পুঁজিবাজার
সোনালী লাইফের ১৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের পেছনে যে ১৯ কারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ১৬৬ টাকা টাকা আত্মসাতের বিষয় তুলে ধরেছে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী এন্ড কোম্পানি। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নির্দেশনায় নিরীক্ষা কোম্পানিটি সোনালী লাইফের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়বস্তু তুলে ধরে।
কোম্পানিটি জানায়, মোট ১৯ কারণে সোনালী লাইফের ১৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ বাকি পরিচালনা পর্ষদ। তবে এখানেও অনিয়ম ও দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি ফুটে ওঠেনি। পূর্ণাঙ্গ আর্থিক চিত্রের জন্য কোম্পানিটির বিস্তারিত নিরীক্ষা প্রয়োজন।
সোনালী লাইফের অর্থ আত্মসাতের পেছনে যে ১৯ কারণ
ক) কোম্পানির পরিচালক মিসেস নূর এ হাফজা, মিসেস ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, রূপালী ইন্সুরেন্স কোঃ, মিসেস শাকিয়া সোবহান চৌধুরী ও মি. শেখ মোহম্মদ ডানিয়েল এর নিকট থেকে কোনো টাকা গ্রহণ না করেই তাদের নামে মোট ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে।
খ) কোম্পানির এফডিআর এর বিপরীতে সাউথ বাংলা ব্যাংক হতে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার ঋণ ও সঞ্চয়ী হিসাব হতে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা মোট ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে একই ব্যাংকে কোম্পানির হিসাবে জমা করা হয়। যা উল্লিখিত পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়মূল্য হিসেবে প্রদর্শন করা হয়।
গ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দস তার স্ত্রী মিসেস ফজিলাতুন নেসা, পুত্র মোস্তফা কামরুস সোবহান ও কন্যা ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, তাসনিয়া কামরুন আনিকা, মোস্তফা কামরুস সোবহান তার স্ত্রী শাফিয়া সোবহান চৌধুরী, তাসনিয়া কামরুন আনিকার স্বামী শেখ মোহাম্মদ ড্যানিয়েল পরস্পরের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তর করে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম শেয়ার ধারণের মাধ্যমে পরিবারের ০৭ জন সদস্য কোম্পানির বোর্ডে পরিচালক রেখে পারিবারিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে অনিয়মের সুযোগ তৈরী করেছেন।
ঘ) জুলাই, ২০২৩ হতে কোম্পানির ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকা হিসেবে মোট ১৮ কোটি টাকা মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটারকে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে প্রদান করা হয়।
ঙ) বোর্ড সভার কার্যবিবরণীর জাল উদ্ধৃতাংশ দাখিল করে কোম্পানির এফডিআর এর বিপরীতে স্যোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক হতে মোট ১৯৫ কোটি ৪২ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা ঋণ গ্রহণ এবং তারমধ্যে ৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা কোম্পানির বিভিন্ন এ্যাকাউন্টে কয়েকবার স্থানান্তরের পর মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে জমা করে। যা আত্মসাৎ এবং ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ ইতোমধ্যে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ৭ হাজার ৪৯৮ টাকা কোম্পানির ক্ষতি সাধন হয়েছে।
চ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ইম্পেরয়িাল ভবন কোম্পানি কর্তৃক ক্রয়ের জন্য স্বাক্ষরিত ২টি সমঝোতা চুক্তির ফটোকপি তদন্তকালে পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে জমি ও ভবনের মূল্য ৩৫০ কোটি টাকা এবং ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে মূল্য ১১০ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা মূল্য উল্লেখ আছে। উভয় চুক্তিই স্বাক্ষরকারী কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত সি.ই.ও. রাশেদ বিন আমান (১ম পক্ষ) ও মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস (২য় পক্ষ) এবং সাক্ষী হিসেবে মিসেস নূর এ হাফজা ও মি. মোস্তফা কামরুস সোবহান। জমি-ভবনের ক্রয়ের উদ্দেশ্য, মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, ধার্যকৃত মূল্য ও অন্যান্য শর্ত নির্দিষ্ট করে সমঝোতা চুক্তি দুটির কোনোটির বিষয়েই বোর্ডের কোনো সিদ্ধান্ত নেই এবং অসৎ উদ্দেশে চুক্তি দুটি করা হয়েছে।
ছ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ড্রাগন ইনফরমেশন টেকনোলজি ও কম্যুনিকেশন লি:, ড্রাগন সোয়েটার লি:, ইম্পেরিয়াল সোয়েটার লি: ও ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লি: বরাবর বিভিন্ন সময়ে ১৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান। যা এ্যাকাউন্ট হেডে “মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, ল্যান্ড ওনার, এ্যাডভান্স এগেইন্সট ল্যান্ড” লেখা আছে। স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়ের নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিত অগ্রিম পরিশোধ অবৈধ। প্রকৃতপক্ষে আত্মসাৎকৃত অর্থ জমি/ভবন ক্রয়ের অগ্রিম হিসেবে বৈধতা দেয়ার অপপ্রয়াস নেয়া হয়েছে।
জ) ইম্পেরিয়াল ভবন ১২.৫০ কাঠা জমির উপর নির্মিত হলেও ৭ কাঠা জমির উপর ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন আছে। অবশিষ্ট ৫.৫০ কাঠার বরাদ্দপত্র, লীজ চুক্তি ও ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেই। ফলে জমির মালিকানা নিষ্কন্টক নয় ও ভবন নির্মাণ অবৈধ।
ঝ) কোম্পানির তহবিল থেকে ২০২১-২৩ মেয়াদে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ড্রাগন সোয়েটার লি: কে সোয়েটার ক্রয়বাবদ ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, ইম্পেরিয়াল স্যুটস এন্ড কনভোকেশন সেন্টারকে আপ্যায়ন বাবদ ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬২ হাজার ৫৯২ টাকা এবং ড্রাগন ইনফরমেশন টেকনোলজি ও কম্যুনিকেশন লি:-কে ইআরপি মেইনটেনেন্স ও সোয়েটার ক্রয় বাবদ ৩ কোটি ৪২ লাখ ৬২২৫ টাকা অর্থাৎ মোট ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৮ ৮১৭ টাকা অবৈধভাবে প্রদান করা হয়।
ঞ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজে ও তার পরিবারের ৬ সদস্য এবং আরেকজন পরিচালক সাবেক চেয়ারম্যান নুর এ হাফজাসহ মোট ৮ জন পরিচালক অবৈধভাবে মাসিক বেতন হিসাবে মোট ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা গ্রহণ করে।
ট) আইডিআরএ এর সার্কুলার অমান্য করে চেয়ারম্যানের জন্য ১.৭০ কোটি টাকায় একটি বিলাসবহুল গাড়ি (ওডি কার) ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৭-৩৬৯৫০ ক্রয় এবং ২০২১-২৩ মেয়াদে নতুন গাড়ির কথিত রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২১ লাখ ৫২ হাজার ৫০৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়।
ঠ) কোম্পানির ঘোষিত ডিভিডেন্ডে অতিরিক্ত ডিভিডেন্ড বাবদ বিবিধ খাত থেকে রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং পরিচালক নুর এ হাফজাকে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ ১০৭৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়। যা অবৈধ ও আত্মসাৎ।
ড) কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বিদেশে চিকিৎসার খরচ বাবদ ১ কোটি ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ টাকা, ভ্রমণ ও শপিং বাবদ ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪৮০ টাকা এবং মেয়ের বিদেশে পড়াশোনার ব্যয় বাবদ ৪৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা অর্থাৎ মোট ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার ২৮০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলোন করে পেটিক্যাশ খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে। যা অবৈধ ও আত্মসাৎ।
ঢ) পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ড্যানিয়েলকে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার ওনার এসোসিয়েশনের গ্রুপ বীমা পলিসি থেকে অবৈধভাবে ৯ লাখ টাকা কমিশন প্রদান এবং তিনি পদত্যাগ করে পরিচালক না থাকাকালীন ১১টি বোর্ড সভায় অবৈধভাবে অংশগ্রহণ ও ৮৮ হাজার টাকা সম্মানী গ্রহণ করেন এবং পরিচালক না হয়েও চেক স্বাক্ষর করেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
ণ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের ব্যক্তিগত ঋণ সমন্বয় বাবদ ২০১৬-১৮ সালে ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিজিএমইকে অনুদান ৫২ হাজার ৫০০ টাকা, এসি (আনিকার জন্য) ক্রয় ১ কোটি ৮১ লাখ ৭৭৮ টাকা, বিবাহ বার্ষিকীর উপহারবাবদ ১৫ লাখ টাকা, এমডির জন্মদিন উদযাপনের সাজসজ্জা, ডায়মন্ড রিং ইত্যাদি বাবদ ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ২০২২ সালে চেয়ারম্যানের কুরবানির গরু ও ২০২৩ সালে ঈদে এতিমখানার জন্য গরু ক্রয় বাবদ ৯ লাখ ২৭ টাকা, পারিবারিক বিনোদন- সোনারগাঁও হোটেলের বিল ও ফ্যান্টাসি কিংডম ভ্রমণ ব্যয় ৩ লাখ ৪২ হাজার ২৪০ টাকা, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বিদেশ (লন্ডন, দুবাই ইত্যাদি) ভ্রমণ ব্যয় ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬১ টাকা, আইপিও খরচের নামে অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা, পলিসি নবায়ন উপহার বাবদ নিজ প্রতিষ্ঠানের জন্য ১ কোটি ৫২ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকা সর্বমোট ৮ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫৯ টাকা প্রদান করা হয়েছে। যা অবৈধ ও কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ।
ত) কোম্পানির অফিসের জন্য মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ইম্পেরিয়াল ভবনের ২০১৩ সাল হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ভাড়ার চুক্তি দেখিয়ে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভাড়া বাবদ ১১ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ১৭ টাকা ড্রাগন সোয়েটারকে অবৈধভাবে প্রদান করা হয়েছে।
থ) ইম্পেরিয়াল ভবনে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ছাড়াও ইম্পেরিয়াল ক্যাফে, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইম্পেরিয়াল স্যুটস এন্ড কনভেনশন সেন্টার, স্টার্লিং স্টক এন্ড সিকিউরিটিজ, রূপালী ইন্স্যুরেন্স ও ইম্পেরিয়াল হেল্থ ক্লাব (জিম) থাকলেও পুরো ভবনের বিদ্যুৎ ও ওয়াসার বিল সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে ১ কোটি ৭২ লাখ ৪২ হাজার ২২৩ টাকা পরিশোধ করে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি সাধন ও অবৈধভাবে সুবিধা গ্রহণ করা হয়েছে।
দ) ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লিমিটেডের ট্যাক্স বাবদ কোম্পানির বিবিধ খাত হতে ১৩ লাখ ৭৫ টাকা উপকর কমিশনার, সার্কেল ২২৮, জোন ১১ বরাবর পরিশোধ করা।
ধ) উপর্যুক্ত বিবরণ অনুযায়ী অবৈধভাবে কোম্পানির তহবিল থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ মোট ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ১৬৬ টাকা। এরপরেও নিরীক্ষক জানিয়েছেন, তদন্ত কার্যক্রম কার্যপরিধির মধ্যে সীমিত রেখে নমুনা ভিত্তিক যাচাইয়ের ফলে সকল অনিয়মের তথ্য এ প্রতিবেদনে আসেনি। পূর্ণাঙ্গ আর্থিক চিত্রের জন্য কোম্পানিটির বিস্তারিত নিরীক্ষা প্রয়োজন। কোম্পানির অসম্পূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ বা তথ্য গোপন, অস্বচ্ছ হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি, অভ্যন্তরীণ কন্ট্রোল সিস্টেমের অনুপস্থিতি এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ব্যাংক সিগেনেটরিরা প্রায় সবাই একই পরিবারের সদস্য হওয়ায়, কোম্পানির অর্থ আত্মসাতের সহায়ক হয়েছে। এছাড়া বছরে গড়ে ২২ কোটি বা মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা পেটি ক্যাশ হিসেবে ব্যয় হয়েছে এবং এককালীন বড় অংকের লেনদেন ক্যাশ চেকে হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী ও অর্থ তসরূপের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
সার্বিক পর্যলোচনায় সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর বোর্ডের কতিপয় পরিচালকের দ্বারা কোনো আইন ও আর্থিক বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে পরিচালনার ফলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে এবং বীমাকারী ও বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ মারাত্মক হুমকীর সম্মুখীন হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এবং বীমাকারীও বিপুল সংখ্যক বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার্থে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে বীমা আইন, ২০১০ এর ৯৫ ধারা মোতাবেক কোম্পানীর বোর্ড “সাসপেন্ড” করে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীনে বীমাকারীর কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা সমীচীন প্রতীয়মান হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান বেড়েছে হামিদ ফেব্রিক্সের

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হামিদ ফেব্রিকস পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর’২৪-ডিসেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একেই সময়ের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে ৩২ পয়সা লোকসান হয়েছিলো।
অন্যদিকে, চলতি হিসাববছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই’২৪–ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৮৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ২১ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩০ টাকা ৮১ পয়সা।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ব্লকে ১৮ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে ২৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৭০ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪৮টি শেয়ার ৫৭ বার হাতবদল হয়েছে। এসব শেয়ারের আর্থিক মূল্য ১৮ কোটি ৮৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সোমবার (২১ এপ্রিল) ব্লকে সবচেয়ে বেশি মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা রেনেটার ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ও তৃতীয় স্থানে থাকা এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের ২ কোটি ১২ টাকার লেনদেন হয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সিএসইতে ইডিইউ’র ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফর

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (সিএসই) কার্যালয়ে তাদের শিক্ষা সফর সম্পন্ন করেছে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে বাস্তব ধারণা ও প্রায়োগিক পরিচালনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা গ্রহন করতে এবং তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা সফর করেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সিএসইর আগ্রাবাদ চট্রগ্রামস্থ কার্যালয়ে ইডিইউ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফর করেছেন।
অনুষ্ঠানে সিএসই কর্তৃপক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার, চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) মোহাম্মদ মাহাদী হাসান, সিএফএ, ম্যানেজার, কমপ্লায়েন্স, ইন্সপেকশন এন্ড এনফোর্সমেন্ট আদনান আব্দুর রাকিব এবং ম্যানেজার, ইস্যু মার্কেটিং, প্রোমোশন এবং প্রি-লিস্টিং ডিপার্টমেন্ট মোহাম্মাদ হাবিব উল্লাহ।
অধিবেশনটি পরিচালনা করেন হেড অফ ট্রেনিং অ্যান্ড এওয়্যারনেস এম সাদেক আহমেদ। অনুষ্ঠানে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর এ কাইয়ুম চৌধুরী।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার এখনও বেশ অপরিপক্ক। একটি দক্ষ মার্কেটের জন্য প্রয়োজন আরও শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্ন জনবল। এখানে অনেক নতুন নতুন প্রোডাক্ট আনার সুযোগ যেমন আছে তেমনি প্রয়োজন রয়েছে নতুনদের সাহসী পদক্ষেপ। আমাদের রেগুলেটরি ও সরকারী কাঠামোর আমূল পরিবর্ধন প্রয়োজন। একই সাথে নতুন কনসেপ্টগুলোর দ্রুত মূল্যায়ন এবং বাস্তবায়নের কার্যকরী পদক্ষেপ এই মার্কেট তথা সমগ্র অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।
চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) মোহাম্মদ মাহাদী হাসান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগকারী এবং কর্ণধার উভয়ই হবে আজকের শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষাকালীন সময় থেকেই এই পুঁজিবাজার এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে জানা, গবেষণা করা, সম্যক জ্ঞান লাভ করা এবং সুযোগ থাকলে প্রায়োগিক জ্ঞান গ্রহণ করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদেরকে এখন থেকেই পুঁজিবাজার এবং এর কার্যক্রম বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সময় দিতে হবে। শিক্ষা শেষে শিখবো, জানবো এই ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে এবং ভবিষ্যৎ ইনভেস্টর বা কর্ণধার হওয়ার জন্য এখন থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে জ্ঞান অন্বেষণের জন্য সিএসইতে তাদের দ্বার সব সময় খোলা বলে তিনি উপস্থিতিদেরকে অবহিত করেন।
প্রফেসর এ কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ফিনান্সিয়াল মার্কেটে, ক্যাপিটাল মার্কেট হচ্ছে অর্থনীতির একটি শক্তিশালী ভিত্তি। আমাদের বাংলাদেশের পুঁজি বাজার এখনও বেশ ছোট তবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ এবং অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী এবং তাদের উদ্যোগ/অংশগ্রহণ এই মার্কেটকে আরও প্রানবন্ত করবে। বাংলাদেশের বর্তমান পুঁজিবাজারের অবস্থানের পেছনে সিএসই সব সময়ই অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আসছে। যার সাম্প্রতিক একটি উদাহরন হল কমোডিটি এক্সচেঞ্জ-এর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। তিনি উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা সামনে এই পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক আজকের এই শিক্ষা সফরই হতে পারে তাদের প্রথম পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বর্তমানে প্রচলিত এবং অদূর ভবিষ্যতে নতুন চালুকৃত প্রোডাক্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন। এছাড়াও আর্থিক পরিকল্পনা, ঝুঁকি এবং পুঁজিবাজারের সাথে সম্পর্কিত রিটার্ন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সুরক্ষার জন্য তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা প্রদান করতে ও প্রায়োগিক পরিচালনা বিষয়ে অবহিত করতে এম সাদেক আহমেদ উপস্থাপনা প্রদান করেন। এরপর সিআরও এবং অন্যান্য উপস্থিত বিভাগীয় প্রধানগণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীরা সম্যক ধারণার জন্য এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন বিভাগ গুলো পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী এবং বিনিয়োগ শিক্ষার অংশ হিসেবে সিএসই প্রতিনিয়তই এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমন্ত্রণ ও স্বাগত জানিয়ে আসছে বলে জানান সিএসই।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
রানার অটোমোবাইলসের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস পিএলসি পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২৪ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩৫মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত সভায় ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
নর্দার্ন ইসলামি ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভার তারিখ নির্ধারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নর্দার্ন ইসলামি ইন্স্যুরেন্স পিএলসি পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩০মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচিত সভায় ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এছাড়াও, একই সভায় ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এসএম