অর্থনীতি
২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৮ কোটি ডলার

চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে এসেছিল ১৬২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। সে হিসাবে চলতি মাসে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
তথ্য মতে, এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, এপ্রিলের ২০ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ৬ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর ১ থেকে ৫ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
গত মার্চ মাসে দেশে এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ।
এসএম

অর্থনীতি
মাছ-মুরগি-সবজির দাম বাড়তি, স্বস্তি নেই চালেও

রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। পাশাপাশি বাজারে চড়া রয়েছে মিনিকেট চাল, সবজি ও মাছের দামও।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর নয়াবাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার এবং কারওয়ানবাজারসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকায় গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সোনালি মুরগি গতকাল বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই মুরগির কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ২০ টাকা ও সোনালি মুরগির কেজিতে ২০-৩০ টাকা দাম বেড়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এ কারণে দাম বাড়তি। তবে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। বড় বাজারে এক ডজন ডিমের দাম এখন ১২০ টাকা; আর পাড়া-মহল্লায় তা ১২৫-১৩০ টাকা।
এদিকে গত দুই সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মৌসুমি বৃষ্টি শুরুর আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ কেনা যেত ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের সরবরাহ কিছুটা কম। এই সুযোগে সরবরাহ বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচের। এটিও মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দামও আগের তুলনায় বেশি। করলা, কাঁকরোল, বেগুন, বরবটিসহ অধিকাংশ সবজির কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকার আশপাশে। দেশি টমেটো এখন পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ কারণে আমদানি করা টমেটোর দাম বেশি, প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। তবে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু প্রভৃতি পণ্য আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে।
মাস দেড়েক আগে বাজারে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছিল। এখনো সে দামেই বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ডায়মন্ড, সাগর, মঞ্জুর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা ও মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে বেড়েছে মাছের রাজা ইলিশের দামও। বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০-২৬০০ টাকায়; যা আগে ছিল ২২০০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ২০০-৩০০ টাকার মতো। এছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩২০০ টাকায়।
মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আজিজুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইলিশ তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই চলে গেছে। কেজিতে অন্তত তিনশো টাকা বেড়েছে সপ্তাহ ব্যবধানে। অন্যান্য মাছের দামও চড়া।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় চড়া ইলিশের বাজার। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছের দামেও। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, সাগরে এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে। যা ধরা পড়েছ তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে বেড়ে গেছে দাম।
বাজারে শুধু ইলিশ নয়, অন্যান্য মাছের দামও ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮৫০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। আর চাষের ট্যাংরা প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কাঁচকি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা ও মলা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের বাজারে কিছু স্বস্তি বিরাজ করছে। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়, আর প্রতি ডজন সাদা ডিমের জন্য গুনতে হচ্ছে ১১০ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডজনে ৫-১০ টাকা বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।
অর্থনীতি
জুনে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এলো যেসব দেশ থেকে

চলতি বছরের জুনে দেশে ২৮২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। মাসটিতে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব থেকে।
দেশে রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকার মধ্যে রয়েছে- সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, ইতালি, কুয়েক, কাতার ও সিঙ্গাপুর।
কোন দেশ থেকে কত রেমিট্যান্স আসে
গত জুনে দেশে আসা ২৮২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্সের মধ্যে শীর্ষে থাকা সৌদি আরবের সঙ্গে রয়েছে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, জুনে সৌদি প্রবাসীরা দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৬ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। মাসটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে।
আর মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার ও সিঙ্গাপুর থেকে জুনে রেমিট্যান্স এসেছে যথাক্রমে ৩৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ৩২ কোটি ৩৯ লাখ ১০ হাজার, ২৩ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, ১৭ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার, ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার, ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার, ১১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার, ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
গত মে মাসে মোট ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যার মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলার। এছাড়া ৩৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য, চতুর্থ অবস্থানে মালয়েশিয়া ৩৪ কোটি ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
পর্যায়ক্রমে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় অন্য দেশগুলো হলো ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার ও সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে যথাক্রমে ১৮ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার, ১৫ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার, ১৪ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার, ১৩ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার ও ১০ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।
এপ্রিলে দেশে এসেছে ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। মাসটিতে সৌদি প্রবাসীরা দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে আরব আমিরাত থেকে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার থেকে এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছে যথাক্রমে ৩৩ কোটি ৭ লাখ ৪০ হাজার, ২৯ কোটি ৪১ লাখ, ২১ কোটি ৯ লাখ, ১৬ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার, ১৫ কোটি ৫ লাখ ৯০ হাজার, ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার, ১১ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ও ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
অর্থনীতি
ভারতে কমেছে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার, বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে

বিদেশে ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা ও অনলাইন কেনাকাটাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও থাইল্যান্ড। এর বিপরীতে, প্রতিবেশী দেশ ভারতে এই খাতে ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। একসময় বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড খরচের তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারত, এখন সেই অবস্থান থেকে ছিটকে গিয়ে দেশটি ৭ নম্বরে নেমে এসেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর রয়েছে চীন, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া। পর্যটন, চিকিৎসা ও শিক্ষাসহ নানা কারণে এসব দেশে খরচের প্রবণতা বেড়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈদেশিক ভ্রমণের বিধিনিষেধ এবং ভারতে চিকিৎসা ও কেনাকাটার পরিবর্তে অন্যান্য দেশের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় এই পরিবর্তন ঘটছে।
ক্রেডিট কার্ডে দেশে-বিদেশে লেনদেন সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের এপ্রিলের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ৬২টি তফসিলি ব্যাংক ও ৩৫টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মধ্যে ৫৬টি তফসিলি ব্যাংক ও মাত্র ১টি এনবিএফআই গ্রাহকদের জন্য ক্রেডিট কার্ড সেবা প্রদান করে থাকে যাদের তথ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ দেশের ক্রেডিট কার্ডের প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে দেশের অভ্যন্তর ও বিদেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের এবং দেশের ভেতরে বিদেশি নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশিরা বিদেশে ভ্রমণ ও কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে কিছুটা সংযমী হয়ে উঠছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৩৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এই পরিমাণ আগের মাস এপ্রিলের তুলনায় ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ কম। এপ্রিলে খরচ ছিল ৪৬৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
চলতি বছরের মে মাসে ভারতে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড লেনদেন নেমে এসেছে মাত্র ২১ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭২ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মে মাসে ভারতে এই খাতে ব্যয় ছিল ৭৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বিশ্লেষকদের মতে, ভিসা জটিলতা, সীমান্ত পারাপারে কড়াকড়ি এবং অন্যান্য দেশের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়াই প্রতিবেশী দেশে কার্ডে খরচের প্রধান কারণ।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডধারীদের লেনদেন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এসব দেশে উচ্চশিক্ষা, চিকিৎসা, প্রবাসী সংযোগ চাহিদা বাড়ার ফলে ক্রেডিট কার্ডে খরচও ক্রমেই বাড়ছে।
বর্তমানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মে মাসে দেশটিতে খরচ হয়েছে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, এপ্রিলে খরচ ছিল ৬৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা, এর আগে মার্চে খরচ ছিল ৫৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫২ কোটি ৩০ লাখ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চীনে খরচ হয়েছে ৪০ কোটি টাকা, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড, সেখানে খরচ হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্যে; মে মাসে দেশটিতে ৩৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ করেছে। সিঙ্গাপুরে খরচ ৩২ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং মালয়েশিয়ায় খরচ ২৪ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতমুখী ভ্রমণ ও ব্যয়ের হার কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো দুই দেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক টানাপড়েন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ভারত বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটক ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছে। কবে নাগাদ এই ভিসা চালু হবে, সে বিষয়ে এখনো ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি।
শুধু ভিসা স্থগিত নয়, ভারত বাংলাদেশে কিছু পণ্য রপ্তানিও বন্ধ রেখেছে এবং ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে যেসব বাংলাদেশি প্রতিবছর নিয়মিতভাবে কলকাতা, দিল্লি, দার্জিলিং, সিকিম কিংবা মেঘালয়ে ভ্রমণে যেতেন, তারা এখন সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশিরা যুক্তরাষ্ট্র, চীন, থাইল্যান্ড মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে ভ্রমণ এবং ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার কমলেও, দেশের মধ্যে ব্যবহার বেড়েছে। এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এপ্রিলে যেখানে লেনদেন ছিল ৩ হাজার ১৬ কোটি টাকা, মে’তে তা বেড়ে ৩ হাজার ২২০ কোটি টাকায় উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ভেতরে ১১টি খাতে সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর,পরিষেবার বিল পরিশোধ, খুচরা কেনাকাটা, নগদ উত্তোলন, পোশাক কেনাকাটা, ওষুধ ও ফার্মেসি, অর্থ স্থানান্তর, পরিবহন খাতে ব্যয়, ব্যবসায়িক ও পেশাদারি সেবা এবং সরকারি সেবার বিল প্রদান। বেশিরভাগ খাতেই এপ্রিলে খরচ কমেছে।
এছাড়া, ৭৬ শতাংশ লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ভিসা কার্ড ব্যবহার করে, ১৪ শতাংশ মাস্টারকার্ড এবং ১০ শতাংশ এমেক্স কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৫ লাখ ডলার বা ৩০ বিলিয়ন ডলার।
আরিফ হোসেন খান জানান, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম-৬) অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৪৯৮ কোটি ৮২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, অর্থাৎ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকে নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী দেশের রিজার্ভের পরিমাণ এখন আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
এর আগে, চলতি বছরের ৩ জুলাই পর্যন্ত দেশে মোট রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তবে জুলাই মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সদস্যদের কাছে ২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। গত ১৬ জুলাই শেষে তা দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে। বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাব করলে সেই সময় রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার।
কাফি
অর্থনীতি
দুই দফা বাড়ার পর কমল স্বর্ণের দাম

টানা দুদিন দু দফা বাড়ার পর এবার দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ এক হাজার ৫৭৪ টাকা কমানো হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা। আজ প্রতি ভরি সোনা এক লাখ ৭৩ হাজার ১৭৫ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ২৪ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২৫ জুলাই) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি এক লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৬ হাজার ১২৭ টাকা।
সোনার দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮১১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে, সবশেষ গত ২৩ জুলাই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। যা আজ ২৪ জুলাই কার্যকর হয়। সেই দাম অনুযায়ী আজকে সোনা বেচাকেনা হয়েছে। তারও আগে ২২ জুলাই দাম বাড়িয়েছিল যা ২৩ জুলাই কার্যকর হয়।
কাফি