আন্তর্জাতিক
জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১০০ ডলার ছাড়াতে পারে

মধ্যপ্রাচ্য বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী অঞ্চল। জ্বালানির বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হরমুজ প্রণালি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের রফতানিকারকরা প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিবহন করে, যা বৈশ্বিক ব্যবহারের এক-পঞ্চমাংশ। এ অঞ্চলে চলমান রাজনৈতিক সংঘাত ও অনিশ্চয়তা আরো প্রকট হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানিটির সরবরাহ ঝুঁকির মুখে পড়বে। ফলে নিকট ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেলের দাম বেড়ে ১০০ ডলারে উন্নীত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আইসিই ফিউচারস ইউরোপে গতকাল জুনে সরবরাহ চুক্তিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার ২ সেন্টে লেনদেন হয়েছে। অন্যদিক নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) মে মাসে সরবরাহ চুক্তিতে দাম ছিল ৮৫ ডলার ৩৫ সেন্ট।
বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত যদি জ্বালানি তেলের সরবরাহকে সরাসরি ব্যাহত করে, তবে প্রতি ব্যারেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক সিটি গ্রুপের এক বিবৃতিতেও একই আভাস পাওয়া গেছে।
লিপো অয়েল অ্যাসোসিয়েটস জানায়, ইরান হরমুজ প্রণালি দিয়ে জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকার চলাচল বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। ফলে সরবরাহ ধারা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। এর প্রভাবে প্রতি ব্যারেলের দাম উঠতে পারে ১৩০ ডলারে। লিপো অয়েল অ্যাসোসিয়েটসের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ডি লিপো বলেন, ‘ইরানের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কিংবা রফতানি অবকাঠামোয় যেকোনো ধরনের হামলা ব্রেন্টের দামকে বড় উল্লম্ফনের দিকে ঠেলে দেবে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য ঠেকতে পারে ১০০ ডলারে। এছাড়া হরমুজ প্রণালি দিয়ে জ্বালানি তেল পরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে প্রতি ব্যারেলের মূল্য দাঁড়াতে পারে ১২০-১৩০ ডলারে।’
বহুজাতিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান সোসিয়েতে জেনেরালের হিসাব অনুযায়ী, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়লে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১৪০ ডলারে পৌঁছতে পারে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ব্রেন্টের মূল্য পূর্বাভাস ১০ ডলার বাড়িয়েছে।
তথ্য বলছে, সম্প্রতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুতগতিতে প্রসার ঘটছে চীনের অর্থনীতিতে। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পরই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এক দফা বাড়ে। কারণ চীনে ইতিবাচক অর্থনীতির মানে হলো সেখানে জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা ও আমদানি বাড়বে। তবে রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ, খুচরা বিক্রি ও শিল্প খাতের উৎপাদনসহ বেশকিছু বিষয় চাহিদা বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম গত সপ্তাহে বেড়ে প্রায় ছয় মাসের সর্বোচ্চে উঠে গিয়েছিল। তবে গত সোমবার তা কমে যায়। কারণ ইসরায়েলে ইরানের হামলায় ক্ষয়ক্ষতি তেমন একটা হয়নি। ফলে সংঘাতের তীব্রতা নিয়েও উদ্বেগ কিছুটা কম ছিল। তবে ইসরায়েল এ হামলার জবাব দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় সেকেন্ডের মধ্যে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ফের তীব্রতার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এতে দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের অন্যতম বৃহৎ সদস্য দেশ ইরান। দেশটি প্রতিদিন ৩০ লাখ ব্যারেলেরও বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করে। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোয় দেশটির উত্তোলন ও রফতানি দুটোই ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববাজারে দাম বাড়াতে গত বছর কয়েক দফায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রফতানি কমিয়েছে ওপেক এবং সহযোগী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। ফলে জ্বালানিটির বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিষয়টিও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে প্রভাব রাখছে।

আন্তর্জাতিক
ঈদ উপলক্ষে ৬৪৫ কয়েদিকে ক্ষমা করে দিলেন ওমানের সুলতান

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬৪৫ জন কারাবন্দিকে ক্ষমা করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক। ক্ষমাপ্রাপ্ত কারাবন্দিদের মধ্যে ওমানি নাগরিকদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিকও আছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সুলতানের দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতি থেকে জানা গেছে এ তথ্য। খবর গালফ নিউজের।
মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদিদের মধ্যে কতজন বিদেশি নাগরিক আছেন, তা উল্লেখ করা হয়নি বিবৃতিতে। তবে, বলা হয়েছে যে এই বিদেশিদের শিগগিরই নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
১৯৫৫ সালে জন্ম নেওয়া হাইথাম বিন তারিক ওমানের সিংহাসনে আরোহন করেন ২০২০ সালে। তিনি একইসঙ্গে ওমানের সুলতান এবং প্রধানমন্ত্রী। সিংহাসনে আরোহনের আগে তিনি ওমানের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বৃহস্পতিবারের রাজকীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মাননীয় সুলতান মানবিক মূল্যবোধের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারই প্রতিফলন হলো ঈদুল আজহার আগে ৬ শতাধিক কারাবন্দির মুক্তি। এদের মধ্যে যারা বিদেশি নাগরিক, তাদের রাষ্ট্রীয় খরচে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ওমান সবসময়েই দয়া, ঐক্য এবং সামাজিক সংহতিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। মাননীয় সুলতান মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদি এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে ঈদ উল আযহা

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে আজ (শুক্রবার, ৬ জুন) পালিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আযহা। সকালেই ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পালন করছেন কুরবানির আনুষ্ঠানিকতা।
চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশেই আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়াতেও।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিনায় ফিরছেন হাজিরা
ভৌগোলিক কারণে ঈদের প্রথম আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ায়। আজ ঈদ পালন করছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়ও।
এছাড়া ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী কয়েক ঘণ্টা আগে-পরে ঈদ উদযাপন হচ্ছে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মরক্কো, মৌরিতানিয়া, ব্রুনেই এবং মালয়েশিয়ায় ঈদ উল আযহা উদযাপিত হবে আগামীকাল শনিবার।
আন্তর্জাতিক
হজ পালনে সৌদি পৌঁছেছেন ১৫ লক্ষাধিক বিদেশি হজযাত্রী

চলতি বছর হজ পালনের জন্য ১৫ লাখের বেশি আন্তর্জাতিক হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বুধবার (৪ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির হজ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঘাসসান আল-নুয়াইমি। তবে এবার সৌদির স্থানীয় হজযাত্রীর সংখ্যা কতজন, তা জানানো হয়নি।
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হজ, যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলিমের জীবনে একবার পালন করা ফরজ। এতে রয়েছে ধারাবাহিকভাবে নির্ধারিত কিছু ইবাদত ও আনুষ্ঠানিকতা, যা মক্কা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে সম্পন্ন করতে হয়।
গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ১৬ লাখ ১১ হাজার ৩১০ জন হজযাত্রী হজ করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।
এ বছর গত বুধবার থেকে হজযাত্রীরা আরাফার ময়দানে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ প্রচণ্ড গরমে (যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি) হেঁটে মালপত্র বহন করে আরাফার দিকে যাচ্ছেন। অনেককে বয়স্ক সঙ্গীদের সাহায্য করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আরাফায় পৌঁছে বিশ্রাম নিচ্ছেন বা খাবার খাচ্ছেন, এরপর তাঁবুর উদ্দেশে যাত্রা করছেন।
মক্কা নগরীর দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আরাফার ময়দান একটি পবিত্র পাথুরে স্থান। এর ধর্মীয় তাৎপর্য অনেক। কোরআনে এই স্থানের উল্লেখ রয়েছে এবং ধারণা করা হয়, হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণ এখানেই দিয়েছিলেন।
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, আরাফার দিন হলো বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন, যখন আল্লাহ তার বান্দাদের নিকট আসেন এবং তাদের গুনাহ মাফ করেন।
হজযাত্রীরা মধ্যরাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করে নামাজ, দোয়া ও আত্মমগ্নতায় সময় কাটান। বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর তারা মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হবেন। সেখানে তারা শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
দশকের পর দশক ধরে সৌদি আরব হজ ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে। তবে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জই রয়ে গেছে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র গরম দিন দিন আরও উদ্বেগ তৈরি করছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বিন আবদুর রহমান আল-জালাজেল সম্প্রতি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, হজযাত্রীদের স্বস্তি দিতে ১০ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে বেড সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং প্যারামেডিকের সংখ্যা তিনগুণ করা হয়েছে।
কাফি
আন্তর্জাতিক
মরক্কোতে খরা-সংকটে কোরবানি বন্ধ, সরকারি আদেশ জারি

গত কয়েক বছর ধরে প্রচণ্ড খরা চলছে মরক্কোতে। এছাড়া আরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে দেশটি। যে কারণে পশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। যার কারণে যেসব পশু অবশিষ্ট আছে সেগুলো রক্ষায় এ বছর কোরবানি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে দেশটি।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ মরক্কোতে কাল শুক্রবার (৬ জুন) উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন বিশ্বের সব মুসল্লি পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে মুসলিম প্রধান দেশ মরক্কোতে এ বছর কোরবানি না দিতে রাজকীয় ডিক্রি (সরকারি আদেশ) জারি করা হয়েছে।
দেশটির ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ তৌফিক রাষ্ট্রায়াত্ত্ব টিভিতে বুধবার (৪ জুন) রাজা পঞ্চম মোহাম্মদের জারি করা রাজকীয় ডিক্রিটি পড়ে শোনান। এই ডিক্রিতে রাজা পঞ্চম মোহাম্মদ সাধারণ মানুষকে এ বছর কোরবানি না দিতে অনুরোধ জানান।
কেন এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত?
মরক্কোর সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশটিতে গত কয়েক বছর ধরে প্রচণ্ড খরা চলছে। এছাড়া আরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে মরক্কো। যে কারণে পশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। যেসব পশু এখনো অবশিষ্ট আছে সেগুলো রক্ষায় এ বছর কোরবানি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া কৃষিখাতের স্থায়িত্ব রক্ষাতেও এমন বিতর্কিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সাধারণ মানুষ যেন এই সরকারি আদেশ অমান্য করতে না পারেন সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ও তদারকি বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া পশু পরিবহনের পথেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। কেউ আদেশ অমান্য করে পশু কোরবানি করলে তাকে বিপুল অর্থ জরিমানা এমনকি কোরবানির পশু জব্দ করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে।
তবে দেশটির একটি কৃষি সংগঠনের প্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আমের জানিয়েছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কৃষকদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এমনিতেই খরার কারণে তারা লসে আছেন। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঈদকে সামনে রেখে তারা পশু প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু এখন কৃষকরা যদি এগুলো বিক্রি করতে না পারেন তাহলে আরও ক্ষতির মুখে পড়বেন। তিনি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সরকারি বাহিনী বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে সাধারণ মানুষের কেনা ভেড়া জব্দ করছে। এটি ভাইরাল হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন তারা এই সরকারি আদেশ কোনোভাবেই মানবেন না এবং ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন।
কাফি
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একদিনে রেকর্ড অভিবাসী আটক

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই) গত মঙ্গলবার সংস্থার ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে। এর সংখ্যা ২ হাজার ২০০-এর বেশি। আইসিই-এর একজন মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হোয়াইট হাউসের চাপের মুখে দ্রুত ও ব্যাপক হারে গ্রেফতার বাড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এনবিসি নিউজকে আইসিই সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া অভিবাসীদের শত শত জনই আইসিই-এর ‘আটকের বিকল্প’ (এটিডি) প্রোগ্রামের আওতায় ছিলেন। এই প্রোগ্রামের অধীনে যেসব অনিবন্ধিত অভিবাসীকে জনসুরক্ষার জন্য হুমকি মনে করা হয় না, তাদের শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর তাদের অবস্থান নজরদারিতে রাখা হয় গোড়ালির মনিটর, স্মার্টফোন অ্যাপ বা অন্যান্য জিওলোকেশন প্রযুক্তি এবং নিয়মিত আইসিই অফিসে রিপোর্ট করার মাধ্যমে।
অন্তত কিছু গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আইসিই নতুন একটি কৌশল অবলম্বন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশজুড়ে অভিবাসন আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এটিডি প্রোগ্রামে থাকা তাদের কিছু ক্লায়েন্টকে আইসিই একটি গণ বার্তার মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের আগেই সাক্ষাতে হাজির হতে বলে। কিন্তু তারা পৌঁছানোর পরই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এনবিসি নিউজের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তারের কারণ ব্যাখ্যা চাওয়া হলে-একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের ক্লায়েন্টদের চূড়ান্ত নির্বাসন আদেশ ছিল না- আইসিই মুখপাত্র তখন তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।
এই গ্রেফতারের ঢেউ হোয়াইট হাউসের নীতিনির্ধারণী উপ-প্রধান স্টিফেন মিলারের চাপের পরপরই শুরু হয়েছে। তিনি গত মাসে আইসিই নেতৃত্বের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছিলেন, সংস্থাটি প্রতিদিন ৩,০০০ গ্রেফতার না করলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হবে—এমন হুমকির কথা জানিয়েছেন দুজন অংশগ্রহণকারী সূত্র।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ‘লক্ষ লক্ষ’ অভিবাসীকে নির্বাসিত করবেন, আর তার সীমান্ত নীতিবিষয়ক কর্মকর্তা টম হোম্যান বলেছেন, প্রশাসন ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক’ অভিবাসীদের লক্ষ্য করবে।
তবে সাবেক আইসিই কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাম্পের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাস্তবসম্মত নয় এবং শুধুমাত্র অপরাধী অতীত আছে এমনদের লক্ষ্য করতে গিয়ে সংস্থার ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হচ্ছে।
আইসিই-এর তথ্য অনুযায়ী, গত মাসের শেষ নাগাদ সংস্থাটি ২০,০০০-এর বেশি গোড়ালি মনিটর ব্যবহার করছিল। একই তথ্য বলছে, এটিডি প্রোগ্রামে থাকা ৯৮.৫% মানুষ তাদের সাক্ষাতে হাজির হন, ফলে গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়াতে তারা সহজ টার্গেট হয়ে উঠেছেন।