সারাদেশ
রোজায় খাবার সংকটে ভুগছেন বৃদ্ধাশ্রমের ২৭ বৃদ্ধা মা
রোজায় খাবার সংকটে ভুগছেন কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকার উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের বৃদ্ধা ২৭ জন মা। অভাবি, অসহায়-দুস্থ ও স্বামী-সন্তানহারা বৃদ্ধ মায়েদের জন্য ১৯৯৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সেখানে জীবনের পড়ন্ত বেলায় অসহায় বৃদ্ধা ২৭ জন মা থাকেন। এসব অসহায় মায়েদের খাবার, চিকিৎসাসেবা, ওষুধ, পোশাক-পরিচ্ছদসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুনর্বাসন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তবে আর্থিক অভাবের কারণে প্রয়োজনীয় খাবার, পোশাকসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারে না তারা।
পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধা আমেনা বলেন, আমার জীবন খুব কষ্টের। আমি বাসাবাড়ি ও রাস্তার কাজ করে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছি। আমার ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাই আছে। আমি বৃদ্ধা হয়ে গেছি, কাজ করতে পারি না। আমাকে কেউ দেখাশোনা করে না। এজন্য গত ৫ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। বৃদ্ধাশ্রমের জীবনও অনেক কষ্টের। টাকাপয়সার অভাবে ইফতারের জিনিসপত্র কিনতে পারে না। অনেক সময় খাবারও কিনতে পারে না। ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে। আমাদের কাপড়, ওষুধ, ইফতারের কষ্ট। সবকিছুরই কষ্ট। আমরা চলতে পারছি না। ভাত দিয়ে ইফতার করতে হচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই্ বলছিলেন বৃদ্ধা আমেনা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকায়।
ষাটোর্ধ্ব বয়সী সাজেদা খাতুন বলেন, ছেলে-মেয়ে আছে। তাদেরকে কষ্ট করে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছি। এখন তারা, যার যার মতো। যার যার কর্ম সে সে করছে। তারা তাদের ছেলেপিলে নিয়ে করে খাচ্ছে। আমি এখন বুড়োকালে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। আমাদের জীবনটা অনেক কষ্টের জীবন। ছেলে-মেয়ে থেকেও নেই। আগেকার জীবনের কথা বলতে গেলে কষ্ট বেড়ে যায়। সেসব কথা বলতে চাই না।
সরেজমিনে গত বুধবার ইফতারের ১৫ মিনিট আগে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বয়স্ক মায়েরা কেউ অজু করছেন, কেউবা বসে দোয়া-দরুদ পড়ছেন। কেউ ঘুমাচ্ছেন, কেউবা নামাজ পড়ছেন। কেউবা চুপচাপ ইফতার করার জন্য বসে আছেন। সবার চোখেমুখে কষ্টের ছাপ। রোজাদার বৃদ্ধা অসহায় মায়েদের জন্য থালায় ভাত তুলে দেওয়া হচ্ছে। মসজিদের মাইকে ইফতারের ঘোষণার সাথে সাথে চিনির শরবত দিয়ে ইফতার শুরু করেন। এরপর ভাত খাওয়া শুরু করেন তারা। অর্থের অভাবে ইফতার সামগ্রী কিনতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এজন্য ভাত দিয়ে একবারে রাতের খাবার ও ইফতার সম্পন্ন করেন বলে জানিয়েছেন ভাগ্যতাড়িত অসহায় মায়েরা ও কর্তৃপক্ষ।
নসিরন খাতুন বলেন, আমার দুইটা মেয়ে হয়েছিলো। তাদের ছোট রেখে আমার স্বামী মারা গেছে। আমি অফিসারদের বাসায় কাজ করতাম। কাথা সেলাই করতাম। এভাবে অনেক কষ্টে মেয়ে দুটিকে বড় করেছি। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমার তো ছেলে সন্তান নাই। এজন্য ২০ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকি। বৃদ্ধাশ্রমে টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারে না। এজন্য আমরা ভাত খেয়ে ইফতার করি। টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারছি না। এছাড়াও টাকার অভাবে থাকা, খাওয়া, কাপড়চোপড় ও চিকিৎসার কষ্টে আছি। আমাদের সবাই সহযোগিতা করেন।
৭০ বছর বয়সী আয়েশা খাতুন বলেন, আমি নিঃসন্তান। আমার ছেলে-মেয়ে নাই। ঘর-বাড়ি নাই, থাকার জায়গা নাই। আমার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন আছে। তারা আমার দেখাশোনা করে না। ১০ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছি। মরণের আগ পর্যন্ত এখানেই থেকে যাব। অর্থের অভাবে আমাদের খাওয়ার কষ্ট হয়। টাকার অভাবে ইফতার কিনতে পারে না। আমরা ভাত দিয়ে ইফতার করি। আপনারা আমাদের সাহায্য করুন।
আনজিরা খাতুন বলেন, আমার ছেলে-মেয়ে আছে, তারা দেখাশোনা করে না। আমি ৫ বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে আছি। আমি অনেক আগে থেকে অসুস্থ। হার্টের অসুখ, টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারি না।
উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আফরোজা ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রায় ২২ বছর ধরে অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করি। আমাদের কাছে অনেক অসহায় নির্যাতিত মা রয়েছে। যাদের সংসারে ঠাঁই নেই। সন্তান জন্ম দিয়েছে, বড় করেছে। এখন সেই সংসারে মায়ের জায়গা নেই। পরনের কাপড় ও পেটের খাবারের জন্য তারা আমাদের এখানে আছে। মানুষের মা মরে একবার। আর আমাদের মা মরে বারবার। অনেক মা এখানে মারা গেছেন। মানুষের সহযোগিতায় বৃদ্ধাশ্রম চলে। রমজানে তাদের জন্য ইফতার সামগ্রী কিনতে পারি না। আজ ভাত খেয়ে ইফতার করেছে। অর্থের অভাবে মায়েদের চিকিৎসা করাতে পারি না। ঠিকমতো খাওয়াতে পারি না। থাকার কষ্ট রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন মিঠু বলেন, প্রায় দুই যুগ আগে আমার মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পরে মায়ের জয়গাটা পূরণ করার জন্য কয়েকজন বৃদ্ধা মাকে নিয়ে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করি। আমরা অনেক কষ্ট করে এই প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছি। রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহ করে দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। রমজানে বৃদ্ধাশ্রমের মায়েরা রোজা রাখেন। অর্থের অভাবে তাদের ইফতার সামগ্রী ও সেহরিতে প্রয়োজনীয় খাবার ঠিকমতো কিনতে পারি না। ভাড়া বাসায় মায়েরা থাকে। বৃষ্টি হলে টিনের ফুটো দিয়ে ঘরের মধ্যে পানি চলে আসে। বিছানাপত্র ভিজে যায়। অর্থের অভাবে মায়েদের অনেক কষ্ট হয়। সরকার ও বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
চাঁদপুরে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, চিকিৎসাধীন ৩৬ জন
চাঁদপুরে নতুন করে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব। গত অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বর মাসে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ১৫ জনসহ মোট ৩৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জেলা শহরের পুরানবাজার এলাকার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বেশি। অনেকেই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে নিজের এলাকায় এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর সদর হাসপাতালে অক্টোবর মাসে ১৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নেন। নভেম্বরে ১৯ দিনেই চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৭ জন। নারীর চেয়ে পুরুষেরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে।
সিভিল সার্জনের পরিসংখ্যান বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, অক্টোবরে ৪০১ জন চিকিৎসা নিলেও নভেম্বরে এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছে ২৫৩ জন। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে মানুষকে সচেতন ও আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শারমিন জানান, আমিসহ আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ সবাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। আমরা সবাই কেরানীগঞ্জে আক্রান্ত হয়েছি। সেখান থেকে চিকিৎসা জন্য বাড়ি চলে আসি, তারপর চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।
চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার সোহেল বেপারী জানান, আমার স্ত্রী ও বোনকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। পুরানবাজার এলাকা অধিকাংশ লোকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। চাঁদপুর পৌরসভা ঠিকভাবে ওষুধ ছিটায় না। তারা ঠিকভাবে কাজ করলে ডেঙ্গুর উপদ্রব কিছুটা কমে আসতো বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
গাজীপুরে আজকেও শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আজও বিক্ষোভ করেছেন ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড ও বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। অবরোধের কারণে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সকালে কারখানার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নেন তারা। এ সময় সড়ক অবরোধ করলে উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা সঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত অক্টোবরের বেতন পাইনি। বেতন না পেয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। বেতন পেলেই আমরা কাজে ফিরব।’
অন্যদিকে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে আশপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ডরিন ফ্যাশন লিমিটেডের কারখানাও আছে। গতকাল সোমবার থেকে ডরিন ফ্যাশন কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করে ১১টার দিকে শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে যান। আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আবার শ্রমিকেরা জিরানী এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।
ডরিন ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা বলেন, ‘১ নভেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখে। গত রোববার খুলে দেয়া হলেও দুপুরের পর আবার ছুটি দিয়ে দেয়া হয়। গতকাল শ্রমিকেরা সকালে কাজে যোগদান করতে গিয়ে দেখেন, কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের কারখানায় কোনো সমস্যা হয়নি। তারপরও কেন কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে? তাই কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন।’
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতিমাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন তারা বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করে। বেক্সিমকো কারখানার এই সমস্যার কারণে গতকাল সংঘর্ষ হয় আরেও কয়েকটি কারখানা ও এলাকাবাসীর মধ্যে। উত্তেজিত হয়ে অ্যামাজন নামক একটি গেঞ্জি তৈরির কারখানায় আগুন দেয় শ্রমিকরা। ওই ঘটনার পর থেকে আশপাশের বেশ কিছু কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা প্রতি মাসেরই আন্দোলন করে বেতন আদায় করছে। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন ভাতা পরিশোধ করা হলেও চলতি মাসের ১৬ তারিখ হয়ে গেলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা বেতন পায়নি। যার কারণে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিনের মতো আজও শ্রমিকেরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। আশপাশের এলাকায় থানা-পুলিশ ও শিল্প পুলিশ মোতায়েন আছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষ, চারজন নিহত
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাস ও পিকআপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে মধুপুর পৌর শহরের মালাউড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
মধুপুর থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসার মো. মঞ্জুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ফজরের নামাজের পর মালাউড়ি এলাকায় বিনিময় বাস ও পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে পিকআপে থাকা ৪ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তাৎক্ষণিক নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
ফ্রেশ টিস্যু পেপারের গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১৪ ইউনিট
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের টিস্যু ফ্যাক্টরির একটি ভবনে আগুন লেগেছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় মেঘনা গ্রুপের ভেতর টিস্যু ফ্যাক্টরি গোডাউনে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের ১৪টি ইউনিট।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট ঝাউচর এলাকায় অবস্থিত মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের টিস্যু কারখানায় ভোরে বিদ্যুৎতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। আগুনে টিস্যু কারখানার প্রায় কয়েকশ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগ উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন বলেন, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড পেপার কারখানায় আগুনের খবর পেয়ে মেঘনা গ্রুপের নিজস্ব ফায়ার সার্ভিসসহ আমাদের প্রায় ১৪টি ইউনিট কাজ করছে। আগুনে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনো বলা যাচ্ছে না।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
অনিয়মে বন্ধ হয় আওয়ামীলীগ নেতার ডায়াগনস্টিক: সিভিল সার্জনের পদত্যাগ দাবী চাঁদপুর জেলা বিএনপি নেতাদের
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলন চাঁদপুরের সমন্বয়ক রাকিব ভূঁইয়াকে সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দালাল কর্তৃক হামলার ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। এতে তাকওয়া, মীম ও গ্রীন ভিউ নামে ৩টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে তাকওয়া নামে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করায় বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে গড়ায়। শেষ পর্যন্ত এসব ঘটনার দায়ভার চাপানো হচ্ছে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নুর আলম দীন এর ওপর।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে সড়কে সিভিল সার্জনের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে চাঁদপুরের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় তাকওয়া, মীশ ও গ্রিণ ভিউ এক্স-রে ডায়াগনস্টিক সেন্টার কার্যক্রম বন্ধ। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান গেটও তালা বদ্ধ।
এসব বিষয় জানার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে সিভিল সার্জনকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় মেডিকেল অফিসার (এমও-সিএস) ডাঃ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন এর সাথে। তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক সিভিল সার্জনকে ফোন দিয়েছেন। তিনি ব্যস্ত আছেন পরে কথা বলবেন এমনটি হয়েছে। কিন্তু তাকওয়াসহ ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হওয়ার বিষয়ে সিভিল সার্জন এর কোন সম্পৃক্ততা নেই। আজকে এসে দেখলাম আমাদের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ।
৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেল, সমন্বয়ক রাকিব ভূঁইয়াকে সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দালাল কর্তৃক হামলার ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি ওই সময় ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরপরে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল এমরান খাঁন। এতে সহযোগিতা করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (এমও-সিএস) ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন, চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজন কুমার দাসসহ একটি যৌথ টিম।
এই বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল এমরান খাঁন বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রোগীরা যাতে কোনো ভাবেই দালাল চক্রের শিকার হতে না হয় এবং সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা যায়। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে যে জটিলতার কথা বলা হয়েছে, তা দ্রুত সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তবে, যদি সঠিক কাগজপত্র না থাকে, তাহলে কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শাখাওয়াত হোসেন এসব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র সম্পর্কে বলেন, আমরা সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত, তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাইসেন্স নবায়ন এবং অন্যান্য নিয়মকানুন মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নুর আলম দীন বলেন, বিএনপির সভাপতির সাথে আমার কিছুই হয়নি। তাকওয়া নামে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করায় এই আন্দোলন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নিউ তাকওয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর মালিক হচ্ছে নাসরিন পারভীন ও কাজী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু। এর মধ্যে নাসরিন পারভীন হচ্ছে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ডাঃ দীপু মনির চাঁদপুর প্রতিনিধি ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন বাবুর স্ত্রী। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে। কিন্তু সেই সাইফুদ্দিন বাবুর স্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার বিষয়টি বিএনপির লোকজন জড়িত থাকায় ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়। বিএনপির নামধারী মহসীন পাটওয়ারী হচ্ছে হাসপাতালের দালালদের মধ্যে অন্যতম। তার অপকর্মের বিষয়ে স্থানীয় পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এসব বিষয়গুলো সামনে আসার কারণে এটি গড়ায় জেলা বিএনপি সভাপতি পর্যন্ত।
চাঁদপুর হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীন বলেন, কোন হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাগজপত্র নবায়ন না থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। এতে আমাদের কোন কিছু করার নেই। কিন্তু এসব কাগজপত্র নবায়ন করতে সয়ম লাগে। এটি কোন সমস্যা না। হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদেরকে নিয়মিত সরকারি কর ও নবায়ন ফি জমা দিতে হবে। এরপরে বাকী কাজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কিন্তু দেখাগেছে অনেক প্রতিষ্ঠান কয়েকবছর তাদের কাগজপত্র নবায়ন করেনি।
এবিষয়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের মন্তব্য জানতে তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোন যোগাযোগ করলে তিনি রিসিভ করেননি। ফলে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।