অর্থনীতি
অস্থির পেঁয়াজের বাজারে বড় দরপতন
দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে ঢোকার সাথে সাথে ব্যাপক দরপতন শুরু হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। পেঁয়াজ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে খ্যাত ফরিদপুরেও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার শহরের হাজী শরিয়াতাল্লাহ বাজারে পাইকেরিতে ৪৮ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা পর্যায়ে ৫০ টাকায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করছে বিক্রেতারা।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, গত ১/২ সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির লোভে কৃষকেরা নতুন হালি পেঁয়াজ পরিপক্ক হওয়ার আগেই প্রচুর পেঁয়াজ উঠিয়ে ফেলেছে। আর সেই পেঁয়াজ বাজারে আসতে থাকায় সরবরাহ বেড়ে গেছে।
একারণে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। তাছাড়াও এখন হালি পেঁয়াজ উঠানোর মৌসুম চলছে যে কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। তবে পেঁয়াজের দাম এর চেয়ে বেশি কমে গেলে কৃষকের লোকসান হওয়ার আশংঙ্কা আছে। কারণ পেঁয়াজ চাষে সার, ওষুধ, সেচ, লেবারসহ বহু খরচ বেড়ে গেছে। মণপ্রতি ২ হাজারের উপরে খরচ হয়েছে কৃষকের তাই এর নিচে বিক্রি হলে তাদের লোকসান হবে।
বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় ক্রেতারা খুশি। তারা জানায়, গত ১ সপ্তাহ আগেও ৮০ টাকার বেশিতে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। গত দুদিন হলে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। পেঁয়াজের দাম এমন থাকলে ক্রেতা বিক্রেতার জন্যও ভাল হবে।
জেলা কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, এবছর জেলা প্রায় ৩৬ হাজার ৭৭৩ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে আশা কৃষি বিভাগের।
এদিকে, রাজবাড়ীর বাজারগুলোতেও পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমেছে। বাজারে খুচরা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়। আর আড়তে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় খুশি সাধারণ ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছে, রমজান মাসে পেঁয়াজ অনেক দরকারি পণ্য। এক সপ্তাহ আগেও ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি ছিল পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের।
খুচরা বিক্রেতারা বলছে, এখন পেঁয়াজের মৌসুম। কৃষকরা জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন করছে। যে কারণে বাজারে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে কৃষকরা বেশি বেশি পেঁয়াজ উত্তোলন করায় এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমেছে।
পেঁয়াজ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে খ্যাত পাবনায় অর্ধেকে নেমেছে পেঁয়াজের দাম। পাবনায় সুজানগর ও সাঁথিয়ার পাইকারি বাজারে পাঁচ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রায় অর্ধেক। ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা মণের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায়।
স্থানীয় কৃষক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসে বেশি দামে বিক্রির আশায় পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন। সেই পেঁয়াজ এখন বাজারে এসেছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে আবার কৃষকেরাও নতুন পেঁয়াজ বাজারে বিক্রির জন্য তুলতে শুরু করেছেন। তাতে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এই দরপতন ঘটেছে। পাবনার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।
আমদানি বন্ধ থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২৫ টাকা করে দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানায়, বাজারে প্রতিদিনই প্রচুর দেশি পেঁয়াজ উঠছে। তাই ধারাবাহিকভাবে দাম কমছে। গত সপ্তাহেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। অথচ মঙ্গলবার পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ টাকা। চাষীরা জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে সরাসরি বাজারে নিয়ে আসছেন। অন্যান্য বছর পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলেও এবার তা করছেন না বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় কয়েক মাস পরেই দেশ পেয়াঁজশূন্য হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।
এদিকে, কৃষি বিভাগ জেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ৩৯ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলেও এখনো তা আসেনি।
প্রতিবছর রমজানে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও এবারের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো দিনাজপুরের হিলি। সরবরাহ বাড়ায় দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৩০ টাকা। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৫০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিন্ম আয়ের মানুষজন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন
দুই বছর ধরে দেশে ডলার সংকট চলছে। বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাটেনি সংকট। ডলার সংকটের সঙ্গে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম থাকায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। এর মধ্যে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাবদ ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। একই সঙ্গে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ এটি কমে দুই হাজার ৩৭২ কোটি মার্কিন ডলারে (২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন) নেমেছে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন এক হাজার ৮৩০ কোটি ডলারে (১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন)।
এর আগে ২০১৪ সালের শুরুর দিকে রিজার্ভ ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ানোর পর এর নিচে কখনো নামেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেয়। প্রকাশ করে না। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে না। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।
কীভাবে তৈরি হয় রিজার্ভ
রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি থাকায় আমদানি ব্যয় কমেনি। এছাড়া করোনার পর বৈশ্বিক বাণিজ্য আগের অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে; যা এখনো অব্যাহত আছে। এ সংকট দিন দিন বাড়ছে।
বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে রিজার্ভ থেকে নিয়মিত ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ধারাবাহিকভাবে কমছে অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এ সূচকটি।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। এ সময় কিছু নীতি সংস্কারসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়। ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় কিস্তিতে ৭০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা আগামী মাসে। তার আগে পর্যালোচনা বৈঠক করতে ঢাকায় এসেছিল আইএমএফের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ দিয়েছে, তার অন্যতম শর্ত তাদের লক্ষ্য অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ সংরক্ষণ করা। সেই অনুযায়ী গত মার্চ মাস শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা এক হাজার ৯২৬ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু ওই সময় প্রকৃত রিজার্ভ ছিল এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারের কম। এছাড়া আগামী জুন নাগাদ লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া ছিল দুই হাজার ১০ কোটি ডলার। তবে লক্ষ্য পূরণে বার বার ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের আবেদনের প্রেক্ষিতে রিজার্ভ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে শর্ত কিছুটা শিথিল করেছে আইএমএফ।
এ বিষয় আইএমএফ বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, জুনভিত্তিক রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থাৎ আগামী জুনের মধ্যে প্রকৃত রিজার্ভ ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিল ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ তে ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৩২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৩৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন। ২০২০-২১ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার এবং সব শেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি
বাজারে ডলার সংকট কাটাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে ১০ মাসে আমদানি দায় মেটাতে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঢাকায় মোটর শো প্রদর্শনী শুরু ২৩ মে
তিন দিনব্যাপী ‘১৭ তম ঢাকা মোটর শো-২০২৪’ প্রদর্শনী আগামী ২৩ মে শুরু হতে যাচ্ছে। রাজধানী পূর্বাচলের বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। দর্শনার্থীরা প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা এ প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারবেন।
সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় আয়োজক কর্তৃপক্ষ ‘সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ’।
প্রদর্শনীতে একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে ‘৮ম ঢাকা বাইক শো-২০২৪’, ‘৭ম ঢাকা অটো পার্টস শো-২০২৪’ এবং ‘৬ষ্ঠ ঢাকা কমার্শিয়াল অটোমোটিভ শো-২০২৪’। অন্যদিকে, ‘সেমস-গ্লোবাল’ এবং ‘বাংলাদেশ মোটর স্পোর্টস’ এর যৌথ আয়োজনে ২৩ মে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হবে মোটর বাইক প্রতিযোগিতা ‘১ম ডার্ট ট্র্যাক চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৪’ ও ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে কার প্রতিযোগিতা ‘৪র্থ র্যালিক্রস চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৪’।
সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম বলেন, ঢাকা মোটর শো এবং তৎসংশ্লিষ্ট প্রদর্শনীসমূহ মোটর প্রেমী এবং অটো শিল্প ব্যবসার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য একটি ওয়ান স্টপ প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। বৈশ্বিক পরিসরে পারস্পরিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি আদান-প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বাংলাদেশের মোটর, বাইক, যানবাহন এবং মোটর স্পোর্টস সংশ্লিষ্ট খাতের অগ্রগতিতে প্রদর্শনীসমূহ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
আয়োজকরা জানান, ঢাকা মোটর শো বাংলাদেশের মোটর, বাইক ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশের তথা অটোমোটিভ শিল্পের সবচেয়ে বড় ও একমাত্র আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী যা এ শিল্পের জন্য অত্যাধুনিক এবং নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শনের একটি ওয়ান-স্টপ প্ল্যাটফর্ম যেখানে ক্রেতা, দর্শক ও উদ্যোক্তাগণ ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি, যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক উপকরণ ও নিত্য নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সিআইপি সম্মাননা পেলেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) কর্তৃক বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সি আই পি) পুরস্কার ২০২২-এ ভূষিত হয়েছেন বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসসিসিআই) সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
প্লাস্টিকস পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বেঙ্গল প্লাস্টিকস বিগত ৩০ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এছাড়া মোঃ জসিম উদ্দিন ব্যাংক, মিডিয়া, খাদ্য ও পানীয় এবং গার্মেন্টস খাতের মতো বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। মোঃ জসিম উদ্দিন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২২ সালে দেশের প্লাস্টিক শিল্পে রপ্তানি ও বাণিজ্য কার্যে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কারটি দেওয়া হয়। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে ২০২২ সালের জন্য ১৮৪ জন ব্যবসায়ীকে এই স্বীকৃতি দেয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে সিআইপি কার্ড তুলে দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সংশোধন চায় ব্যবসায়ীরা
সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিতকরণ এবং আবাসন শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন চান রিয়েল এস্টেট এবং হাউজিং খাতের ব্যবসায়ীরা। সোমবার (১৩ মে) সকালে এফবিসিসিআই’র মতিঝিল কার্যালয়ে রিয়েল এস্টেট এবং হাউজিং বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি এ আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই’র রিয়েল এস্টেট এবং হাউজিং বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক এবং আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, যত দিন বাড়ছে আবাসন খাতের চাহিদা ততই বাড়ছে। নিবন্ধন ফি সহনীয় করা হলে ফ্ল্যাটের বিক্রি বাড়বে। এতে একদিকে যেমন মানুষের বাসস্থান সংকট দূর হবে, অন্যদিকে এই খাতও বিকশিত হবে।
ফ্ল্যাটের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে রাখতে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, রিহ্যাবের সদস্য নয় এমন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আবাসন ব্যবসায় জড়িত। কিছু নাম মাত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার জন্য এই খাতের ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম। পাশাপাশি আবাসন খাতের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে রিহ্যাবকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে কঠোর হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
আবাসন খাতের টেকসই উন্নয়নে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী। তিনি বলেন, রিহ্যাবকে তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক কৌশলপত্র তৈরি করতে হবে। উন্নয়ন ও গবেষণা সেল গঠন এবং অভিজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ দিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল জানান, বর্তমানে দেশের আবাসন ব্যবসায়ীদের জন্য ড্যাপ এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ীরা ড্যাপ কিংবা ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বিরুদ্ধে নয়। সাংঘর্ষিক ইস্যুগুলো সংশোধনের মাধ্যমে আবাসন খাত বান্ধব বিধিমালা প্রণয়নে রাজউক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
আবাসন খাতের সংকট নিরসনে কমিটির সদস্যবৃন্দের কাছে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ আহ্বান করেন স্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু। যৌক্তিক পরামর্শ সমূহ বিশ্লেষণ করে শীঘ্রই নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের তুলে ধরা হবে বলেন জানান তিনি।
এ সময় ফ্ল্যাট ও জমির নিবন্ধন ব্যয় সহনশীল রাখা, প্রকল্পের অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতা দূরীকরণ, এলাকাভিত্তিক ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) নির্ধারনের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ, ভবন বা ইমারত নির্মাণের ক্ষেত্রে উচ্চতা সীমার বিধিনিষেধ শিথিল করা, আবাসন খাতের জন্য ব্যাংক ঋণ নিশ্চিত করাসহ আবাসন খাতের অন্যান্য সমস্যা সমূহ তুলে ধরেন বক্তারা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, মোঃ রাকিবুল আলম দিপু, রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির উপদেষ্টা লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোঃ আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান, সদস্যবৃন্দ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এপ্রিলে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০.২২ শতাংশ
এপ্রিল মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার ১০ শতাংশের ওপরে উঠল। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে উঠেছে। এর আগের মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তার আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
এপ্রিল মাসে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে; গত মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মার্চ মাসে যা ছিল ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ দিকে গত এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে; আগের মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্লেষকেরা বলেন, মূল্যস্ফীতি এক ধরনের কর, যা ধনী-গরিব-নির্বিশেষে সবার চাপ বাড়ায়। আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে গেলে গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। তার সঙ্গে চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।