শিল্প-বাণিজ্য
চট্টগ্রামে বেড়েছে পাম অয়েলের দাম
চট্টগ্রামে পাইকারি পর্যায়ে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণে ৫০০ টাকা। গ্রীষ্ম মৌসুমে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোজার আগেও মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম অয়েল লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার টাকার মধ্যে। রোজার শুরুতে খুচরা ও পাইকারি বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়তে থাকে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের বুকিং দর কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে হঠাৎ উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। গত দুই সপ্তাহে এরই মধ্যে পণ্যটির মণপ্রতি দাম বেড়েছে প্রায় ২৫০ টাকা। তবে পাম অয়েলের দাম বাড়লেও সয়াবিনের দাম আগের মতোই মণপ্রতি ৬ হাজার থেকে ৬ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে সয়াবিনের তুলনায় পাম অয়েলের চাহিদা বেশি থাকে। শীত মৌসুমে পাম অয়েল জমে যাওয়ায় সয়াবিনের চাহিদা বাড়ে। তবে গ্রীষ্মকালে পাম অয়েল দেখতে অনেকটা সয়াবিনের মতো হয়ে যাওয়ায় খুচরা খোলা ভোজ্যতেল বিক্রির ক্ষেত্রে পাম অয়েলের ব্যবহার বেশি হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় পাম অয়েল কিংবা অধিক পরিশোধিত পাম অয়েলকে সয়াবিন নাম দিয়ে বিক্রির প্রবণতা বেশি। এ কারণে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে বাজারে পাম অয়েলের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ব্যাংকগুলোয় এলসি (ঋণপত্র) খুলতে সমস্যা নেই। ডলারের দাম কমে ব্যাংকের প্রকৃত দরের কাছাকাছি পর্যায়ে এলসি খোলার সুযোগ পাচ্ছেন আমদানিকারকরা। এর পরও দর বৃদ্ধির অযুহাত দেখিয়ে পাম অয়েলের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে চাইছে মিল মালিকরা।
দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৪ লাখ টনের কাছাকাছি। এর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ টন পাওয়া যায় দেশীয় উৎস থেকে। আমদানি হওয়া ২০-২১ লাখ টন ভোজ্য তেলের দুই-তৃতীয়াংশ পাম অয়েল মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হয়। অন্যদিকে আমদানি চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ সয়াবিন আসে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থেকে। বাসা-বাড়িতে রান্নার কাজে সয়াবিনের চাহিদা থাকলেও দেশে খাদ্যপণ্য তৈরিতে হোটেল-রেস্তোরাঁয় পাম অয়েলের ব্যবহার বেশি হয়।
ইনডেক্সমুন্ডি ডটকমের তথ্যমতে, জানুয়ারিতে অপরিশোধিত পাম অয়েলের টনপ্রতি বুকিং দর ছিল ৮৪৫ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে দাম আরো কিছুটা বেড়ে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৫৭ ডলারে। যদিও মার্চে এসে দাম এক লাফে ৯০ ডলারের মতো বেড়ে ৯৪৩ ডলার হয়ে যায়। বিশ্ববাজারে পাম অয়েলের এ দাম বাড়ার ঘটনায় দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
স্মার্ট অর্থনীতি-রপ্তানি বাড়াতে ইএসজির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে
বাংলাদেশে বেসরকারিখাতের পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোতে ইএসজি (এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল এবং গভর্নেন্স) রিপোর্টিংয়ের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ক্রমাগত বাড়ছে, যা ইতিবাচক বিষয়। স্মার্ট অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সম্প্রসারণে ইএসজি কমপ্লায়েন্স রিপোর্টিংয়ের স্ট্যান্ডার্ড থাকা জরুরি। তাই স্মার্ট অর্থনীতি-রপ্তানি বাড়াতে ইএসজির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
শনিবার (১৮ মে) ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ইএসজি কমপ্লায়েন্সের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) মহাপরিচালক আনোয়ারুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআইর সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারিখাতের পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোতে ইএসজি রিপোর্টিংয়ের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ক্রমাগত বাড়ছে, যা ইতিবাচক বিষয়। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সম্প্রসারণে ইএসজি কমপ্লায়েন্স রিপোটিং স্ট্যান্ডার্ড থাকা জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ‘এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড সোশ্যাল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (ইএসআরএম)’ বিষয়ক গাইডলাইন প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সিকিরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন লিস্টেড কম্পানিগুলোর জন্য তাদের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে ‘ইএসজি রিপোটিং’-এর অন্তর্ভূক্তিবাধ্যতামূলক করেছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক নামি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ইএসজির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে, তাই বিশেষকরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আমাদের এর ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ইএসজি বাস্তবায়নে একটি স্ট্যান্ডার্ড ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে এবং শিল্পনীতি ও এসএমই নীতিমালায় ইএসজি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিরও প্রস্তাব করেন তিনি।
পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান বলেন, প্রতিটি খাতেই কমপ্লায়েন্স অত্যন্ত জরুরি, বিশেষকরে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ২০১৬-২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ১৭টি পণ্যের জিআই দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ হতে এ পর্যন্ত ১৪টি পণ্যের জিআই দেওয়া হয়েছে। এমনকি ৩০টি পণ্যের জিআই দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
বিএবি মহাপরিচালক আনোয়ারুল আলম বলেন, বাংলাদেশে স্মার্ট অর্থনীতির রূপান্তর করতে হলে রপ্তানি বাড়াতে হবে। ইএসজি’র ওপর আরও গুরুত্ব দিতে হবে।
আলোচনা সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) আবাসিক প্রতিনিধি জাকি উজ্জ জামান। তিনি বলেন, ৯০-দশকে বৈশ্বিকভাবে ইএসজির বিষয়টি চালু হয়েছে। যেটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোম্পানির ঝুঁকি হ্রাস ও মুনাফা অনেকাংশে বাড়ানো সম্ভব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু এলডিসি উত্তরণের পথে রয়েছে। এমতাবস্থায় ইএসজি বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তবে এরই মধ্যে কিছু বাংলাদেশি কোম্পানি ইএসইজ কমপ্লায়েন্স রিপোটিং বাস্তবায়ন করেছে। ইএসজি বাস্তবায়নে পরিবেশগত তথ্যাদি সংরক্ষণের ওপর তিনি জোরারোপ করেন।
আলোচনায় এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডের বিজনেস ম্যানেজার ইয়াসমিন আক্তার, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সলিম উল্লাহ, ইকোটেক্স লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ বিন কাসেম এবং যুক্তরাজ্যের লিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ প্রমুখ অংশ নেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
সাত দিনের জাতীয় এসএমই মেলা শুরু রবিবার
১১তম জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য (এসএমই) মেলা শুরু হচ্ছে আগামী রবিবার (১৯ মে)। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ‘হল অব ফেম’-এ সাতদিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৫ মে) মেলা উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগামী ১৯ থেকে ২৫ মে শতভাগ দেশি পণ্য নিয়ে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের পুরস্কার প্রদান করা হবে। এতে সাতজন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এবারের মেলায় অংশ নেবে সাড়ে তিনশোরও বেশি প্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই নারী-উদ্যোক্তা।
এবারের মেলায় তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৫টি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া পাটজাত পণ্যের ৪২টি, হস্ত ও কারুশিল্পের ৩৮টি, চামড়াজাত পণ্যের ৩২টি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৭টি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ২৩টি, খাদ্যপণ্যের ১৪টি, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের ১৩টি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের এসএমই ক্লাস্টারের উদ্যোক্তাদের ১২টি, হারবাল/ভেষজ শিল্পের ৫টি, জুয়েলারি শিল্পের ৫টি, প্লাস্টিক পণ্যের ৪টি, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স খাতের ৩টি, ফার্নিচার খাতের ৩টি এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১৯টি টল থাকবে মেলায়।
এছাড়া ৩০টি ব্যাংক, ১৫টি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাবসহ আরও প্রায় ৫০টি উদ্যোক্তাদের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেবে।
মেলায় এসএমই ঋণ বিতরণকারী প্রায় ২৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এছাড়া মেলায় প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী আগ্রহী উদ্যোক্তাদের নিবন্ধন করা হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পরিচালিত বিজনেস ইনকিউবিশন সেন্টার সম্পর্কে ধারণা প্রদানের পাশাপাশি ইনকিউবিশন সেন্টার ব্যবহারের জন্য আগ্রহী স্টার্ট-আপ/নতুন উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক নিবন্ধন করা হবে।
মেলা শেষে মেলায় স্টল ডেকোরেশনসহ প্রচলিত ও বহুমুখী পণ্য বিচারে শ্রেষ্ঠ স্টলকে পুরস্কার দেওয়া হবে। মেলায় সন্ধানীর সহযোগিতায় একটি রক্তদান কেন্দ্র থাকবে। যে কোনো ব্যক্তি এখানে রক্তদান করতে পারবেন।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সাতদিনের মেলার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উইন্ডি টাউন হলে ২০-২৩ মে ক্রেতা-দর্শনার্থী এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, নারী-উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি, আইসিটি ও ক্লাস্টার উন্নয়নের ওপর আয়োজন করা হবে ৬টি সেমিনার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এর আগে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ১০টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ২ হাজার ৩৩০ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা প্রায় ৪৩ দশমিক ৬২ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৭২ দশমিক ৮৫ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ করেন। এছাড়া এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সারাদেশের ৫০টি জেলায় ৮৬টি আঞ্চলিক-বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলায় অংশ নেন ৪ হাজার ৭২ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভারত থেকে পেঁয়াজবোঝাই একটি ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্স এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে। প্রথমদিন একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
আমদানি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে পাইকার ও সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা গেল ৪ মে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় নানা জল্পনাকল্পনা শেষে ১১ দিন পর আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
আমদানি স্বাভাবিক থাকলে পেঁয়াজের দাম কোরবানি ঈদে বাড়বে না বলেও জানান তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান পাটমন্ত্রীর
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক। এসময় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এবং বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।
রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রীর অফিস কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
পাটমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বিশেষত বস্ত্র ও পোশাকখাতে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এসময় মন্ত্রী বস্ত্র ও পোশাক খাতে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান এবং উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোরিয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমরা বাজারের বৈচিত্র্য বাড়ানো, পণ্য উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ইত্যাদিতে জোর দিচ্ছি।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির জন্য আমরা কোরিয়ান কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করছি।
এসময় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত তিনটি বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এগুলো হলো-
প্রথমত, কাঁচামাল আমদানি করতে প্রচুর ট্যারিফ দিতে হয়। তার মধ্যে ৫টি পণ্য বস্ত্র ও পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোর ট্যারিফ কমাতে তিনি মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
দ্বিতীয়ত, ভিসা জনিত সমস্যা। বাংলাদেশে যারা কাজ করছেন তাদের খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। তিন মাস পর পর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হয়। এ সমস্যা উত্তরণে মন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
তৃতীয়ত, কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ে দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
সাক্ষাৎকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব তসলিমা কানিজ নাহিদা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান, জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের কনসাল জেয়ং কি কিম উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দেওয়ার প্রস্তাব
বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে চলতি অর্থবছর। তথ্যপ্রযুক্তিতে কর অব্যাহতির মেয়াদ আর বাড়াতে চায় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন (২০২৪-২০২৫) বাজেটে এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিষয়টি এনবিআরকে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ।
নতুন বাজেট কেন্দ্র করে রোববার (১২ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব ভবনে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর ওয়াসিকা আয়শা খান এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক এ তিন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি উঠানোর প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী বাজেটের বিভিন্ন দিকে সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করেছে উভয়পক্ষ। রোববার সকালে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়।
২০১১ সাল থেকে ২৭টি ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতি দিয়েছিল সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হলে তা আবার চার বছরের জন্য বাড়ানো হয়। নতুন কোনো ঘোষণা না এলে চলমান এ কর অব্যাহতির মেয়াদ এ অর্থবছরে শেষ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো এরই মধ্যে এ অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ নতুন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার। অর্থমন্ত্রী কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দিয়ে, এ খাতে অল্প অল্প করে করারোপ করা যায় কি না বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশীয় শিল্প যাতে সুরুক্ষা পায় ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যাতে নাগালের মধ্যে রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
এনবিআরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাত থেকে কর ও ভ্যাট অব্যাহতি তুলে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। পাশাপাশি আগামী বাজেটের এর উপযোগিতা ও যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেন।
সূত্র জানায়, আগামী বাজটে কার্বোনেটেড পানীয় বা কোমল পানীয়র ওপরে ন্যূনতম কর ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার বিষয়টি জানানো হয়।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ড্রাফট মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের দিনব্যাপী বৈঠক হবে। এর পরই বাজেট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী সবার কথা মনযোগ দিয়ে শুনেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না হলেও তিনি আমাদেরটাই রাখেন, না হলে বিষয়টা নিয়ে অন্যকিছু করার সুযোগ আছে কী না জানতে চান। আমরা ১৪ মের এর জন্য আমাদের পেপার ও প্রেজেন্টেশন তৈরি করছি।
বৈঠকে উপস্থিত ওই কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তিন বিভাগের বাজেট প্রস্তাবনা শুনেছেন। তাদের কিছু কোয়ারি ছিল। সিদ্ধান্তের পক্ষে বিপক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। একটা ফলপ্রসু বৈঠক হয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থপ্রতিমন্ত্রী জানতে চান বিদেশ থেকে আমদানি করা চিকিৎসা কিট ও অন্যান্য সামগ্রীতে শুল্কের পরিমাণ বেশি কেনো। তবে তাকে জানানো হয় দেশীয় শিল্পকে সুরুক্ষা দিতে শুল্ক যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতি উঠানো প্রসঙ্গে বেসিস সভাপতি রাসল আহমেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাত যদি করের আওতায় আনা হয়, সেটা মোট রাজস্ব আয়ের ১ শতাংশও হবে না। এ খাত সবেমাত্র দাঁড়াতে শুরু করেছে। একটা সম্ভাবনাময় খাত হুমকির মুখে ফেলা ঠিক হবে না। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ খাতে কর অব্যাহতি বজায় রাখা আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) প্রেসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আগামী ৩ বছর কর অব্যাহতি রাখার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ এর মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ১ দশমিক ৯ শতাংশ।