জাতীয়
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির শৃঙ্খল মুক্তির পথ দেখিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে দেশের শাসনভার জনগণের হাতেই তুলে দেন। সেই মর্মস্পর্শী বজ্রনিনাদ ৭ কোটি বাঙালির হৃদয়কে বিদ্যুৎ গতিতে আবিষ্ট করেছিল।
তিনি বলেন, রাজনীতির কালজয়ী মহাকবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই ভাষণের মাধ্যমে দেশের শাসনভার জনগণের হাতেই তুলে দেন, ক্ষমতাকে কি করে নিয়ন্ত্রিতভাবে সবার কল্যাণে ব্যবহার করতে হয় তাও বুঝিয়ে দেন। শিখিয়ে দেন আত্মরক্ষামূলক কিংবা প্রতিরোধক সমরনীতি, যুদ্ধকালীন সরকার ব্যবস্থা এবং অর্থনীতি।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আজ (বুধবার) দেওয়া এক বাণীতে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে একটি মহাকাব্য রচনা করেছিলেন।’
এই মাহেন্দ্রক্ষণে প্রধানমন্ত্রী গভীর শ্রদ্ধায় প্রথমেই স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ, দু’লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোন এবং অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে—যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং বাংলাদেশ একইসূত্রে গাঁথা। পূর্ব বাংলার মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় এবং পৃথিবীর মানচিত্রে তাদের জন্য একটি স্বাধীন ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতির পিতা শেখ মুজিব পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছর লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন এবং সব আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একমাত্র তিনিই ছিলেন হাজার বছরের শোষিত-বঞ্চিত বাঙালিদের মধ্যে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু, পাকিস্তানিরা আওয়ামী লীগের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ না করে নানা টালবাহানা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ মার্চের ভাষণে তিনি আমাদের ‘স্বাধীনতা’ নামের এক অমরবাণী শোনান এবং সংগ্রামের মাধ্যমে শৃঙ্খলমুক্তির পথ দেখান। তিনি বীর বাঙালির অবশ্যম্ভাবী বিজয়কে উৎকীর্ণ করেন তার ভাষণের শেষ দুটি শব্দে— ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে।
একটি ব্রিটিশ পত্রিকা বঙ্গবন্ধু ভবনকে লন্ডনের ১০-ডাউনিং স্ট্রিটের সঙ্গে তুলনা করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ শুনে ঢাকায় রাষ্ট্রপতির বাসভবনে বাঙালি বাবুর্চি ইয়াহিয়া খানের জন্য রান্না বন্ধ করে দিয়েছিল। ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের প্রতিটি মানুষ ইয়াহিয়ার শাসনকে অগ্রাহ্য করে শেখ মুজিবের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল। সেই রাতে পাকিস্তানি শাসক তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাংলার দামাল ছেলেরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে নয় মাস যুদ্ধ করে পাকিস্তানিদের বাংলার মাটিতে পরাস্ত করে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন এবং তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেন। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের পরাজিত শত্রুদের এ দেশীয় দোসররা পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়। তারা ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করে এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও নিষিদ্ধ করে। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু মুজিবের নাম মুছে দিতে উদ্যত হয়।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর খুনি মোস্তাক-জিয়ার আনীত দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিল করে এবং জাতির পিতার খুনিদের বিচার শুরু করে। পরবর্তী সময়ে আমরা ২০০৯ সাল থেকে পরপর চার দফা সরকার গঠন করে জাতির পিতার আদর্শে দেশের সার্বিক উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করি। জাতির পিতা হত্যার বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করি। ফলে, জাতি গ্লানিমুক্ত হয়। আমরা সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ প্রণয়ন করে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদের পঞ্চম তফশিলে অন্তর্ভুক্ত করি। জাতিসংঘের ইউনেস্কো ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। শুধু তাই নয়, ইউনেস্কো মনে করে এ ভাষণটির মাধ্যমে জাতির পিতাই প্রকারান্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ-এর বিশ্বস্বীকৃতি আজ বাঙালি জাতির জন্য এক বিরল সম্মান ও গৌরবের স্মারক। আমাদের হাইকোর্টের রায়ের ওপর ভিত্তি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘জয় বাংলা’-কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের গৃহীত উদ্যোগের ফলে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০৪১ সালে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করা হবে।
তিনি বিশ্বাস করেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এবং জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৭ মার্চের ভাষণ যুগে-যুগে বাঙালিদের বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
জুলাই বিপ্লবে আহত বাবুকে নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড
জুলাই বিপ্লবে আহত মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হবে।
বাবুর বয়স ৩৬ বছর। কাজ করতেন নয়াপল্টনের ছাপাখানায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বন্ধ হয়ে যায় ছাপাখানা। কিন্তু বাসায় বসে থাকেননি তিনি। জড়িয়ে পড়েন স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে। শনির আখড়ায় বাসা হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন আন্দোলনে যেতেন।
জানা যায়, ২০ জুলাই সকালের দিকে আন্দোলনে যোগদান করেন বাবু। গলি থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান সড়কে যান। এ সময় হেলিকপ্টার দিয়ে টহল দিচ্ছিল বিজিবি। হঠাৎ হেলিকপ্টার থেকে গুলি শুরু হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবু ৫-৬ হাত দূরে ছিটকে পড়ে। পুলিশ তাকে ঘিরে ধরে রাখে। রক্তে ভিজে যায় রাস্তা। পরিচিত একজন তার বোনকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। বোন বাবুর চার বন্ধুসহ ভাইকে উদ্ধার করতে আসে। কিন্তু পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাস্তায় পড়ে থাকে বাবু।
৫-৬ ঘণ্টা পর বোনের জামাই এসে বাবুকে স্থানীয় একটি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানেও শুরু হয় বিড়ম্বনা। কেন হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে? এ অভিযোগে চিকিৎসা শুরু করতেও দেরি হয়। এদিকে রক্তশূন্য হয়ে বাবু মৃতপ্রায়।
মুক্তিযোদ্ধা বাবা এদিন চিকিৎসকদের পায়ে পর্যন্ত ধরেন।
এদিকে মেয়ে হাজতে বন্দি। তাকে ছাড়াতে যান মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান। পুলিশ তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। পরে রাতে পুলিশ ফোন করে স্বামীকে চার হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলে। ধারদেনা করে টাকা দিলে মুক্তি মেলে বাবুর বোনের। আর বাবুর বন্ধুদের পাঠানো হয় কারাগারে।
আহত বাবুর পেটের নিচের অংশ দিয়ে ঢুকে কোমরের পেছন দিয়ে বের হয়ে যায় বুলেট। গুলি ছিন্নভিন্ন করে বাবুর খাদ্যনালি, মূত্রথলি, কোমরের হাড়।
চিকিৎসকরা তার পেটে দুইবার অপারেশন করেছেন। তার খাদ্যনালির অনেকাংশ কেটে ফেলতে হয়। বাকি অংশ পেটে ফুটো করে আলাদা করে মলত্যাগের রাস্তা বানানো হয়। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয় না। পরে সেপ্টেম্বর মাসে তাকে বিএমএমইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। কিছুদিন পর অবস্থা আরও খারাপ হয় বাবুর। মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় দেশের বাইরে পাঠানোর। ১৫ দিন আগে থাইল্যান্ডের চিকিৎসক এসে বাবুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তারা তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন।
মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তিনি দ্রুত বাবুকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদ বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা বাবুকে দ্রুত বিদেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। শুক্রবার তার টিকিট পাওয়া যায়। আজ বেলা ১১টার বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে তাকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হবে। দেশটির বেজথানি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে বাবুকে। এরই মধ্যে গণবিপ্লবে আহত আরও চারজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এলডিসি দেশগুলোতে ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন চাইলো বাংলাদেশ
জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) আজারবাইজানের বাকুতে কপ-২৯-এর চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে এলডিসি মন্ত্রী এবং ইইউ মন্ত্রীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে অবশিষ্ট সমস্যার সমাধানে উভয় পক্ষের সহযোগিতার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সমতাভিত্তিক চুক্তি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলেন, অনেক সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তিনি উভয় পক্ষকে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে কপ২৯-এ একটি অর্থবহ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে এলডিসি মন্ত্রীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তাদের মূল অবস্থান তুলে ধরেন।
ইইউ মন্ত্রীরা এলডিসি দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়গুলো স্বীকার করেন এবং জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন, নির্গমন হ্রাস এবং গ্লোবাল স্টকটেক প্রক্রিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশে চোখের যত্ন ও পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ ও সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকির সাথে এক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চোখের যত্নের সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে আরা অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হড, অরবিস ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডেরেক বাংলাদেশ সফর করছেন। এখন চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ চলছে। ডেরেকে গত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীতে অধ্যাপক ইউনূসের সাথে তার কার্যালয়ে দেখা করেন।
অরবিস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সময় ডেরেকের সাথে ছিলেন। অরবিস প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টাকে ফ্লাইং আই হাসপাতালের একটি মডেল সংস্করণ উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ইউনূস এটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ডেরেক অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কাজ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবিহিত করেন। অরবিস ১৯৮২ সালে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি-সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছিল। অরবিস গত ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছে।
ডেরেক বলেন, এই সময়ের মধ্যে, অরবিস এ পর্যন্ত কমিউনিটি আউটরিচ ইভেন্টে ৭.৮ মিলিয়নেরও বেশি চোখের স্ক্রিনিং পরিচালনা করেছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যক্তিকে ওষুধ ও অপটিক্যাল চিকিৎসা প্রদান করেছে, ২৫৮,০০০টিরও বেশি চোখের সার্জারি করেছে এবং বাংলাদেশের ৪০ হাজারের বেশি লোককে চোখের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষিত করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে চক্ষু স্বাস্থ্য খাতে অরবিসের অবদানের কথা স্বীকার করেন এবং ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অরবিস এখন বাংলাদেশে ১১তম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ড. ইউনূস বলেন, আমি অরবিসকে ভালোবাসি। আমি ফ্লাইং আই হসপিটালকে ভালোবাসি। তিনি উল্লেখ করেন যে, অরবিস বাংলাদেশে চোখের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।
ডেরেক বলেন, অরবিস ব্যক্তি, পরিবার ও জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী ২ শতাধিক দেশ ও ভূখণ্ডে দৃষ্টি সংরক্ষণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ সম্পূর্ণভাবে পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সমস্যা নিয়ে বসবাস করছে উল্লেখ করে ডেরেক বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অরবিস জোরদার ও টেকসই চোখের যত্ন ব্যবস্থা নিয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
অরবিস প্রেসিডেন্ট বলেন, অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, গত চার দশক ধরে অরবিস শিশুদের চোখের যত্ন, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনাল সার্জারি, কর্নিয়ার রোগ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় অংশীদারদের দক্ষতা ও জ্ঞানের উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
ডেরেক এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে আরও অবিহিত করেন, অরবিস সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ৪২টি দৃষ্টি সেবা কেন্দ্র স্থাপন করে চোখের যত্নের সাথে জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছে; ১৭টি সেকেন্ডারি হাসপাতাল, চারটি তৃতীয় হাসপাতাল, দুটি ওয়েট ল্যাব, একটি মানসম্পন্ন রিসোর্স সেন্টার ও একটি ডিজিটাল ট্রেনিং হাব প্রতিষ্ঠা বা উন্নতিতে সহায়তা করেছে।
এছাড়া, অরবিস ৪০০টি কমিউনিটি ক্লিনিককে ভিশন স্ক্রিনিং টুলস দিয়ে সজ্জিত করেছে এবং শৈশব অন্ধত্বের একটি প্রধান কারণ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথির স্ক্রিনিং ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্দেশিকা তৈরি করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সরকার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না: রিজভী
অন্তর্বর্তী সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনগণের দুর্ভোগ আগের মতোই রয়ে গেছে। দিনমজুর-শ্রমিকদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয়তাবাদী রিকশা-ভ্যান-অটো চালক দলের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জনগণের দুর্ভোগ আগের মতোই আছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আগের মতোই আছে। অন্তর্বর্তী সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দিনমজুর-শ্রমিকদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে।
তবে দেশের মানুষকে কষ্টে রেখে উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, উপদেষ্টারা চাকরিজীবীর মতো কাজ করছেন। তাদের কাজে বিপ্লবের গতিশীলতা নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই বিপ্লবে হতাহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
এ সময় রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে হত্যার লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল। আর শেখ হাসিনা হত্যাকাণ্ড চালিয়ে মায়াকান্নার অভিনয় করতেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই