন, রংপুর বিভাগে ১৭ জন এবং সিলেট বিভাগে ৯ জন ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত একদিনে সারা দেশে ১২৩০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮২ হাজার ৬১২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৮৬ হাজার ৭৯১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৫৯ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন, মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
দিল্লির প্রেস মিনিস্টার হলেন সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদ
সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদকে ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস মিনিস্টার পদে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ফয়সাল আহমেদকে অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস উইংয়ের মিনিস্টার (প্রেস) পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হলো।
এই নিয়োগের অন্য শর্ত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
এর আগে, সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস উইংয়ে মিনিস্টার (প্রেস) পদে সচিব পদমর্যাদায় নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এ ছাড়া সাংবাদিক আকবর হোসেন মজুমদারকে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এসএম