জাতীয়
ঢাকা উত্তর সিটিতে অস্থায়ী ৯ পশুর হাট
ঈদুল আযহা উপলক্ষে এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বসতে যাচ্ছে ৯টি অস্থায়ী পশুর হাট। এছাড়া উত্তর সিটির গাবতলী স্থায়ী হাটেও কেনা-বেচা হবে কোরবানির পশু।
কোরবানির ঈদের আগে রাজধানীতে পশুর হাটকেন্দ্রিক একটি উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু ও ছাগলসহ নানা পশু রাজধানীর হাটগুলোয় বিক্রির জন্য তোলা হয়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠে পশুর হাটগুলো। এমন সব আয়োজনে আরও মাত্রা যোগ করতে এবারের ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে বসতে যাচ্ছে হাট।
যে ৯ স্থানে বসবে হাট
গাবতলী স্থায়ী হাট ছাড়াও এবার আরও ৯টি অস্থায়ী হাট বসাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। সেই লক্ষ্যে তারা হাটগুলোর ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
এবারের অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা (ভাটারা সুতিভোলা), কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, এল, এম, এন এবং আশপাশের জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ওয়ার্ড নম্বর ৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, মোহাম্মদপুর বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া বেপারীপাড়া রাহমান নগর আবাসিক প্রকল্পের জায়গা এবং খিলক্ষেত থানার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন পাড়ার খালি জায়গা।
কোন হাটের মূল্য কত?
উত্তর সিটির আওতাধীন এলাকায় অস্থায়ী প্রতিটি হাটের সরকারি ইজারা মূল্যের ১০ শতাংশ টাকা পরিচ্ছন্নতা ফি বাবদ পরিশোধ করতে হবে। ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গার (ভাটারা সুতিভোলা) হাটের সরকারি মূল্য ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ। পাশাপাশি অফেরতযোগ্য শিডিউল মূল্য ধরা হয়েছে ৭৪ হাজার ৬০০ টাকা।
কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গার হাটের মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫০০ টাকা আর শিডিউল মূল্য ২৮ হাজার ১০০ টাকা।
উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর বউ বাজার এলাকার খালি জায়গার হাটের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ কোটি টাকা এবং শিডিউল মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার ৬০০ টাকা।
বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক ই, এফ, জি, এইচ, এল, এম, এন এবং আশপাশের জায়গার হাটের দাম ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ দুই হাজার ৭২৭ টাকা আর শিডিউল মূল্য ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা।
মিরপুর সেকশন ৬ ওয়ার্ড নম্বর ৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গার হাটের দাম ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৪৬০ টাকা এবং শিডিউল মূল্য ২৮ হাজার ২০০ টাকা।
মোহাম্মদপুর বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ২ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং শিডিউল মূল্য ৪৪ হাজার ৬০০ টাকা।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গার হাটের দাম ৬০ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং শিডিউল মূল্য ১২ হাজার ৮০০ টাকা।
৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া বেপারীপাড়া রাহমান নগর আবাসিক প্রকল্পের জায়গার হাটের দাম ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শিডিউল মূল্য ৩ হাজার ৯০০ টাকা।
খিলক্ষেত থানার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন পাড়ার খালি জায়গার হাটের দাম ৩০ লাখ ২১ হাজার টাকা এবং শিডিউল মূল্য ৬ হাজার ৭০০ টাকা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা এই নয়টি হাট বসানোর জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। তবে কর্তৃপক্ষ যেকোনো হাট বাতিল বা সংযোজন করতে পারে।
তিনি আরও জানান, পশুর হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অনলাইনে পশু কেনা-বেচার জন্য উৎসাহিত করতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিক্রেতার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং এটিএম বুথ ব্যবহার করে টাকা তোলা, পাঠানো ও স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
রাষ্ট্রদূত হলেন মেজর জেনারেল খালেদ ও মাহবুবুর রহমান
মেজর জেনারেল মো. খালেদ আল মামুন ও মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান রশীদকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য তাদের চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মো. খালেদ আল মামুন ও মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান রশীদকে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগের জন্য তাদের চাকরি প্রেষণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলো।
এ ছাড়া আরেকটি প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর চিফ আইসিটি অফিসার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাদাত হোসেনকে সেনাবাহিনীতে ফেরত নেয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে আইএসপিআর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, গত ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আজমীকে তার বরখাস্তের আদেশ প্রমার্জনা করে বরখাস্তের পরিবর্তে ২০০৯ সালের ২৪ জুন থেকে ভূতাপেক্ষভাবে অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসর প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৪ জুন থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আজমীকে প্রযোজ্য সকল প্রকার আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ ‘অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসর’ প্রদান করা হয়।
একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০০৯ সালের ২৩ জুন তারিখে জারিকৃত এ অফিসারের বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আরও ৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
জানুয়ারিতে আরও ৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
দেশের সব জেলা ও উপজেলায় ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ৩০০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে, ১৬ মার্চ তৃতীয় পর্যায়ে, ১৭ এপ্রিল চতুর্থ পর্যায়ে এবং ৩০ জুলাই পঞ্চম পর্যায়ে ৫০টি করে মোট ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। সবশেষ ৩০ অক্টোবর ৫০টি মসজিদ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সারা দেশে ৩০০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতিকেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়।
দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্পের এ ক্যাটাগরির অধীনে, ৬৪টি জেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় লিফট সুবিধা এবং ২ হাজার ৩৬০ বর্গ মিটার প্রতিটি ফ্লোর স্পেসসহ প্রায় ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়। বি ক্যাটাগরির অধীনে, প্রতিটি ১ হাজার ৬৮০ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেস দিয়ে ৪৭৫টি মসজিদ তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয় এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সি ক্যাটাগরির অধীনে ১৬টি মসজিদের প্রতিটি ২ হাজার ৫২ বর্গ মিটার মেঝে তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ-২০২৪ এর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এই ভাষণ দেন।
সংস্কারের বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এ জন্য সর্বশেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেমন ধরুন-কোন বয়সে একজন নাগরিক ভোটার হতে পারবে তার জন্য নানা দেশে নানা বয়স নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন নিশ্চয়ই এরকম একটা বয়স সুপারিশ করবে। সে বয়স আমার পছন্দ হতেও পারে না-ও হতে পারে। ধরুন আমি তরুণদের তাড়াতাড়ি ভোটার করার পক্ষে। যে যত তরুণ, পরিবর্তনের প্রতি তার আগ্রহ তত বেশি—এই হলো আমার যুক্তি। তরুণরা তাকে শক্তি যোগায়। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা তাকে এই শক্তি যোগায়। তরুণরা সংখ্যায়ও বেশী। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন কি ধরনের সুপারিশ করবেন তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে ঐক্যমতে পৌঁছার জন্য আমি তা মেনে নেব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের যে মহান দায়িত্ব ঐতিহাসিক কারণে আমাদের কাছে এসে গেছে এই দায়িত্ব আমাদের প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দল, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক এবং ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রত্যেককে দৃঢ়তার সঙ্গে সংস্কারের এই মহাযজ্ঞে আনন্দের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল বাংলাদেশকে মুক্ত করেনি, আমাদের স্বপ্নকেও তুমুল সাহসী করে তুলেছে। বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ় কণ্ঠ ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে। ঐক্য আমাদের মূল শক্তি।
জুলাই অভ্যুত্থান আমাদেরকে ঐতিহাসিক মাত্রায় বলিয়ান করেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গত পাঁচ মাসে এই ঐক্য আরও শক্তিশালী হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করার ক্রমাগত প্রয়াস চালাতে থাকায় আমাদের ঐক্য আরও মজবুত হচ্ছে। এই ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে যেটা সকল নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
তিনি বলেন, যত নিম্ন আয়ের পরিবারেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন- প্রতিটি নাগরিকের, তিনি নারী হোক, আর পুরুষই হোক তিনি যেন বিনা বাধায় তো বটেই বরং রাষ্ট্রের আয়োজনে তার সৃজনশীলতা প্রকাশ করে যে কোনো পর্যায়ের উদ্যোক্তা হতে পারেন বা তিনি যে ধরনের কর্মজীবন চান তাই বেছে নিতে পারবেন। এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ থাকবে যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু এই পরিচিতি অবান্তর হয়ে পড়বে। সবার একটিই পরিচয়-আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং রাষ্ট্র আমাকে আমার সকল অধিকার প্রদান করতে বাধ্য।
ড.ইউনূস আরও বলেন, রাষ্ট্রের কাছে এবং অন্য নাগরিকের কাছে আমার আর কোনো পরিচয় দেবার প্রয়োজন হবে না। যেখানে ব্যক্তি বন্দনার কোনো সুযোগ থাকবে না। দেশের ভেতরে বা বাইরে প্রভু-ভৃত্যের কোনো সম্পর্কের সুযোগ থাকবে না। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুবাদে হবো বিশ্ব নাগরিক। দেশের মঙ্গল সাধন করা যেমন হবে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব, তেমনি বিশ্বের মঙ্গল সাধন করাও আমাদের কর্তব্য, এ দায়িত্বও আমরা সমানভাবে পালন করব। আমাদের তরুণ-তরুণীরা দ্রুত এই দুই দায়িত্ব সমানভাবে পালন করার জন্য প্রস্তুতি নেবে।
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের যোদ্ধাদের স্মরণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের সকল যোদ্ধাদের। বিশেষ করে অভিবাদন জানাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছাত্রজনতাকে। যারা আহত হয়েছেন, চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তাদের প্রতি আমাদের ঋণ শোধ হওয়ার নয়। নতুন বাংলাদেশ গঠনে তাদের প্রেরণা ও অবদান জাতি কখনো ভুলতে পারবে না।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের রূপান্তর পর্বে প্রবেশ করার অধিকার অর্জন করেছি। এই রূপান্তর দ্রুত সফলভাবে কার্যকর করার জন্য আমাদেরকে সকল শক্তি নিয়োজিত করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে। পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। আমাদের এই কাঙ্ক্ষিত রূপান্তরের লক্ষ্য হবে সকল ধরনের বৈষম্য অবসানের রাজনৈতিক আয়োজন নিশ্চিত করা, এদেশে গণতান্ত্রিক ও নাগরিক সমতা ভিত্তিক একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ ছাড়া জুলাইয়ের শহীদদের আত্মদান অর্থবহ হতে পারে না।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশকে আদর্শভিত্তিক সকল রকমের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে গভীর অন্ধকারের দিকে আমাদেরকে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার প্রিয় বাংলাদেশকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের পথে ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন- এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। পাশাপাশি আমরা ভুলতে পারি না যে, আমাদের ছাত্র-জনতা অটুট সাহসে শিশুহত্যাকারী ও পৈশাচিক ঘাতকদের মোকাবিলা করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে এমন নিষ্ঠুরতাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে থাকবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ মূলত নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু সংস্কারের কাজে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে হবে। যারা ভোটার তারা তো অংশগ্রহণ করবেনই, তার সঙ্গে যারা ভবিষ্যতে ভোটার হবেন তারাও সর্বাত্মকভাবে সংস্কারের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করুন।
তিনি বলেন, সংস্কারের কাজটা নাগরিকদের জন্য সহজ করতে আমরা ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তাদের প্রতিবেদন আমরা জানুয়ারি মাসে পেয়ে যাব। প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। যার যার ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কিভাবে রচিত হবে তা বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে দেয়া। এতে নাগরিকদের পক্ষে মতামত স্থির করা অনেকটা সহজ হবে। তবে কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ করলেই আমাকে-আপনাকে তা মেনে নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করতে চাই উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, সব ক’টা কমিশন মিলে আমাদের সামনে বহু সুপারিশ তুলে ধরবে। আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐক্যমতে পৌঁছে সংস্কারের কাজগুলো করে ফেলতে চাই। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে চাই। আপনাদের আজকের সংলাপ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন একটি প্রক্রিয়া তুলে ধরে আমাদের এই দায়িত্বকে সহজ এবং গতিময় করে দেবে আশা করছি।
উপদেষ্টা সংলাপের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা: নিহত ৫
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসের ধাক্কায় প্রাইভেটকার ও বাইক দুমড়ে মুচড়ে ৫ জন নিহত হয়েছেন। কমপক্ষে আরও ৪ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মুন্সীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের উপ সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম জানান, মাওয়াগামী প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে বেপারী পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দিলে প্রাইভেটকার এবং একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কবলিত হয়।
সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসসহ তাৎক্ষণিক সেখানে থাকা লোকজন দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এতে ঘটনাস্থলেই বাইকে থাকা এক শিশু নিহত এবং আহত ৮ জনকে ঢাকার হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও ৪ জন মারা যান। যানবাহনগুলো সরিয়ে নেয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।