অর্থনীতি
বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রদত্ত সুযোগ সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রথম সহকারী সচিব গ্যারি কাওয়ান। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরার বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্দেশে গত ১১ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া সফর করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সফরে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রথম সহকারী সচিব গ্যারি কাওয়ানের সাথে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরবর্তী সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রদত্ত সুযোগ সুবিধা বাংলাদেশকে অব্যাহত রাখার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থন চান সচিব। এ সময় অস্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার আশ্বাসের প্রশংসা করেন বাণিজ্য সচিব।
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক কমিশনের উপ-নির্বাহী প্রধান ফিলিপ্পা কিং এর সাথে বৈঠক করেন তপন কান্তি ঘোষ। বৈঠকে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিয়েছেন ফিলিপ্পা কিং।
তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে তথ্য প্রযুক্তি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শিক্ষার বিষয় উল্লেখ করেন তপন কান্তি ঘোষ। অস্ট্রেডের উপ-নির্বাহী প্রধান উচ্চ শিক্ষার বিকল্প মডেল হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্বদ্যিালয়ের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর ওপর জোর দেন। বৈঠকে উচ্চ শিক্ষা ছাড়াও কারিগরী শিক্ষা কার্যক্রমে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা চাওয়া হয়। এসময় দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ যৌথভাবে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সেমিনার আয়োজনের বিষয়েও আলোচনা হয়।
এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বাণিজ্য বিষয়ক প্রধান ক্রিস বার্নস এবং সেদেশে স্থানীয় বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া চেম্বারের সদস্যদের সাথেও বৈঠক করেন সিনিয়র সচিব। আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় সভায় ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্টেকে পরবর্তী ধাপে উন্নয়নের জন্য করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।
এদিকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের আয়োজনে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তপন কান্তি ঘোষ। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের প্রশংসাও করেন তারা।
বর্তমানে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চার বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বেশি। গত দশকে দুদেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ১১ শতাংশ। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিশীল এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন উদ্যোগ নিয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
দুর্বল শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করা হবে: গভর্নর

ইসলামী শরিয়াভিত্তিক যেসব দুর্বল ব্যাংক রয়েছে সেগুলো একীভূত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দশম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে তিনি বলেন, “ইসলামী ব্যাংকগুলোকে রিশেইপড করা হয়েছে। দেশের একটি বড় ইসলামী ব্যাংক আছে, সঙ্গে ছোট ছোট আরো কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক রয়েছে, যাদের অনেকে ঝামেলার মধ্যে রয়েছে। সমস্যাজর্জরিত ব্যাংকগুলোকে মার্জার করা হবে।”
ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এ আয়োজিত সম্মেলনে গর্ভনর বলেন, “ইসলামী ব্যাংক নিয়ে আমাদের প্রোপার রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক নেই। আন্তর্জাতিক মডেলে যেভাবে ইসলামী ব্যাংক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে সেই বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি।”
ঋণ কেলেঙ্কারি, তারল্য সংকটে নাজুক দশায় পড়া আর্থিক খাতকে সঠিক পথে ফেরাতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বা মার্জারের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রথমে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
কথা ছিল, ব্যাংকের ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন দেখে পিসিএ বাস্তবায়ন করা হবে। সে হিসাবে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে দুর্বল ব্যাংকের তালিকা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
গত বছর মার্চে হুট করে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে দুর্দশায় পড়া পদ্মা (সাবেক ফারর্মাস) ব্যাংক একীভূত হওয়ার ঘোষণা আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় একীভূত হতে দুটি ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হয়। মার্জার প্রক্রিয়া কোন পথে হবে, তা নিয়ে আলোচনা উঠলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বাণিজ্যিক ব্যাংক চাইলে নিজেরা একীভূত হতে পারবে। নইলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূত করে দেবে।
কিন্তু অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছরই দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংক প্রয়োজনে একীভূত করা হবে বলে ইঙ্গিত দেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এবার তিনি স্পষ্ট করে শরিয়াভিত্তিক দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কথা বললেন।
গভর্নর বলেন, “মার্জার করার ক্ষেত্রে দুর্বল প্রত্যেকটি ব্যাংকের বোর্ড নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কোনো ব্যাংকের বোর্ড যদি কাজ না করে তাইলে আমানতকারীদের স্বার্থেই সেই ব্যাংকের বোর্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করার অধিকার রয়েছে।”
তিনি বলেন, “বোর্ড ঠিক মত কাজ না করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে। এটি চলমান একটি প্রক্রিয়া। বোর্ডে সংস্কার এখনো শেষ হয়ে যাইনি। আমরা ইতোমধ্যে প্রথম রাউন্ডে ১১টি ব্যাংকে বোর্ড দিয়েছি। আর কয়েক সপ্তাহ আগে আরো দুইটি ব্যাংকে বোর্ড দেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপের মুখে ইতোমধ্যে একটি ব্যাংক তাদের নিজের কার্যক্রম পরিবর্তন করেছে তুলে ধরে আহসান এইচ মনসুর বলেন, সঠিক নিয়মের মধ্যে থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে হবে- কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এই বিষয় একদম স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের দেড় দশকে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়।
গভর্নর বলেন, দেশ থেকে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে নিরাপদ দেশে নিয়ে যাওয়ার উপায় বন্ধ করার পদ্ধতি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। তারা চান, এটা যথেষ্ট পরিমাণে শক্তিশালী করা হোক।
ব্যাংকিং খাতে নানা রকম সংস্কার চলছে তুলে ধরে তিনি বলেন, পরবর্তী সময় যেই রাজনৈতিক দলেই ক্ষমতায় আসুক না কেন এ ইতিবাচক পরিবর্তনকে গ্রহণ করা উচিত।
ব্যাংকিং কোম্পানি আইন সংশোধন করা হচ্ছে তুলে ধরে আহসান মনসুর আশা প্রকাশ করেন যে তাতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিবর্তন আসবে যাতে ব্যাংক পরিচালনায় শাসনপদ্ধতিতে উন্নতি হবে। তাছাড়া ব্যাংকের বোর্ড সঠিকভাবে তাদের কার্যক্রম যদি পরিচালনা করে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বোর্ড সদস্য হওয়ার জন্য যোগ্যতা যাচাইয়ের নিয়মগুলো ঠিক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বোর্ডে স্বতন্ত্র পরিচালক কতজন থাকবেন ও তাদের কী ধরনের যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন সে বিষয়গুলো এসব ব্যাংক কোম্পানি আইনে দেওয়া থাকবে। এটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ীই করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও নানা রকমের সমস্যা থাকার কথা তুলে ধরে গভর্নর বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নানা রকমের হস্তক্ষেপ হয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংকে আরো শক্তিশালী করা হচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নারীদের ৫০ শতাংশ থাকতে হবে।
“আমরা ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আবার কাজ করছি। ছোট ছোট ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কাজ করতে হবে। এমনকি নগদের প্রশাসক দেওয়ার পরেও গত মাসে রেকর্ড পরিমাণের লেনদেন হয়েছে।”
গভর্নর বলেন, এছাড়া মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) দুই থেকে তিনটি কোম্পানি চালাচ্ছে। তবে এটি সাফল্যজনক গল্প। এখন প্রতিদিন ৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। সামনে ৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৯ শতাংশ হবে, এডিবির পূর্বাভাস

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। তবে একই সময়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৭ থেকে ১০ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবির ঢাকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) এপ্রিল ২০২৫’ প্রতিবেদন তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংস্থাটি চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে আগের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। তবে তারা আশা করছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে, ২০২৬ অর্থবছরে তা আবারও বৃদ্ধি পেয়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে রপ্তানি বৃদ্ধি সত্ত্বেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প-অস্থিরতা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশজ চাহিদা দুর্বল হওয়ায় প্রবৃদ্ধি কমবে। ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং বলেন, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে, যা গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে শক্তিশালী করা যেতে পারে। বেসরকারি খাতের উন্নয়নকে উৎসাহিত করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বাইরেও তার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা উচিত। স্থিতিশীল অবকাঠামো বৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নত করা, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এডিবি জানায়, পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা, অপর্যাপ্ত বাজার তথ্য, সরবরাহ শৃঙ্খলের সীমাবদ্ধতা এবং টাকার অবমূল্যায়নে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলতি হিসাবের ঘাটতি ২০২৪ অর্থবছরে জিডিপি ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি ০ দশমিক ৯ শতাংশ কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার দেবে এনডিবি

চলতি বছর বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে ব্রিকস জোট প্রতিষ্ঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি)।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এনডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির কাজবেকভ এ তথ্য জানান।
ভ্লাদিমির কাজবেকভ জানান, সম্প্রসারিত ঢাকা সিটি ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এনডিবি এরই মধ্যে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে। তবে বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদার প্রেক্ষিতে এ বছর এই ঋণের পরিমাণ তিনগুণেরও বেশি বাড়াতে চান তারা।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নতুন এই বহুপক্ষীয় ঋণদাতা সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, এটি দেশের উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
কাজবেকভ বলেন, বাংলাদেশের গ্যাস খাতের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যও এনডিবি বড় ধরনের সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও জানান, দেশের বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনডিবি সেখানেও উল্লেখযোগ্য ঋণ প্রদান করতে আগ্রহী।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে হাজার হাজার শ্রমিকের জন্য আবাসন সুবিধা গড়ে তোলার মতো সামাজিক অবকাঠামো খাতে এনডিবির ঋণ গুরুত্বসহকারে দেওয়া উচিত।
কাজবেকভ জানান, এনডিবি এরই মধ্যে মাল্টি-কারেন্সি ঋণ সুবিধা চালু করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য উপকারী হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনডিবি যেন একটি দেশের কৌশলগত কর্মসূচি প্রণয়ন করে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
বৈঠকে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, অন্তর্বর্তী সরকারের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দিনের ব্যাংক হিসাব তলব

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি এবং এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেডের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকের অর্থ লোপাটের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবিষয়ে অনুসন্ধান করতে একজন সহকারী পরিচালক নিয়োগ করেছে দুদক।
এছাড়া কুতুবউদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী রাশিদা আহমেদ, ছেলে তানভীর আহমেদ ও মেয়ে সুমাইয়া আহমেদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব তলব করেছে দুদক। আগামী ২১ এপ্রিলের মধ্যে তথ্য দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের স্থাবর/অস্থাবর সম্পদের তথ্যাদি সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। তাদের একক/ যৌথ/ প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব (সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, এফডিআর/মেয়াদি আমানত, ঋণ হিসাব, লকার, ডিপিএস চলমান/ বন্ধ/ সুপ্ত অবস্থায়) পরিচালিত হয়ে থাকলে ওই হিসাব খোলার ফরম (সংযুক্তিসহ), শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত হিসাব বিবরণী ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র/ তথ্যাদি আপনার অধীন সব শাখা থেকে যাচাই করে তথ্যাদি আগামী ২১ এপ্রিলের সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলো।’
১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা এনভয় গ্রুপের তৈরি পোশাক, বস্ত্র, আবাসন, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং, ট্রেডিং, হসপিটালিটি, ব্যাংকিং, শেয়ারবাজার, সিরামিকসহ মোট ৪০টির মতো ব্যবসা রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টিএনজেডের ৪ কারখানাই বন্ধ করে দেওয়া হবে: শ্রমসচিব

টিএনজেড গ্রুপের চারটি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, দুই দফায় টিএনজেড-কে টাকা দিয়েছে সরকার। কিন্তু কোম্পানিটির ৪টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন বকেয়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। এই কোম্পানি আর চালানো যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) আরএমজি বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি-টিসিসি) ২০তম সভা শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, টিএনজেড-কে নভেম্বরে ১৬ কোটি টাকা দিয়েছি, এখন আবার ১৭ কোটি টাকা বকেয়া হয়েছে। আবার কোরবানিতে ১৫ কোটি টাকা বকেয়া হবে, এটা তো হতে পারে না। সিদ্ধান্ত হয়েছে টিএনজেডের চারটি কারখানাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসব কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ৩২০০ জনের মতো।
কিছু শ্রমিকের অসৎ উদ্দেশ্যের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, গতকাল টিএনজেডের শ্রমিকরা কারখানার কাছে সমাবেশ করেছেন। তারা আজ বৈঠকে না এসে ওখানে সমাবেশ করছেন কেন? আবার তারা পানি ঘোলা করবেন। সমস্যার সমাধানের জন্য যখন আলোচনা চলছে, তখন আরেক গ্রুপ বিআরটিসি ডাবল ডেকার বাসে চড়ে এসে শ্রম ভবনের সামনে বসে আছেন। এগুলো কেন হবে? টোটাল জিনিসটা খুব সরলভাবে দেখলে হবে না। এর পেছনে অনেক বিষয় আছে।
টিএনজেডের ক্ষেত্রে বেক্সিমকো মডেল প্রয়োগ করা হবে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, সেখানে ৪০ হাজার শ্রমিকের সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের বকেয়া যেভাবে মালিক পরিশোধ করেছে, টিএনজেডের বকেয়াও মালিক পরিশোধ করবে। তাকে দেশে ফিরতে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি করবো। তার ওপর কোনো রকম ট্রাস্ট রাখতে পারছি না। তিনি বিদেশে বসে আছেন, দেশে আসার লক্ষণ নেই।
তিনি বলেন, টিএনজেডের সমাধানে একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। তাদের সম্পদ মূল্যায়ন করা হবে। শ্রমিকদের পাওনা কত আছে বের করা হবে। সম্পদ বিক্রি করলে কীভাবে কী হবে সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তারা দেবে। আজ থেকে এই কারখানাটি আমরা হেফাজতে নিয়েছি।