অর্থনীতি
বাড়তি দামে ডলার বেচায় দুই মানি চেঞ্জার বন্ধের নির্দেশ

বেশি দামে ডলার বিক্রিসহ নানা অনিয়মের অপরাধে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুই মানি চেঞ্জারের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মানি চেঞ্জার দুটি হল, এভিয়া মানি চেঞ্জার এবং ইম্পেরিয়াল মানি এক্সচেঞ্জ।
আগামী ৯ মার্চের আগে মানি চেঞ্জার দুটি বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম প্রত্যাহার না করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের লাইসেন্স বাতিল করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন করে ঢাকার বিমানবন্দরের দুই মানি চেঞ্জারের অনিয়ম খুঁজে পায়। প্রতিষ্ঠান দুটি বেশি দামে গ্রাহকদের কাছে ডলার বিক্রি করেছে। তাদের ডলার ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্বচ্ছতা ছিল না। ডলার কেনার সময় গ্রাহকদের ভুয়া রসিদ দিচ্ছিল তারা।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলছে ডলার সংকট। ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলোর অনিয়ম ডলার সংকটের অন্যতম কারণ বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে গত দুই বছরে ডলার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে বেশ কিছু মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত ও অনেক ব্যাংককে জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এর পর থেকে এই দুই সংগঠন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরোক্ষ নির্দেশনায় রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।
সবশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, আমদানি দায় পরিশোধে ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। আর প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ডলার দাম ১১০ টাকা।
আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হয়েছে ১১০ টাকায়। ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা। তবে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১২৪ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২৪ টাকা পর্যন্ত।

অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা

ট্রেজারি বিল বন্ড ও সরকারকে দেওয়া সুদে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা বেড়েই চলছে। সদ্যবিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিচালনা বাবদ মোট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে আনুষঙ্গিক খরচ ও ট্যাক্স বাদ দিয়ে নিট মুনাফা হয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালকদের ৪৪৩তম সভায় আর্থিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মোট মুনাফা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে অর্থবছরের ব্যবধানে নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
এর আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে নিট মুনাফা ছিল ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি মুনাফা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘মুনাফা করা বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশ্য নয়। তারপরও বিভিন্ন পরিচালনা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুনাফা করেছে, যা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
বিবরণী অনুযায়ী, গত অর্থবছরের আয় থেকে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি নিট মুনাফা হয়েছে, যা সরকারি কোষাগারে দেওয়া হবে। আগের অর্থবছরে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে দেওয়া হয়েছিল। মুনাফা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিজস্ব বেসিক বেতনের ৬ গুণ ইনসেনটিভ বোনাস অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড।
অর্থনীতি
সোনার দাম বাড়লো, ভরি ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা

দেশের বাজারে নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে সোনার দাম। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এবার ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকেই কার্যকর হবে নতুন এ দাম।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বাড়ার কারণে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের বাজারে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাজুস।
নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ২৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে, সবশেষ গত ২৪ জুলাই দেশের বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় ভরিতে ১ হাজার ৫৭৪ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল গত ২৫ জুলাই থেকে।
এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৪৬ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো সোনার দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৩০ বার, আর কমানো হয়েছে মাত্র ১৬ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে বর্তমানে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮১১ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা ১ হাজার ৭২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে।
অর্থনীতি
পাঁচ মাসে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ: বিডা

২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশ প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর বিডা অডিটোরিয়ামে বিনিয়োগ বিষয়ক সংবাদদাতাদের একটি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান বিডার ব্যবসায় উন্নয়ন প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি।
বিনিয়োগ প্রস্তাবের প্রবাহকে একটি ইতিবাচক প্রবণতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছেছে- যার মধ্যে রয়েছে স্বাক্ষরিত চুক্তি, জমি ইজারা নিশ্চিতকরণ এবং বরাদ্দপত্র।
রোচি বলেন, পরিসংখ্যানগুলো বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে (এসইজেড) বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়, যা সরকারের শিল্পায়ন অভিযানের একটি মূল স্তম্ভ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মনোযোগ কেবল বিনিয়োগের পরিমাণের ওপর নয় বরং বিনিয়োগের মান এবং স্থায়িত্বের ওপরও। যদি এই গতি অব্যাহত থাকে এবং সুবিধা প্রদান আরও সুগম হয়, তাহলে আগামী পাঁচ মাসে আরও কার্যকর ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, এই প্রবণতা মহামারী-পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক এবং স্থানীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নতুন করে আস্থা অর্জনের প্রতিফলন ঘটাবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) মতে, প্রস্তাবিত বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ বর্তমানে অনুসন্ধানমূলক বা যথাযথ পরিশ্রমের পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন, প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা এবং প্রাথমিক প্রকল্প পরিকল্পনা।
রোচি বলেন, বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ প্রস্তাব অনুসন্ধানমূলক পর্যায়ে শুরু হয় এবং সঠিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যায়। আরও ২০ শতাংশ প্রস্তাব এখন আনুষ্ঠানিক নথিভুক্তির আগে গভীরভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের উত্তরে এবং স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তার জবাবে বিইজেডএ’র নির্বাহী সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, একটি ইউনিফাইড ইনভেস্টমেন্ট পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মটি বিনিয়োগের অবস্থা, অঞ্চল-নির্দিষ্ট উন্নয়ন, জমির প্রাপ্যতা এবং অনুমোদনের সময়সীমা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একীভূত করবে।
অর্থনীতি
তিউনিশিয়া-মরক্কো থেকে ৬৫ হাজার টন সার কিনবে সরকার

তিউনিশিয়া থেকে ২৫ হাজার টন টিএসপি এবং মরোক্ক থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি করবে সরকার। একই সঙ্গে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ করা হবে। এই সার আমদানি ও বাফার গুদাম নির্মাণে ব্যয় হবে ৬১৭ কোটি ৩২ লাখ ২৪ হাজার ২৫২ টাকা।
মঙ্গলবার (২৬ অগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপিদেষ্টা দেশের বাইরে থেকে বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তিউনিশিয়ার গ্রুপ চিমিক তিউনিসিয়ান ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ২৫ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ১৮৪ কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৬০২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৮৩ কোটি ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৩২০ টাকা। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৭৮১ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার।
এছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ-৪ এর লট-১ (ভোলা ১০ হাজার টন)- এর অধীন একটি সাইটে গোডাউন নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার হাতিরপুলের প্রতিষ্ঠান এম/এস এমবিএল-আরইএল (জেভি)- এর সঙ্গে এই কাজের জন্য চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৪৯ লাখ ১৯ হাজার ৪৩২ টাকা।
অর্থনীতি
সামিট কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সরকারের ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ এ মামলাটি করেন। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মোহাম্মদ ফরিদ খান ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন—লেক্স কাউন্সিলের স্বত্বাধিকারী ও বিটিআরসির প্যানেল আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব, বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক কমিশনার (আইন) মো. আমিনুল হক বাবু, সাবেক কমিশনার (স্পেকট্রাম) শেখ রিয়াজ আহমেদ, সাবেক কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী ও সাবেক কমিশনার (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) মো. দেলোয়ার হোসাইন।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, বিটিআরসির কর্মকর্তা ও লেক্স কাউন্সিলের প্যানেল আইনজীবীর সহযোগিতায় সামিট কমিউনিকেশনস বেআইনিভাবে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৩৬টি নতুন অর্ডিনারি শেয়ার ইস্যু করে। যার মধ্যে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯১১টি শেয়ার দেওয়া হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক গ্লোবাল এনারিংয়ে, যা মুহাম্মদ আজিজ খান ও তার পরিবারের মালিকানাধীন।
এছাড়া ৪ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১১৯টি শেয়ার দেওয়া হয় মরিশাসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেকুওয়া ইনফ্রা টেক লিমিটেডকে। বাকি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৪০৬টি শেয়ার দেওয়া হয় পূর্বের শেয়ারহোল্ডার মো. আরিফ আল ইসলামের অনুকূলে।
এই শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানির মূলধন প্রায় চারগুণ বাড়ার পাশাপাশি মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ দশমিক ০৭ কোটি থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ২৮ কোটিতে পৌঁছে। ফলে মোহাম্মদ ফরিদ খানের মালিকানা ৯৫ শতাংশ থেকে কমে ২৫ শতাংশে নেমে আসে। অন্যদিকে, দুই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের যৌথ মালিকানা দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১-এর ধারা ২৪ অনুযায়ী, শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, বিক্রিত শেয়ারের মূল্যের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। ২০২২ সালে একই কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব আদায়ে ওই আইনের প্রয়োগ থাকলেও এক্ষেত্রে আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সামিট কমিউনিকেশন থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্য পরিশোধ সামিট কমিউনিকেশনসের জন্য প্রযোজ্য নয় মর্মে মতামত দেন।
দুদক বলছে, আইনজীবীর এ মতামতের ভিত্তিতে বিটিআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কমিশনাররা মিলে অবৈধ সুবিধা নিয়ে শেয়ারের অনুমোদন দেন, ফলে সরকার প্রায় ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা রাজস্ব হারায়।