অর্থনীতি
টানা পঞ্চম দফায় কমলো সোনার দাম

চলতি মাসে টানা পঞ্চমবারের মতো সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সবশেষ ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৩১৫ টাকা কমানো হয়েছে। এখন ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে হচ্ছে ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৬ টাকা। এর আগে দাম ছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৯৩১ টাকা।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৭ এপ্রিল সোনার দাম কমায় বাজুস। ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২০৯৯ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা এবং ২৭ এপ্রিল ৬৩০ টাকা কমানো হয়।
সবশেষ আজ (২৮ এপ্রিল) ভালো সোনার ভরি ৩১৫ টাকা কমানোর ঘোষণা দিলো বাজুস। পাঁচ দিনে ভরিতে সোনার দাম কমেছে মোট ৬ হাজার ৮১৩ টাকা।
তার আগে অবশ্য টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়েছিল। গত ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল সোনার দাম বাড়িয়েছিল বাজুস। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল বেড়েছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা এবং ১৮ এপ্রিল বেড়েছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা।
সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৬ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি ১ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯২ হাজার ১৪৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৭৬ হাজার ৬৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপার দাম দুই হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।

অর্থনীতি
একনেকে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ প্রকল্প অনুমোদন

দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১২টি নতুন ও ৮টি ফায়ার স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পটিসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোট ১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নে ৮ হাজার ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ৫২ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
সভা শেষে জানানো হয়, ১২টি প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘২০টি ফায়ার স্টেশন পুনর্নির্মাণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০২৮ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৬টি, সংশোধিত প্রকল্প ৪টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ২টি প্রকল্প রয়েছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একনেক সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
অর্থনীতি
দুই হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প পেলো ঢাবি

দুই হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাবির অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।
রবিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোট ১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে অন্যতম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’। জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০৩০ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
একনেক জানায়, ৪১টি বহুতল ভবন নির্মাণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পে প্রস্তাবিত ৪১টি বহুতল ভবনের মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য ১৬টি আবাসিক হল, ৮টি একাডেমিক ভবন, আবাসিক হলগুলোতে হাউস টিউটরদের জন্য ৯টি আবাসিক ভবন, পুরোনো ডাকসু ভবন ভেঙে ১২তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন, ৬তলা মেডিকেল সেন্টার, রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের একাংশ ভেঙে একটি ২০তলা ও একটি ৪তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ এবং গ্যালারি ও ডরমিটরি নির্মাণসহ কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের উন্নয়ন।
৮টি একাডেমিক ভবন: প্রকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পশ্চিম ও উত্তর পাশে অবস্থিত ভবন ভেঙে একটি ১২তলা ও একটি ৬তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। আইএসআরটি ও ফার্মেসি বিভাগের জন্য বর্তমান আইএসআরটি ভবন ভেঙে এবং মোকাররম হোসেন খন্দকার বিজ্ঞান ভবন ও আইএসআরটি ভবনের মধ্যবর্তী খালি জায়গায় একটি ১০তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের নিজস্ব খালি জায়গায় একটি ৩তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। চারুকলা অনুষদের অধীন ক্রাফট, স্কাল্পচার, গ্রাফিকস, সিরামিকস, ইতিহাস ভবন ও থিওরেটিক্যাল শিক্ষক লাউঞ্জ ভেঙে সেখানে একটি ৫তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের বর্তমান ১তলা ভবন ভেঙে সেখানে একটি ১০তলা ‘বীর উত্তম শহীদ খাজা নিজামুদ্দিন ভূঁঞা এমবিএ টাওয়ার’ নির্মিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান প্রেস বিল্ডিং ও টিনশেডের নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে যথাক্রমে ১১তলা ও ৫তলা বিশিষ্ট দুটি ব্লকে প্রেস কাম একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
ছাত্রদের ১০টি আবাসিক ভবন : ছাত্রদের আবাসিক সংকট দূর করার লক্ষ্যে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের টিনশেড ভবন ভেঙে সেখানে ১ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য ১২তলা ও ৮তলা দুটি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ করা হবে। মাস্টার দা সূর্যসেন হলের উত্তর অংশ ভেঙে তাতে ১১০০ শিক্ষার্থীর জন্য ১১তলা একটি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল প্রাঙ্গণের শহীদ আতাউর রহমান খান খাদিম ভবন ও ক্যাফেটেরিয়া ভেঙে সেখানে ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীর জন্য ১৫তলা ও ৬তলা দুটি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ করা হবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের টিনশেড ও একতলা মূল ভবন ভেঙে সেখানে ১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ১২তলা ও ৬তলা দুটি সম্প্রসারণ ভবন নির্মিত হবে। ড. কুদরাত-ই-খুদা হোস্টেলের বর্তমান বাংলো ভেঙে সেখানে ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য ১০তলা, ৮তলা ও ৫তলা তিনটি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হলেই আবাসিক শিক্ষকদের জন্য ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১তলা একটি করে শিক্ষক কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে।
ছাত্রীদের ৬টি আবাসিক হল ভবন: ছাত্রীদেরও আবাসিক সংকট দূর করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। শাহনেওয়াজ হোস্টেল ভেঙে আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ ১ হাজার ছাত্রীর জন্য একটি ১৫তলা ছাত্রী হল নির্মাণ করা হবে। শামসুন নাহার হলের ভেতরে বিদ্যমান হাউস টিউটর কোয়ার্টার ও গ্যারেজ ভেঙে ৬০০ ছাত্রীর জন্য ১০তলা ও ৬তলা দুটি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ করা হবে। লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের বিদ্যমান স্টাফ কোয়ার্টার ‘বি’ ও ‘ডি’ ভবন ভেঙে সেখানে ৫০০ ছাত্রীর জন্য ১১তলা ও ৮তলা দুটি ছাত্রী হল নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ভেতরে প্রভোস্ট বাংলো, হাউস টিউটর কোয়ার্টার ও ৩তলা সিকদার মনোয়ারা ভবন ভেঙে ৫০০ ছাত্রীর জন্য ১০তলা সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি হলে আবাসিক শিক্ষকদের জন্য একটি করে ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১তলা শিক্ষক কোয়ার্টারও নির্মাণ করা হবে।
শিক্ষকদের আবাসিক ভবন: শিক্ষকদের জন্যও আলাদাভাবে এ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মাস্টার দা সূর্যসেন হল এবং হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের বর্তমান প্রভোস্ট বাংলো ভেঙে সেখানে একটি ২তলা বিশিষ্ট উপ-উপাচার্যের বাংলো নির্মাণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ফুলার রোড আবাসিক এলাকার ১২ ও ১৩ নম্বর ভবন ভেঙে সেখানে শিক্ষকদের জন্য ১৫তলা বিশিষ্ট (মোট ১১২টি ফ্ল্যাট) একটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
১২তলা ডাকসু ভবন : ডাকসু ভবন ভেঙে তার স্থানে ১২তলা মাল্টিপারপাস ডাকসু ভবন নির্মাণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পশ্চিম অংশ ভেঙে সেখানে ২০তলা ভবন এবং দক্ষিণ-পূর্ব অংশ ভেঙে সেখানে ৪তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। জিমনেসিয়ামের জন্য প্রি-ইঞ্জিনিয়ারড ভবনের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করা হবে।
বদলে যাবে খেলার মাঠের দৃশ্য: পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আধুনিক ক্রীড়া অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য গ্যালারি, খেলার মাঠ, বাস পার্কিং ও পরিচালকের অফিসসহ খেলোয়াড়দের ডরমিটরি নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মূল খেলার মাঠের আয়তন ১০ হাজার ৯০০ বর্গমিটার, গ্যালারি ২ হাজার ৪০ বর্গমিটার, বাস পার্কিং ২ হাজার ৯০০ বর্গমিটার এবং পরিচালকের অফিস ও ডরমিটরি মিলিয়ে ৪ হাজার ৩২ বর্গমিটার আয়তনের স্থাপনা নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ী আবাসিক এলাকার চতুর্থ শ্রেণির ভবনগুলো ভেঙে সেখানে ৬তলা শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার ভবন নির্মাণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান ১তলা মসজিদুল জামিয়া ভবন ভেঙে তার স্থানে ৪তলা মসজিদুল জামিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জলাধার সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। পাশাপাশি রোড নেটওয়ার্ক ও সার্ভিস লাইন স্থাপন, ২৪ হাজার ৮২০ মিটার দীর্ঘ ড্রেনেজ সিস্টেম নির্মাণ এবং আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার (ওয়েস্ট বিনসহ) ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও জগন্নাথ হলে বসানো হবে পাবলিক টয়লেট।
অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং থেকে ২৫ উড়োজাহাজ কিনবে সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সচিবের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য সচিব বলেন, বোয়িংয়ের ব্যবসাটা কিন্তু সেদেশের সরকার করে না বোয়িং কোম্পানি করে। আমরা ২৫টি বোয়িং কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছি। যেমন ভারত দিয়েছে ১শ’টা। ভিয়েতনাম দিয়েছে ১শ’টা, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ১শ’টা।
তিনি বলেন, বোয়িং কোম্পানির কেপাসিটি অনুযায়ী এগুলো সরবরাহ করবে। সুতরাং এগুলো সরবরাহ করতে তারা অনেক সময় নেবে।
কাফি
অর্থনীতি
পাল্টা শুল্কের প্রভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমতে পারে: এডিবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাবে চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এডিবি জানিয়েছে, রপ্তানি ও শিল্প খাতের ধীরগতির কারণে চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কত হবে, তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করেনি।
সম্প্রতি প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক জুলাই সংস্করণে এ কথা বলা হয়েছে। এ সংস্কারে দেশভিত্তিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির পূর্বাভাস দেওয়া হয় না। মোটাদাগে বড় কয়েক দেশের তথ্যসহ আঞ্চলিক পর্যায়ে এসবের তথ্য দেওয়া হয়। অর্থনীতির গতি প্রকৃতির বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়।
গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। পরে তা কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয় এবং আগামী ১ আগস্ট থেকে তা কার্যকর করার কথা। এ নিয়ে মার্কিন প্রশাসনে সঙ্গে দর-কষাকষি করছে বাংলাদেশ সরকার। নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ হলে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করতে বাড়তি শুল্ক দিতে হবে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, এতে পণ্যের রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমতে পারে, যা সার্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
এদিকে মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে এডিবির জুলাই সংস্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। এর পেছনে বৈশ্বিক পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা, কড়াকড়ি আর্থিক ও রাজস্বনীতি ভূমিকা রেখেছে। একই কারণে ২০২৬ অর্থবছরের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসের এডিবির প্রতিবেদনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
তিন বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান আছে। তবে কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২২ সারের জুলাই মাসের পর সর্বনিম্ন। গত এক বছরের মধ্যে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে। পরের সাত মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি ছিল। পরের পাঁচ মাসে তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে।
কাফি
অর্থনীতি
মাছ-মুরগি-সবজির দাম বাড়তি, স্বস্তি নেই চালেও

রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। পাশাপাশি বাজারে চড়া রয়েছে মিনিকেট চাল, সবজি ও মাছের দামও।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর নয়াবাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার এবং কারওয়ানবাজারসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকায় গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সোনালি মুরগি গতকাল বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই মুরগির কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ২০ টাকা ও সোনালি মুরগির কেজিতে ২০-৩০ টাকা দাম বেড়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এ কারণে দাম বাড়তি। তবে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। বড় বাজারে এক ডজন ডিমের দাম এখন ১২০ টাকা; আর পাড়া-মহল্লায় তা ১২৫-১৩০ টাকা।
এদিকে গত দুই সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মৌসুমি বৃষ্টি শুরুর আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ কেনা যেত ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের সরবরাহ কিছুটা কম। এই সুযোগে সরবরাহ বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচের। এটিও মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দামও আগের তুলনায় বেশি। করলা, কাঁকরোল, বেগুন, বরবটিসহ অধিকাংশ সবজির কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকার আশপাশে। দেশি টমেটো এখন পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ কারণে আমদানি করা টমেটোর দাম বেশি, প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। তবে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু প্রভৃতি পণ্য আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে।
মাস দেড়েক আগে বাজারে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছিল। এখনো সে দামেই বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ডায়মন্ড, সাগর, মঞ্জুর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা ও মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে বেড়েছে মাছের রাজা ইলিশের দামও। বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০-২৬০০ টাকায়; যা আগে ছিল ২২০০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ২০০-৩০০ টাকার মতো। এছাড়া ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩২০০ টাকায়।
মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আজিজুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইলিশ তো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই চলে গেছে। কেজিতে অন্তত তিনশো টাকা বেড়েছে সপ্তাহ ব্যবধানে। অন্যান্য মাছের দামও চড়া।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় চড়া ইলিশের বাজার। এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছের দামেও। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, সাগরে এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে। যা ধরা পড়েছ তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে বেড়ে গেছে দাম।
বাজারে শুধু ইলিশ নয়, অন্যান্য মাছের দামও ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮৫০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। আর চাষের ট্যাংরা প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, কাঁচকি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা ও মলা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের বাজারে কিছু স্বস্তি বিরাজ করছে। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়, আর প্রতি ডজন সাদা ডিমের জন্য গুনতে হচ্ছে ১১০ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডজনে ৫-১০ টাকা বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।