পুঁজিবাজার
ডেরিভেটিভ পণ্য ঝুঁকি হ্রাসের কার্যকর হাতিয়ার: ডিএসই এমডি
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেছেন, আর্থিক খাতের ডেরিভেটিস পণ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই সময়োপযোগী। ডেরিভেটিভ পণ্যগুলো অত্যন্ত পরিশীলিত পণ্য এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার যা পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা প্রদান করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, ডিএসই তার পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ আনতে আগ্রহী। আমরা নিয়ম ও বিধি প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি এবং খুব শিগগিরেই ডেরিভেটিভ মার্কেট শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি।
গাজীপুরের ব্র্যাক সিডিএমে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্লাটফর্ম’ শীর্ষক কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ডিএসই কর্তৃক আয়োজিত বিএসইসি, সিডিবিএল, সিসিবিএল, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং এ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের অংশগ্রহণে গত ২ ও ৩ মে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।
ডিএসইর এমডি ড. তারেক বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত স্টক এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন ধরনের ডেরিভেটিভস পণ্য রয়েছে। ডেরিভেটিভ মার্কেটের আকার ইক্যুইটি বাজারের তুলনায় বহুগুণ বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য পণ্যের বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে তার পার্শ্ববতী এক্সচেঞ্জের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য কাজ করছে। এছাড়া আরো কিছু আইন, টেকনিক্যাল এবং অবকাঠামো বিষয়সহ বেশ কিছু কাজ করতে হবে। তবে এর বাইরেও আরো গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় ট্রেনিং এবং আলোচনা যা আমরা করছি। এর মাধ্যমে এই পণ্য সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো। এই ধরনের ট্রেনিং প্রোগ্রাম অব্যাহত থাকবে যাতে করে আমরা ডেরিভেটিবস পণ্য খুব দ্রুত বাজারে চালু করতে পারি।
কর্মশালার উদ্দেশ্য নিয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন আমাদের এই মার্কেট খুবই ছোট ছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক অনেক বড় মার্কেট দেখার সুযোগ হয় তার তুলনায় এই মার্কেট কিছুই ছিল না। তখন ভাবতাম এবং আশা করতাম যে আমাদের পুঁজিবাজার বড় হবে। কিন্তু এখনও বড় হয়নি। বাজার এখনো শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। মার্কেট এই অবস্থা হওয়ার কারণ হচ্ছে, আমাদের মার্কেটে পণ্য কম, ইক্যুইটি কেন্দ্রিক বাজার। এখানে বিনিয়োগের নতুন কোন ক্ষেত্র নেই এবং নতুন কোন পণ্য নেই। ফলে দেশে দেশী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে। এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মিলে ডেরিভেটিভস পণ্য চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এই পণ্য চালুকরণে টেকনিক্যাল ও অবকাঠামো তৈরিতে কাজ করবে।
কর্মশালার বিষয়বস্তুর ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া। মূল প্রবন্ধে তিনি ডেরিভেটিবসের প্রকারভেদ, ডেরিভেটিভ মার্কেটের তাৎপর্য ও প্রভাব, বিশ্বব্যাপী ডেরিভেটিভস মার্কেট বৃদ্ধির কারণ, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ডেরিভেটিভস-এর বৈশিষ্ট্য, ডেরিভেটিভস মার্কেটে সেটেলমেন্টের ধরণ, ফরোয়ার্ড এবং ফিউচারের মধ্যে পার্থক্য, ফরোয়ার্ড কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার ট্রেডিংএর বিভিন্ন টার্মিনলজি, ফিউচার কন্ট্রাক্টের স্পেসিফিকেশন, ফিউচার ও অপশনের মধ্যে পার্থক্য, অপশনস ট্রেডিং এর বিভিন্ন টার্মিনোলজি, অপশন ট্রেডিং এর সুবিধা, অপশনের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, অপশন কন্ট্রান্টের স্পেসিফিকেশন, অপশন ট্রেডিং এর কৌশল, ডেরিভেটিভস ব্যবহার, হেজিং ও এর প্রকারভেদ, মৌলিক ঝুঁকি, ক্রস হেজ ও এর সাথে যুক্ত ঝুঁকি, হেজিং এর সীমাবদ্ধতা, এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে ফিউচারস অ্যান্ড অপশনস ট্রেডিংয়ে জড়িত পক্ষসমূহ, ডেরিভেটিভস ট্রেডিং প্রক্রিয়া, ফিউচার ও অপশনের জন্য স্টক ও সূচক নির্বাচনের মানদন্ড, বিভিন্ন ধরনের কর্পোরেট অ্যাকশন ব্যবস্থাপনা, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, মার্জিন ম্যানেজমেন্ট, ইনিশিয়াল মার্জিন, মেইনটেনেন্স মার্জিন ও মার্জিন কল, মার্জিনের পেমেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট, সেটেলমেন্টের প্রক্রিয়া এবং সর্বোপরি এক্সচেঞ্জ ডেরিভেটিভস চালুকরনে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে আলোকপাত করেন।
নাসডাক মার্কেটপ্লেস টেকনোলজির হেড অব ট্রেডিং কার্ল স্লেজার প্রযুক্তি কীভাবে ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এবং ব্যবসায়িক সুবিধা নিয়ে আসে এবং ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এর বাজার ব্যবস্থা এবং অনুশীলন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম ফিউচারস ও অপশনস বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অপশনসের ট্রেডিং স্ট্রাটেজিং, রিটার্ণ বৃদ্ধির কৌশল, কভার্ড কল, ভ্যালু প্রটেকশন স্ট্রাটেজি, বুল, বিয়ার ও বাটারফ্লাই ট্রেড, লং ও সর্ট স্ট্রাংগেল, অপশন প্রাইসিং মেথডস, ব্লাক-সোলস মডেল, বায়নোমিয়াল ট্রি মডেল, কন্ট্রোল ভ্যারিয়েট টেকনিক, ফিউচার প্রাইসিং, ফিউচার কন্ট্রাকটস, প্রাইসিং ফরোয়ার্ড, স্টক ইনডেক্স, ইনডেক্স আরবিট্রেজ, প্রাইসিং ফরোয়ার্ড বনাম ফিউচারস, লং অ্যান্ড সর্ট পজিশনস, হেজিং প্রিন্সিপাল, শর্ট অ্যান্ড লং হেজ, পারফেক্ট হেজ, বেসিস অ্যান্ড বেসিস রিক্স, হেজ ফরোয়ার্ড বনাম ফিউচারস ও অপটিমাল হেজ রেশিও এর উপর আলোকপাত করেন।
কর্মশালার বিশেষ অতিথি ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে পণ্যের ভিন্নতা আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পিছিয়ে রয়েছে। ডিএসইর বর্তমানে যে এমডি রয়েছে তার নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের কাজ করার সুযোগ তৈরি করতে হবে। তিনি এর আগে বিএসইসিতে ছিলেন। এ বাজার সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা ও কাজের দক্ষতা আছে। তিনি এখানে কি সমস্যা আছে সেগুলো জানেন। সেক্ষেত্রে তার এই বিষয়গুলো কাজে লাগাতে পারলে আমরা একটি নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ দেখব।
তিনি বলেন, পণ্যে ভিন্নতা আনতে অনেক আগে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সেই জন্য এ বাজারে কোনো মেধাবী থাকে না। কারণ যারা আসে, তারা এখানে কাজ করার মত কোনো নতুন পণ্য পায় না। আমাদের বাজার মূলত ইকুইটি কেন্দ্রিক। আর বর্তমানে বাজারে মাত্র ৪০০ কোম্পানি আছে যেখানে বাংলাদেশে কোম্পানির সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি। আর ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা মাত্র ১৭ লাখ। তাই এ জিনিসগুলো বিএসইসি ও ডিএসইর লক্ষ্য করা উচিত আসলে সমস্যা কোথায় আছে। তাই বাজার ভালো করতে হলে পণ্যে ভিন্নতা আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মার্কেটে বন্ড নিয়ে অনেক আগ থেকে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টা এখনো ভালো করে কার্যকর হয়নি। আর এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ট্যাক্স ইস্যু। এ বিষয় নিয়ে আমরা বিএসইসি ও এনবিআর একসাথে বসে সমাধান করার কথা বলে আসছি। এছাড়া সিসিবিএলের পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। আর সিসিবিএল ছাড়া পণ্যে ভিন্নতা খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। বর্তমানে সিসিবিলের সিংহভাগ শেয়ার ডিএসইর কাছে। এছাড়া আরো শেয়ারহোল্ডাররা আছেন। তারা এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয় আছে পণ্যে ভিন্নতা আনতে সেগুলো নিয়ে কাজ করা দরকার।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটে পন্য কম থাকায় কেউ বিনিয়োগ করার সুযোগ পায় না। কেউ যখন শেয়ারে লাভ করে তখন বিক্রি করে টাকা নিয়ে যায়। কারণ তার কাছে বিনিয়োগের নতুন কোনো সুযোগ থাকে না। আজকে যদি নানা ধরনের পণ্য থাকত তাহলে শেয়ারে বিক্রি করে অন্য পণ্যে বিনিয়োগ করত। তাই বাজার ভালো রাখতে পণ্য ভিন্নতাল কোনো বিকল্প নেই। তাই এ নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএসইসির কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম তার বক্তব্যে বলেন, ডেরিভেটিবস নিয়ে আজকের ওয়ার্কশপই শেষ নয়। এটা নিয়ে আরো অনেক প্রোগ্রাম করতে হবে। বিশ্বের অনেকে দেশে এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে চালু আছে। তাই যারা এ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তারা প্রয়োজনে সে সব দেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে আসতে হবে। শুধুই ইক্যুইটি দিয়ে মার্কেট বড় হবে না। মার্কেট বড় করতে আরও বিভিন্ন ধরনের পণ্য দরকার। সিসিবিএলের কিছুটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইতোমধ্যে ডেরিভেটিবস নিয়ে কাজ শুরু করেছে এবং সিএসই কমোডেটিজ নিয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে বাজার এ অবস্থায় থাকবে না। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অনেক ভালো হবে। বাহির থেকে কেউ এসে বাজার ভালো করে দেবে না। এখানে যারা আছে তাঁদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে এখানে কি সমস্যা আছে, আর কি কাজ করা যায়। তাহলেই বাজার ভালো হবে। অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন হয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের রোল পরিবর্তন হওয়া উচিত। ২৫ সালের মধ্যে এই ডেরিভেটিস পণ্য চালু হবে বলে আমি আশাবাদী এরমধ্যে সিসিবিএলও তার কার্যক্রম শুরু করে দিবে৷
এ সময় ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নাফিজ আল তারিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস এর বেসিক ফিচার, প্রকারভেদ অধীন প্রোডাক্টসমূহ,ট্রেডিং প্রক্রিয়া, জড়িত পক্ষ সমূহ; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর বিনিয়োগকারী, ট্রেডিং-এ অংশগ্রহনকারী, ক্লিয়ারিং-এ অংশগ্রহনকারী, স্টক এক্সচেঞ্জ এর রেগুলেটর, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির ভূমিকা; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচারের ক্লিয়ারিং এন্ড সেটেলমেন্ট ফ্লো; ঝুঁকি সমূহ; ঝুঁকি ব্যাবস্থাপনা; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর মালয়েশিয়া ও ভারতের উদাহরণ এবং বাংলাদেশ এর জন্য যা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে ডিএসইর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহ বলেন, সময়ের পরিবর্তনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্ধিত ও পরিবর্তিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে পণ্য বৈচিত্রকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পণ্য বৈচিএময় করার জন্য এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ পোর্টফোলিও গঠনের জন্য এই মুহূর্তে ডেরিভেটিভস মার্কেটের বিকল্প নেই৷
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
৩২৫ কোটি টাকার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করবে রেনাটা
প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি রেনাটা পিএলসি। কোম্পানিটি এই শেয়ার ইস্যু করে বাজার থেকে ৩২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত রেনাটার পরিচালনা পর্ষদের ২৩১তম বৈঠকে প্রেফারেন্স ইস্যু করার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত প্রেফারেন্স শেয়ার হবে নন-পার্টিসিপেটিভ। অর্থাৎ এই শেয়ারের মালিকরা কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) অংশ নিতে পারবেন না, তাদের কোনো ভোটাধিকার থাকবে না। এই প্রেফারেন্স শেয়ার মেয়াদ শেষে সম্পূর্ণ অবসায়িত হতে পারে, আবার এটি সম্পূর্ণভাবে সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর করার সুযোগও থাকতে পারে। বিষয়টির এখতিয়ার থাকবে কোম্পানির উপর। প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ কোম্পানিটির বিদ্যমান ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা হবে।
প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর বিষয়ে শেযারহোল্ডারদের মতামত জানতে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) করবে রেনাটা। আগামী ১২ জানুয়ারি বেলা ১২টায় এই ইজিএম অনুষ্ঠিত হবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে এই ইজিএম অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ ডিসেম্বর।
আসন্ন ইজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি এবং পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পেলে বন্ড ইস্যু করার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
অলটেক্সের সম্পদ-ব্যবসার সত্যতা যাচাইয়ে বিএসইসির তদন্ত কমিটি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সম্পদ, ব্যবসা ও আর্থিক সক্ষমতাসহ সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিষয়ে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্যমকে।
তদন্তের বিষয়টি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হক, সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান ও মো. মাহমুদুল হাসান।
বিএসইসি থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সার্বিক বিষয় তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএসইসি। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন কোম্পানিটির সার্বিক বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএসইসির যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হক, সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান এবং মো. মাহমুদুল হাসানকে তদন্ত কমিটিতে রাখ হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের এ আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
চিঠিতে আরও বলা হয়- তদন্ত কমিটি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সম্পদ, কারখানা এবং সরঞ্জাম যাচাই করবে। মজুদ পণ্য এবং বিক্রিত পণ্যের খরচ যাচাই করবে তদন্ত কমিটি। সেই সঙ্গে এর সত্যতা নিশ্চিত করবে। কারখানা নির্মাণে পণ্যসামগ্রী কেনার জন্য অগ্রিম টাকা পরিশোধ করা এবং পণ্য বিক্রি করে যে আয় হয়েছে, তা যাচাই করবে। জমি ও কারখানার সরঞ্জামের পুনর্মূল্যায়ন সঠিকভাবে হয়েছে কি না এবং বিলম্বিত কর (ডেফার্ড ট্যাক্স) ইস্যুর সত্যতা যাচাই করবে।
এছাড়া, দীর্ঘ মেয়াদী ও স্বল্প মেয়াদী ঋণ এবং তা পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করবে। একইসঙ্গে সহযোগী কোম্পানির মধ্যে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যেসব লেনদেন করেছে, তার সত্যতা যাচাই করবে। ভবিষ্যতে কোম্পানিটি ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবে কি না, তা যাচাই করবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
লভ্যাংশ বিতরণ করল ওয়ালটন
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি শেয়ারহোল্ডারদের ব্যাংক হিসাবে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য অনুমোদিত লভ্যাংশের টাকা বিতরণ করেছে। বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) এবং ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে এই টাকা প্রেরন করা হয়েছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত অর্থ বছরে সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩৫০ শতাংশ এবং স্পন্সর/পরিচালকদের জন্য ২০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনমোদন করেছিল, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
গত ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয় এবং ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদন করেন। এর প্রেক্ষিতে কোম্পানিটি সম্প্রতি শেয়ারহোল্ডারদের বিও অ্যাকাউন্টে উল্লেখ করা ব্যাংক হিসাবে তাদের প্রাপ্য লভ্যাংশের টাকা জমা করেছে।
যে সব শেয়ারহোল্ডারের বিও হিসাবে ব্যাংক হিসাব নাম্বারের উল্লেখ নেই বা নাম্বারে ভুল আছে অথবা রাউটিং নাম্বার নেই কিংবা সেখানে দেওয়া তথ্য ত্রুটিপূর্ণ তাদের প্রাপ্য টাকার এমআইসিআর ওয়ারেন্ট (চেক) বিও হিসাবে দেওয়া ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০২০ সাল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি পরবর্তী প্রথম লভ্যাংশ প্রদানের পর থেকেই “এ” ক্যাটাগরীতে ট্রেড হচ্ছে কোম্পানীটির শেয়ার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ২.০৩ শতাংশ
বিদায়ী সপ্তাহে (১৭ থেকে ২১ নভেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে ২ দশমিক ০৩ শতাংশ।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ৯ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে। ফলে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও ০ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ০৩ শতাংশ কমেছে।
খাতভিত্তিক পিই রেশিওগুলোর মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ৩ দশমিক ১৮ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৫ দশমিক ২৩ পয়েন্টে, ব্যাংক খাতে ৬ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতে ১০ দশমিক ১৩ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতে ১০ দশমিক ৭০ পয়েন্টে, টেক্সটাইল খাতে ১০ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১১ দশমিক ২৫ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতে ১২ দশমিক ৫১ পয়েন্টে, সাধারণ বিমা খাতে ১৩ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৩ দশমিক ৯১ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ১৪ দশমিক ২৮ পয়েন্টে, বিবিধ খাতে ১৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে, আইটি খাতে ১৮ দশমিক ২৭ পয়েন্টে, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ২৪ দশমিক ৮৭ পয়েন্টে, আর্থিক খাতে ২৫ দশমিক ৮২ পয়েন্টে, ট্যানারি খাতে ৩৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৬০ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে, পাট খাতে ৭৯ দশমিক ০৭ পয়েন্টে এবং সিরামিক খাতে ৮১ দশমিক ১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সপ্তাহজুড়ে আইবিবিএল পারপেচুয়াল বন্ডের সর্বোচ্চ দরপতন
বিদায়ী সপ্তাহে (১৭ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৮৩ কোম্পানির মধ্যে ২৮৭টির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শেয়ার দর পতন হয়েছে আইবিবিএল সেকেন্ড পারপেচুয়াল মুদারাবা বন্ড।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সপ্তাহজুড়ে ফান্ডটির ইউনিটদর কমেছে ২৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। বন্ডটির সমাপনী মূল্য ছিল ৩ হাজার ২৫০ টাকা।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমসের শেয়ার দর কমেছে ২১ দশমিক ১০ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ২৫ টাকা ৮০ পয়সা।
আর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা মতিন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর কমেছে ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। শেয়ারটির সমাপনী মূল্য ছিল ৪৬ টাকা ৩০ পয়সা।
তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এসিআই, শাইনপুকুর সিরামিকস, ওরিয়ন ফার্মা, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ফারইস্ট নিটিং, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল এবং বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড।
এসএম