জাতীয়
বাস ভাড়া তিন পয়সা কমিয়ে যাত্রীর কতটা লাভ হলো?

বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম কমার পর বাস ও মিনিবাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে তিন পয়সা করে কমানোর সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বেশ আলোচনা। পরিবহন মালিকরা বলছেন, দূরত্ব অনুযায়ী যাত্রীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবে। ভাড়া কিছুটা হলেও কমবে বলে দাবি করছেন তারা।
তবে, এই ভাড়া কমানোতে যাত্রীদের উপর তেমন কোনো প্রভাবই পড়বে না বলে মনে করছেন যাত্রী অধিকার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে যে হারে ভাড়া বাড়ানো হয়, কিন্তু কমলে সেভাবে ভাড়া কমানো হয় না।
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রতিমাসে সমন্বয়ের অংশ হিসাবে গত ৩১শে মার্চ ডিজেল ও কেরোসিনে ২ টাকা ২৫ পয়সা কমানো হয়েছে। এর ফলে এই দুই জ্বালানির দাম হয়েছে ১০৬ টাকা। দাম কমানোর পর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সোমবার বাস, মিনিবাসের ভাড়া তিন পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। যা মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
তেলের দাম বাড়ানো হলে গণপরিবহনের ভাড়া যে হারে বাড়ে, দাম কমানো হলে সেই হারে কমে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নতুন ভাড়া নির্ধারণ
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রতিমাসে সমন্বয়ের অংশ হিসাবে ৩১শে মার্চ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএর বাস ভাড়া নির্ধারণ কমিটি বৈঠক করে ভাড়া কমানোর সুপারিশ করে। ওই বৈঠক প্রতি কিলোমিটারে তিন পয়সা করে ভাড়া কমানোর সুপারিশ করে যা মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হয়েছে।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে বাস ও মিনিবাসে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হবে দুই টাকা ১২ পয়সা। যা আগে ছিল দুই টাকা ১৫ পয়সা। অর্থাৎ তিন পয়সা কমানো হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে দুই টাকা ৪২ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসাথে বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা এবং মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৮ টাকা বহাল রাখা হয়েছে।
যে ভাড়া কমানো হয়েছে তাতে ঢাকা মহানগরীর যাত্রীদের উপর তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলে জানান যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, ঢাকার যেসব রুট রয়েছে বেশিরভাগ রুটের গন্তব্যের শুরু ও শেষ ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে। যাত্রীরা ও যাতায়াত করেন অল্প দূরত্বে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রতি কিলোমিটারে তিন পয়সা কমানো হলে ৩৩ কিলোমিটার যাতায়াতের পর ৯৯ পয়সা বা এক টাকা ভাড়া কমবে। রাজধানীর মিরপুর থেকে সদরঘাট পর্যন্ত দূরত্ব ১৮ দশমিক ২ কিলোমিটার। এ দূরত্বে যাতায়াত করলে একজন যাত্রীর ৫৪ দশমিক ৬ পয়সা ভাড়া কমবে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “ভাড়া কমানোতে যাত্রীর উপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কোনো বাস কাউন্টারেই এ ধরনের ভাঙতি পয়সার প্রচলন নেই”।
তিনি বলেন, “অতীতে যখন বিভিন্ন সময় ভাড়া কমানো হয়েছিল, তখন কোনো যাত্রাপথে ছয় টাকা, পাঁচ টাকা বা তিন টাকার খুচরা ভাড়া থাকলে সেটাকে তারা একটা রাউন্ড ফিগারে আদায় করে নেয়। তারা খুচরা এ টাকা কোনো হিসাবের মধ্যে নিয়ে আসেন না। যাত্রীরা এই টাকা কম দেয়ার সুযোগ পায় না ”।
ফলে অতীতে বিভিন্ন সময় ভাড়া কমালেও বাসে ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে কার্যকর করা যায়নি বলে জানান মি. চৌধুরী। এবারও এই ভাড়া কার্যকর করা যাবে এমনটি মনে হয় না, বলেন তিনি।
সাধারণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে এমনভাবে তেলের দাম কমিয়ে গণ-পরিবহনের ভাড়া কমাতে সরকারের প্রতি তিনি আহবান জানান।
যাত্রীরা যা বলছেন
ঢাকার মিরপুর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত বাসে যাতায়াত করেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের চাকুরিজীবী নাজিয়া শারমিন। তিনি বলেন, “মিরপুর ১২ থেকে তিব্বত পর্যন্ত ভাড়া প্রথমে ২০ টাকা ছিল। যখন তেলের দাম বাড়ায় তখন ভাড়া একবারে ২৫ টাকা করে ফেলে বাস মালিকরা। পরে তেলের দাম কমলে ও কিন্তু ওই ভাড়া কমানো হয়নি। আবার যেসব রুট অনুযায়ী ২৩ টাকা ভাড়া হয় সেখানে তারা কখনোই ভাঙতি টাকা দেয় না। দূরপাল্লার রুটে ভাড়া নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয়।
এবারও যত ক্ষুদ্র অংকের ভাড়াই কমানো হোক না কেন তাতে যাত্রীদের উপর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে ২০১০ সালে বাস ভাড়া পাঁচ পয়সা এবং ২০১৬ সালে তিন পয়সা করে কমানো হয়েছিলো। কিন্তু পরিবহন সংশ্লিষ্টরা ওই সময় ভাড়া কমায়নি। এরপর ২০২২ সালেও পাঁচ পয়সা ভাড়া কমানো হয়েছিলো। কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে পরিবহন মালিক – শ্রমিকরা এসব বিবেচনা করে না।
এরই মধ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের যাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঢাকার গাবতলী থেকে ঝিনাইদহের বাসের টিকেট কাটতে বাধ্য হন বেসরকারি চাকরিজীবী আজমল হোসেন। তিনি জানান, “ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ আগে ভাড়া ছিল বারশ টাকা। কিন্তু এখন ঈদের সময় ভাড়া বাড়িয়ে আঠারশ টাকা করা হয়েছে। যদি তিন পয়সাও কমায় সেটার তো কোনো লক্ষণই নাই। উল্টো বাড়তি দিতে হয় আমাদের” ।
পরিবহন মালিকরা যা বলছেন
বাংলাদেশে ২০২১ সালে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। পরের বছর আবারো ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৩৪ টাকা বৃদ্ধি করে সরকার। ফলে ডিজেলের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪ টাকা। একবারে প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোকে সে সময় বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করে সরকার। ফলে জ্বালানি তেলের এমন নজিরবিহীন দাম বৃদ্ধির কারণে বাস ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়।
এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর সরকার এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়।
আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে ৩১শে মার্চ জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের বর্তমান দাম ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ১০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ দুই টাকা ২৫ পয়সা কমানো হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাস, মিনিবাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে তিন পয়সা ভাড়া কমিয়েছে বিআরটিএ।
পরিবহন মালিকরা বলছেন, সরকার যখন এক লাফে ডিজেলের দাম বাড়ায় তখন পরিবহন শিল্পে ধস নামে। সে সময় বাস ভাড়া বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমেদ মজুমদার বলেন, “সরকার একরকম মস্করার মতো করে এবার প্রথম দফায় ৭৫ পয়সা, পরে দুই টাকা ২৫ পয়সা দাম কমায়। ৩৪ টাকা বৃদ্ধির পরে তিন টাকা কমানোটা বৈষম্যের মতো”।
তবুও আন্তর্জাতিক বাজারের উপর সমন্বয় করে ডিজেলের দাম কমানোতে একে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা। একইসাথে যে ভাড়া কমানো হচ্ছে তাতে দূরপাল্লার যাত্রীরা এর সুফল ভোগ করবেন বলে মনে করছেন পরিবহন মালিকরা।
মি. মজুমদার বলেন, “ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৩০ কিলোমিটার হলে সাড়ে সাত টাকা থেকে আট টাকা ভাড়া কমতে পারে”।
আর চট্টগ্রাম শহরের ভেতরে গেলে দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার হবে কিন্তু ভাড়া ১০ টাকার কমবে না বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমেদ মজুমদার বলেন, “সরকার একরকম মস্করার মতো করে এবার প্রথম দফায় ৭৫ পয়সা, পরে দুই টাকা ২৫ পয়সা দাম কমায়। ৩৪ টাকা বৃদ্ধির পরে তিন টাকা কমানোটা বৈষম্যের মতো”।
তবুও আন্তর্জাতিক বাজারের উপর সমন্বয় করে ডিজেলের দাম কমানোতে একে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা। একইসাথে যে ভাড়া কমানো হচ্ছে তাতে দূরপাল্লার যাত্রীরা এর সুফল ভোগ করবেন বলে মনে করছেন পরিবহন মালিকরা।
মি. মজুমদার বলেন, “ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৩০ কিলোমিটার হলে সাড়ে সাত টাকা থেকে আট টাকা ভাড়া কমতে পারে”।
আর চট্টগ্রাম শহরের ভেতরে গেলে দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার হবে কিন্তু ভাড়া ১০ টাকার বেশি বাড়বে না বলেও তিনি জানান।
তবে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ক্যাবের উপদেষ্টা এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম মনে করেন, গণপরিবহনের জন্য যে তিন পয়সা ভাড়া কমানো হয়েছে তাতে জনগণ কোনো সুবিধা পাবে না, বরং পরিবহন মালিকরাই সুবিধা পাবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মিই বড় সমস্যা: তৌহিদ হোসেন

দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি বড় সমস্যার জায়গা। বাংলাদেশ না পারছে তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে, না পারছে তাদেরকে এড়িয়ে যেতে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস ডে উপলক্ষে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি।
বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিদেশগামীদের ৮০ শতাংশ সমস্যা ঢাকা থেকে সৃষ্টি আর ২০ শতাংশ গন্তব্য দেশে গিয়ে। দূতাবাসে লোকবল কম থাকলেও প্রবাসীদের ১০০ শতাংশ সমস্যা সমাধান করতে হয়।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের সমস্যা সবার আগে সমাধান করতে হবে। দূতাবাসের সীমাবদ্ধতা থাকলেও মানুষকে আগে সেবা দিতে হবে।
রেমিট্যান্সের ব্যাপারে তৌহিদ হোসেন বলেন, ১৯৮০ এর দশকে এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি ছিল। এখন (বর্তমান) ৬০ বিলিয়ন ডলার, যেখানে কিছুটা হলেও দূতাবাসের ভূমিকা আছে। এ ছাড়া সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এক কোটি প্রবাসী দেশে রেমিট্যান্স পাঠান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টিতে ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তারা কলকাতা থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল তখন ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশন গঠন হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নয় মাসে এক আকাশ ভালোবাসা পেয়েছি: প্রেস সচিব

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সরকারের প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শফিকুল আলম।
প্রায় নয় মাস দায়িত্ব পালনের পর নিজের ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে আজ তিনি তুলে ধরেছেন তার অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তি।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম লেখেন, গত নয় মাসে আমি কী অর্জন করেছি: এক চিমটি ঘৃণা, একমুঠো অবিশ্বাস ও এক আকাশ ভালোবাসা।
শফিকুল আলমের এই স্ট্যাটাস ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, একজন মুখপাত্র হিসেবে তার প্রকাশভঙ্গি প্রশংসনীয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ

ভারতে ওয়াকফ বিল পাস ও মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।
এসময় বক্তারা বলেন, গুজরাটের কসাই মোদী একের পর এক মুসলিমদের অধিকার খর্ব করছে। তারা মুসলমানদের ঘর-বাড়ি ভেঙে দিছে। তাদের জন্মস্থান থেকে উচ্ছেদ করছে। সর্বশেষ ওয়াকফ বিল পাস করে ভারতে মুসলমানদের অধিকার খর্ব করছে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে সমগ্র ভারতে মুসলিমরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এসব নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই। এক হিন্দুত্ববাদী সরকার আমাদের ১৬ বছর নিষ্পেষিত করছে। এর পরিণতি ভারতকে ভোগ করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন,গাজাকে আজ পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্ত আমাদের বিজয় গাজাতেই হবে। ইসরায়েল তাদের পাপের ফল ভোগ করবে। আমরা আরব বিশ্বকে বলবো, আপনারা মাঠে নামুন। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইহুদিদের মোকাবিলা করুন। বিশ্ব মুসলমান একত্র হলে ইহুদিসহ মুসলমানদের শত্রুরা নিশ্চয় পরাজিত হবে।
এসময় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, বিগত ৬ সপ্তাহ ফিলিস্তিনে কোনো সহায়তাও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এই মুহূর্তে সারা দুনিয়ার জন্য ইসরায়েল একটি বিষফোঁড়া। পৃথিবীতে সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করতে হলে ইসরায়েলকে থামাতে হবে। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এদেশের কোনো দোকানে ইসরায়েলের পণ্য চলতে পারে না।
তিনি বলেন, মসজিদ মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়াই ভাততের এজেন্ডা। তাই বিতর্কিত ওয়াকফ বিল ভারতে আর চলতে দেওয়া যাবে না। আমরা হয়তো দেখে যেতে পারবো না তবে ভারত একসময় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রবাসীদের সমস্যা সবার আগে সমাধান করতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কর্মীদের বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ সমস্যা দেশ থেকেই তৈরি হয়। পরে সৃষ্ট সমস্যা দূতাবাসকে সামলাতে হয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস ডে উপলক্ষে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দূতাবাসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রবাসীদের সমস্যা সবার আগে সমাধান করতে হবে। দূতাবাসের সীমাবদ্ধতা থাকলেও মানুষকে আগে সেবা দিতে হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কর্মীদের বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ সমস্যা দেশ থেকেই তৈরি হয়। পরে সৃষ্ট সমস্যা সামলাতে হয় দূতাবাসকে। সুতরাং প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা দিয়েই কর্মী পাঠানো গেলে প্রবাসীদের সমস্যা কম হবে। একইসঙ্গে মিশনগুলোর ওপর চাপ কমবে।
রেমিটেন্সের ব্যাপারে তৌহিদ হোসেন বলেন, ১৯৮০ এর দশকে এক বিলিয়ন ডলার রফতানি ছিল। এখন (বর্তমান) ৬০ বিলিয়ন ডলার, যেখানে কিছুটা হলেও দূতাবাসের ভূমিকা আছে। এছাড়া সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এক কোটি প্রবাসী দেশে রেমিটেন্স পাঠান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি বড় সমস্যার জায়গা। বাংলাদেশ না পারছে তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে, না পারছে তাদেরকে এড়িয়ে যেতে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বৈশ্বিক জনমত সৃষ্টিতে ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তারা কলকাতা থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল তখন ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশন গঠন হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পররাষ্ট্রনীতি হবে একান্তভাবে বাংলাদেশের স্বার্থনির্ভর

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, একটি প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে গিয়ে আরেকজন থেকে দূরে থাকার নীতি একটি স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য অতীতের সমস্যা কাটিয়ে ভবিষ্যতের মঙ্গল চিন্তা করে একসঙ্গে কাজ করার সম্ভবত এখন সময় এসেছে।
আজ, ১৮ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এমন কথা বলেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমরা এমন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলাম, বাংলাদেশ কি এখন পাকিস্তানপন্থি পররাষ্ট্রনীতির দিকে ঝুঁকছে? প্রশ্নটি মোটেই আমাদের বিস্মিত করেনি। সব সময় কিছু মানুষ থাকবে যারা বাংলাদেশের স্বাধীন পরিচয়ে বিশ্বাস করতে চায় না।
তিনি বলেন, আমাদের জবাব ছিল স্পষ্ট। অতীতে যাই ঘটুক না কেন, এখন থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হবে একান্তভাবে বাংলাদেশের স্বার্থনির্ভর ও প্রো-বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বেসামরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী মহলের অনেকেই মনে করেন যে, ক্ষমাপ্রার্থনা একটি সদিচ্ছা ও সৌজন্যের প্রতিফলন হতো। কিন্তু পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সামরিক আমলাতন্ত্র বরাবরই এ ধারণার বিপক্ষে থেকেছে, ফলে আজও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া হয়নি।
ডেপুটি সেক্রেটারি আরও লেখেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে সম্পদ বণ্টনের বিষয়টিও উত্থাপন করেছে। যেটি পূর্ববর্তী সরকারগুলো এড়িয়ে চলেছিল এবং আলোচনার পরিবর্তে বিচ্ছিন্নতাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। একটি হিসাবে, ১৯৭৪ সালের হিসাবে বাংলাদেশের দাবি করা অর্থের পরিমাণ ছিল অন্তত ৪.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই হিসাব তৈরি হয়েছিল অভ্যন্তরীণ মূলধন সৃষ্টি, বৈদেশিক ঋণ নিষ্পত্তি এবং বৈদেশিক সম্পদের ধারণার ভিত্তিতে।
এছাড়া ১৯৭০ সালের নভেম্বরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বিদেশি দেশ/সংস্থাগুলোর দেওয়া প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত দাবি রয়েছে বাংলাদেশের। এই অর্থ যুদ্ধের সময় ঢাকা থেকে পাকিস্তানের স্টেট ব্যাংকের লাহোর শাখায় স্থানান্তর করা হয়।
‘আটকে পড়া পাকিস্তানিদের’ প্রত্যাবাসনও দুই দেশের সম্পর্কের অন্যতম একটি অন্তরায়। অতীতে পাকিস্তান প্রায় ১,২৫,০০০ নাগরিককে ফেরত নিয়েছে, কিন্তু এখনো প্রায় ৩,২৫,০০০ মানুষ বাংলাদেশের ১৪টি জেলার ৭৯টি ক্যাম্পে বসবাস করছেন।
এ বিষয়গুলোই মূলত বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্ভবত এখন সময় এসেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য অতীতের সমস্যা কাটিয়ে ভবিষ্যতের মঙ্গল চিন্তা করে একসঙ্গে কাজ করার। একটি প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে গিয়ে আরেকজন থেকে দূরে থাকার নীতি একটি স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না।