অর্থনীতি
বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞায় ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা
যেসব ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে প্রমাণিত হবে তাদের বিদেশ ভ্রমণ দেওয়া হবে নিষেধাজ্ঞা। নতুন করে কোনো ট্রেড লাইসেন্স নিতে পারবেন না। এছাড়া কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননার জন্য যোগ্য হবেন না এসব ব্যক্তি।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, কোনো খেলাপি ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির অনুকূলে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আরোপিত সুদ বা মুনাফা তার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ করে না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বা যে উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে সে সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করলে অথবা অন্য কোন ব্যাংকের জামানতকৃত সম্পদ অনুমতি ছাড়া নতুন ঋণে জামানত হিসেবে দেখালে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
এসব ইচ্ছাকৃত খেলাপির বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরকেএসসি) নিকট কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে তালিকা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ইচ্ছাকৃত খেলাপির গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদির নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছেও তালিকা পাঠানো হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি কোন ইচ্ছাকৃত খেলাপি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননা পাওয়ারও যোগ্য হবেন না।
নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকায় কারও নাম আসলে ঋণ পরিশোধ করে তালিকা থেকে অব্যাহতির ৫ বছরের মধ্যে কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না। আর যদি কোনো পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে পড়েন তবে তার পরিচালক পদ বাতিল হবে। কেউ ইচ্ছাকৃত খেলাপি হওয়ার পর তালিকার বিরুদ্ধে আপিল না করলে বা আপিল করার পর নামঞ্জুর হলে তাকে ২ মাসের মধ্যে অর্থ পরিশোধে জন্য নোটিশ দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ক্রমে খেলাপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করবে ব্যাংক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ঋণ, অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না।
ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি ত্রৈমাসিকে ব্যাংকের অডিট কমিটির সভায় উপস্থাপন করতে হবে। অডিট কমিটি উক্ত উপস্থাপিত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী পর্যালোচনান্তে গুরুত্ব বিবেচনায় এ বিষয়ে তাদের মতামত বা সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্ষদ সভাকে অবহিত করবে। ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত নিয়মিত বা বিশেষ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতার বিষয়ে পর্যালোচনাসহ একটি আলাদা অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে টিকা আকারে প্রকাশ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপিত বা অনারোপিত কোনো সুদ মওকুফ করা যাবে না এবং পুনঃতফসিলও করা যাবে না। ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবটি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক টেকওভার করা যাবে না। ওই ঋণ সম্পূর্ণ আদায় বা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসেবেই বিবেচিত হবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করতে ব্যাংকের এমডি ও সিইওর দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যালয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে গঠন করতে হবে। তারা ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি তা শনাক্ত করবেন। শনাক্ত হওয়ার পর শনাক্তকরণের কারণ উল্লেখ ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে তার বক্তব্য প্রদানের জন্য ১৪ কর্মদিবস সময় দেবে। ওই সময়ের মধ্যে বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে অথবা তার বক্তব্য যথাযথ বিবেচিত না হলে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ কর্তৃক এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
তবে জাতীয় শিল্প নীতিতে বর্ণিত সংজ্ঞানুযায়ী ‘বৃহৎ শিল্প’ খাতের ৭৫ কোটি ও তদূর্ধ্ব, ‘মাঝারি শিল্প’ খাতের ৩০ কোটি ও তদূর্ধ্ব এবং অন্যান্য খাতের ১০ কোটি ও তদূর্ধ্ব স্থিতিসম্পন্ন ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির বা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ আবশ্যক হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চূড়ান্তকরণের পর সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।
কোনো ব্যাংক এসব নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে বর্ণিত নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বিবেচিত হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে অন্যূন ৫০ লাখ টাকা এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা করবে। যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চড়া মাছের বাজার, সবজিতে সুখবর নেই
মাছের বাজারে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে দরের উত্তাপ বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে অধিকাংশ মাছের দাম এখনো তেমন একটা কমেনি। এদিকে, আগের মতোই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বিক্রেতাদের দাবি, গরমের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। অন্যদিকে, বাজারে নিত্যপণ্যের দামের বিষয়ে বরাবরের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ মাছ। এর মধ্যে রুই ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতলা ৩২০ টাকা, কালবাউশ ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাবদা ৫৪০ টাকা ও ইলিশ মাছ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারও রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। বাজারে প্রতি পিস ফুলকপির দাম ৬০ টাকা, প্রতি পিস বাঁধা কপির দাম ৬০ টাকা ও প্রতি পিস লাউয়ের দাম ৪০ টাকা। এছাড়া, প্রতি কেজি গাজর ৭০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা ও পটল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী সোলাইমান মিয়া বলেন, সরবরাহ কমে যাওয়ার জিনিসপত্রের দাম একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে।
সবজির এমন দামে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। বেসরকারি চাকরিজীবী রাকিব মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ বা মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি যায়, তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।
এদিকে বাজারে মুরগির মাংসের দামও আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়, লেয়ার ৩৪০ টাকায় ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৯০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অর্থনীতি সমিতির বার্ষিক সম্মেলন শুরু ১৭ মে
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২২তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন আগামীকাল শুক্রবার শুরু হচ্ছে। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘পরিবর্তিত বিশ্ব অর্থনীতি ও বাংলাদেশ’। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত। এতে আরও উপস্থিত থাকবেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক জামালউদ্দিন আহমেদ ও অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আইনুল ইসলাম।
অর্থনীতি সমিতি জানায়, দুই দিনের এ সম্মেলনে ৯টি কর্ম-অধিবেশনে ১৭০ গবেষকের ১০০টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। এ ছাড়া সম্মেলনের শেষ দিনে শনিবার সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে সমিতির নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে ছয়টি কর্ম–অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনের বিষয়—বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্মার্ট বাংলাদেশ; রাজনৈতিক অর্থনীতি, মানব উন্নয়ন ও বৈষম্য; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রাকৃতিক সম্পদ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প; ব্যাংকিং, ঋণ ব্যবস্থাপনা, মুদ্রানীতি, রিজার্ভ, মুদ্রা অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রা, রেমিট্যান্স ও ফিনটেক-আর্থিক প্রযুক্তি; কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা এবং পরিবেশ অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন। এসব অধিবেশনে ৬২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
কর্ম–অধিবেশনগুলোয় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, পিকেএসএফের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অর্থনীতি সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষি অর্থনীতিবিদ এম এ সাত্তার মণ্ডল ও অর্থনীতিবিদ এম আসাদুজ্জামান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকঋণের সুদহার ১৪ শতাংশের বেশি হবে না: গভর্নর
চলতি অর্থবছরের প্রথম মুদ্রানীতিতে সুদহারের সীমা তুলে স্মার্ট পদ্ধতিতে নির্ণয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে নিয়মিতই বেড়ে চলেছে ব্যাংকঋণের সুদহার। টানা বেড়ে চলা ব্যাংকের সুদহারে এক প্রকার অস্বস্তিতে ফেলেছে দেশের ব্যবসায়ীদের। তবে ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বস্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, ব্যাংক ঋণের সুদ ১৪ শতাংশের বেশি হবে না।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) নেতারা এক বৈঠকে সুদহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এ আশ্বাস দেন।
এসময় এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবংপ্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরীসহ শীর্ষ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ডলারের দাম হঠাৎ করেই ৭ টাকা বেড়ে যাওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা গভর্নরকে বলেছি এটি যেন ১১৭ টাকায় থাকে। তিনি আমাদের এক টাকা কম অথবা বেশির মধ্যে রাখার কথা বলেছেন। ডলার নিয়ে এখনো সমস্যা আছে। আমরা এলসি করার সময়ও একই রেট থাকার কথা বলেছি। গভর্নর আমাদের বলেছেন ডলার সংকট রয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংকট পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
সুদহার বিষয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, ডলারের মতো সুদহার বাজারের ওপরে ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন যে সুদের হার আছে তাতে ১৪ শতাংশের ওপরে উঠবে না আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এর মধ্যেই আটকে দেবে সুদহার। তবে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণে খরচ ৬ থেকে ৮ শতাংশ হলে সুদের হার ১২ শতাংশের ওপরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, একক গ্রাহক ঋণসীমা হঠাৎ বেড়েছে ডলার রেটের কারণে। ডলারের দাম একবারে বেশি হওয়ায় ঋণও বেড়েছে। ডলারের দাম একসঙ্গে ৭ টাকা বাড়ার কারণে যে পরিমাণ ঋণ বেড়েছে সে পরিমাণ টাকার দীর্ঘমেয়াদি ঋণের আবেদন করেছেন ব্যবসায়ীরা। এখানে বিশেষ বিবেচনায় ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন গভর্নর।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্মার্ট (ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের চলমান গড় হার) রেফারেন্স রেট ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে বাজারভিত্তিক সুদহারে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিল। গত ৫ মে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমি মনে করি, আমরা বাজারভিত্তিক সুদহারের খুব কাছাকাছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা একটি সম্পূর্ণ বাজারভিত্তিক সুদহার ব্যবস্থায় চলে যাব।
বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ মে নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ করেছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এ ধরনের হার নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশকে আইএমএফ-এর ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার অন্যতম শর্ত এটি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
চট্টগ্রামের বে টার্মিনালে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করলো আবুধাবি পোর্টস
চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্পের অধীন মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ (এডি পোর্টস)। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এডি পোর্টস, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ), নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং এডি পোর্টসের বাংলাদেশ এজেন্ট সাইফ পাওয়ারটেকের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়েছে।
জানা যায়, টার্মিনালটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ১০ লাখ টিইইউ (টোয়েন্টি-ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট) কন্টেইনার এবং ৭০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এতে দেশের আমদানি ও রপ্তানি দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন খরচ এবং সময় কমে আসবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেল এর আগে বলেছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ টার্মিনালের অর্থায়নের জন্য এডি পোর্টসের প্রাথমিক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে নন-বাইন্ডিং সমঝোতার সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বর্তমান চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা হালিশহর উপকূল বরাবর আড়াই হাজার একর জমিতে বে টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের অধীনে মোট ৪টি টার্মিনাল নির্মিত হবে। এর মধ্যে আবুধাবি পোর্ট গ্রুপের বিনিয়োগ সহায়তায় মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া দেড় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড (পূর্বের পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথোরিটি) এবং ডিপি ওয়ার্ল্ড (দুবাইভিত্তিক একটি আমিরাতি বহুজাতিক লজিস্টিক কোম্পানি) উভয়ে দেড় বিলিয়ন ডলার করে বিনিয়োগ করে দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল করবে। লিকুইড কার্গো টার্মিনাল নির্মাণে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ইস্ট কোস্ট গ্রুপ ও তাদের বিদেশি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া বে টার্মিনালের চ্যানেল তৈরিতে বিনিয়োগ করা হবে ৫০০ মিলিয়ন ডলার। ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাধ), ট্রাক টার্মিনালসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বিনিয়োগ হবে প্রায় ১০০০ কোটি ডলার।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, বে টার্মিনাল প্রকল্পের মাল্টিপারপাস টার্মিনাল এবং দুটি কন্টেইনার টার্মিনালে বার্থের দৈর্ঘ্য তিন হাজার ৯৫০ মিটার। এর মধ্যে মাল্টিপারপাস টার্মিনালে বার্থের দৈর্ঘ্য দেড় হাজার মিটার। মাল্টি পারপাস টার্মিনালের মোট বার্থসংখ্যা ৫টি। টার্মিনালে প্যানামেক্স ক্লাসের কন্টেইনার জাহাজ, বাল্ক ক্যারিয়া, রো রো শিপ ইত্যাদি জাহাজ ভিড়তে পারবে। দুটি কন্টেইনার টার্মিনালের প্রতিটির বার্থ এরিয়া হবে এক হাজার ২২৫ মিটার করে। কন্টেইনার টার্মিনালে বার্থের সংখ্যা ৪টি করে মোট ৮টি।
এ বিষয়ে এডি পোর্টস গ্রুপের স্থানীয় এজেন্ট সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে চুক্তি করার ক্ষেত্রে সকল কমপ্লায়েন্স মেনেছে এডি পোর্টস গ্রুপ।
বাংলাদেশ ফ্রোইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল আলম সুজন বলেন, বে টার্মিনাল প্রকল্প আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। সেটি বাস্তবায়ন হতে চলেছে; এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। টার্মিনালটির কার্যক্রম শুরু হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি আসবে, বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। এতে সময় ও ব্যয় কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জাহাজ ভেড়ানোর ক্ষেত্রে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করতে হবেনা। টার্মিনালটিতে ছয় হাজার কন্টেইনার বহনক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে। বর্তমান বন্দরের জেটিতে প্রায় দুই হাজার কন্টেইনার ধারণক্ষমতার জাহাজ ঢুকতে পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় জাহাজ প্রবেশ করতে পারে না। বে টার্মিনালে ভিড়তে পারবে ১২ মিটার গভীরতা ও ২৮০ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের জাহাজ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
২১ মে ব্যাংক বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের দেশের ১৫৭টি উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সব ব্যাংক মঙ্গলবার (২১ মে) বন্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডিওএস) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৫ মে তারিখের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আগামী ২১ মে রংপুর বিভাগের ২১টি, রাজশাহী বিভাগের ১৯টি, খুলনা বিভাগের ২৫টি, বরিশাল বিভাগের ১৪টি, ঢাকা বিভাগের ৩০টি, ময়মনসিংহ বিভাগের ১১টি, সিলেট বিভাগের ১১টি ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২৬টি উপজেলায় পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ সব শাখা বা উপশাখা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে দেশে কার্যত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।