জাতীয়
শনিবার থেকে বাড়ছে রেলের ভাড়া

আগামীকাল শনিবার (৪ মে) থেকে বাড়ছে রেলের ভাড়া। রুট ভেদে ৭ থেকে ৯ শতাংশ ভাড়া বাড়ছে। বাড়ছে কনটেইনার পরিবহন ভাড়াও। বর্ধিত ভাড়ার টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে।
২০ বছর পর ২০১২ সালের অক্টোবরে রেলের ভাড়া প্রায় দ্বিগুন বাড়ানো হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) শর্ত অনুযায়ী এখন থেকে প্রতি বছর রেলের ভাড়া বাড়বে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি নতুন ভাড়ার হার অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী। আর ৭ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে আদেশ জারি করে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, রেলের যাত্রীরা ১০১ থেকে আড়াইশ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২৫ শতাংশ এবং এর বেশি দূরত্বের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় পেতেন। সেই বিধান উঠে যাওয়ায় বর্তমানে গন্তব্যভেদে ২০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত শোভন চেয়ারের টিকিটের দাম বেড়েছে। এসি চেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩শ’ এবং কেবিনের ভাড়া বেড়েছে ৪শ’ টাকা পর্যন্ত।
দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধায় ৩২ বছর ধরে মূল ভাড়ায় ১০১-২৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ২৫১-৪০০ কিলোমিটারে ২৫ শতাংশ ও ৪০১ কিলোমিটার বা এর বেশি দূরত্বের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর্থিক চাপ ও লোকসান কমাতে এখন এ সুবিধা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সরকারের যাত্রীসেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি। এর পাশাপাশি ট্রেনে অতিরিক্ত সংযোজিত কোচ ও আবেদনের মাধ্যমে রিজার্ভ করা আসনের ভাড়াও বাড়ানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রিজারভেশন চার্জের ভিত্তিতে অতিরিক্ত সংযোজিত কোচ ও আবেদনের মাধ্যমে রিজার্ভ করা নন-এসি কোচের আসনে ব্যয় বাড়ছে মূল ভাড়ার ২০ শতাংশ এবং এসি কোচের আসনের বাড়ছে ৩০ শতাংশ।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অপারেশন বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি এরই মধ্যে সারা দেশে স্টেশন-টু-স্টেশন রেয়াত সুবিধা বাদ দিয়ে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবের ভিত্তিতে ১ হাজার ৩৪টি স্টেশন-টু-স্টেশনে নির্ধারিত নতুন ভাড়ায় এরই মধ্যে রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগের মাধ্যমে অনুমোদনও দেয়া হয়েছে।
সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন তালিকা অনুযায়ী আগামীকাল শনিবার (৪ মে) থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৩৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৪০৫ টাকা ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির আসনের ভাড়া ৬৫৬ থেকে বেড়ে হবে ৭৭৭ টাকা। ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ১৫০ ও ২৮৮ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ১৬০ ও ৩০৫ টাকা।
ঢাকা-রাজশাহী রুটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৩৪০ ও ৬৫৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৪০৫ ও ৭৭১ টাকা। ঢাকা-নোয়াখালী রুটে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২৭৫ ও ৫২৪ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৩১০ ও ৫৯৩ টাকা।
ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৩২০ ও ৬১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৩৭৫ ও ৭১৯ টাকা। ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুটে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২২০ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭২ টাকা।
ঢাকা-খুলনা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০০ ও ৯৫৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২৫ ও ১১৯৬ টাকা। ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা।
ঢাকা-রংপুর রুটে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা। ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪২৫ ও ৮১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৫১২ ও ৯৭৫ টাকা।
ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫১০ ও ৯৭২ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৪৫ ও ১২৩৭ টাকা। ঢাকা-চিলাহাটি রুটে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪৯৫ ও ৯৪৯ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২০ ও ১১৮৫ টাকা।
ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪৮০ ও ৯২০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬০০ ও ১১৫০ টাকা। ঢাকা-ভূঞাপুর রুটে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২৬০ ও ৪৯৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৯৫ ও ৫৭০ টাকা। ঢাকা-দেওয়াগঞ্জ রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২২৫ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭৬ টাকা।
এদিকে, রেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সাথে একমত নন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মোট ভাড়ার ওপর রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রভাব পড়বে। কিন্তু নীতি নির্ধারকরা বলার চেষ্টা করছেন রেলের ভাড়া বাড়ছে না। আসলে রেলের ভাড়া বাড়ছে। এটির প্রভাব সাধারণ জনগণের ওপর পড়বে।
গণপরিবহন হিসেবে রেলের এই সুবিধা বহাল রাখা উচিত বলেও মনে করেন তারা। এখনও উন্নত বিশ্বে ট্রেন ভ্রমণে যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে রেয়াতি সুবিধা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের এমন সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।

জাতীয়
প্রাথমিকের দুই শ্রেণির জন্য ১৮৭ কোটি টাকার বই ছাপাবে সরকার

আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রায় ৩ কোটি ৬৩ লাখ পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহে ১৮৭ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার ২০৮ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
মঙ্গলবার (২৬ অগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে এ বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন অর্থ উপদেষ্টা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে বৈঠকে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক স্তরের (চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির) ৯৮টি লটের মধ্যে ৯৪টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ১৮৭ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার ২০৮ টাকা ব্যয়ে ৯৪টি লটের মোট ৩ কোটি ৬২ লাখ ৯১ হাজার ২০৭ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হবে।
সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পাশাপাশি অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ২০২৬ সালের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক দরপত্রের মাধ্যমে মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) প্রয়োগ করে ক্রয় প্রক্রিয়ার সময় কমানোর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে ৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৯১টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়। এতে ২০০ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮০ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।
জাতীয়
সাদাপাথর লুটের নেতাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে: ডিসি সারওয়ার

পাথর উত্তোলনে কয়েক হাজার লোকজন জড়িত ছিল। তবে যারা সাদাপাথর লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।
লুট করা সাদাপাথর ফেরত দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে সাদাপাথর পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সাদাপাথর ফেরত দিতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক।
সারওয়ার আলম বলেন, পাথর পুনঃস্থাপনের পাশাপাশি আইনি কার্যক্রমও চলবে। যারা পাথর লুট করেছে তাদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে। তবে যারা নিরীহ ও নিরপরাধ তারা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। আগে অপরাধীদের নাম প্রকাশ করা হলে তারা পালিয়ে যাবে। অবশ্যই প্রকৃত দোষীরা আইনের আওতায় আসবে।
ইতোমধ্যে ২৬ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৬ লাখ ঘনফুট পাথর স্বেচ্ছায় জমা দিয়েছেন লোকজন। অবশিষ্ট প্রায় ১৯ লাখ ঘনফুট পাথর অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করার কথা জানান তিনি।
সাদাপাথর পুনঃস্থাপন প্রসঙ্গে সারওয়ার আলম বলেন, এটা অনেক কঠিন কাজ। এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ঘনফুট পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি পাথরগুলো পুনঃস্থাপন করা হবে।
তিনি জানান, এ কাজে প্রতিদিন ৫০০ শ্রমিক, ৪০০ নৌকা, ৩০০-এর অধিক ট্রাক কাজ করছে। সব পাথর পুনঃস্থাপন করা গেলে সাদাপাথরের সৌন্দর্য অনেকটা ফিরে আসবে। তবে প্রাকৃতিকভাবে যেরকম পাথর বিছানো থাকে, ঠিক সেরকম তো পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হবে না, তবুও আমরা চেষ্টা করছি।
কী পরিমাণ পাথর লুট হয়েছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমার ধারণা আরও অন্তত ৩০ শতাংশ লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
লুটের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিপোর্ট সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটিও কাজ করছে। তাদের রিপোর্ট দেওয়ার পর দুটি প্রতিবেদন নিয়ে একসঙ্গে কাজ করা হবে।
কাফি
জাতীয়
জুলাই শহীদ পরিবারে অনুদানের টাকা বণ্টনে নতুন বিধিমালা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের এককালীন অনুদান ও মাসিক ভাতা বণ্টন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে নতুন বিধিমালা জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। নতুন বিধি অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা শহীদদের স্বামী বা স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের মধ্যে সমান তিন ভাগে বণ্টন করা হবে।
সরকারি সহায়তা নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রায়শই দ্বন্দ্ব ও ঝামেলা তৈরি হওয়ায় সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সহায়তার অর্থ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী অর্থ বণ্টন শুরু হলেও তা নিয়ে আপত্তি ওঠে। কারণ, অনুদান বা ভাতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ নয়। এ কারণে একটি সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। শহীদ পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা এককালীন অনুদান দেওয়া হচ্ছে এবং মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাওয়ার কথা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৪৪ জন শহীদের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
বিধিমালা অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তা তিন ভাগে ভাগ হবে— এক-তৃতীয়াংশ শহীদের স্বামী বা স্ত্রী, এক-তৃতীয়াংশ সন্তান এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ বাবা-মা পাবেন। যদি কোনো একজন না থাকেন, তবে তার অংশ বাকিদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে। অবিবাহিত শহীদের ক্ষেত্রে তার সহায়তার অর্থ বাবা-মায়ের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হবে।
এছাড়াও বিধিমালায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে:
ভাতার অবসান: শহীদ পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে বা শহীদের স্বামী বা স্ত্রী পুনরায় বিবাহ করলে মাসিক ভাতার অংশের অবসান ঘটবে।
আহত জুলাই যোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা: অভ্যুত্থানের সময় আহত কোনো জুলাই যোদ্ধা যদি পরবর্তীতে মারা যান, তবে তাকেও শহীদ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তার পরিবার শহীদ পরিবারের সব সুবিধা পাবে।
পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ: জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই যোদ্ধাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেবে।
বিরোধ নিষ্পত্তি: আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন নিয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা নিষ্পত্তির জন্য একটি সালিশ বোর্ড গঠন করা হবে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপিল করার সুযোগও থাকবে, যেখানে মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
চিকিৎসা সহায়তা: আহত জুলাই যোদ্ধারা সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন।
জাতীয়
বিমানবন্দরে ১৩০ কোটি টাকার কোকেন আটক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক যাত্রীর কাছ থেকে ৮.৬৬ কেজি বা ১৩০ কোটি টাকার সমপরিমাণ কোকেনসহ এক যাত্রীকে আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দোহা থেকে ঢাকায় আসা কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট নম্বর QR638-এ সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এক যাত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যাগেজসহ কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেলে স্ক্যানিং লাগেজের সঙ্গে মিলিয়ে (যার টোকেন নম্বর: 7IBAHK STUFFLE SEQ NR 264) প্লাস্টিকের ৩টি জার পাওয়া যায় এবং জারের ভিতরে ২২ পিস ডিম্বাকৃতির ফয়েল পেপারে আবদ্ধ কোকেন (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, এয়ারপোর্ট ইউনিট কর্তৃক প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রমাণিত) পাওয়া যায়।
প্রাপ্ত পণ্যের (কোকেন) ওজন আট দশমিক ৬৬ কেজি, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। কোকেনসহ যাত্রীকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চোরাচালানের অভিযোগে ফৌজদারি ও কাস্টমস অ্যাক্টের আওতায় বিভাগীয় মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল, এয়ারপোর্ট বি-শিফটের কর্মকর্তা, উপ-পরিদর্শক ও সিপাহিদের তৎপরতায় দেশের অভ্যন্তরে এ বিশাল মাদক চালান প্রবেশ রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
সীমানা নির্ধারণ: ঢাকা অঞ্চলের দাবি-আপত্তি শুনছে ইসি

ঢাকা অঞ্চলের খসড়া সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দাবি আপত্তি শুনানি শুরু হয়েছে। এ অঞ্চলের ২৮টি আসনের তিন শতাধিক দাবি আপত্তি আবেদন রয়েছে। এরমধ্যে পক্ষে বিপক্ষে অনেক আবেদনই একই ধরনের; সেক্ষেত্রে তাদের পক্ষে একজন কথা বলতে পারবে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে নির্বাচন কমিশনের এ শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিব উপস্থিত রয়েছেন।
নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে শুনানির সময়ে দাবি-আপত্তিকারী বা আবেদনকারীর কৌশলী নির্ধারিত স্থানে দাঁড়িয়ে নিজেদের যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
আজ ঢাকা অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ-১, ২, ৩; মুন্সিগঞ্জ ১, ২, ৩; গাজীপুর ১, ২, ৬; নরসিংদী-৩, ৪, ৫, নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪, ৫; আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১০, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮ ও ১৯ আসনের শুনানি হওয়ার কথা।
গাজীপুরের আসন আগের ও বর্তমান অবস্থান
আসন
ত্রয়োদশ সংসদের প্রস্তাবিত এলাকা
গাজীপুর-১
কালিয়াকৈর উপজেলা; গাজীপুর সিটির ১-১৮ নম্বর ওয়ার্ড
কালিয়াকৈর উপজেলা, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড
গাজীপুর-২
গাজীপুর সিটির ১৯-৩৯ নম্বর ওয়ার্ড; ৪৩-৫৭ নম্বর ওয়ার্ড; গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৩ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড; গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন
গাজীপুর-৩
শ্রীপুর, গাজীপুর সদরের মির্জাপুর, ভাওয়ালগড়, পিরুজালী ইউপি
শ্রীপুর উপজেলা এবং গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাউয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর সেনানিবাস
গাজীপুর-৫
কালীগঞ্জ, গাজীপুর সিটির ৪০-৪২ নম্বর ওয়ার্ড, গাজীপুর সদরের বাড়িয়া ইউপি
কালিগঞ্জ উপজেলা
গাজীপুর-৬
আগে ছিল না
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৪ থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড
আগামীকাল ২৭ আগস্ট রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের দাবি আপত্তির শুনানি হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১; আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর- ১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ৩০ জুলাই ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়। আর গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে করা হয় ছয়টি। ১০ আগস্টের মধ্যে ৮৩টি সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে এক হাজার ৭৬০টি দাবি-আপত্তির আবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা হয়। ২৭ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি নিয়ে দাবি-আবেদন নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে ইসি।