অর্থনীতি
ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আনছে টিসিবি

রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এই আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (২৭ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ ভারতের ন্যাশনাল করপোরেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের কাছ থেকে আমদানি করা হবে। রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবির মাধ্যমে এ পেঁয়াজ আনা হবে। তবে আমদানি মূল্য এখনও নির্ধারণ হয়নি।
নিজেদের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ভারত। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম আবুধাবিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পেঁয়াজ আমদানির অনুরোধ জানান। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ দিতে সম্মত হয় ভারত।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে ৬০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতার তৃতীয় এফএসআরইউ প্রকল্পে ঠিকাদার কোম্পানির নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। আগে চুক্তি হয়েছিল সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানির সঙ্গে। এখন এর নাম পরিবর্তন করে হবে সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি-২। আরেকটি প্রস্তাবে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে স্বল্পমেয়াদি প্রক্রিয়ায় এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য এই চুক্তি করা হবে।
তিন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সামিট পাওয়ারের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোসহ তিন ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়া, মাধবদী ও চান্দিনায় সামিট পাওয়ারের তিনটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র তিনটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর শেষ হয়ে যায়। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬ টাকা ৪ পয়সা হিসাবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নতুন চুক্তিতে ইউনিটপ্রতি ৭ পয়সা সাশ্রয় হিসাবে পাঁচ বছরে আগের তুলনায় ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। সচিব বলেন, চুক্তিতে আগে ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল, এবার তা রাখা হয়নি। অন্য কোনো ফিক্সড চার্জও নেই। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ নেওয়া হবে সেই পরিমাণ টাকাই পরিশোধ করা হবে।
বৈঠকে ইস্টার্ন রিফাইনারির বাস্তবায়নাধীন সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্পের জন্য টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে ‘যথাযথ শক্তির’ টাগবোট সংগ্রহ, পাইলটিং এবং আনুষঙ্গিক সেবার জন্য ইপিসি ঠিকাদার চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে সাপ্লিমেন্টারি চুক্তি করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এ ছাড়া ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউডি-১ এর পূর্ত কাজের তৃতীয় ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এ ক্ষেত্রে ব্যয় ৩৮৯ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্যাকেজটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে ভারতের মেসার্স ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৯ শতাংশ হবে, এডিবির পূর্বাভাস

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। তবে একই সময়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৭ থেকে ১০ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবির ঢাকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদন তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংস্থাটি চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে আগের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। তবে তারা আশা করছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে, ২০২৬ অর্থবছরে তা আবারও বৃদ্ধি পেয়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে রপ্তানি বৃদ্ধি সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প-অস্থিরতা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশজ চাহিদা দুর্বল হওয়ায় প্রবৃদ্ধি কমবে। ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং বলেন, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে, যা গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে শক্তিশালী করা যেতে পারে। বেসরকারি খাতের উন্নয়নকে উৎসাহিত করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বাইরেও তার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা উচিত। স্থিতিশীল অবকাঠামো বৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নত করা, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এডিবি জানায়, পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা, অপর্যাপ্ত বাজার তথ্য, সরবরাহ শৃঙ্খলের সীমাবদ্ধতা এবং টাকার অবমূল্যায়নে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলতি হিসাবের ঘাটতি ২০২৪ অর্থবছরে জিডিপি ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি ০ দশমিক ৯ শতাংশ কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার দেবে এনডিবি

চলতি বছর বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে ব্রিকস জোট প্রতিষ্ঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এনডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির কাজবেকভ এ তথ্য জানান।
ভ্লাদিমির কাজবেকভ জানান, সম্প্রসারিত ঢাকা সিটি ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এনডিবি এরই মধ্যে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে। তবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদার প্রেক্ষিতে এ বছর এই ঋণের পরিমাণ তিনগুণেরও বেশি বাড়াতে চান তারা।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নতুন এই বহুপক্ষীয় ঋণদাতা সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, এটি দেশের উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
কাজবেকভ বলেন, বাংলাদেশের গ্যাস খাতের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যও এনডিবি বড় ধরনের সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও জানান, দেশের বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনডিবি সেখানেও উল্লেখযোগ্য ঋণ প্রদান করতে আগ্রহী।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে হাজার হাজার শ্রমিকের জন্য আবাসন সুবিধা গড়ে তোলার মতো সামাজিক অবকাঠামো খাতে এনডিবির ঋণ গুরুত্বসহকারে দেওয়া উচিত।
কাজবেকভ জানান, এনডিবি এরই মধ্যে মাল্টি-কারেন্সি ঋণ সুবিধা চালু করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য উপকারী হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনডিবি যেন একটি দেশের কৌশলগত কর্মসূচি প্রণয়ন করে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
বৈঠকে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, অন্তর্বর্তী সরকারের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দিনের ব্যাংক হিসাব তলব

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি এবং এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেডের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকের অর্থ লোপাটের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবিষয়ে অনুসন্ধান করতে একজন সহকারী পরিচালক নিয়োগ করেছে দুদক।
এছাড়া কুতুবউদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী রাশিদা আহমেদ, ছেলে তানভীর আহমেদ ও মেয়ে সুমাইয়া আহমেদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব তলব করেছে দুদক। আগামী ২১ এপ্রিলের মধ্যে তথ্য দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের স্থাবর/অস্থাবর সম্পদের তথ্যাদি সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। তাদের একক/ যৌথ/ প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব (সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, এফডিআর/মেয়াদি আমানত, ঋণ হিসাব, লকার, ডিপিএস চলমান/ বন্ধ/ সুপ্ত অবস্থায়) পরিচালিত হয়ে থাকলে ওই হিসাব খোলার ফরম (সংযুক্তিসহ), শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত হিসাব বিবরণী ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র/ তথ্যাদি আপনার অধীন সব শাখা থেকে যাচাই করে তথ্যাদি আগামী ২১ এপ্রিলের সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলো।’
১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা এনভয় গ্রুপের তৈরি পোশাক, বস্ত্র, আবাসন, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং, ট্রেডিং, হসপিটালিটি, ব্যাংকিং, শেয়ারবাজার, সিরামিকসহ মোট ৪০টির মতো ব্যবসা রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিএনজেডের ৪ কারখানাই বন্ধ করে দেওয়া হবে: শ্রমসচিব

টিএনজেড গ্রুপের চারটি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, দুই দফায় টিএনজেড-কে টাকা দিয়েছে সরকার। কিন্তু কোম্পানিটির ৪টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন বকেয়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। এই কোম্পানি আর চালানো যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) আরএমজি বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি-টিসিসি) ২০তম সভা শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, টিএনজেড-কে নভেম্বরে ১৬ কোটি টাকা দিয়েছি, এখন আবার ১৭ কোটি টাকা বকেয়া হয়েছে। আবার কোরবানিতে ১৫ কোটি টাকা বকেয়া হবে, এটা তো হতে পারে না। সিদ্ধান্ত হয়েছে টিএনজেডের চারটি কারখানাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসব কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ৩২০০ জনের মতো।
কিছু শ্রমিকের অসৎ উদ্দেশ্যের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, গতকাল টিএনজেডের শ্রমিকরা কারখানার কাছে সমাবেশ করেছেন। তারা আজ বৈঠকে না এসে ওখানে সমাবেশ করছেন কেন? আবার তারা পানি ঘোলা করবেন। সমস্যার সমাধানের জন্য যখন আলোচনা চলছে, তখন আরেক গ্রুপ বিআরটিসি ডাবল ডেকার বাসে চড়ে এসে শ্রম ভবনের সামনে বসে আছেন। এগুলো কেন হবে? টোটাল জিনিসটা খুব সরলভাবে দেখলে হবে না। এর পেছনে অনেক বিষয় আছে।
টিএনজেডের ক্ষেত্রে বেক্সিমকো মডেল প্রয়োগ করা হবে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, সেখানে ৪০ হাজার শ্রমিকের সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের বকেয়া যেভাবে মালিক পরিশোধ করেছে, টিএনজেডের বকেয়াও মালিক পরিশোধ করবে। তাকে দেশে ফিরতে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি করবো। তার ওপর কোনো রকম ট্রাস্ট রাখতে পারছি না। তিনি বিদেশে বসে আছেন, দেশে আসার লক্ষণ নেই।
তিনি বলেন, টিএনজেডের সমাধানে একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। তাদের সম্পদ মূল্যায়ন করা হবে। শ্রমিকদের পাওনা কত আছে বের করা হবে। সম্পদ বিক্রি করলে কীভাবে কী হবে সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তারা দেবে। আজ থেকে এই কারখানাটি আমরা হেফাজতে নিয়েছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চার দফা বৃদ্ধির পর কমলো সোনার দাম

টানা চার দফা বাড়ানোর পর দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম এক হাজার ২৪৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৮ হাজার ১৪১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৫ হাজার ৬৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মূলত ট্রাম্পের শুল্কারোপের ঘোষণায় অস্থির হয়ে উঠেছে সোনার বিশ্ববাজার। নতুন শুল্কহার ঘোষণার পর রেকর্ড উচ্চতায় উঠে যায় প্রতি আউন্স (৩ হাজার ১৬৭ ডলার) সোনার দাম।
তবে এরপরই বড় পতন দেখে সোনার বিশ্ববাজার। বর্তমানে বিশ্ববাজারে দাম কমে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ১৪ ডলারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২৮ মার্চ দেশের বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৭৭৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮৭২ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি। ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৯ হাজার ১৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ২৯ মার্চ থেকে।
এ নিয়ে চলতি বছর ১৮ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ বার, আর কমেছে মাত্র ৫ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
সোনার দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।